নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি হব সকাল বেলার পাখি

দিব্যেন্দু দ্বীপ

সংশয়ে সংকল্প সদা টলে

দিব্যেন্দু দ্বীপ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোটগল্প: সহযোগিতা

১০ ই মে, ২০২০ বিকাল ৩:৫৫

পুকুরে ডুবে যাচ্ছিলেন একজন মানুষ। তখন পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। ডুবন্ত মানুষটার চোখে চোখ পড়ে তার। লোকটা তার পূর্বপরিচিত, এমনকি বন্ধুও বলা চলে। ডুবন্ত লোকটি কিছু বলেন না, ঐ কর্মকর্তাও হেঁটে চলে যান।
কিছু দূরে গিয়ে দেখেন আরেকটি পুকুরে একজন নারী কলসী হাতে পানি নিতে এসেছেন, নারীটি যৌবনবতী এবং সুন্দরী— কর্মকর্তা থমকে দাঁড়ায়, বলেন, “আপনার বাড়ি কোথায়? এত বড় কলসীতে করে পানি নেওয়া যায়! কষ্ট হয় না খুব?”
“আপনি এত দূরে পানি নিতে কেন আসবেন? বাড়িতে একটি গভীর নলকূপ বসিয়ে নিলেই তো পারেন।” জনৈক ঐ নারী বলেন, “আমি তো সবসময় আসি না, আমার কাজের মহিলা পানি নেয়। এখন উনি ছুটিতে আছেন, তাই নিজে এসেছি।”
সরকারি কর্মকর্তা বলেন, “আচ্ছা, যদি একটা গভীল নলকূপের প্রয়োজন বোধ করেন তাহলে আমার সাথে যোগাযোগ করবেন, এই বলে জনৈক ঐ নারীকে মোবাইল নম্বর দেয়।”
কিছুক্ষণ আগে যে লোকটি পুকুরে ডুবে যাচ্ছিলেন তিনি মারা যান। লোকটি ছিলেন একজন কবি, বেশ বিখ্যাত কবি। লোকটির মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত হয়।
তদন্তে জানা যায়— ঐ সময় একজন সরকারি কর্মকর্তা ঐ স্থান দিয়ে যাচ্ছিলেন, পুলিশের এজাহারে জনৈক ঐ নারীর জবানীতে উঠে আসে তা। ততদিনে ঐ নারীর বাড়িতে গভীর নলকূপ বসেছে। ঐ নারী এবং সরকারি কর্মকর্তাকে আদালতে ডাকা হয়।
আদালত কর্মকর্তাতে বলেন, “আপনি একজন লোক ডুবে মারা যাচ্ছেন দেখেও তাকে সাহায্য করলেন না কেন?” জাবাবে কর্মকর্তা বলেন, “লোকটি তো আমার কাছে সহযোগিতা চাননি।” আদালত বলেন, “কিছুক্ষণ পরে আপনি যে নারীটির সাথে কথা বলেছেন এবং তার বাড়িতে গভীর নলকূপ বসিয়ে দিয়ে সহযোগিতা করেছেন তিনি কি আপনার কাছে সহযোগিতা চেয়েছিলেন?”
জবাবে কর্মকর্তা বলেন, “হা, তিনি খুব করে আমাকে ধরেন, বলেন, পানির অভাবে তাদের খুব কষ্ট হচ্ছিল। ছেলে মেয়েদের খুব কষ্ট হয়, বাড়িতে ওনার বৃদ্ধ মা আছেন তারও খুব কষ্ট হয়।”
গভীর নলকূপ দেওয়ার পরে নারীর সাথে সরকারি কর্মকর্তার বেশ খাতির হয়ে যায়। জনৈক ঐ নারী বুঝে ফেলেন এখন তার কী বলা উচিৎ। আদালত জনৈক ঐ নারীর কাছে জানতে চায়, “আপনার সাথে কি ঐ কর্মকর্তা আগ বাড়িয়ে কথা বলেছিলেন, নাকি আপনি তাকে কিছু জিজ্ঞেস করেছিলেন?”
ঐ নারী বলেন, “না না, উনি তো পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছিলেন, আমি ওনাকে চিনতাম, তাই খুব অনুরোধ করলাম যাতে তিনি আমাকে একটু সাহায্য করেন।”
আদালত বলেন, “কিন্তু পুলিশের এজাহারে তো লেখা আছে যে, ঐ সরকারি কর্মকর্তা আপনার সাথে কথা বলেছিলেন আগ বাড়িয়ে।” জনৈক ঐ নারী বলেন, “দেখেন, আমি একজন নারী তাই পুলিশকে সত্যি কথা বলতে ভয় পেয়েছিলাম।”
আদালত একজন ডুবন্ত মানুষকে সাহায্য না করবার জন্য সরকারি কর্মকর্তাকে মৃদু ভৎর্সনা করে তাকে বেকসুর খালাস দেন। একইসাথে বলে দেন— এভাবে ব্যক্তিগতভাবে যেন কোন স্বচ্ছল পরিবারকে গভীর নলকূপ না দেওয়া হয়।
“বিচারক তোমার আমলানামা ভালোই জানি, কে কাকে সাহায্য করে নাই —সেজন্য তুমি আবার আদালত বসাইছো!” মনে মনে একথা বলতে বলতে কবির স্ত্রীর সাথে দেখা করে বলে, “ভাবি, আমি দুঃখিত, তবে ছেলেটাকে সাঁতার শিখাবেন, এই ভুলটা করবেন না যেন। আর শোনেন, আপনার যদি কোনো আপত্তি না থাকে আপনাকে পঞ্চাশ হাজার টাকা সাহায্য করতে চাই।” পঞ্চাশ হাজার টাকা তার সরকারি কোষাগার থেকে দেবার ক্ষমতা রয়েছে, সে কথাটি অবশ্য উহ্য থাকে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই মে, ২০২০ বিকাল ৪:১৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


পোষ্টের ছবিটা ভালো লেগেছে, সময় পেলে লেখাটা পরে পড়ে দেখবো

২| ১০ ই মে, ২০২০ বিকাল ৫:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: গল্পটা ঠিক জমে নাই।

১০ ই মে, ২০২০ বিকাল ৫:৫৪

দিব্যেন্দু দ্বীপ বলেছেন: সব গল্প সবসময় সবার কাছে ভালো লাগবে এমন কথা তো নয়। ধন্যবাদ।

১০ ই মে, ২০২০ বিকাল ৫:৫৫

দিব্যেন্দু দ্বীপ বলেছেন: তাছাড়াু সুক্ষ্ম স্যাটায়ার বুঝতে হবে, গল্পের লক্ষের দিকে মনোযোগ দিলে কিছুটা ভালো লাগতেও পারে আপনার।

৩| ১০ ই মে, ২০২০ রাত ৮:৫৭

নেওয়াজ আলি বলেছেন: চমৎকার লিখা

১১ ই মে, ২০২০ রাত ১২:০১

দিব্যেন্দু দ্বীপ বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.