নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি খুঁজিনি কখনো আকাশের মানে...

আফসানা যাহিন চৌধুরী

আমার পথচলা আমার পথে

আফসানা যাহিন চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

অপরাজেয় বাংলা... ?

০১ লা মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:০৯

*
তাদের কাজ ভালই তো এগুচ্ছে। ঠিক মত লিস্ট মেইনটেইন করা, কখন কে কোথায় আসছে/থাকছে খোঁজ রাখা, পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ, অর্থ যোগান- সব পরিপাটি আছে। তারা তাদের আদর্শ, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে একাগ্র, অবিচল! যত সমস্যা সব এই পারে- যেখানে দাঁড়িয়ে আমরা গলা ফাটাই স্বাধীনতা, সংগ্রাম, ঐতিহ্য নিয়ে।
চেতনার আতিশয্যে বা বুদ্ধির আতিশয্যে আমরা বেহুঁশ হয়ে পড়ে আছি এক দূর্গন্ধময় ভাগাড়ে। এখনও আমাদের কাছে প্রগতির প্রতিশব্দ নাস্তিকতা, এখনও আমাদের ভীষণ দুশ্চিন্তা তিরিশ লাখ শহীদের “লিশটি” নেই কেন! এখনও পরাজিত পুরনো শত্রুদের “নিবন্ধিত নির্বাচনী” বলে সমীহ করে যাই, এখনও শহীদ মীনার বা স্মৃতিসৌধের আসল মানে আমরা ভুলে খেয়ে বসে আছি- শরীয়তী মানে বের করতে ব্যাস্ত আমরা!
প্রগতির ধ্বজাধারীরা প্রত্যেকেই অনেক অনেক বোঝেন এবং জানেন, এবং ফলস্বরূপ শতধা বিভক্ত হয়ে পড়েন। নিজেদেরকে কেউ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বলেন, কেউ দিন বদলের পক্ষে বলেন; সার্কাস দেখি, বায়স্কোপ দেখি, পিংপং বলের সস্তা ম্যাজিক দেখি, কিন্তু ভেতরে-বাইরে সমানে মরে যাওয়ার বিরুদ্ধে একসাথে আওয়াজ তুলতে দেখি না কাউকে!! সত্যিই কি আমাদের বাঁচতে ইচ্ছা করেনা!! বাঁচবার লড়াইয়ে মরে গেলে ক্ষতি কী?? মরণ এড়ানোর ভান করতে থাকলে পচন ধরবেই, আর তারপর অপঘাত সুনিশ্চিত!!!

সত্যিই আমরা নিজেরা যে মরে গেছি, এই খবর কি কেউ আমাদের দিয়েছে???



*
বেশীদিন কি হয়েছে, ড. শফিউল ইসলামকে হত্যা করা হয়েছে?? এর আগে হত্যা করা হয়েছিল ফারুকী হুজুরকে, তার আগে ব্লগার রাজীব হায়দারকে। খুব কাছাকাছি সময়ে ঘটেছিল ঘটনাগুলি। কি আশ্চর্য, এখানে লিখবার জন্য মানুষকে খুন করে ফেলা হয়!! জাস্ট শেষ করে দেয়া হয়! কি হাস্যকর! জঘন্য!

তার অনেক আগে, সেই ওয়ান্স আপন এ টাইম..... সাগর-রুনিকে জবাই দেয়া হয়েছিল, তাও গোপন খবর ফাঁস হয়ে যাবার উপক্রম হয়েছিল বলে!
আটচল্লিশ ঘন্টার আজো শেষ করতে পারেনি- লাভের লাভ- এর মধ্যে আরো অনেকের জীবনেই আটচল্লিশ ঘন্টা নেমে এসেছে...! এটাই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রটির সর্বোচ্চ স্বার্থকতা!!!
এরপরও কেন বেঁচে থাকতে হবে?! কেন এরপরও মরে যাওয়াকে ভয় করতে লজ্জা করবে না??!


*
ভবিষ্যত গড়ে দেয় বর্তমান। যে বর্তমান অসুস্থ, পচা, বিকারগ্রস্ত, সে বর্তমান কোন আলোকোজ্জ্বল ভবিষ্যত উপহার দিতে যাচ্ছেনা। এ সে সময় যখন কলমকে শাসন করে অস্ত্র। কথা বলতে গেলে টুঁটি চেপে ধরে থাবা, চিৎকার করতে গেলে চিরতরে আওয়াজ বন্ধ করে দেয়া হয়। শুধু মাত্র মরে যাবার ভয়ে কথা বলবোনা, জ্যান্ত পুড়িয়ে দেবে, অথবা সোজা সবাই করে দেবে বলে তাই আমি লিখবোনা, তার চে’ বরং মরে যাওয়াই ভালো।
আমার কথা, আমার চিন্তা, আমার জিজ্ঞাসা, সব সাবধানী হতে হবে?! সব হতে হবে শাসকের মর্জিমাফিক?! শাসকেরও উপরে থাকে কিছু বন্য শূকর- তাদেরও সমীহ করে বলতে হবে আমাকে কথা, চ্যাঁচাতে গিয়ে নিজের মুখ চেপে ধরতে হবে?! শোসন মেনে চলবে আমার লেখা?! অক্ষর???!!
তার চেয়ে মরে ভূত হয়ে যাওয়াই শ্রেয়।
সত্যিই যদি সময় এসে গেল এমন জঘন্য, হিংস্র, বন্য, পচা পূতী গন্ধ ছড়ানো যে, শুধু লিখাবার জন্যে মরে যেতে হয় অপঘাতে, শুধু লিখবার জন্যে নিষিদ্ধ হতে হয় মাতৃভূমিতে, শুধু বলবার জন্যে জবাই হয়ে যেতে হয় নিজের ঘরের ভেতরেই, তাহলে আমি প্রস্তুত। শুধু বলে বলে মরে যেতে আমি প্রস্তুত।।।


*
এক একটা বইমেলা আসে, এক একটা মানুষ কোপ খায়। পয়লা হুমায়ুন আজাদ দিয়ে শুরু। তিনি বইমেলা থেকে আসবার পথে দেয়া হল কোপ! তারপর রাজীব হায়দার- তাও শাহবাগ ঘুরে বইমেলা থেকেই ফিরছিলেন! সর্বশেষ আপগ্রেডেশন- অভিজিৎ রায়- তাও সেই বইমেলা! হাহাহাহাহাহা...
যাও এবার বইমেলায়..! ঘুরো/ফিরো! বই কিনো! যাও না..!
এতদিন ব্যাপী বইমেলা নাকি বিশ্বের আর কোথাও হয়না, তাই বাংলা একাডেমীর কোন মহারথী নাকি মেলার ডিউরেশন বাড়াবেন বলেছেন। তথাস্ত...

বিশ্বের আর কোথাও এরকম অনেক কিছুই হয়না। বিশ্বের আর কোথাও “আমি আমার ভাষায় কথা বলতে চাই” বলে টুপটাপ কয়েকটা কাচ্চাবাচ্চা ছেলেপুলে মরে যায়নি। আর কোথাও কেবল মাটিকে ভালবেসে এতগুলো মানুষকে রক্ত দিতে হয়নি, সম্ভ্রম দিতে হয়নি!
বিশ্বের আর কোথাও একটা যুদ্ধে, কয়েক মাস সময়ে এতগুলো উদ্বাস্ত তৈরী হয়নি- এতগুলো মানুষ দেশছেড়ে শরণার্থী হয়নি। বিশ্বের আর কোথাও যুদ্ধ করে স্বাধীন হওয়া কোন রাষ্ট্রে অপরাজিত শক্তি রাজনীতি করেনা, সংসদে বসেনা!
বিশ্বের আর কোথাও ক্ষমতার কাড়াকাড়িতে দেশের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে আগুনে পুড়িয়ে কয়লা বানিয়ে ফেলা হয়না!
লিখবার জন্য বা বলবার জন্য মানুষ মেরে ফেলা হয়না- রাষ্ট্র এমন নির্বিকার বিশ্বের আর কোথাও হয়না!!!

ঐছেলেপুলে গুলা এখনও কি অবাক হয় উপর থেকে দেখে, আশ্চর্য সেই বাক্যটা অপরিবর্তিত আছে- “আমি কথা বলতে চাই- নির্ভয়ে”...!


*
ইরাকের ঐতিহ্যবাহী মুসল জাদুঘর গুঁড়িয়ে দিয়েছে আইএস জঙ্গীরা। হাজার বছরের পুরোনো ভাস্কর্য ও মূর্তী ভেঙে-গুঁড়িয়ে গোটা জাদুঘর এবং সহস্রাব্দের পুরনো নিদর্শন ধ্বংস করে ফেলেছে।
২০১৩ সালে হেফাজত ঘোষণা করেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের “অপরাজেয় বাংলা” সহ গোটা বাংলাদেশে সব ভাস্কর্য ভেঙে গুঁড়িয়ে দেবে তারা। “অপরাজেয় বাংলা”র গায়ে এখনও হাতুড়ির আঘাত পড়েনি, যেভাবে আইএস এর ভিডিওতে দেখা গেছে; কিন্তু “অপরাজেয়”র পায়ের কাছেই পড়ে ছিলো অভিজিৎ রায়ের রক্তাক্ত, ঝাঁঝরা শরীর।

কতদূরে আছে আর “অপরাজেয় বাংলা” অভিজিৎদের রক্তাক্ত শরীর থেকে???

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৬

সোজা কথা বলেছেন: প্রাণের অমর একুশে বইমেলা যেন নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের উপযুক্ত স্থান হয়ে উঠছে!
এব্যাপারে, আমি মনে করি প্রশাসনের উচিত সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। আর, বিশ্বাস করি বাঙলা কখনোই জঙ্গিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হবেনা।

০২ রা মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:২২

আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: বাঙলা কখনোই জঙ্গীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হবার কথা ছিলোনা! তারা এখানে শেকড় গাড়তে শুরু করেছে, তার চেয়ে ভয়ংকর ব্যাপার আমরা তাদের শেকড়ের বিস্তৃতির জন্য পর্যাপ্ত জায়গা করে দিচ্ছি!! আমাদের দীনতা, হীনতা আর নিলিৃপ্ততার সুযোগ নিয়ে তারা শক্তিশালী হচ্ছে!!
শেষতক, দোষটা আমাদের উপরেই বর্তায়। আমরা মানে প্রশাসন, আইন, সাধারণের চোখ, চিন্তা, শিক্ষা- সব!

২| ০১ লা মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:১২

স্বপ্নচারী গ্রানমা বলেছেন:
এ সে সময় যখন কলমকে শাসন করে অস্ত্র। কথা বলতে গেলে টুঁটি চেপে ধরে থাবা, চিৎকার করতে গেলে চিরতরে আওয়াজ বন্ধ করে দেয়া হয়।

কতদূরে আছে আর “অপরাজেয় বাংলা” অভিজিৎদের রক্তাক্ত শরীর থেকে???

সেই প্রশ্নই আজ রেখে যাই, গণতন্ত্রের দুয়ারে...!!

সহমত আর ধন্যবাদ জানবেন যাহিন।

০২ রা মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:২৬

আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: প্রশ্ন মগজধারী প্রতিটা প্রাণীর কাছেও..

৩| ০১ লা মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:২০

চিত্রযোধী আবির বলেছেন: প্রাচীন মূর্তি, আর্টিফ্যাক্ট ভাস্কর্য থেকেও অনেক দামী, আসলে অমূল্য হচ্ছে মানুষের জীবন। আর যাদের এভাবে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে, এরা আমাদের সম্পদ। আমাদের অনেক পাওয়ার আছে এঁদের কাছ থেকে। কিন্তু কথা হল, যারা এসব করছে, তারা কতটা শক্তিশালী??? আর যাদের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে এদের থামানোর, প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে, তারা কি করছে??? আর যেসব মানুষের সামনে এসব হচ্ছে, মানে জনগন, তারা কি করছে??? কয়জন ছিল তারা??? ম্যাক্স ১৫??? আর ওই স্থানে সাধারণ মানুষ কতজন ছিলেন??? কেউ কেন এগিয়ে আসলো না?? ছবি দেখে কষ্টের চাইতে বেশি অনুভুত হয়েছে লজ্জা।

০২ রা মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:৩৪

আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: আমাদের দীনতা, হীনতা আর নিলিৃপ্ততার সুযোগ নিয়ে তারা শক্তিশালী হচ্ছে!!
যারা প্রশিক্ষিত, দায়িত্বপ্রাপ্ত, তাদের কথা আমি-তুমি জানতে চাইলে কখনো উত্তর পাবেনা।। তারা উত্তর দেবেনা...
অথচ তাদের দুর্বলতার মাসুল হিসেবে এফবিআই এর আগমন ঘটে গেছে!
আমি জানিনা, এভাবে অন্য একটা রাষ্ট্রের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে (ক্রাইমে) ইন্টারফেয়ার করা কতটা সঠিক (!!) আন্তার্জাতিক সাহায্যের কথা শুনেছি, কিন্তু এভাবে পুরোপুরি তদন্তের ভার নেয়া যায় কিনা, আমি জানিনা..
আমাদের প্রশাসন ও আইন যত দূর্বল হতে থাকবে, এরকম ব্যাপার-স্যাপার আরো ঘটবেই।।।

৪| ০১ লা মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:৪৫

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
//প্রগতির ধ্বজাধারীরা প্রত্যেকেই অনেক অনেক বোঝেন এবং জানেন, এবং ফলস্বরূপ শতধা বিভক্ত হয়ে পড়েন।//

-কেউ কথা রাখছে না!

০২ রা মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:৩৬

আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: ৪৪ বছর কাটল, কেউ কথা রাখেনা..

৫| ০১ লা মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:১৬

আহসানের ব্লগ বলেছেন: সোজা কথা বলেছেন: প্রাণের অমর একুশে বইমেলা যেন নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের উপযুক্ত স্থান হয়ে উঠছে!
এব্যাপারে, আমি মনে করি প্রশাসনের উচিত সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। আর, বিশ্বাস করি বাঙলা কখনোই জঙ্গিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হবেনা।

০২ রা মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:৩৭

আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: আমাদের দীনতা, হীনতা আর নির্লিপ্ততার সুযোগ নিয়ে তারা শক্তিশালী হচ্ছে!!

৬| ০২ রা মার্চ, ২০১৫ রাত ২:০৩

জেন রসি বলেছেন: বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখ দ্বিতীয় বিদ্যায়।
বরং বিক্ষত হও প্রশ্নের পাথরে।
বরং বুদ্ধির নখে শান দাও, প্রতিবাদ করো।
অন্তত আর যাই করো, সমস্ত কথায়
অনায়াসে সম্মতি দিও না।
কেননা, সমস্ত কথা যারা অনায়াসে মেনে নেয়,
তারা আর কিছুই করে না,
তারা আত্মবিনাশের পথ
পরিস্কার করে।

নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী

০২ রা মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:৩৯

আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: বিক্ষত হও প্রশ্নের পাথরে.....

৭| ০২ রা মার্চ, ২০১৫ সকাল ৮:৪২

জাফরুল মবীন বলেছেন: “দ্য পেন ইজ মাইটান দ্যান সোর্ড” কথাটার মর্ম হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করছি!

০২ রা মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:৪১

আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: হাহাহা..সময়ের সাথে কিছু কিছু প্রবাদ করুণ রসিকতায় পরিণত হয় জাফরুল মবিন ভাই :(
আমি দুঃখিত..

৮| ০২ রা মার্চ, ২০১৫ সকাল ৮:৪৩

জাফরুল মবীন বলেছেন: দুঃখিত শব্দটি ‘মাইটার’ হবে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.