নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি খুঁজিনি কখনো আকাশের মানে...

আফসানা যাহিন চৌধুরী

আমার পথচলা আমার পথে

আফসানা যাহিন চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

এটি জনগণের দৃষ্টিকে সকল চলমান খাত থেকে ভিন্ন খাতে সরাবার চক্রান্তমূলক ১টি পোস্ট!

২৪ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:৫৫

রিপোর্টার অথবা ক্যামেরা সাংবাদিকের চোখ দারুণ তুখোড় বলতেই হবে।পরিস্থিতিটা বোঝাবার জন্য ঐ ১টি ফুটেজই যথেষ্ট। বিশেষত , আমরা যারা শহরবাসী, যারা কয়েকতলা বিশিষ্ট ভবনের ভেতর গদিশোভিত সোফায় বসে “নিউজ আপডেট” হাতড়ে বেড়াই- তাদের জন্য ফুটেজটি হৃদয়ে আহা, উহু জাগাতে খুব কাজে লাগবে।



হাড় জিরজিরে উষ্কোখুষ্কো চুলের বৃদ্ধাটি একটি মাচার উপর বসা।তার হাতে ভাতের প্লেট। প্লেটের একপাশে শাকজাতীয় কিছু, আরেকপাশে ধবধবে সাদা ভাত। বৃদ্ধা গোগ্রাসে ভাত খাচ্ছিলেন। উদভ্রান্তের মত। দুনিয়ার আর কোন কিছুর প্রতি তার খেয়াল নেই! এমনকী আঙুল চাটার সময়ও চোখগুলো ভাতের উপর থেকে সরাচ্ছিলেন না- যেন চোখ সরালেই ভাতগুলো নাই হয়ে যাবে...! আশেপাশে থৈ থৈ পানি। দারুণ রাগী যমুনার ক্রোধের কিছু অংশ তাঁর বসে থাকা মাচাটার আধহাত নিচে অব্দি রয়েছে- এসবের দিকে তাঁর কোন খেয়াল নেই...

আমার মনে হল তিনি আসলে চিন্তা করা ছেড়েই দিয়েছেন। তাঁর চিন্তা জুড়ে এখন কেবলই ধবধবে সাদা ভাত।



বর্ষাবাদলার দিন- পানি তো বাড়বেই। বড় বড় নদী- তাদের তো পাড় ভাঙবেই। কার কী??? শুধু নিউজ চ্যানেলের একটু কাজ বাড়ে; ঘন্টায় ঘন্টায় সেই একই গীত বারবার শোনাও- এইখানে পানি বিপদসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার উপরে, ঐখানে পানি ৭২ ঘন্টায় আরও বাড়বে, সেইখানে নদীর পেটে নতুন গ্রাম চলে গেল, ইত্যাদি, ইত্যাদি।



“আন্না করবার পারিন্যা..ক্যামনে খা’বার পাব জানিন্যা” এক মাঝবয়সী মহিলা বলছিলেন সাংবাদিকের মাইক্রেফোনে। আরেক দাঁতহীন অতিবৃদ্ধ কৃষক বলছিলেন, “হামরার ক্ষ্যাত সব ভাসি গ্যাছে.........” তারপরের কথাগুলো বুঝিনাই, বীজতলার কথা কী যেন বললেন।



সিরাজগঞ্জ, লালমনিহাটের বন্যা কবলিত কৃষকরা এখনও বীজতলার কথা ভাবছেন। পানি থাকা অবস্থায় নষ্ট হওয়া ফসলের ক্ষতি কিছুটা হলেও যেন পুষিয়ে দেয়া যায়...! আমাদের রাজা কী ভাবছেন???



শুকনার সময় তিস্তায় পানি দেয়না পাশের “বন্ধুরা” আর বর্ষায় ১৩টা স্লুইচ গেটের সব খুলে দিয়ে বৃষ্টিজনিত অতিরিক্ত পানির সমস্ত চাপ এইপাশে পাঠায় দেয়। মরার উপর খাঁড়ার ঘা হল এই অতিরিক্ত পানি ধারণ করার মত নাব্যতা তিস্তার নাই! শুকনায় পানি ওরা দিবেনা, এদিকে বর্ষার অতিরিক্ত পানিটা বন্যায় যেন রূপ না নেয় সেজন্য নদীটা ড্রেজিং করারও কোন দরকার নাই!!! আচ্ছা একটা পদ্মা সেতু কী খুব বেশী জরুরী???? নাকী এই বানভাসী, সাপ-কেঁচোর সাথে বাস করা, ঘরদোর হারা মানুষগুলোকে বাঁচানো জরুরী???? যে মানুষগুলোর ভিটা-মাটি যমুনা নিয়ে গেল, যারা রাতে ঘুমায় না কখন যমুনা টেনে নিবে সেই চিন্তায়, তাদের বাঁচানো জরুরী? নাকী আরও খানকতক ফ্লাইওভার বেশী জরুরী??? কিংবা নতুন যুদ্ধ জাহাজ, বগুড়ায় নতুন ক্যান্টনমেন্ট ইত্যাদি???

ক্ষ্যাপা পাগলীর মত যমুনা স্কুল গিলেছে, মন্দির গিলেছে, বিজিবি ক্যাম্পও ছাড়েনি! একটা বউ মাটির চুলায় রান্না করছিল- তার চুলা থেক ফুট খানেক দূরে নাচছে ক্ষ্যাপা ঢেউ!!! সর্বশেষ নদীরক্ষা বাঁধ প্রকল্প থেকে লালমনিরহাটের ঐ গ্রাম ২টির নাম কোন কারণ ছাড়া বাদ দেয়া হয়েছিল..........



এমন ১টা বন্যা প্রবণ এলাকা সিরাজগঞ্জের ঐপাশটা, অথচ ১টা আশ্রয় কেন্দ্র নাই!!! মানচিত্রের ১টা পাশ বন্যায় ভাসছে আজ প্রায় সপ্তা পুরাতে চলল।অথচ এখনও কোন ত্রাণের দেখা নাই। এ বন্যাটা কোন পূর্ব সংকেত ছাড়াই সৃষ্টি হয়েছে, এজন্য দ্রুত ত্রাণ পাঠানোর ব্যাবস্থা নেয়ার কথা সেখানে - - - - - - উপজেলা পর্যায় থেকে কয়েক বস্তা চাল গেছে কেবল সিরাজগঞ্জে। কোথায় খাবার-দাবার, ঔষধপত্র, মেডিকেল টীম- মানুষগুলো বাঁধে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে- যেন কোথাও যুদ্ধ চলছে, একটা শরণার্থী শিবির খোলা হয়েছে.......!





বড় বড় সেমিনারগুলা কয়েকদিন পরে করলে কী হয় বাহে??? আগস্ট নিয়া কথাবার্তা সেপ্টেম্বরেও তো বলা যায়, কিন্তু আগস্টের পানিতে ভাসা মানুষগুলা সেপ্টেম্বর অব্দি নাও বাঁচতে পারে..............................

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ২:২৪

সর্বনাশা বলেছেন: এসব আলতু-ফালতু জিনিস লিখেন কেনো ? ফেসবুকিং করেন, কাজে দেবে। আমাদের কাজ-কর্ম, মহৎ চিন্তা-ভাবনা, সভা-সেমিনার, গণতন্ত্র সব মানুষদের নিয়ে, গরীব নামের কোন নিম্ন শ্রেণীর প্রাণীদের নিয়ে না।

২৪ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:১৭

আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: “কাজে” আর কী দেবে ভাই.... নিম্নশ্রেণীর প্রাণীরা এভাবে বেঁচে থাকার জন্যই জন্মেছে, এভাবেই ওরা মরবে, ব্যাস। আর গণতন্ত্র??? হাহাহাহাহাহা!!! আমরা মহারাজ/সেনাপতি/উজির/কোটাল এদের অধীনস্থ সামান্য প্রজা.. গণতন্ত্র কী জিনিস আবার..

তবু ভাল থাকবেন :)

২| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৯

তিক্তভাষী বলেছেন: পোস্টটি 'অরণ্যে রোদন'-এর একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

২৪ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:২৩

আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: হয়ত....... :)

৩| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:৫৫

আসিফ করিম শিমুল বলেছেন: "গরীব" "নিম্নবিত্ত" কিংবা "মধ্যবিত্ত" এই বিশেষণ গুলো যে শ্রেণীর মানুষেরা ধারণ করে তারা হয়ত সবাই দুরারোগ্য কুষ্ঠ ব্যাধিতে আক্রান্ত কেউ। কেননা সবাই তাদের দূর্দিনে "আহা" করে। সাহস করে পাশে দাঁড়ানোর কেউ থাকেনা।

৪| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:০৯

ভাইটামিন বদি বলেছেন: অরা তো মানুষ না বাহে..... কয়টা সংখ্যা মাত্র!!!

২৪ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:২০

আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: হ্যাঁ, তাই... ওরা কিছু সংখ্যা ছাড়া আর কিছুইনা..........!!

ধন্যবাদ । ভাল থাকুন :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.