নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

“Peace comes from within. Do not seek it without.” ― Gautama Buddha

আলোর_পথিক

এখন সময় এসেছে না বলা কথা গুলো বলে বধীর মানুষের বধীরতা ঘোঁচানো, এখন সময় এসেছে আলোর বাঁধ ভাঙ্গার। যে আলোয় অন্ধকারগামী মানুষ চলতে শিখবে। আমি ভীতু, আমার গলার স্বরও নরম। আমি বলতে সাহস করবনা বললেও কেউ শুনতে পাবেনা। যাদের সাহস আছে, যাদের গলা উঁচু আছে তাদেরকে সমবেত স্বরে বলতে হবে। আলোর বাঁধ ভেঙ্গে দাও! অন্ধকারকে হটাও!

আলোর_পথিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

এ হত্যাগুলো রাজনৈতিক নয় সাংস্কৃতিক

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৫২

ভূমিকা :
আজ ০৪-১১-২০১৫ তারিখে সকাল নয়টা পর্যন্ত কোন বাংলাদেশি টিভি চ্যানেলগুলোতে কোন প্রকার ব্রেকিং নিউজ দেখতে পেলাম না। কোন প্রকার ব্রেকিং নিউজ না দেখে দিন-শুরু করতে পারা মানে একটু ভালভাবেই শুরু করা। তাছাড়া আজকে যতটুকু সংবাদপত্র পড়েছি তাতে এখনও পর্যন্ত ব্রেকিং নিউজ হবার মত কোন নিউজ পায়নি। এটা টিভি চ্যানেল ও সংবাদ মাধ্যমের জন্য একটু মাথা ব্যথার কারণ বটে। তবে আমরা যারা অতি সাধারণ জনগণ, যাদের দেশের স্বার্থ নিয়ে খুব একটা ভাবনা থাকেনা, আবার দেশের দুরবস্থাকে কেন্দ্র করে সুবিধা পাবারও সুযোগ থাকেনা তাদের জন্য দিনের শুরুটা ভাল তাতে কোন সন্দেহ নেই। তবে কয়েকদিনের খুনো-খুনির প্রেক্ষাপট খুব একটা ভাল থাকার সুযোগ দিচ্ছে না। একের পর এক যখন ব্লগারদের হত্যা করা হচ্ছে তখন পারিবারিক সেন্সরশীপ থাকুক অথবা ভীরুতা থাকুক সবকিছুকে উপেক্ষা করে লেখার একটা তাগিদ এমনিতেই চলে আসে। অন্যথায় বিবেকের কাঠগড়ায় নিজের মনুষ্যত্বের ফাঁসি অবধারিত। সেখানে জীব-তাত্ত্বিক ঝুঁকি কিছুটা না হয় নিলাম। যদিও অতিশখের প্রেম থেকে সৃষ্ট শখ অর্থাৎ লেখার শখে নেতিবাচক কোন কিছু লিখতে হোক সেটা আমি কখনও চাইনা। অবশ্যই ভীরুতার সর্বোচ্চ শৃঙ্গে আহরণ করায় আমার লেখা-লেখিতে ঝুঁকি কিছুটা কম থাকে। অন্যদিকে স্ত্রী’র প্রহরতার কারণে লেখাগুলো আমার জন্য নিরাপদও। সঙ্গত কারণেই সমাজ সংস্কৃতি পরিবর্তনে আমার লেখগুলোর ভুমিকা মোটা-মুটিভাবে নিষ্ক্রিয় বলা যায়। কিন্তু যখন শুধুমাত্র ভিন্ন মতের কারণে এতগুলো মানুষ হত্যা করা হচ্ছে তার জন্য সর্বোচ্চ নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে লিখতে হলেও কিছু একটা লেখা উচিৎ। তাই সামান্য এই প্রচেষ্টা....।



ব্লগার ও নাস্তিক
যাদেরকে হত্যা করা হয়েছে তারা মুলত (হুমায়ুন আজাদ ব্যতীত)সকলেই ব্লগার বা/এবং লেখক। ব্লগার শব্দটি প্রাচীন ধর্মীয় শাস্ত্রবিধির প্রতি অন্ধ বিশ্বাস শ্রেণীর বদৌলতে ইতিমধ্যে একটা ব্র্যান্ডিং ভ্যালু পেয়ে গেছে। একই সাথে তাদের বদৌলতে ব্লগার আর নাস্তিক শব্দ দুটি এখন একই কক্ষপথে ঘোরা-ঘুরি করছে। সেই কক্ষপথের বাজারজাতকরণের দায়িত্বেও আছেন ঐ বিশেষ শ্রেণীর বিশ্বাসীগণ। যদিও এটা নিয়ে নাস্তিক বা ব্লগার কারওর মাথা ব্যথা নেই। হুমায়ুন আজাদ, অনন্ত বিজয় দাশসহ, ওয়াশিকুর রহমান বাবু, অভিজিৎ রায়, আরিফ রায়হান দ্বীপ, জাফর মুন্সি, রাজীব হায়দার শোভন, জগৎজ্যোতি তালুকদার ও জিয়াউদ্দিন জাকারিয়াসহ নিহত মানুষগুলো বিশেষ শ্রেণীর দৃষ্টিতে নাস্তিক বা/এবং ব্লগার।

একশ বিশ কোটিতে দশ জন
উল্লেখ্য ব্যক্তিদের নাম, ঠিকানা, রাজনৈতিক মতাদর্শ, পেশা বয়স প্রায় সবকিছুতেই ভিন্নতা রয়েছে। সম্ভবত শুধুমাত্র অবিশ্বাসের ক্ষেত্রে কিছুটা অভিন্নতা রয়েছে। সেটা হলো ধর্মীয় অবিশ্বাস, যার সাথে এই শ্রেণী মানুষের মতে পার্থিব ও পরলৌকিতার কোন সম্পর্ক নেই। তবে যদি পরলৌকিক কোন সম্পর্ক থেকেই থাকে সেই দায় তো র্ধম অবিশ্বাসীদের, ধর্ম বিশ্বাসীদের নয়। তাহলে বোঝায় যায় শুধুমাত্র একটা বিশেষ বিশ্বাসের কারণেই এতগুলো হত্যাকান্ড। যদি সেটাই হয়ে থাকে তাহলে সারা বিশ্বে এখন যত সংখ্যক মুসলমান আছে প্রায় তত সংখ্যক ধর্মে অবিশ্বাসী মানুষও রয়েছে। ধর্মে অবিশ্বাসীগণ প্রায় সকলেই ধর্মে বিশ্বাসীগণকে কটু কথা বলে থাকেন যেমনি ভাবে ধর্মে বিশ্বাসীগণ অবিশ্বাসীগণের ক্ষেত্রে করে থাকেন। যেহেতু অবিশ্বাসীগণ ধর্ম বিশ্বাসের কারণে কোন বিশ্বাসীকে খুন বা হত্যা করেনা সেহেতু তাদের নিয়ে খুব একটা কিছু বলার থাকে না। কিন্তু অনেক বহু ক্ষেত্রে দেখা গেছে বিশ্বাসীগণ কর্তৃক অবিশ্বাসীগণকে খুন করা হয়েছে। যদি বিশ্বাসহীনতার কারণে খুনই করতে হয় তাহলেতো খুনীদের দায়িত্ব অনেক বেড়ে যায়। তাদেরকে প্রায় একশত বিশ কোটি লোক খুনের দায়িত্ব নিতে হয়। একশত বিশ কোটির মধ্যে মাত্র নয় দশজনকে খুন করা এটা বোধ হয় চরম দায়িত্ব-জ্ঞানহীনতা।

খুন গুলো কেন?
কেন খুনগুলো হচ্ছে সেটা বুঝতে শুধু মাত্র রাজনীতিবীদদেরই কষ্ট হচ্ছে আর কারও নয়। তাই কারণে অকারণে রাজনীতিবীদগণ এই খুন গুলোর দায়িত্ব একে অপরের ঘাড়ে চাপাচ্ছে। উপরের অনুচ্ছেদের আলোকে এইটুকু বলা যায় খুনগুলো কোনভাবেই শুধুমাত্র রাজনীতির মত সঙ্কীর্ণ কারণে হচ্ছে না। এর পেছনে রয়েছে বৃহত পরিসরের ধর্মীয় কারণ। ধর্ম আর বিশ্বাস যেহেতু সম্পূরক শব্দ সেহেতু এই সকল হত্যার পেছনে বিশ্বাস শব্দটীও ঘোরা-ঘুরি করছে। বিপদটা এখানেই। ধর্মের যৌক্তিকতা আর ধর্ম বিশ্বাসের যৌক্তিতা দু’টি ভিন্ন বিষয়। ধর্মের যৌক্তিকতা বিজ্ঞান যুক্তি এসব বিষয় দিয়ে খন্ডন করার চেষ্টা করা যেতে পারে বা করতে পারে কিন্তু ধর্ম বিশ্বাস ব্যাপারটা মনোবিজ্ঞানের সাথে সম্পর্কযুক্ত বৈজ্ঞানিক বিষয়। অতএব যে বিশ্বাসের সাথে মনোবিজ্ঞান জড়িত সেই বিশ্বাসে অধিভুক্ত মানুষগুলো হয় চরম অসাম্প্রদায়িক হবে অথবা চরম সাম্প্রদায়িক হবে এবং আমরা হতেও দেখি তাই অথবা হওয়ার গল্পগুলি শুনি সেই রকম। এই চরমপন্থার কারণেই মূলত হত্যাগুলো হচ্ছে। হত্যার বিষয়টির সাথে দেশীয় রাজনীতির কতটুকু সম্পর্ক আছে সেটা জানি না তবে এর সাথে আন্তর্জাতিক রাজনীতির যে একটা সম্পর্ক সেটা স্পষ্ট বোঝা যায়। তবে বিষয়টির সাথে দেশীয় রাজনীতির সম্পর্ক ঘটনা ঘটার পূর্ববর্তী সময়ের সাথে সম্পর্ক থাকুক বা না থাকুক ঘটার পরবর্তী সময়ের সাথে ওতোপ্রোত ভাবে জড়িয়ে যায় এবং তা যাচ্ছে।

হত্যাসমূহ বন্ধের উপায় কি?;
‘বিচারহীনতায় খুনগুলোর প্রধান কারণ বা খুনিদের বেপরোয়া করে তুলছে’-খুন হওয়া ঘটনাগুলোর ঘটার পরে গণমাধ্যমগুলোতে এই জাতীয় বাক্য বা বিচারহীনতা শব্দটি অনেকবার এসেছে। যাদের মুখ থেকে বাণীগুলো এসেছে তাদেরকে আবার সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবি ইত্যাদি বিশেষণে বিশেষায়িত করা হয়। যেহেতু বিশেষায়িত ভদ্রলোকগণ এই রকম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বাণী প্রদান করে জীবিকা নির্বাহ করেন সেহেতু ওনারা বু্দ্ধিজীবি সে বিষয়ে কোন সন্দেহ থাকে না। তাদের সেই জীবিকা অর্জনে যাতে কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি না হয় মন্তব্য করার সময় ওনাদের সে ব্যাপারে যথেষ্ঠ সজাগ দৃষ্টি রাখতে হয়। দৃষ্টি রাখতে গিয়ে মূল সমস্যা এড়িয়ে যাওয়া সেটাও বুদ্ধিদীপ্ত বাণীর পরিচয়ই বটে। কিন্তু আমার যেহেতু জীবিকা অর্জনের দায়বদ্ধতা নেই সেহেতু আমার সঠিক মন্তব্য করতেও কেন সমস্যা নেই। আমার মতে এই ধরনের ঘটনা পুন:পুন ঘটন হয়তো কঠোর ও সঠিক বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কমিয়ে আনা সম্ভব হতে পারে কিন্তু কোন ভাবেই স্থায়ীভাবে বন্ধ হবার সম্ভাবনা নেই। পূর্বের অনুচ্ছেদে ঘটনা ঘটার কারণ বিশ্লেষণ করা হয়েছে; এই সকল হত্যার ঘটনার সাথে যে সকল কারণ জড়িত রয়েছে সে সকল কারণ কোন ভাবেই শাস্তির মাধ্যমে বন্ধ করা সম্ভব নয়। তাছাড়া বিশ্বব্যাপি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে দেখুন শাস্তির কঠোরতা অপরাধ প্র্রবণতা বা মানসিকতা খুবই সামান্য হ্রাস করে থাকে। বরং হিতে বিপরীত হয়ে থাকে। শাস্তির কঠোরতার কারণে অপরাধীরা শাস্তি এড়ানোর নানান কৌশলও রপ্ত করে থাকে এবং অপরাধের ঘটনা সংঘটনের জন্য নানান কৌশলে সংঘবদ্ধ হয়ে থাকে। এর ফলে কখনও কখনও নিরপরাধ মানুষগুলোও অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে। তাহলের সমাধানের উপায় কি?


সমাধানের উপায়
যেহেতু হত্যাগুলো ধর্মীয় সংস্কৃতি কারণে করা হচ্ছে সেহেতু সমাধানের একমাত্র স্থায়ী উপায় হলো- অপরাধ সংঘটনের কারণসমূহের উদ্ঘাটন এবং তা স্বমূলে উৎপাটন। মানুষকে ধর্মীয় কুসংস্কার থেকে মুক্ত করে আত্মিক বা Spiritual করে গড়ে তোলা যেতে পারে। একজন শিশুর বেড়ে উঠার সময় ধর্মীয় কুসংস্কারচ্ছন্ন জপ না শুনিয়ে silent praying বা নৈতিক ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করা যেতে পারে। তা না হলে পরবর্তীতে আমি, আপনি, ওনি বা যে কারওর মাধ্যমে দশ সংখ্যাটি এগার, বার, তের ইত্যাদি সংখ্যায় পৌঁছাতে পারে।

সকলকে ধন্যবাদ

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.