নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি খুঁজিনি কখনো আকাশের মানে...

আফসানা যাহিন চৌধুরী

আমার পথচলা আমার পথে

আফসানা যাহিন চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

জামাত - শিবিরঃ উদ্বেগ, হতাশা, গণদাবী ও গণপ্রতিক্রিয়া

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ২:৪১

এই মুহূর্তে আমরা জাতীয়ভাবে একটি সংকটের মধ্যে আছি। নানামুখী সংকট। আমার চাই যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া (মামলা, রায়, অ্যাপীল, রায় কার্যকর) স্মুথ থাকুক। দীর্ঘসূত্রীতা না হোক। সকল যুদ্ধাপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হোক। নিশ্চিত হোক ন্যায়বিচার। শান্তি পাক প্রতিটি শহীদের আত্না এবং তাঁদের পরিবার। সমুন্নত থাকুক আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ। আবার উল্টোদিকে আমাদেরকে আমাদের প্রভুরাষ্ট্রদের শাসানিও সইতে হচ্ছে। প্রতিটা রায়ের সঙ্গে সঙ্গে জামাতশিবিরের হরতালও হজম করতে হচ্ছে। দয়ার সাগর পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো, জাতিসংঘ এবং সাথে মানবাধিকার-ওয়াচের মত সার্কাস পার্টিগুলো খুব বেশী সরব থাকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের মানবাধিকার নিয়ে। সম্ভবত বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রটিই একমাত্র রাষ্ট্র, যেটি তারই স্বাধীনতাযুদ্ধের বিরোধীদের জন্য সর্বোচ্চ গণতন্ত্র নিশ্চিত করেছে। এতটা গণতন্ত্র তার দেশের সাধারণ আম-পাবলিকের জন্যও কখনো হয়নি| না সংসদে, না ক্যাবিনেটে, না দোকানে/বাজারে, না শিক্ষায়, না চিকিৎসায়, এমনকী অনলাইনে লেখালেখিতেও।


আদালতের রায় পছন্দ না হলে আমরা অসন্তোষ প্রকাশ করে থাকি| সেটা করবার অধিকার প্রতিটি নাগরিকেরই আছে। গণজাগরণ মঞ্চও কারো কারো রায় নিয়ে অসন্তোষ জ্ঞাপন বা প্রত্যাখ্যান করেছে। কিন্তু তার কিছু ধরণ-ধারণও আছে। আদালতের আদেশ-নির্দেশ মাথা পেতে নিতে না পারার অর্থ আদালতের অবাধ্যতা। সেরকম অবাধ্যতাটুকুর খাতিরে আপীল নামক বিষয়টি চালু হয়েছে। পাশাপাশি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে “সন্তুষ্ট নই” কথাটি ছড়িয়ে দিতে রাজপথে মিছিল-মিটিং করা যায়, মানববন্ধন, সাংবাদিক-সম্মেলন, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ কিংবা স্মারকলিপি প্রদান, অনলাইনে প্রচার- এরকম অনেক কাজই করা যায়। কেউ যদি আদতেই ন্যায়বিচার চায়, তাহলে সে অবশ্যি ন্যায়সঙ্গত পথে এগুবে। কিন্তু রায় মনঃপূত হলনা বলে রীতিমত হরতালের মত ধ্বংসাত্নক কর্মসূচী আহ্বান করা, নাশকতা চালানো(বা চেষ্টা করা), বোর্ড পরীক্ষার মত রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বাধ্য করা স্পষ্টতই আদালত অবমাননার শামিল।
তাবৎ বিশ্বের বহু দেশে নানান যুদ্ধের যুদ্ধাপরাধের বিচার হয়| কোনো দেশে এমন কোনো নজির নেই যে, বিচার চলাকালীন এবং বিচারে দন্ডপ্রাপ্ত ব্যাক্তিদের পক্ষে তাদের গঠিত/পরিচালিত/নেতৃত্বাধীন সংগঠন সে দেশে হরতালের মত কর্মসূচী পালন করেছে...!! শুধু কী হরতাল??? ট্রাইব্যুনালের সাক্ষীদের হত্যার হুমকী দেয়া হয়, কতজনকে হত্যা ও গুম পর্যন্ত করা হয়েছে!!! ট্রাইব্যুনালের বিচারপতিদের বাড়ির সামনে ককটেল ফেলা হয়! বিচারপতিদের গ্রামের বাড়ি পর্যন্ত সশস্ত্র হামলা করা হয়েছে, তছনছ করা হয়েছে ঘরবাড়ি! এভাবে বাংলাদেশ তারই জন্মের অস্বীকারকারীদের এবং ঘৃণ্য মানবতাবিরোধী অপরাধীদের জন্যে “মানবাধিকার” ও গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে করতে এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, সেটা এখন আর শুধু বয়স বেশী বলে শাস্তি কম,সরকারী হাসপাতালে রাজার হালে চিকিচ্ছা/খানাপিনায় শেষ নয়, বরং সেটা রাষ্ট্রীয় প্রোটেকশনে জানাযা ছাড়িয়ে আদালত অবমাননা ছাড়িয়ে আরও বহু অধিকার পারমিট করছে!! অথচ লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর মানবাধিকার বা গণতন্ত্র বলে কিছু নেই......!! হিউম্যান-রাইট-ওয়াচ, জাতিসংঘ ব পশ্চিমা প্রভুদের এইসব গল্প বলারও কেউ নেই....

যুদ্ধাপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তির সাথে সাথে আরও একটা দাবী গণজাগরণ মঞ্চ সহ অনেকেই করে আসছেন। সেটা হল জামাত-শিবির নিষিদ্ধের দাবী এবং সেইসাথে তাদের অর্থনৈতিক চাহিদার যোগানদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো বাজেয়াপ্ত করা ও রাষ্ট্রীয়করণ করার দাবী।

নিজামী, মুজাহিদ এবং মির কাসেম এর রায়ের গুরুত্বপূর্ণ একটা দিক রয়েছে। বর্তমান ইসলামী ছাত্রশিবির নামধারী দলটি যে একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে যুক্ত আলবদর ও আলশামস বাহিনীর নামান্তরিত রূপ এবং রাজাকার বাহিনীর সহযোগী ও বর্ধিত শক্তিরূপে কাজ করেছে- ঐ রায় তিনটিতেই অবজারভেশন হিসেবে ব্যাপারটি এসেছে। ইসলামী ছাত্রশিবির (জামাতে ইসলামী তো বটেই) কে পরবর্তীতে নিষিদ্ধ করতে এই অবজারভেশনগুলো কাজে দেবে। সুতরাং সংগঠন হিসেবে জামায়াতের বিচার করাটা এখন এই চলমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পক্ষে খুব সোজা কাজ। বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনালের এ বিচারটি না করবার কোনো কারণ নেই; যদি নাও করে থাকেন, তবে আমাদের দেশীয় প্রচলিত আইনের আওতায়ই বিচারটি করা সম্ভব।

ইদানিংকালে একটি টিভি চ্যানেলে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ড. সরোয়ার আলীর মুখে শুনলাম, এ বছরেরই কোনো এক সময়ে তিনি সহ কয়েকজন একবার আইনমন্ত্রীর সাথে

সাক্ষাত করেছেন। মন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয় যে জামাত নিষিদ্ধের ব্যাপারে সরকার গড়িমসি বা আপত্তি করছে কেন। আইনমন্ত্রী জানান যে, একটা আইনগত দূর্বলতা রয়েছে। সংগঠন হিসেবে তাদেরকে বিচারের কাঠগড়ায় আনা যাবে কিন্তু কী শাস্তি দেয়া হবে বা আদৌ তেমন দৃষ্টান্তমূলক/কার্যকরী শাস্তি দেয়া যাবে কিনা, সেটা নিয়ে তাঁরা সন্দিহান। আইনের ফাঁকটি পূরণ না করে বা সংশোধনী না এনে তাঁরা অভিযোগ গঠন করতে পারছেন না।

জামাত বা ইসলামী ছাত্রশিবির যদি নিষিদ্ধ হয়েই যায়, তাহলে কী হবে???

অনেকেই বলেন তারা হয়ত আন্ডারওয়ার্ল্ডে চলে যাবে। আমার ধারণা খুব বেশী পরিচিত মুখগুলো হয়তবা আন্ডারওয়ার্ল্ডে যেতে পারে, কিন্তু বিশাল সদস্যবাহিনী ও বিপুল কর্মী বাহিনী নয়। তাছাড়া এত সহজে ছাড়বার পাত্রও তারা নয়..!
অতএব, অন্য নাম নিয়েও তারা সংগঠন শুরু করতে পারে। অন্য কোনো নতুন নাম নিয়ে বা বিদ্যমান কোনো সংগঠনেও তারা ভীড়ে যেতে পারে। সুতরাং জামাত-শিবির নিষিদ্ধের আগে সবচয়ে জরুরী ও অপরিহার্য কাজটি হল, “দেশে ধর্মভিত্তিক-লিঙ্গবৈষম্যভিত্তিক-সাম্প্রদায়িক-মৌলবাদী কোনো রাজনৈতিক দল গঠন করা যাবেনা” - এধরণের যে ধারাটি আমাদের সংবিধানেই স্পষ্ট করে রয়েছে, সেটাকে আইন বা বিল হিসেবে পাস করিয়ে নেয়া।।।

সবাই জানে যে, জামাতের সাংগঠনিক মূলনীতি, ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্রের মধ্যে এমন কয়েক ডজন বিষয় আছে যেগুলো আমাদের দেশের সংবিধানের সরাসরি পরিপন্থি, আমাদের সংস্কৃতি পরিপন্থি এমনকী শান্তি ও মানবতার ধর্ম ইসলাম পরিপন্থীও!! সুতরাং, কেবল জামাতকে নিষিদ্ধ করলেই সব কাজ ফুরিয়ে যায়না, জামাতের মূলনীতি ও গঠনতন্ত্রের সাথে মিল রয়েছে, এমন যেকোন দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে। এবং ভবিষ্যতেও যাতে জামাতের সাথে সাযুজ্যপূর্ণ মূলনীতি ও গঠনতন্ত্র বিশিষ্ট কোনো সংগঠন গঠিত না হয়, সে ব্যাপারেও নিষেধাজ্ঞা জারী করতে হবে।

কিন্তু সমস্যা হল, সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম বহাল রেখে এ কাজগুলো করা আদৌ সহজ নয়। সংবিধানকে অনেক কাটাছেঁড়া করা হলেও, আমাদের সংবিধানের ৪ মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক এই ধারাটি রদ কারা হয়নি আজো।

সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হল, জামাতশিবিরের গণসসম্পৃক্ততা। এ ব্যাপারে জামাতশিবিরের কৌশল অকল্পনীয় রকমের সুশৃঙ্খল!!! জাতশত্রু হয়েও আমাকে স্বীকার করতেই হয় তাদের সাংগঠনিক চাতুর্য ও দক্ষতা। অতি সুসজ্জিত ধনী গৃহের নামী-দামী স্কুলে পড়ুয়া বাচ্চারা কিংবা অতি দরিদ্র কোনো সিএনজি চালক- সবার মধ্যেই প্রভাব গেঁড়েছে জামাত ও শিবির। শ্রেণী-বৈষম্য বাদ দিয়ে প্রতি জনে জনে তাদের দলের অন্তর্ভূক্ত করা কিংবা নিদেনপক্ষ নৈতিক সমর্থন আদায় করার দূর্লভ কৌশল রয়েছে এই শক্তিশালী মাফিয়া নেটওয়ার্কটির। সবসময়ই যে তাদের রাজনৈতিক দর্শন প্রচার করে কাজ করে তা না। যাকে যেভাবে কব্জা করা সম্ভব- কখনো পবিত্র ইসলামের নাম ভাঙিয়ে, কখনো লীগ-বিদ্বেষ, কখনো পূর্বেথেকে শিবির করে এমন কোনো মেধাবী ছাত্রকে ব্যাবহার করে (অর্থাৎ শিবির করলে আমার মত রেজাল্ট করতে পারবা এ জাতীয় ব্যাপার), আর মাদ্রাসার হতদরিদ্র এতিম শিশুরা তো আছেই জন্ম থেকে তাদের কব্জায়। এমনকী পেশাগত জীবনে জামাতশিবিরের কেউ যদি পুঁজির অভাবে ব্যাবসা করতে না পারে, তাদেরকে পুঁজি দিয়ে ব্যাবসায় দাঁড় করিয়ে দেয়া হয়, এমনই ডিটারমাইন! রাজনৈতিক না হোক, ধর্মভীরু মানুষজন অন্তত ধর্মের নাম শুনে হলেও তাদরে অনুগত হয়ে পড়ে। মেয়েদের উচ্চশিক্ষায় যথেষ্ট উৎসাহ অথচ পর্দা নিয়ে মোটেও বাড়াবাড়ি নেই, এমন পরিবারের মানুষদেরও (আমার ক্লাসমেটের মা) সাঈদির ফাঁসী না হবার জন্যে নফল নামায পড়তে শুনেছি আমি...!

তাই মাঝে মাঝে বড় হতাশ লাগে। আমার মনে হয় শুধু আইনগত হিসেব-নিকেশে জামাতশিবিরের মূলোৎপাটন সম্ভব নয় কখনো। আবহমান কালের বাঙালি-দর্শন ও সংস্কৃতিকে গণমানুষের জীবনের কাছে পৌঁছে দেয়া জরুরী। আমাদের এই মহিমান্বিত অঞ্চলটির বহুরকম সংগ্রামের ইতহাস- উপনিবেশবিরোধী আর্থ-সামাজিক এবং সশস্ত্র লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাসগুলো, এবং পরবর্তীতে ভাষাগত ও জাতীয়তাবাদী সংগ্রামের ইতিহাস এবং সেই সংগ্রাম সমূহের পেছনে সক্রিয় ছিল যে চেতনা, তার সাথে গণমানুষকে পরিচিত করিয়ে দেয়া খুব বেশী জরুরী...! সেই সাথে পারিবারিক জীবনে, স্কুলে, মসজিদে- সবখানে ইসলামের মর্মবাণী মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়াও সমান জরুরী।

মন্তব্য ২১ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:১১

রাফা বলেছেন: চমৎকার খুব গুছিয়ে লিখেছেন....।একটা দল বা গোস্ঠি আন্ডার গ্রাউন্ডে গেলে যা করতে পারে তার কোন কিছুই বাদ রাখেনি জামাত -শিবির।৫ই জানুয়ারী পুর্ববর্তি অবস্থা আমরা নিশ্চই অবলোকন করে নিশ্চিত হয়েছি।

আর বাংলাদেশে আন্ডারগ্রাউন্ডে গিয়ে কিছু করাই সম্ভব নয়।যদি সম্ভব হতো তাহোলে শান্তি বাহিনিই হোতে পারতো তার উদাহারণ।

পৃথিবীতে বাংলাদশই একমাত্র দেশ যুদ্ধাপরাধীরা রাস্ট্র ক্ষমতায় চলে এসেছে।তারই খেসারত দিয়ে চলছে ৪৪ বছর যাবৎ।এর পরিসমাপ্তি কত জরুরী ,তা আজ উপলব্দি করছে বাংলাদেশের আপামর সাধারণ মানুষ।

আশা করি এর পরিসমাপ্তির সূচনা অব্যাহত থাকবে-শেষ যুদ্ধাপরাধীর বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত।

শুভ কামনা থাকলো -আফসানা,আপনার জন্য ।এরকম সচেতনতা মূলক লিখা আরো চাই আপনার কাছ থেকে।
ধন্যবাদ।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:১২

আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ ব্লগার রাফা :)

“এর পরিসমাপ্তির সূচনা অব্যাহত থাকবে-শেষ যুদ্ধাপরাধীর বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত।”


আমার সবসময়ই মনে হয়েছে, জামাত এবং শিবির যদি অন্য কোন নাম নিয়ে পুনরায় রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা পায়, তাহলে আওয়ামী বা বিএনপি যে কারো সাথেই জোট গঠন করতে পারবে। আপত্তি জানাবার কোন ভিত্তি থাকবেনা। দুই দলই বলতে পারে যে, “জামাত তো নাই। নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। এরা জামাতের কেউ নয়্।” এভাবে আবার তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হবে।
সুতরাং, জামাতকে নিষিদ্ধের প্রক্রিয়ার সমান্তরালে সংবিধানে রাজনৈতিক দল গঠন সম্পর্কিত উল্লেখিত ধারাটি কার্যকর করা খুবই জরুরী।


ভালো থাকবেন। শুভকামনা নিরন্তর :)

২| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ ভোর ৪:৫৮

মিতক্ষরা বলেছেন: একমাত্র উপায় হল একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু রাখা। আওয়ামী লীগের পক্ষে এটা সম্ভব এবং আওয়ামী লীগারদের এতে সম্মতিও রয়েছে। এতে করে জামাত মুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:২৬

আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: দেখুন জামাত-মুক্ত বাংলাদেশ গড়া বাস্তব প্রেক্ষিতে কতটা চ্যালেঞ্জিং সেটা আমমার পোস্টেই বলেছি। কিন্তু এর সমাধান কখনোই একদলীয় শাসনব্যাবস্থা নয়!! গণতন্ত্রের সার্থকতা ও সৌন্দর্য হল বহু মত এর বৈচিত্র্যে। বিরোধী পক্ষ বাদে গণতন্ত্র সুস্থ থাকেনা।
কিন্তু বহুদলীয় গণতন্ত্রের মানে এই নয় যে, এই রাষ্ট্রের স্বাধীন ও স্বতন্ত্র অস্তিত্বে অস্বীকার কারীরাও রাজনীতি করতে পারবে, রাষ্ট্রক্ষমতায় বসতে পারবে। ভাগ্যের ফেরে তেমন কালোসময় এ দেশে এসেছিল। এখনও তারা ক্ষমতা দখলেরই পাঁয়তারায় ব্যাস্ত। তাদেরকে নিষিদ্ধের দাবটি যতটা না রাজনৈতিক, তার চেয়ে বেশী মানবিক।
এখন তার মানে এই না যে, ঐ একটা যুদ্ধাপরাধী-সংগঠনকে নিষিদ্ধের জন্য বাংলাদেশের আর সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ হয়ে যাবে....! এটা অদ্ভুত যুক্তি! এবং গণতন্ত্রের বিরুদ্ধ যাত্রা।

স্বৈর শাসক কে হঠানো এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় স্বাধীন দেশেই প্রাণ দেবার ইতিহাস বাংলাদেশের আছে। স্বৈরশাসনকে বাংলাদেশ কখনোই ফিরে ফিরে আসতে দিবেনা।

ধন্যবাদ।

৩| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:২২

ডাইরেক্ট টু দ্যা হার্ট বলেছেন: ইতিহাস , রাজনীতি এবং চলমান পরিস্থিতির উপর আপনার পর্যালোচনা গুছানো কথা গুলো পড়ে অনেক ভালো লাগলো।

তবে আমি জামাত শিবির নিষিদ্ধ করার আগে যেটা নিয়ে ভাবছি সেটা হলো এই দেশে যারা এই জামাত শিবিরকে প্রতিষ্ঠা করেছে যারা এই দেশটাকে নিজের আচল দিয়ে বেধে জাহান্নামের দিকে নিয়ে গেছে,যারা এই দেশে ইসলাম রাষ্ট বানানোর ছুতোয় মুসলিম সমাজকে বোকা বানিয়েছে এবং এখনো বানাচ্ছে তাদের কে নিষিদ্ধ না করলে এমন আচলের ছায়ায় আবারও এমন ভাইরাস এই দেশে জন্মাবে, সেটার নাম হয়তো জামাত শিবির হবেনা হবে অন্য কোন নাম,যেমন করে ছাত্র সংঘ বদলে হয়েছে শিবির। এই দেশটার রাজাকার আলবদর রা যতটা ক্ষতি করেছে তার চেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে যারা তাদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়েছে তারাই সবচেয়ে বড় ক্ষতিকারক।

প্রয়োজনে শিবিরের কথা বাদ দিয়ে বা তাদেরকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে এই মুর্খ কুৎসিত নেতা নেত্রীদের বিচার বা নিষিদ্ধ করা আজকে বড় বেশি জরুরী বলেই আমি মনে করি।

ধন্যবাদ

৪| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:৩৫

অ িনর্বাি চত বলেছেন: সকল রাজাকারের ফাঁসি চাই-- বাদ যেন না যায় বেয়াই//

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:২৮

আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: সকল রাজাকারের ফাঁসি চাই-- বাদ যেন না যায় বেয়াই////////////

হাহাহাহাহাহা....
অবশ্যই!!

অনেক ধন্যবাদ ব্লগার অনির্বাাচিত.. :)

৫| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৩৮

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: +++++++++++++++++

অনেক বিস্তৃত লিখেছেন । আমার যোগ করার কিছুই নাই ।

সব রাজাকারের ফাঁসি চাই । বাদ যেন না যায় বেয়াই !

ভালো থাকবেন :)

অটঃ প্রোপিক সুন্দর হয়েছে :)

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৩১

আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: হিয়ার গোজ দি অপূর্ণ রায়হান... ;)

অনেক অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।।
ভালো আছেন নিশ্চই???
আরও ধন্যবাদ প্রোপিক মন্তব্যে :#) :#)



“সব রাজাকারের ফাঁসি চাই । বাদ যেন না যায় বেয়াই ! ”


৬| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:০৩

আমিনুর রহমান বলেছেন:





চমৎকার বিশ্লেষণ করেছেন। জামাত অবশ্যই একটা শক্তিশালী সংগঠন তবে তারা যতখানি না জনবলের কারনে তারচেয়ে বেশী শক্তিশালী অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী। এদেশে প্রায় প্রতিটি সেক্টরে তাদের সরাসরি বা আড়ালে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলো সেই সেক্টরে সেরাদের তালিকায় নিজেদের পৌছে দিয়েছে। যা চাইলেও আমরা বন্ধ করতে পারি না এখনই এতে দেশ অর্থনৈতিক ঝামেলা পড়তে পারে। এই সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকার যদি নিজেদের তত্ত্বাবধানে নিয়ে পরিচালনা করতে পারতো তাহলে হয়তো তারা চাইলে গরীব মেধাবীদের পড়াশোনার সুযোগ বা অর্থনৈতিক সুবিধা দেয়ার লোভ দেখিয়ে তাদের দিকে নিতে পারতো না। যেমন ইসলামী ব্যাংকের কথাই ধরুন এদের আপনি চাইলেও বন্ধ করতে বা সরকার তার তত্ত্বাবধানে নিতে পারবে না। কেননা প্রতিষ্ঠানটির মালিকানা সরসারি জামাত-শিবির এর কোন নেতা-কর্মি নেই। সম্ভবত ৩৬% দেশীয় আর অবশিষ্ট অংশ মালিকানা বিদেশী। এই প্রতিষ্ঠানটি আজকে এই অবস্থায় আমাদের মতো সাধারণ, গরীব বা মুর্খ্য লোকদের জন্য হয়নি। হয়েছে মিডিয়া, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে আজ ইসলামী ব্যাংক এই অবস্থানে। মিডিয়া সবচেয়ে বেশী দায়ী অনেকটা এই রকম একটু পর দেখবেন সংবাদ, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড প্রায় প্রতিটি টিভি চ্যানেলগুলো এভাবেই বিভিন্ন প্রোগামগুলো ওদের সৌজন্যে করে যাচ্ছে আর তাদের এড করে যাচ্ছে।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৪৪

আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: হ ভাই, কি আর কইব.. :(
টিআরপি’র হিসাব-নিকাশ তো আপনি -আমি বুঝবনা। ইসলামী ব্যাংকের টাকায় জাতীয় সংগতি ও গাওয়া লাগে..কালে কালে আরও কতকিছু দেখা যাবে।

আসলে রাজনৈতিক-সদিচ্ছা একটা বড় বিষয়। এটাতো গেল একটা ব্যাংক।
আমি থাকি চট্টগ্রামে। চট্টগ্রাম শহরে চকবাজার নামে একটা খুব ব্যাস্ত এবং জনবহুল পয়েন্ট আছে। চট্টগ্রামের নামী-দামী চার চারটা স্কুল এবং অতি প্রসিদ্ধ দুইটা কলেজ এই চকাবাজার মোড়ের আশেপাশে। আপনি যদি একটাবার আসেন চকবাজার মোড়ে!- সারি সারি কোচিং সেন্টার.....! বেশুমার!! স্কুল এর জন্য, কলেজর জন্য, ভার্সি টি ভর্তআীর জন্য...
আরও আছে কম্পউটার ট্রেনিং সেন্টার, স্পোকেন এর কোচিং সেন্টার, ফটোগ্রাফীর দোকান আর যেটা সবথেকে বড় সেটা হল বইখাতার দোকান। অসংখ্য!! সবাই জানে এগুলো কাদের, এখানকার ব্যাবসায়ী বা সিন্ডিকেট কারা?? বিরাট ওপেন সিক্রেট। ব্যাংক আপনি নানা উপায়ে শাসন করতে পারবেন, এই বইখাতার দোকান, কোচিং,কম্পউটার ট্রেনিং ক্যামনে শাসন করবেন?????!!
একই ব্যাপার চট্টগ্রামের আরেক ব্যাস্ত মোড় আন্দকিল্লায়ও...!

স্বাধীীনতার পক্ষের শক্তিগুলোর যা করার সাধ্য হয়ে ওঠেনি তা পরম সাধনায় X(( করে নিয়েছে জমাত-শিবির!! রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করেছে সোসাইটির..! সহজ চীজ না ভাই.. :-<

৭| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৪২

এস কাজী বলেছেন: অত্যন্ত সুন্দর লিখেছেন। আপনার একটি মন্তব্যে চকবাজারের কথা লিখেছেন। চট্টগ্রামের ছেলে হওয়ায় আমিও কম বেশি জানি। তবে দুঃখজনক ব্যাপার হল এখনো ওইসব এলাকা জামাতি আর শিবিরের গোয়াল ঘর। এক চুল ও সরেনি।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:১২

আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: সহ-দুঃখীতা ভাই :(



৮| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:২২

মামুন রশিদ বলেছেন: ভালো লেগেছে কথাগুলো । একটা প্রশ্ন সদা মাথায় ঘুরে, বাংলাদেশ যদি ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হয়ে থাকে তাহলে ধর্মের নাম নিয়া এতগুলা দল নিবন্ধিত হয় কিভাবে?

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:১৭

আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: মূলত, পঁচাত্তরের পট-পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে। আর সর্বনাশের মহোৎসব শুরু হল, যখন জামাতের নাটের গুরু গোলামকে বাঙলাদেশে ফিরিয়ে আনা হল, তখন থেকেই...! গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতন, লে.জে.হু.মো. এরশাদ তার মসনদে টিকে থাকা পোক্ত করতে ১৯৮৮ সারৈ রাষ্ট্রধর্ম নামক অভিনব পন্থা বসিয়ে দেয় সংবিধানে। তারপর তো... চলছেই....

৯| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:১০

ডার্ক ম্যান বলেছেন: চট্টগ্রামে থাকি সেকারণে জানি জামাত কতটা হিংস্র আর আর্থিকভাবে ভয়ংকর।
ভাগ্য ভালো কিছুদিন আগে মীর কাসেম আলীর একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করার সুযোগ পেয়ে করিনি। তখনো জানতাম না কেয়ারী ডেভেলপার তার।
আর শিবিরের বিরুদ্ধে কথা বলাও বিপদজনক। কারণ অনেক ছুপা ছাগু-ছাগী আছে। আপনি সহজে বুঝতেও পারবেন না। ওরা আপনাকে পিছন থেকে আঘাত করবে।

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:০৭

আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: ঠিক বলেছেন, ছাগু তো আছেই, ছাগীরও অভাব নাই X(

১০| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:১৪

নাঈম বলেছেন: সুন্দর বিশ্লেষণ।

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩১

আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই :)

১১| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০২

খাটাস বলেছেন: চমৎকার ভাবে গুছিয়ে লিখেছেন আপু।
অসাধারণ পর্যবেক্ষণ।

কিন্তু একটা ব্যাপার হচ্ছে, দেশের সংখ্যা গরিষ্ঠ মানুষের যে দাবিতে লীগের লাভ বেশি, তারা সেই দাবি গুলোই পূরণ করছে।
আর এই দলীয় লাভের ব্যাপার টা প্রতিপক্ষ রা বড় করে দেখিয়ে যুদ্ধাপরাধ বিচারের বিরোধিতার সর্বপরি জনমত সৃষ্টি করতে চাইছে।
এর বেশি কিছু বলতে চাইছি না আর।

ভাল ভাল কথা গুলো নানা দলের মানুষেরাই বলেন, শেষ করেন দলীয় নির্লজ্জ গুনকীর্তনে।
আমরা সাধারণ রা বারবার হতাশ হই।

নামাজ পড়তে জানলেই সবাই নামাজি হয় না- তা অনেক কেই বোঝান দায়।
দল নিরপেক্ষ মতের চর্চা খুব একটা চোখে পড়ে না।
তাই +++++++++++++++

ভাল থাকবেন অনেক।

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫১

আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই খাটাস।

রাজনৈতিক লাভ-ক্ষতির হিসাব নিকাশ এর শিকার তো শেষকালে আমরা- আমজনতাই.. অথচ রাজনীতিক দের দেখিনা কখনো ক্ষতির শিকার হতে.. দুঃখের ব্যাপার হল, এই সব হিসাব-নিকাশ আজও মাথায় ঢুকলনা!

যাই হোক, সাথে থাকুন, ভাল থাকুন এবং ব্লগ দিবসের অগ্রীম শুভেচ্ছা ;)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.