নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

“Peace comes from within. Do not seek it without.” ― Gautama Buddha

আলোর_পথিক

এখন সময় এসেছে না বলা কথা গুলো বলে বধীর মানুষের বধীরতা ঘোঁচানো, এখন সময় এসেছে আলোর বাঁধ ভাঙ্গার। যে আলোয় অন্ধকারগামী মানুষ চলতে শিখবে। আমি ভীতু, আমার গলার স্বরও নরম। আমি বলতে সাহস করবনা বললেও কেউ শুনতে পাবেনা। যাদের সাহস আছে, যাদের গলা উঁচু আছে তাদেরকে সমবেত স্বরে বলতে হবে। আলোর বাঁধ ভেঙ্গে দাও! অন্ধকারকে হটাও!

আলোর_পথিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাঁধ ভাঙ্গা আলো

১২ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:২২

অখ্যাত হবার সুবিধা নিয়ে কিছু লেখা-লেখি করা যেতেই পারে। সমস্যা হলো অ-স্পর্শকাতর মানুষজনদের স্পর্শকাতরতা নিয়ে। অন্যভাবে বলতে গেলে কিছু অনুভূতিহীন লোকের অতি-অনুভূতি নিয়ে। সাধারণত: সমাজে কিছু মানুষকে দেখা যায় যারা যাদের অসুবিধাগুলোকে সুবিধামত সময়ে সুবিধাজনক ভাবে ব্যবহার করে দীর্ঘ মেয়াদী সুবিধা ভোগ করে থাকে। অনুরুপভাবে অখ্যাত হওয়া সুবিধা নিয়ে বিখ্যাত হবার সুবিধা নেওয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে অসুবিধা হলো ভয়ের

অখ্যাত হবার সুবিধা নিয়ে হয়তো কখনও কখনও বিখ্যাত হওয়া যেতে পারে, ক্ষেত্র বিশেষে অ-স্পর্শকাতর মানুষের অতিস্পর্শকাতরতার সুবিধা নিয়ে পরিচিতি পাওয়া যেতে পারে, আবার কিছু অসুবিধাকে সুযোগমত ব্যবহার করে দীর্ঘ মেয়াদী সুবিধা পাওয়া, সবই হতে পারে। শুধুমাত্র ভয় কখনও সাহসের কারন হয়না। বরং এক্ষেত্রে উপরের বৈশিষ্ট্যগুলোর বিপরীত ভূমিকা পালন করে থাকে। কারণ ভীতু লোক ভীতু লোক দেখেও ভীতু হয়ে থাকে।
আমি মানুষ হিসাবে দ্বিতীয় অনুচ্ছেদের শেষ বাক্যের বৈশিষ্ট্য বহনকারী ব্যক্তি। আমি সবসময়ই মাত্রারিক্ত ভীতু লোক দেখেও অতিমাত্রায় ভীতু হয়ে থাকি। এখন প্রশ্ন আসতে পারে সাহসী লোক দেখে তাহলে কি করি? উত্তরটা খুব সহজ, সাহসী লোক দেখে ভীতু হবার কোন সুযোগ থাকেনা। এই ভীরুতা থেকে কখন কখনও সাহসী হবার চেষ্টা করি বটে কিন্তু সেই চেষ্টাও ভীতির কারণ হয়ে থাকে।
উপরোক্ত তিনটি অনুচ্ছেদকে অর্থহীন মনে করছেন? না, ব্যাপারটা আমার প্রেক্ষাপটে অর্থহীন নয়। উপরোক্ত অনুচ্ছেদগুলোর মাধ্যমেইতো এতক্ষণ ধরে নিজেকে সাহস দিলাম দেখি তাতে কোন সাহস হয় কি না? প্রথম অনুচ্ছেদের প্রথম বাক্যে ফিরে যাই। অখ্যাত হবার সুবিধা নিয়ে কিছু লেখা যেতেই পারে।
সাধারণ লক্ষ্য করে দেখি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ব্যক্তি বক্তব্য দিয়ে থাকেন। যারা বক্তব্য দিয়ে থাকেন তাদের নামের শুরুতে প্রথিতযশা, বিখ্যাত বক্তা ইত্যাদি অমূলক শব্দগুলো না বসালেও বোঝা যায় তারা বিখ্যাত বা প্রতিথযশা হয়ে থাকতে পারেন। কারন সেটা বোঝা যায় তাদের বক্তৃতায় বলা বাক্য শুনে নয়; বক্তৃতায় না বলা বাক্য জেনে বা অনুধাবন করে। যেহেতু তারা সমাজের গুরুত্বপূর্ণ চেয়ারগুলো অলংকৃত করে থাকেন সেহেতু তাদের এমন কিছু বলতে নেই যা বল্লে তাদের সমাজ কলঙ্কিত হবে। বিখ্যাত হওয়া যেহেতু বিরাট জ্ঞানের ব্যাপার সেহেতু জ্ঞানী হিসাবে সমাজের প্রতি বিরাট একটা দায়বদ্ধতা থাকতেই হয়। তা না হলে জ্ঞানী কিসের? সেই দায়বদ্ধতা থেকেই বক্তৃতায় অনেক কিছু না বলতে হয় বা বলা থেকে বিরত থাকতে হয়।এই জন্যই তো বলা হয়ে থাকে জ্ঞানী লোকে কথা কম বলে। আমার বলার ক্ষেত্রে বিখ্যাত হবার বিড়ম্বনা নেই কিন্তু ভীরুতার চরম সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
মাঝে মাঝে আপনি যদি আমার মত স্থুল বুদ্ধির মানুষ হয়ে থাকেন তাহলে এই পরামর্শ অনেক শুনে থাকবেন যে, সব কথা সবখানে বলতে নেই। আমাকে এই পরামর্শ খুব বেশি শুনতে হয়না। শুনতে হয় তখন যখন জ্ঞানীমানুষগণ আমার প্রতি স্নেহপরবশ হযে সামান্য ভুল করে থাকেন অর্থাৎ স্নেহপূর্ণ ভুলবশত: কোন জ্ঞানী ব্যক্তি যদি আমাকে সামান্য কিছু বলার সুযোগ দিয়ে থাকেন তখনই আমাকে উপরোক্ত পরামর্শ শুনতে হয়।
জ্ঞানীলোকজন জ্ঞানের কারণে বলা থেকে বিরত থাকছেন আর আমার মত স্থুলবুদ্ধিসম্পন্ন লোকজন ভীতির কারণে বলা থেকে বিরত থাকছে। অনেক কিছু বলা হচ্ছে কিন্তু বলা হচ্ছেনা কিছুই। বলা হচ্ছেনা বলেই মানুষের শ্রবণ শক্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বধির লোকগুলো যখন অন-অভ্যস্ততার কারণে উচ্চ আওয়াজী কথা শুণে থাকে তখন সেগুলো সহ্য করা হয় না। যারা বলে তাদের কেউ সহ্য করা হয়না। জ্ঞানী ব্যক্তিগণ না বলে বলে শ্রবণকারীদের বধীরতা বাড়িয়ে চলিয়েছেন, ভীত ব্যক্তিরা না বলে বলে তাদের বলার সাহস একদিকে যেমন নষ্ট করেছে অন্যদিকে তেমনি শ্রবণকারীদের বধীরতাও বাড়িয়ে চলেছেন।
একটা সময় আমার বিশ্বাস ছিলো এই সমাজে যারা আলোকিত মানুষ বলে পরিচিত তাদের দায়িত্ব হলো অন্ধকারগামী মানুষদেরকে আলোর পথ দেখানো, এখন দেখি তারা তাদের আলোগুলো নিভিয়ে অন্ধকারগামী মানুষের অন্ধকারে যাওয়া নেতৃত্ত্ব দিয়ে থাকেন। যে ব্যক্তি কখনও আলো দেখেনি তাকে হঠাৎ করে আলোয় নিয়ে আসলে আলোক রশ্মি তার রেটিনা গ্রহণ করতে পারবে না সেটাই স্বাভাবিক। একটু ধৈর্য্য ধরিয়ে তাকে আলোয় রাখলে দেখবেন তিনি চমৎকারভাবে আলোয় হাটছেন। কিন্তু সমাজ আজ জ্ঞানী ও ভীতু লোকের ভারে নূজ্য, জ্ঞানীরা সব সত্য কথা সবখানে বলতে নেই বলে বলেনা, ভীতুরা জানলেও ভয়ে বলেনা। জ্ঞানী ও ভীতু লোকের এই অর্থবহ ভূমিকায় সমাজে বধীর ও অন্ধকারগামী মানুষের সংখ্যা দিন দিনি ভয়াবহ গতিতে বেড়ে চলেছে।
সমাজে অনেককে দেখা গেছে যারা আলোর পথযাত্রী, অন্ধকারগামীরা তাদেরকে টিকতে দেয়নি। আলোকিত মানুষগুলোর নীরবতার নির্মমতা তাদেরকে টিকতে দেয়নি, তাদের বাঁচতে দেয়নি। ভীতুদের সম্পর্কে কিছু বলার নেই।
এখন সময় এসেছে না বলা কথা গুলো বলে বধীর মানুষের বধীরতা ঘোঁচানো, এখন সময় এসেছে আলোর বাঁধ ভাঙ্গার। যে আলোয় অন্ধকারগামী মানুষ চলতে শিখবে। আমি ভীতু, আমার গলার স্বরও নরম। আমি বলতে সাহস করবনা বললেও কেউ শুনতে পাবেনা। যাদের সাহস আছে, যাদের গলা উঁচু আছে তাদেরকে সমবেত স্বরে বলতে হবে। আলোর বাঁধ ভেঙ্গে দাও! অন্ধকারকে হটাও!

আলমগীর কবির
4/7/2015 12:19:44 PM

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.