নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্নীল ভবিষ্যতের পানে চেয়ে...

দার্শনিক

কোন এক জ্যোৎস্না রাতে, কাঙ্ক্ষীত সেই স্বপ্নের আবেশে মাছটি উড়ে চলে, আলোকিত শুভ্র নীল দিগন্তের পানে....তাঁরই সন্নিধানে। মাছটি স্বপ্নে উড়ে যায়, স্বপ্ন সত্যির অপেক্ষায়....

দার্শনিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বর্তমান মুসলিম উম্মাহর বিভক্তি এবং ঐক্যের উপায়

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:১৫

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

শুধু মুসলিম নিক এর এক ব্লগার ভাই এর পোস্টটিতে কমেন্ট করছিলাম। কমেন্ট করতে করতে মনে হল, এই বিষয়ে একটা ডেডিকেটেড ব্লগ লিখে ফেলাই ভাল। তাছাড়া ভাই নিজেই বলেছেন সময় নিয়ে ব্লগ লিখলে সেটা পরবর্তী সময়ে কাজে লাগতে পারে। তার সেই কথাতে অনুপ্রাণিত হয়েও এই ব্লগটি লেখা (এজন্য "শুধু মুসলিম" ভাইকে ধন্যবাদ) । যাই হোক, মূল আলোচনায় আসা যাক, শুরু করা যাক ভাই এর বিষয়টি নিয়েই। ভাই এর ব্লগটিতে নিঃসন্দেহে খুবই জ্ঞানগর্ভ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আমি সেই জ্ঞানগর্ভ আলোচনার গর্ভে প্রবেশ করলে আমাকে আর খুজে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। আমি বরং একটু দূর থেকে বিষয়টিকে দেখি যা নিজেও ভাল বুঝি এবং যাতে তা অন্যান্যদেরও বোঝার কারণ হয়। ভাই এর ব্লগটি পড়লে যে কেউ এটা ধরতে পারবেন, ভাই হাদীস সহীহ-যয়ীফ নিয়ে বিভিন্ন আলেম যে বিভিন্ন সিদ্ধান্তে উপনীত হন এই বিষয়টি নিয়ে লিখেছেন। তিনি তার ব্লগটিতে এধরণের মত অনৈক্যের মাঝে কিভাবে সাধারণ মানুষ সমাধানের পথ বেড় করবে তার একটি পথ বাতলে দিয়েছেন। কিন্তু তারপরেও হাদীস যয়ীফ প্রমাণ করা, যয়ীফের সপক্ষে দলিল-প্রমাণ পেশ করা ইত্যাদি বড়ই জটিল প্রক্রিয়া। আমি একটি সহজ প্রক্রিয়ার কথা উল্লেখ করব, কিন্তু তার পূর্বে এই অনৈক্যের কারণ নিয়ে একটু চিন্তা করা যাক। কারণ মূলত ইসলামের মাঝে বিভক্তি। রাসূল(স) এর স্পষ্ট হাদীস আছে যাতে তিনি(স) বলেছেন, আখেরি যামানায় মুসলমানরা ৭৩ দলে ভাগ হবে। মুসলমানদের আজ অসংখ্য দলে উপদলে বিভক্তি প্রমাণ করে এটাই সেই যামানা যার কথা রাসূল(স) বলেছিলেন। কিন্তু ইসলাম আল্লাহর মনোনীত দ্বীন, তাই মুসলিম উম্মাহকেও আল্লাহতাআলা হেফাযত করবেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কিভাবে হেফাযত করবেন? যুগের আলেমদের মাধ্যমে? পীরদের মাধ্যমে? কোন রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে? নাকি নামায, রোজার তবলীগের মাধ্যমে?



হাদীস বলে, রাসূল(স) বলেছেন, "মানুষের উপর এমন এক সময় আসিবে, যখন ইসলামের মাত্র নাম এবং কোরআনের মাত্র অক্ষরগুলি অবশিষ্ট থাকবে। তাহাদের মসজিদগুলো হবে বাহ্যিক আড়ম্বরপূর্ণ কিন্তু হেদায়েতশূণ্য থাকিবে। তাহাদের আলেমগণ আকাশের নিম্নস্থ সকল সৃষ্ট জীবের মধ্যে নিকৃষ্টতম জীব হইবে। তাহাদের মধ্য হইতে ফেৎনা-ফাসাদ উঠিবে এবং তাহাদের মধ্যেই উহা ফিরিয়া যাইবে।" (বায়হাকী, মিশকাত)



বর্তমান যুগ যে সেই যুগ তাতে কি কারো সন্দেহ আছে?



এই যুগে কোরআনের কোন অভাব নেই, অসংখ্য কোরআনের ছাপা হচ্ছে, আর ইন্টারনেটে ফ্রীতে কোরআন শরীফ পাওয়া যায়, কিন্তু বুঝে শুনে, দোআ করে, চিন্তা করে, গুরুত্বের সাথে, নিয়মিত অর্থসহ কোরআন খুব কম মুসলমানই পড়ে। মসজিদগুলোও আজ সেরকম আরম্বড়পূর্ণ, কিন্তু বর্তমান যুগে মুসলমানরা যেসব নীতিগর্হিত কাজ করছে (উদাহরণস্বরূপ বর্তমান ছাত্রশিবিরের কথাই চিন্তা করুন) তাতে প্রমাণিত উক্ত মসজিদগুলোর নামায কোন হেদায়েতের কারণ হচ্ছে না। আর যামানার আলেমরা যে কত ভাল তা একটু আন্তর্জাতিক অপরাথ ট্রাইবুনালের দিকে তাকালেই যে কেউ ধরতে পারবেন।



তারপরও আমি কল করেছিলাম islamiccallcenter স্কাইপ আইডিতে (http://www.ourholyquran.org/ এই ওয়েবসাইট এর সূত্রে প্রাপ্ত), প্রশ্ন করেছিলাম আহমদীয়া মুসলিম জামাতের প্রকাশিত ক্রোড়পত্রের সূত্র ধরে, ইমাম মাহদীর আগমন সম্পর্কে, মুফতি সাহেব বললেন, “এখনও মুসলমানদের অবস্থা খারাপ, কিন্তু ইমাম মাহদীর আগমনের সময় যখন হবে, তখন আরো অনেক অনেক করুন অবস্থা হবে" (এত করুন যেন ভাষায় প্রাকাশ করা সম্ভব না)।



যাই হোক, রাসূল(স) এর উক্ত হাদীস বলে মুসলমানদের মধ্যে আখেরি যামানায় সব কিছুই থাকবে, নামায, মসজিদ, কোরআন, আলেম, পীর সবই, কিন্তু এমন একটা বিষয়ের অভাব থাকবে যার কারণে এতকিছুর সবই অর্থহীন হয়ে যাবে। সেটা কি?



সূরা জুমুয়ার প্রথম দিকের আয়াতগুলোর তফসিরে রাসূল(স) এর উত্তর দিয়েছিলেন এভাবে, “ঈমান সুরাইয়া নক্ষত্রে চলে গেলেও এদের (সালমান ফারসির বংশের/পারস্য বংশের) মধ্য থেকে এক বা একাধিকজন তা ফিরিয়ে আনবে। (বুখারি, কিতাবুত তফসির)



অর্থাৎ সব থাকলেও অভাব হবে ঈমানের। আর উপরিউক্ত আলোচনায় প্রমাণিত জাগতিক কোন ব্যক্তির (তা তিনি 'আপনার জিজ্ঞাসা'র আলেম হোন, তফসিরুল কোরআন মাহফিলের বক্তা হোন, অথবা শান্তির চ্যানেলের স্কলার হোন) মাধ্যমে এই ঈমান পৃথিবীতে পুন:প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। এই ঈমান ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব ইমাম মাহদী(আ) এর, কারণ হাদীস শরীফে তাঁকে হাকামান আদলান (প্রজ্ঞাময় ও ন্যায়বিচারক) বলা হয়েছে। প্রতিশ্রুত ইমাম মাহদী(আ) এর জামাতের শিক্ষা এটাই, কোন হাদীস সহীহ/জয়ীফ তা যাচাই করার একমাত্র নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হচ্ছে সেই হাদীসকে কোরআনের শিক্ষার কষ্টিপাথরে যাচাই করা। কারণ "ইহা সেই কিতাব যাতে কোন সন্দেহ নেই, যা মুত্তাকীদের জন্য হেদায়েত"

অর্থাৎ সহজ সূত্র, যদি কোন হাদীস কোরআনের কোন শিক্ষার স্পষ্ট বিরোধী হয়ে যায় সে হাদীস যয়ীফ আর যেটা বিরোধী হয় না সেটা আলেমদের রায়ে যয়ীফ হলেও তাকে যয়ীফ বলা উচিৎ না (যতক্ষণ পর্যন্ত তা কোরআনের কোন শিক্ষার বিপরীত প্রমাণিত না হয়)।



আমার পোস্টের হেডিং দিয়েছিলাম, “বর্তমান মুসলিম উম্মাহর বিভক্তি এবং ঐক্যের উপায়" তাই এই সম্পর্কে এখন কিছু বলা উচিৎ, আপনারা হয়তো এতক্ষণে আন্দাজ করে ফেলেছেন আমি কোন দিকে বিষয়টি নিব। হ্যা, ইমাম মাহদী(আ) কে না মানা পর্যন্ত এই অনৈক্য বিরাজমান থাকবে। আহমদীয়া মুসলিম জামাতের প্রতিষ্ঠাতাই সেই পারস্য বংশীয় প্রতিশ্রুত মসীহ ও মাহদী। যতদিন মেজরিটি মুসলিমরা ইমাম মাহদীর হাতে বয়াত গ্রহণ না করবে ততদিন এই ফিৎনা ফ্যাসাদের রাজ্য কায়েম থাকবে। বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা রাসূল(স) এর বানীতেই স্পষ্ট, তিনি(স) বলেছেন, "যখন তোমরা তার(ইমাম মাহদীর) সংবাদ পাবে, তখন তার হাতে বয়াত করিও, যদি বরফের পাহাড়ে হামাগুরি দিয়েও যেতে হয়। নিশ্চই তিনি আল্লাহর খলীফা আল-মাহদী" (সুনানে ইবনে মাজা - বাব খুরুজুল মাহদী)



আল্লাহ আমাদের সবাইকে প্রতিশ্রুত মাহদী(আ) এর সত্যতা উপলব্ধির তৌফিক দান করুন, তাঁর(আ) এর হাতে বয়াত গ্রহণ করার সৌভাগ্য দান করুন। আমীন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.