নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

“আমার কোন বিশেষ প্রতিভা নেই।আমি শুধু মনেপ্রাণে কৌতূহলী”--আলবার্ট আইনস্টাইন “ভাষা একটি মাধ্যম মাত্র জ্ঞানই আসল”--ফেরদৌসি বিকন

চক্‌চাপড়ী

সৃস্টির সকল কিছুই জানার ইচ্ছা করে স্রস্টা যেটুকু জানার অধিকার দিয়েছেন।”

চক্‌চাপড়ী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঢাকা-কাঠমুন্ডু বাস সার্ভিস।পর্যটকদের কাছ থেকে এভারেস্ট দেখার সুবর্ণ সুযোগ(প্রথম পর্ব)

১৯ শে মে, ২০১৮ সকাল ১১:০৩

ঘুরতে যাওয়া বা ভ্রমণ করা সব সময় আনন্দের।আর সে ভ্রমণ যদি হয় হিমালয় তবে আনন্দের শেষ থাকে না। আফগানিস্থান,পাকিস্থান,চীন,ভারত,নেপাল ,ভূটান ,মায়ানমার যে যেপ্রান্ত থেকেই শুরু করুন না কেন প্রায় ৩০০০ কিমি স্থান জুড়ে বিরাজমান হিমালয় আপনাকে স্বাগত জানাবে।তবে হিমালয়ের মূল দেহখানা যে দেশটিকে আঁকড়ে ধরে আছে সে হ’ল নেপাল।

চিত্রঃ-আফগানিস্থান,পাকিস্থান,চীন,ভারত,নেপাল ,ভূটান ও মায়ানমার জুড়ে বিস্তৃত হিমালয়

নেপালের মধ্যমাঞ্চলের একটি জেলা কাঠমুন্ডু।জেলার সদরদপ্তর কাঠমুন্ডু শহর এবং সেই সাথে দেশের রাজধানীও।যেমনটি বাংলাদেশের ঢাকা।

নেপাল দেশটি দরিদ্র হলেও এর প্রকৃতি তা নয়।যেন দীন=হাড়ি পিতার অপরুপ ষোড়শী ক্ণ্যা।অঙ্কুশধারিনী এই ষোড়শবর্ষীয়া বালিকার রূপ দর্শণে ছুটে আসে সারা বিশ্বের পর্যটনপ্রিয় মানুষেরা।

দৃশ্যটা ভালভাবে দেখা যায় কা্ঠমন্ডু বিমান বন্দরে।ছোট্র অথচ একমাত্র আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর।কিন্তু সারাক্ষণ বিদেশীদের পদভারে ব্যস্ততায় ঢেকে থাকে বিমান বন্দরটি।ফ্লাইটের পর ফ্লাইট নামছে আর উড়ছে।
বিদেশীদের পদভারে ব্যস্ততায় ঢেকে থাকে কা্ঠমন্ডু বিমান বন্দর

চারপাশে ভূ-বেস্টিত দেশ নেপাল।অথচ সড়ক পথে পার্শ্ব দেশের সাথে যোগাযোগের জন্য দীর্ঘকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। ২০০৫ সালের ২৯শে এপ্রিল “Sino-Nepalese agreement ” এর আওতায় তিব্বতের(চায়না) রাজধানী লাসার সাথে প্রথম সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হয় হিমালয় কন্যা নেপালের। First Nepal-Tibet bus service arrives in Lhasaঅবশ্য চায়না ভিসা জটিলতায় তা থেমে যায় এবং আনুষ্ঠানিকতা পেতে আরও কিছু সময় নেয়।

ভারতের সাথে নেপালের মানুষের নাড়ীর টান সবচেয়ে বেশি।তবুও সেই ভারতের সাথে কাঠমুন্ডুর সড়ক যোগাযোগ শুরু হয় আরও পরে।২০১৪ সালের ২৫ নভেম্বর থেকে Motor Vehicle Agreement (MVA) এর বদৌলতে।
Photo from Kathmandu Today

নেপাল অপেক্ষাকৃত দরিদ্র দেশ।কিন্তু প্রতিবেশীদের সাথে সড়ক সখ্যতায় বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে।আত্বিক সূত্রতায় বাংলাদেশ কেবল ভারতের সাথেই এ গন্ডির ষোলকলা পূর্ণ করতে পেরেছিল।সেই দৈন্যতা ঘোচাতে বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল-ভূটান আন্তঃদেশীয় চুক্তি হয়েছে ২০১৫ সালে।গত এপ্রিলের ২৩ তারিখে ঢাকা-কাঠমুন্ডু পরীক্ষামূলক বাস যা্ত্রার মধ্য দিয়ে সে সলতেয় আলোর প্রদীপ দেখা যাচ্ছে।


শিলিগুড়ির দোরগোড়ায় ফুলবাড়ী সীমান্ত দিয়ে স্বাগত জানানো হচ্ছে ঢাকা-কাঠমুন্ডু বাস ও তার যাত্রীদের


তিন দেশের পতাকা হাতে ভারতীয় শিশুরাও স্বাগত জানাচ্ছে ঢাকা-কাঠমুন্ডু বাসকে Photo from The Times of India
শুধু পাহাড়ী নয় পর্বতের দেশ নেপাল।অতএব এশিয়ার আর দশটি দেশের মত সড়কপথ অতটা মশৃণ নয় নেপালে।এজন্য আকাশপথটা এখনও সহজলভ্য।

পর্যটনপ্রিয় বাংলাদেশীদেশের কাছে পাহাড় দেখার আকর্ষণ দুর্নিবার।সরকারিভাবে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ তাজিংডং (বিজয় )। উচ্চতা ১,২৮০ মিটার (৪১৯৮.৪ ফুট) ।তাজিংডংসেখানে কাঠমুন্ডুর নিজের উচ্চতাই ১,৪০০ মিটার (৪,৬০০ ফুট)। Kathmandu সে হিসেবে বলা যায় কাঠমুন্ডু শহরটা ছোট-খাট একটা পর্বতের মাথায় দাঁড়িয়ে আছে।

কাঠমুন্ডুকে পিছনে ফেলে উত্তরমুখো দুই হাতটাকে পাখির ডানা মেলে দাঁড়ালে সম্মুখস্থ এবং দু;হাতের কব্জি অবধি ব্যাসার্ধের পুরোটাই পৃথিবী বিখ্যাত আট হাজারী (Eight-thousanders) পর্বতমালা।যাদের উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে ৮,০০০ মিটারের (২৬,৪২৭ ফুট) বেশী। এগুলোই (মোট ১৪ টি)বিশ্বের সবচেয়ে উচু উচু চুড়া বা পর্বত শৃংগ।মজার বিষয় এই আট হাজার মিটার পর্বতশৃংগের মাঝে আরও অসংখ্য ৭,০০০ মিটারের (২২,৯৬৬ ফুট) শৃংগ আছে ,


বলে এসেছি নেপালের মধ্যমাঞ্চলের একটি জেলা কাঠমুন্ডু।কিন্তু সারা বিশ্বের পর্যটকদের মধ্যমণি মাউন্ট এভারেস্ট তার অবস্থান নেপালের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে।কাঠমুন্ডু থেকে ৮৮.৬ মাইল দূরে।শুধু মাউন্ট এভারেস্ট নয় সাথে আছে কাঞ্চনজঙ্ঘা, লোৎসে, মাকালু, চো ওইয়ু, মানাসল, হিমলচুলী, গণেশ হিমল । উচ্চতায় এরা পৃথিবীর প্রথম শ্রেণীর পর্বত শৃঙ্গ।স্বভাবত কাঠমুন্ডু নেমে সবাই ছোটে পূর্বদিকে এভারেস্ট দর্শনে।

কাঠমুন্ডু থেকে পূর্বদিকে প্রায় ৩২ কিলোমিটার দূরে নাগরকোট এবং ৩০ কিলোমিটার দূরে ধূলিখেল।সমুদ্র পৃষ্ট থেকে উচ্চতা যথাক্রমে ২১৭৫মিটার(৭,১৩৫ ফুট) ও ১৫৫2 মিটার (৫,০৯১ ফুট)।

পর্যটকেরা নাগরকোট ও ধূলিখেল যায় কারণ কাঠমুন্ডুর কাছ থেকে হিমালয় দেখার এদুটোই সেরা জায়গা। সুন্দর আবহাওয়ায় এখান থেকে দেখা মেলে হিমালয়ের সাদা আইসক্রিমের মতো দেখতে অসংখ্য চূড়া।

নেপালের রাজধানী কাঠমুন্ডু থেকে দেশের প্রধান হাইওয়েটি বেরিয়ে ভক্তপুর মাড়িয়ে Banepa মোড় পার হতে গিয়ে ধূলিখেলের দিকে বাঁক নিয়েছে।নাম তার Araniko Highway. ধূলিখেলের দিকে বাঁক নিয়ে Araniko Highway এঁকেবেঁকে সোজা উত্তরে উঠে গিয়ে তিব্বতের(চায়না) বর্ডার পার হয়েছে।ধূলিখেল টু তিব্বত বর্ডার রোডটিই চায়না-নেপাল
Araniko Highway নেপালের প্রধান হাইওয়ে

নেপাল- চায়না ফ্রেন্ডশীপ হাইওয়ে

Friendship Highway.আজকের নেপালের মানুষের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র।উপরের মানচিত্রে দেখা যাচ্ছে Banepa মোড় থেতে আরেকটা Highway পূর্ব দিকে নেমে এসেছে।এটাই Banepa Bardibas Highway অন্যনাম Bishweshwar Prasad Koirala Highway(সংক্ষেপে B.P. Highway). Banepa থেকে উৎপত্তি হয়ে B.P. Highway পূর্ব-দক্ষিণ গতিতে শত মোড় পেঁচিয়ে কাকরভিটা সীমান্ত পেরিয়ে পশ্চিম বঙ্গের(ভারত)

শিলিগুড়ি হাইওয়ের সাথে মিশেছে। বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল-ভূটান আন্তঃদেশীয় চুক্তির আওতায় চলাচলকারী যানবাহনগুলোকে এই রোড বেয়েই কাকরভিটা থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে রাঝধানী কাঠমুন্ডু পৌছতে হবে।

(চলবে)

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে মে, ২০১৮ সকাল ১১:১৩

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: Excellent

১৯ শে মে, ২০১৮ দুপুর ২:৩২

চক্‌চাপড়ী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুক।

২| ১৯ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১২:১০

টারজান০০০০৭ বলেছেন: কয় টাকা ,কয় দিন লাগিবে ঝাতি বিস্তারিত জানিতে চায় !

১৯ শে মে, ২০১৮ দুপুর ২:৪১

চক্‌চাপড়ী বলেছেন: যতটুকুন জানি, ভিসা জটিলতায় আটকে আছে। রাজনৈতিক কোন ঝামেলা আপাতত নেই।বিস্তারিত জানতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।

৩| ১৯ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১:৪৬

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: সামনের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

১৯ শে মে, ২০১৮ দুপুর ২:৪৫

চক্‌চাপড়ী বলেছেন: ধন্যবাদ। আল্লাহ আপনাকে দীর্ঘজীবি করুক।

৪| ১৯ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৫

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: ভারতের অসহযোগীতার কারণে এতদিন নেপাল যাওয়া যেতনা সড়ক পথে। আরো সহজ করলে ব্যবসা বাণিজ্য সহ ভ্রমণও বাড়বে...

১৯ শে মে, ২০১৮ রাত ৯:২২

চক্‌চাপড়ী বলেছেন: আপনার সাথে ১০০ ভাগ একমত। নিজের অভিজ্ঞতায় বলছি।গত বছরের (২০১৭)ফেব্রুয়ারী মাসের ঘটনা।সড়কপথে নেপাল যাব ভেবে মতিঝিল শ্যামলী কাউন্টারে গেলাম শিলিগুড়ির বাসের টিকেট কাটতে।টিকেট কাটতে গিয়ে কাউন্টার ম্যান শিলিগুড়ি থেকে কোথায় যাব জানতে চাইলেন।ভাবলাম লোকটির অনধিকার চর্চা।স্বরণও করিয়ে দিলাম।কিন্তু কাউন্টার ম্যান প্রতি উত্তরে যে কথাটি বললেন তা ফেলে দিতে পারলাম না।নেপাল যাব বলতেই উনি বললেন “ভারতের ট্রানজিট ভিসা না পেলে কিন্তু টিকিটের টাকা কোন মতেই ফেরত দেওয়া হবে না।”শুনে একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম। সঙ্গে আমার স্ত্রীও আছে।দেখলাম খোভে দুঃখে ওর সারা মুখ কালো হয়ে গেছে। আমার এক আত্বীয় শ্যামলী কোম্পানীতেই চাকরী করেন।উনাকে ফোন দিলাম।আমার আত্বীয় উপর মহলে কথা বলছেন বলে আমার কাছে কিছুক্ষণ সময় নিলেন।

কিছুক্ষণ পর আত্বীয় ফোন করে বললেন -ভূটান গেলে ভিসা হয়ে যাবে।কিন্তু নেপালের ক্ষেত্রে ভারত ট্রানজিট ভিসা দিচ্ছে না।যাত্রী কোথায় যাবে সেটা শ্যামলীর বিষয় নয়। কিন্তু টিকিটের মূল্য যেহেতু মোটা অংকের তাই সত্যটি আগেই বলে দেয়া।

২০১৪ ও ২০১৬ পরপর দু’বার দার্জিলিং ঘুরে এসেছি।ভূটান যাওয়ার ইচ্ছা ছিল না।তাই আর ভারতের ভিসার জন্য দাঁড়ালাম না।
পরদিনই ঢাকা-কাঠমুন্ডু বিমান টিকিট কিনে দিয়ে স্ত্রীর মুখে পুনর্বার হাসি ফিরিয়ে আনলাম।

৫| ২০ শে মে, ২০১৮ সকাল ১১:০২

রাজীব নুর বলেছেন: ইচ্ছা আছে এ বছর যাবো।

২০ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৪

চক্‌চাপড়ী বলেছেন: আপনার যাত্রা শুভ হোক।

৬| ২০ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৪

কাইকর বলেছেন: লেখাটা পড়ে এখনি যেতে ইচ্ছে করছে।

২০ শে মে, ২০১৮ রাত ৯:৩৮

চক্‌চাপড়ী বলেছেন: ঘুরে আসুন, নিজের চোখে দেখলে আরও ভাল লাগবে।সাথে আর্শীবাদ করুন “সব বাধা বিপত্তি পেরিয়ে যেন ঢাকা-কাঠমুন্ডু এবং ঢাকা-থিম্পু বাস যোগাযোগ খুব তাড়াতাড়ি শুরু হয়। যেসব মহৎ ব্যক্তি বা সংস্থা এর পিছনে কাজ করছে, তাদের সদিচ্ছা যেন সফল-স্বার্থক হয়।”

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.