নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোহাম্মদ মইন উদ্দীন। ডাক নাম মাঈনু। কিছু কিছু ফ্রেন্ডের কাছে কিশোর। বাড়ি চট্রগ্রাম। পড়ালেখার কারণে ঢাকায় থাকি। কৌতুহল একটু বেশী, হয়তো বাড়াবাড়ি ধরনের ই বেশী। দূঃসাহসী, কিন্তু সাহসী কিনা এখনো জানতে পারিনি।

কিশোর মাইনু

কিছু কিছু জিনিস জানি। সেগুলা মানুষের সাথে share করার জন্য ব্লগে প্রবেশ। তাতে দুটো সুবিধে। প্রথমত, আমার জানার ভুলভ্রান্তিগুলো দূর হবে। দ্বিতীয়ত, নতুন কিছু জানার সুযোগ সৃষ্টি হবে। দুনিয়াতে জানার কোন শেষ নেই। এবং আমার আগ্রহের ও কমতি নেই। ইনশাল্লাহ কোনদিন হবে ও না।

কিশোর মাইনু › বিস্তারিত পোস্টঃ

কয়েকজন শিক্ষকের গল্প

১৪ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:৩১

আজ শাহরিয়ার ইমন ভাইয়ের দেওয়া শিক্ষকদের নিয়ে একটি পোস্ট পড়লাম। ভাবলাম আমিও লিখি আমার স্যারদের নিয়ে। তাই স্বৃতিচারণ করতে বসলাম।

ফুলকি,এজি চার্চ,সেন্ট মেরিস,মুসলিম হাই,নৌবাহিনী কলেজ।

ফুলকি স্কুলে সেরকম গোফঅলা একজন স্যার ছিল। স্যারের নাম মনে নেই,কি পড়াত সেটা ও মনে নেই। আমাদের সবার ই খুব পছন্দের স্যার ছিল ওনি। ওনার প্রতিটি ক্লাসেই ওনি একটা করে গল্প বলতেন। আর ওনি এমন করে বলতেন আমরা চরম আগ্রহভরে শুনতাম। ওনার ২টি গল্প আমার খুব প্রিয় ছিল-> এক কিপটা লোকের গল্প আর কচ্ছপ-খরগোশের গল্প। আমরা যেটা জানি সেটা না কিন্তু। ওনার টা ছিল একটু অন্যরকম এখানে খরগোশ একটানা দৌড়ায়, কিন্তু কচ্ছপের চালাকির কাছে হার মানতে বাধ্য হয়। গল্পটা অন্য কোন একদিন লিখব।

মুসলিম হাই তো বলার মত স্যারের অভাব নেই-> জাফর স্যার, রাজু স্যার, ফজলুল স্যার, জাহিদ স্যার, রেজা স্যার, সিকদার স্যার, সালাউদ্দীন স্যার, নাম বলতেই ঘন্টা পার হবে।
জাফর স্যার আমাদের ম্যাথ পড়াতেন। অসম্ভব মজার একজন স্যার ছিলেন। গল্প শোনাতেন অনেক সময়। আর সব গল্প ই ছিল শিক্ষামুলক। আর গণিত ও অনেক ভাল পড়াতেন, অনেক স্নেহ করতেন আমাকে, গণিত ভাল পারতাম কিনা। গণিতের আরেকজন স্যার রাজু মাস্তানের ফ্যাবারিট স্টুডেন্টদের তালিকায় ও ছিলাম এই কারণে। রেজা স্যার ছিলেন ইংরেজীর টিচার। ৫/৬-এ অবশ্য ব্যাকরণ পড়াতেন আমাদের।৭থেকে গ্রামার পড়াতেন। পছন্দ করতাম না আমরা তাকে। কারণ তিনি পড়াতেন না, শুধু করাতেন। আর বাড়ির কাজ না করলে মুরগী পজিশনে বসিয়ে মারতেন। তাই আমরা তাকে মুরগী ডাকতাম। একদিন ক্লাসের সবাইকে বাড়ির কাজ না করার জন্য মারায় সবাই খেপে যায়। হেড স্যারের কাছে অনুরোধ করা হয় রেজা স্যারের বদলে সিকদার স্যারকে ক্লাস দেওয়ার জন্য। সিকদার স্যার ছিলেন আমাদের খুব ই পছন্দের একজন স্যার। ইংরেজী খুব ই ভাল বুঝাতে পারতেন আমাদের।
স্কুলের যদি তিনজন স্যারের নাম বলতে হয় যাদের অপছন্দ করে এরকম একজন ও পাওয়া যাবেনা তাহলে সবার আগে নাম আসবে জাহিদ স্যার, ফজলুল হক স্যার এবং সালাউদ্দীন স্যারের। সালাউদ্দীন স্যার ছিলেন আমাদের শারীরিক শিক্ষার স্যার, অর্থাৎ ড্রিল স্যার। সেই মজার স্যার ছিলেন। পিকনিকে আমাদের সাথে নাচ-গান করতেন। প্রতিদিন সকালে এসেম্বলির সময় কিছু কিছু স্টুডেন্টদের ক্লাস থেকে বের করার জন্য বেত হাতে টহল দিতেন, দৌড়াতেন। মরহুম জাহিদ স্যার ছিলেন বাংলার শিক্ষক। সৃজনশীল এক্সপার্ট, ট্রেইনার। অন্যান্য স্যারদের আমাদের চুপ করাত ঘাম বের হয়ে যেত। কিন্তু স্যারের ক্লাসে আমরা সবাই চুপ থাকতাম। বাই চান্স যদি স্যারের কোন কথা মিস হয়ে যায় বা স্যারের পড়ানোর মুড চলে যায়। স্যার এতটা সুন্দর করে পড়াতেন ক্লাসে কথা বলতেই ইচ্ছা করত না কারো থেকে। ইন্টারে চিটাগাং কলেজের কামরুল স্যারের কাছে বাংলা কোচিং করতাম। আমরা ৯জন ছিলাম জাহিদ স্যারের স্টুডেন্ট। ৫/৬টা ক্লাসের পর ই উনি বুঝে ফেলেছিলেন যে ওনার ক্লাসে কয়জন জাহিদ স্যারের স্টুডেন্ট আছে। এমনকি কে স্যারের কাছে কোচিং করেছে কে করেনি সেটা পর্যন্ত নিখুত ভাবে বলে দিয়েছিলেন। তার মতে স্কুল কলেজ মিলিয়ে চট্টগ্রামের সেরা বাংলা শিক্ষকটির নাম জাহিদ স্যার। মাত্রাতিরিক্ত স্মোকিং করে লিভার পচিয়ে ফেলেছিলেন। ২০১৪/১৫তে স্যার ইন্তেকাল করেন। এতজন মানুষ আমি এখন ও পর্যন্ত আর কারো জানাজায় দেখিনি। ফজলুল হক স্যার ও ছিলেন বাংলার টিচার। ৫-এ ক্লাস টিচার ছিলেন। ৫-র পর ওনার ক্লাস পেয়েছি বলে মনে করতে পারছি না। অবশ্য ওনি লাইব্রেরীয়ান ছিলেন। আমাকে খুব পছন্দ করতেন। আমাকে ভাগ্নে ডাকতেন। ওনার বাড়ি আমার নানুর বাড়ির অইখানে ছিল কিনা।

নৌবাহিনী স্কুলে আমার গ্রুপের টিচার ছিলেন ফারহানা ম্যাম। আমার রোল ছিল ৩২১। ওনার ক্লাসে এসেই প্রথম প্রশ্ন ছিল ৩২০-৩২১ ক্লাসে আসছে কিনা। ৩২০ছিল আমার ফ্রেন্ড, মুসলিম হাইয়ের। ম্যাম আমাকে পছন্দ করতেন, কিন্তু আমার বন্ধুটিকে করতেন না। অবশ্য কারণ ও ছিল। ওনি আবার মার দিক দিয়ে আমার দূর সম্পর্কের আপু ছিলেন। এটা ফার্স্ট ইয়ারের লাস্টের দিকে জানতে পারি, যখন আমার আম্মু আর মেঝ মাম্মা আমার কলেজে আমার অবস্থা দেখতে আসে। এরপর থেকে ম্যামের আমার উপর নজরদারি আরো বেড়ে যায়। আমি আর ৩২০ কখনই একসাথে বসতে পারতাম না।ম্যাম প্রতিটা ক্লাসের পর চেক করে যেত। আর বিশেষ করে টিফিন টাইমের পর।
প্রদীপ স্যার ছিলেন সবচাইতে মজার স্যার। জীববিজ্ঞান পড়াতেন আমাদের। এবং প্রচুর মজা হত, হাসি ঠাট্টা হত। স্যারে হাসি মুখে সবাইকে বাশ দিতেন। এমনকি আমাদের কো -অর্ডিনেটর প্রবীর স্যারকে ও ছাড় দিতেন না। প্রবীর স্যার, আমার আম্মু, মেজ মাম্মা, বড় মামা যার স্টুডেন্ট ছিলেন, পদার্থবিজ্ঞান পড়াতেন। আমার আম্মু-মেঝ মাম্মাকে দেখেই চিনেছিলেন। বড় মামার নাম ধরে আস্ক করেছিলেন, তার উনার(বড় মামা)র বোন কিনা। অনেক অভিযোগ দিয়েছিলেন আমার নামে। বান্দর, চঞ্চল, ফাকিবাজ, ইবলিশ, কিন্তু শেষে আমাকে ভাল ছেলে ও ভাল ছাত্র বলেছিলেন। আমার আম্মু-মাম্মা তাতেই খুশী, যদি ও অনেক বকা খেয়েছিলাম অভিযোগের কারণে।

প্রাইভেট টিউটরের ক্ষেত্রে আমি অসম্ভব লাকি একটা ছেলে। টিঊটরের বদলে বড় ভাই পেয়েছিলাম। সুমি ম্যাম, বিধান স্যার, তপু স্যার, রাসেল স্যার, পলোক স্যার প্রত্যকেই সেরা ছিলেন একজন আরেকজনের থেকে। তবে আমার সবচাইতে প্রিয় ছিলেন রাসেল স্যার। চবিতে গণিত নিয়ে পড়তেন। অসম্ভব পরিমাণ ভাল একজন টিউটর ছিলেন। বর্তমানে উনি চট্টগ্রাম মহসিন কলেজে গণিত বিভাগের সহ-অধ্যাপক।

ম্যাক্সিমাম সময় ই স্যারদের আদর-ভালবাসা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি,জেনেশুনে কোন স্যারের সাথে বেয়াদবি করিনি কখনো। স্যারদের দোয়া ছিল বলেই এতদুর আসতে পেরেছি। আমার মরহুম নানা ভাই হাইস্কুলের হেডমাস্টার ছিলেন। তিনি একবার বলেছিলেন,স্যারের বদদোয়া নিয়ে কেউ মানুষ হতে পারে না। আমি কথাটি কখনো ভুলিনি।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:৩৯

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: স্যারদের বদ দোয়া নিয়ে কেঊ মানুষ হতে পারেন ,চরম সত্য কথা ভাই

১৪ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:৪২

কিশোর মাইনু বলেছেন: সবসময় ই কথাটি মাথায় থাকে ভাই আমার। ইনশাল্লাহ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত থাকবে।
ধন্যবাদ।

২| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৯:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো শিক্ষকেরা ভালো থাকুন সব সময়।

১৪ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১:৫৮

কিশোর মাইনু বলেছেন: আপনার দোয়া কবুল হোক।
ধন্যবাদ।

৩| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৭

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
আমাদের সময় কেউ চােইতোনা স্যারদের বদদোয়ার কারণ হতে।

২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:১৯

কিশোর মাইনু বলেছেন: এখনো কেউ চায়না ভাই।

৪| ২২ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৩:০৪

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: ভাই আপনি কই??

২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:১৮

কিশোর মাইনু বলেছেন: ফ্যামিলির বড় ছেলে তো ভাই,কোরবানে ব্যস্ত ছিলাম।
তাই আসা হয়নি খুব একটা।
তাও রিপ্লাই ও দেয়া হয়নি।
অনিচ্ছাকৃত বিলম্বের জন্য দু:খিত ব্রো।

৫| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:৪৭

মনিরা সুলতানা বলেছেন: ভালো লাগলো স্কুলের শিক্ষকদের গল্প!
চমৎকার বলেছেন আপনার নানাভাই , কথা'টা খুব'ই সত্যি।

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৩৭

কিশোর মাইনু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাল থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.