নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজের পোস্টের উত্তর দিতে দেরী হয় সেজন্য সরি।

কাজী ফাতেমা ছবি

সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। লেখকের অনুমতি ব্যতীত যে কোন কবিতা, গল্প, ছড়া, ছবি পোস্ট করা হতে বিরত থাকবেন।

কাজী ফাতেমা ছবি › বিস্তারিত পোস্টঃ

=গাঁয়ের মেয়েদের জীবন= (জীবন গদ্য)

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:১১



©কাজী ফাতেমা ছবি
#গাঁয়ের_মেয়েদের_জীবন_গদ্য
দিনভর কাজের ভিতরে নিজেকে ডুবালেই মানুষ ভুলে যায় তার চাহিদা, অপূর্ণতা। এখানে অবসর নেই কারো, শীত কী গ্রীষ্ম কাক ডাকা ভোরে মানুষরা জেগে উঠে আযানের সুরে। আড়মোড়া ঘুম ভেঙ্গে ওযুতে ভাসিয়ে দেয় ঘুমের যত ক্লান্তি। মাটির চুলায় লাকড়ির আগুনে টগবগ ভাতের ফেন উতলায়, চুলোর সম্মুখ বসে গৃহিনী খড় শুকনো পাতা অথবা গাছের ডাল ঠেলে দিয়ে ফের ব্যস্ত হয় ক্ষেত থেকে তুলে আনা সব্জি কাটায়। পাটায় মসলা বেটে ক্লান্ত গৃহিনীর কপালে বিন্দু সুখ ঘাম ফুটে উঠে। ধুয়া ওড়া প্রহরে চুলোর আগুনে পুড়ে যায় ক্ষিধে যত।

তৃপ্তিতে খেয়ে কর্তা আর সন্তানরা চলে যায় যে যার মত। পিছনে রেখে যায় এঁটো থালাবাটি মেঝেতে ছড়ানো ছিটানো ভাত আর গৃহিনীর জন্য আরও এক বস্তা ক্লান্তি। ব্যস্ততা সব তাকে ঘিরে হাসে অতৃপ্তির হাসি। চাপকল টিপে টিপে যেটুকু কষ্টের জল, নিমেষেই মাটি শুষে নেয় আর গৃহিনী আঁচলে ঘাম মুছে উঠে দাঁড়ায় জীবন অথবা পেটের তোষামোদকারী সব আয়োজন গুছাতে।

অতঃপর গৃহিনী আলতো হেঁটে যায় গোয়াল ঘরে, কোদাল হাতে গোবর টুকরিতে ভরে ফেলে আসে গোবরের খনিতে। হাঁস মুরগীর ঘর পরিস্কার শেষে কপালের ঘাম মুছে হালকা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চলে যায় নিরবে পুকুর পানে। দীর্ঘশ্বাস জলে ঢেলে সে ফিরে আসে।

সময় চলে যায়, সে উঠে দাঁড়ায়, বিছানার এক কোণে বসে,আয়েসে ছরতার মাঝখনে সুপারী রেখে কুটুস কাটুস শব্দে মুখে পুড়ে এক খিলি পান জর্দা চুন, চিবুতে চিবুতে ফের ব্যস্ত হওয়ার বাহানায় গিয়ে দাঁড়ায় উঠোনে। চারিদিকে চোখ বুলিয়ে এখান সেখান থেকে লাকড়ি জোগাড়ে হয় মত্ত। দুপুরে পেট আয়োজনে তাকে আবার হতে হবে ব্যস্ত।

সেই একই কাজ সেই একই আয়োজনে গৃহিনী নিজেকে ব্যস্ত রেখে খুঁজে এক পসলা অবসর। দুপুরের ক্লান্তি পুকুরে ঢেলে আটপৌরে শাড়িতে নিজেকে গুছিয়ে জায়নামাজে,দাঁড়িয়ে শোকর গুজার করে প্রভুর। অথচ এই ব্যস্ততাই তাকে ভুলিয়ে দিয়েছে অঢেল চাহিদা, অসুখ অপূর্ণতা। দুপুর শেষে রোদে বসে উকুনের চিড়ুনিতে চুল আঁচড়িয়ে দেখে নেয় কে কে তার রক্ত মাংস খুবলে খুবলে খায়। সেই ছোট প্রাণীটিকে নখে তোলে পটাস করে মারার যে কী আনন্দ তা গৃহিনীর চোখেই ভেসে উঠে।

দুপুর গড়ায় বিকেল সেই একই ব্যস্ততা। রাতের খাওয়ার আয়োজন শেষে, গৃহিনী বসে পড়ে তার ক্লান্তি কেড়ে নেওয়া সেই খাদ্যের ছাল ছাড়াতে। কেটে যায় দিন কেটে যায় রাত। তার মনের চাহিদা তার অপূর্ণতা কেউ খুঁজে না। না স্বামি না সন্তানরা। সে যার মত স্বার্থের ঝুলি খুলে হেঁটে যায় অন্য সুখ খুঁজতে। এইতো জীবন, গাঁও গেরামের জীবন। মেয়েরা বেঁচে থাকে অন্যের স্বার্থে নিজেদের ইচ্ছেগুলো সব জলাঞ্জলি দিয়ে।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:১৭

সোনাগাজী বলেছেন:



আপনি কি অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন?

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ভোর ৬:৫০

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আসলেই রক্ষা পাইছি। গ্রামের কাজে পরিশ্রম বেশি।
ধন্যবাদ

২| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:২০

নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: সুন্দর লেখা। পড়ে ভালো লাগলো...

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ভোর ৬:৫১

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন

৩| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:২৫

এম ডি মুসা বলেছেন: কথা গুলো সত্য কিন্তুু আমার মনে হয় তার জামাই তার কাজে সাহায্য করা, কিন্তুু বিনা বেতনে েএই িকাজ করে করে আসছে। আগের দিনের মানুষ এখন মেয়েরা তা করে না, তবে আমার মনেহয়! মরার আনন্দ নেই বেঁচে থাকার, তার আছে।
গত ৫ দিন আগে আমার বাসা থেকে দুই কিলো মিটার দুরে, এক নারী বিষ পানে আত্ন হত্যা করছে, তার আপন বোন থেকে টাকা পেতো তার জামাই তাকে বলছে টাকা আনতে , গিয়েছে, কিন্তুু গিয়েও বোন মনেহয় বেশি বকছে, বাসায় আসার পর জামাই বকছে,
অবলা নারী আর সহ্য করতে পারে নাই........ মারা গেছে ঘটনা আমি সামান্য শুনছি তবে একদিন ব্লগ আকারে দেব।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:২৭

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: জামাইরাও ব্যস্ত থাকে হাল গেরস্থ নিয়ে। তবে মেয়েদের উপর বেশি দায়িত্ব পড়ে যায় দেখলাম।
কাহিনীটি ব্লগ আকারে দিয়েন, অপেক্ষায় রইলাম

৪| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৩২

এম ডি মুসা বলেছেন: তবে গ্রামের চিত্র গুলো যদি আপনি এক জনের উপন্যাস আকারে লেখেন আশা করি মনে রাখবে। এটা একট জনপ্রিয় লেখা বই হবে।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:২৪

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: লিখতে তো ইচ্ছে করে কিন্তু সুন্দর করে লিখতে পারি না যে। ধন্যবাদ ভাইয়ভালো থাকুন

৫| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: ভাগ্যিস আপনি গায়ের মেয়ে না।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:২৪

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: অবশ্যই আমি গ্রামের মেয়ে।

৬| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:৪৯

অনামিকাসুলতানা বলেছেন: লেখা ভাল লেগেছে।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:২৪

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপু। ভালো থাকুন।

৭| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: উকুন মারার দৃশ্যটা চমৎকার ফুটে উঠেছে।
"দীর্ঘশ্বাস জলে ঢেলে সে ফিরে আসে" - ছোট্ট একটি বাক্যে কি গভীর একটা বেদনার প্রকাশ ঘটেছে!
গ্রামীন জীবন খুব কঠিন জীবন, বিশেষ করে নারীদের জন্যে। সে জীবনের একটি সুন্দর খণ্ডচিত্র এঁকেছেন আপনার কথার ক্যানভাসে।
সুন্দর পোস্টে তৃতীয় প্লাস। + +

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:০৫

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আসলে গ্রামেই বড় হয়েছি। চাকুরীর সুবাদে ঢাকায় আসা। সেই পর্যন্ত দেখেছি গ্রামের মা চাচীদের ব্যস্ততা। বিকেলে যা একটু পান খাওয়ার সময়টা ছিল তাদের। সারাদিন ব্যস্ত একেক ঋতুতে একেক কাজ। তাছাড়া লাকড়ির চুলার লাকড়ি যোগাড় করাও কষ্টসাধ্য ব্যাপার ছিল । আমরা পড়াশুনার ফাঁকে কেবল ঘর গুছিয়েছি, উঠান ঝাড়ু দিয়েছি এই যা। সব কাজই কঠিন গ্রামীণ জীবনে।

ধন্যবাদ ভাইজান
সুন্দর মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
ভালো থাকুন সব সময়।

৮| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯

মায়াস্পর্শ বলেছেন: উনারা সন্ধ্যার পরেই ঘুমিয়ে পরেন। সারাদিন প্রচুর পরিশ্রম করেন।

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৯

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: এখন আর ঘুমায় না কেউ
সিরিয়াল দেখে অথবা ইউটিউব

ধন্যবাদ আপনাকে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.