নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূরে আদম

রুয়েটিয়ান,ভাল সবকিছুর সাথে থাকতে চাই সবসময়।

নূরে আদম › বিস্তারিত পোস্টঃ

অবুঝ-২

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৩৩

--এই যে, এই যে ভাই।
--আমাকে বলছেন?
--হ্যাঁ। আপনার নাম কি?
নাম বলব কিনা বুঝতে পারছি না। আমার সামনে যিনি দাড়িয়ে আছেন তার পোশাক বলে তিনি পুলিশ তবে বয়স আর স্বাস্থ্য দেখে পুলিশ মনে হচ্ছে না। সিনেমায় দেখা পুলিশের সাথে তার ভুঁড়ি কিংবা চেহারার কোন মিল নেই। বরং তাকে বড়জোর ধনী নায়িকার বাড়ির মালির ক্যারেক্টার দেয়া যেতে পারে; কোন ডায়লগ থাকবে না শুধু ঘুরে ফিরে গাছে পানি দেবে কিংবা “সেলাম আপামনি” টাইপের একটা ডায়লগ দেয়া যেতে পারে।
--কি ব্যাপার নাম বলছেন না কেন?
--শালিক আহমেদ।
--কোন মানুষের নাম “শালিক” হয় নাকি?
--জানিনা, তবে আমার বেলায় হয়েছে।
--কি করেন?
--ভার্সিটিতে পড়ি।
--আইডি কার্ড দেখান।
পুলিশ ভাই আমার আইডি কার্ডের দিকে চোখমুখ কুঁচকে তাকিয়ে আছেন। মনে হচ্ছে তিনি ধাঁধাঁয় পরে গেছেন। সেখানে সত্যি সত্যি “শালিক আহমেদ” লেখা রয়েছে। ভুলটা আমার বাবা-মা করেননি, ভুলটা করেছেন আমাদের হাই ইস্কুলের কেরানি বিরেন স্যার। তিনি ক্লাস নাইনে রেজিস্ট্রেশন ফরম পূরণের সময় ইংরেজিতে আমার “শাকিল” নামকে “শালিক” করে দিয়েছিলেন। আবাক বিষয় হল আমাদের ইস্কুলে শিক্ষকের সংকট থাকায় তিনি সিক্স এবং সেভেনের ইংরেজি পড়াতেন।
তবে স্যারের সেই শালিক নাম শুধু সার্টিফিকেটেই রয়ে গেছে। বাড়িতে এবং ক্যাম্পাসে সবাই আমাকে শকিল নামেই চেনে। মাজার ব্যাপার হল কেউ এই ব্যাপারটা এখনও ধরতে পারে নি, আইডি কার্ড দেখেও না। তবে এই প্রথম আসল নাম বলে মনে হয় নিজেই ধরা খেয়ে গেছি।
--আপনার নামটা বেশ ইন্টারেস্টিং।
--থাঙ্ক ইউ।
--কোথায় যাচ্ছেন?
--শান্তার বিয়ের গিফট কিনতে।
--শান্তা কে?
--আছে একজন।
--ও আচ্ছা। সরি ভাইয়া আপনাকে কষ্ট দিলাম। ভালো থাকবেন, আবার দেখা হবে শালিক ভাই।
পুলিশ ভাই একটা হাসি দিয়ে উল্টো হাটা দিলেন। আমি অবাক হলাম। জানতাম না পুলিশের হাসি এত সুন্দর হতে পারে, জানতাম না পুলিশও সরি বলতে পারে। এখন মনে হচ্ছে তাকে মালির ক্যারেক্টার থেকে প্রোমোশন দিয়ে নায়কের বন্ধুর ক্যারেক্টার দেয়া যেতে পারে।
আমি পুলিশ ভাইকে মিথ্যা বলেছি। আমি কোন গিফট কিনতে যাচ্ছি না, তবে শান্তার বিয়ের ব্যাপারটাও মাথা থেকে সরাতে পারছি না। জানি না কেন! অবশ্য আমি আরও অনেক কিছুই জানি না। জানি না কেন শান্তা আমকে কারনে অকারনে ফোন করে জ্বালাত, জানি না কেন একটা মেয়ে তার গায়ে হলুদের দিনে ফোনে ফুঁপিয়ে কাঁদে, জানিনা কেন তার বিয়েতে এক মুহূর্তের জন্য হলেও যেতে বলে, জানি না কিভাবে এত মানুষ থাকতে কেবল শান্তাই আমার আসল নামটা জানে আর কেনইবা ঐ নামে ডাকে। জানি না, জানার চেষ্টাও হয়ত করিনি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.