নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সহেনা যাতনা দিবস রজনী

বদিউজ্জামান মিলন

আমি একজন খেটে খাওয়া শ্রমিক। রবীন্দ্রনাথ আমার গুরু। উনার কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস, গান আমার দারুণ প্রিয়। আমি প্রথম আলো পত্রিকায় সাংবাদিকতা করছি। বেড়ানো আমার শখ, শখটা এখন ঘুমানোতে ডাইভার্ট হয়ে গেছে। খেলা দেখার নেশাটা ছাড়তে পারি নি এখনও......

বদিউজ্জামান মিলন › বিস্তারিত পোস্টঃ

এ কেমন বর্ষবরণ!

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:২০

‘শোনো, তোমার জন্য একটা পাঞ্জাবী পছন্দ করছি’–ফোনের অন্য প্রান্ত থেকে বউয়ের আহ্লাদি গলা।
তুমি না বাবুকে আনতে স্কুলে গেছো? –এ পাশ থেকে রোমেলের উত্তর।
হ্যা, বাবুর স্কুল থেকে ফেরার পথে সান​জিদা ভাবী আমাকে মার্কেটে ধরে আনল।
‘ও আচ্ছা তাই বলো।’
আজ অফিসে জরুরী মিটিং ছিল। এজন্য আজ আর মেয়েকে স্কুল থেকে আনতে পারেনি রোমেল। শুধু মোটরসাইকেলে করে বউকে নামিয়েই ছুটেছে অফিসের পথে।
এ এক অন্য রকম বিড়ম্বনা। যারা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন সবাই জানেন কত রকম হ্যাপা থাকে এখানে। রোমেলের ছিল ডে–অফ (সাপ্তাহিক ছুটি)। কিন্তু ওই দিনই জরুরী মিটিং। কি আর করা, মেয়ে স্কুলে রেখেই চলে এসেছে। এরপর বউয়ের কাজ ​ছিল মেয়েকে স্কুল থেকে আনা। কিন্তু সেখান থেকেই
পাঞ্জাবী কিনতে মার্কেটের উদ্দেশ্যে গেল বউ।
এতক্ষণে রোমেলের মনে পড়েছে আগামীকাল পহেলা বৈশাখ। এজন্যই রোমেলের জন্য উপহার। কিন্তু রোমেল তখনও জানে না ওর জন্য আরও কি ভয়ঙ্কর দুঃসংবাদ অপেক্ষা করছিল। অফিসের মিটিং শেষে আরও কয়েকটি কাজ শেষে যখন রোমেল বাড়িতে ঢুকে ঠান্ডা হওয়ার জন্য স্ট্যান্ড ফ্যানের সামনে বসেছে ওমনি এল ফোনটা, ‘ভাই আপনাকে কাল অফিস করতে হবে।’ প্রথমে ভেবেছিল মজা করছে অফিস থেকে। কারণ নববর্ষের দিনটা সাধারণত বন্ধ থাকে অফিস। এবার মাস ছয়েক আগে নতুন নিয়ম হয়েছে ছুটি–ছাটাতেও ডিউটি করতে হবে । (য​দিও ওভারটাইমের রেট একটু বেশি এ​দিন, কিন্তু টাকা দিয়ে কি সব হয়!)
আসলে কাজ কর্ক করতে বা টানা অমানুষিক পরিশ্রমের প্রতি কখনোই অনীহা নেই রোমেলের! এখন শুধু ভাবে রোমেল আহা, এমন করে পড়াশুনার প্রতিও যদি সামান্যতম আগ্রহ থাকতো তাহলে এমন পচা চাকরি করে জীবনটা তামা তামা করতে হতো না! অফিসের আদেশ শিরোধার্য–এমনটাই মেনে ভাবছে কথাটা বউয়ের কাছে কিভাবে উপস্থাপন করবে রোমেল। অনেকে ভাবতে পারেন রোমেল বউভীতু টাইপের ছেলে। আসলে ঘটনা তা না। শান্তি বজায় রাখতে সংসারে অনেক কিছুই স্যাক্রিফাইস করতে হয়। সমস্যা হলো– রোমেলের বউ অনেক কিছুই বুঝতে চায় না, যা তার পেশার সঙ্গে যায়। এমন বউকে রোমেলের মা কেন যে তার কাঁধে গছিয়ে দিয়েছিল তা আল্লা মালুম।
সে যাক। রাতে ব্যাপারটা বলি বলি করে বলার চেষ্টা করেও পারেনি। ক্লান্ত রোমেল দ্রুতই ঘুমিয়ে পড়েছিল। কিন্তু সকাল বেলা আর পারেনি। বউ যখন ঘুম থেকে উঠেই বলল যে এই পাঞ্জাবি পরবা তুমি। আমি পরব শাড়ী। এরপর বিকেলে তুমি আর আমি টিএসসিতে ঘুরব। ঠিক তখনই ঘটল বিপত্তি। অতঃপর বলতেই হলো, ‘আজ আমার অফিসে যেতে হবে।’
এরপর যা ঘটল তা প্রায় সময়ই ঘটে থাকে রোমেলে জীবনে। প্রথমে নতুন কেনা সাধের পাঞ্জাবীটা ছেঁড়ার চেষ্টা চলল। কিন্তু নতুন বলেই কিনা বোতামের নিচের কিছু অংশ খুলে গেল। হাত থেকে পাঞ্জাবী কেড়ে নেওয়ার পরও রাগে ফুসতে লাগল বউ। পাঞ্জাবীটা দলামচলা হয়ে এক কোণে নিরীহ গোবেচারার মতো অসহায়ের চোখে এই দম্পতির ঝগড়ার দৃশ্য দেখল। ঝগড়ার ফাকে একবার তো বলেই দিল রোমেল, তাহলে আমি আজই রিজাইন করে ফেলি, কি বলো? এসব আর রোজ রোজ ভালো লাগে না। সত্যিই ভালো লাগে না রোমেলের। কথাগুলো কাউকে বলতেও চায় না সে। মাঝে মাঝে মনে হয় কেন যে মায়ের জোরাজুরিতে বিয়ে করতে রাজি হয়েছিল। যদি আজীবন ব্যাচেলর থাকা যেত!
একটা কথাই ভেবে আফসোস লাগে রোমেলের–––নিজের স্বামীর পেশার প্রতি এতটুকু সম্মান নেই বউয়ের।
অফিসে এসে যথারীতি কাজ শুরু করে দিল রোমেল। কাজের মাঝেই ভুলে থাকতে চাইল সব কিছু। কিন্তু চাইলেও কি ভোলা সম্ভব? এই জীবন আর ভালো লাগে না রোমেলের। মনে হয় তেলাপোকা, টিকটিকিও বোধ হয় তার চেয়ে অনেক সুখী !

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:১১

তানভীরএফওয়ান বলেছেন: :( :(( :((

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.