নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার সম্পর্কে কিছু জানার আগে পৃথিবী সম্পর্কে জানুন,আমাকে জেনে নিতে পারবেন। আমি এ পৃথিবীরই ক্ষুদ্র উপাদান!

ইগোযুক্ত কিংকর্তব্যবিমূঢ়

অতি সাধারণ অথচ ভীষণ রকমের আত্মহংকারী।।

ইগোযুক্ত কিংকর্তব্যবিমূঢ় › বিস্তারিত পোস্টঃ

আত্মকাহিনী- \'পিকিউলিয়ার স্বার্থপর\'

২১ শে মে, ২০১৮ রাত ২:৪৯

মনে পড়ে ধুপছায়া মুখ চোখের মণিতে! বৃষ্টি হয়ে ঝরে কথার বকুল সময়ের শুন্যে। তারও কি মনে পড়ে দূর-অতীত?
ভুলিনি এখনও অযুত পাখির কলরব-মুখর সন্ধ্যা যুগোল স্মৃতির রাত! প্রণয়ের এই ইতিহাস জানত জোনাক-পোকারা ও শুকপরে চাঁদ। বিবর্তনে প্রকৃতি থেকে মুছে গেছে লাভ-সম্পর্কিত আরও অনেক দূর্লভ দৃশ্য ও প্রহর। অচল মুদ্রা হয়ে এই আমিও পথে হারিয়ে যাওয়া পথের গল্প এক।

একটা গল্প বলবো আজ। যে গল্পে শুরু শেষ কিংবা ভালোবাস নেই। ভুলে ভরা গল্প এক, ভুল আর ভুল!

তাঁর মধ্যে আমাকে নিয়ে পরিতৃপ্তিবোধ আসেনি কখনও । কারণটা হয়তো আমি নিজেই। তবুও মাঝে মাঝে নিজেই চিন্তায় পড়ে যাই আসলেই কি সব কিছুর মূলে আমিই দায়ী ছিলাম?
দায় কিংবা দায়িত্ব দু'টোই হয়তো আমার ছিলো। আমার জায়গা থেকে হয়তো ছিটেফোঁটাও আমি করতে পারিনি তার জন্য। তাই বলে হেলায় হেলায় আমি এতটুকু নিচে নেমে যাবো শেষদিন পর্যন্ত কল্পনায় আনিনি। প্রথম দিন থেকেই আমি ভুল দিয়ে এগিয়েছি। ভুলে স্বপ্ন বুনেছি, ভুল গল্প বানিয়েছি, ভুলে হয়েছি মশগুল! আমার জীবনের সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হিসেবে 'ভুল' শব্দটাই বেছে নিয়েছে প্রকৃতি তার প্রমাণ আরেকবার পেয়েছি যখন আমার বিশ্বাস করতে হয়েছিলো 'তার সাথে কাটানো সময়গুলো ভুল ছিলো' ।।

তাঁর জন্য আমি এটা করেছি সেটা করেছি বলে সিম্প্যথি নিতে চাইনা কোনভাবে। তবে আমার সৃষ্টিকর্তা জানে তাকে আমি কতটুকু পরিমানে আপন করার নিয়তে এগিয়ে ছিলাম। আমি যে ছেলে কখনও সৃষ্টিকর্তাকে মনে করতে সময় পাইনা সে ছেলে তাঁর অসুস্থতার জন্য মাজারে পর্যন্ত গিয়ে নামাজ পড়েছি, অশ্রু ফেলেছি!
এই যা! চোখের পানি দেখি কি-বোর্ড ছুঁয়েছে...

সে অনেক কিছুই জানতো না আমার সম্পর্কে, সে অনেক কিছুই বুঝতোনা আমাকে নিয়ে। বয়সে কাঁচা মেয়ে, ম্যাচুরিটি স্বাভাবিকভাবেই কম। একটুতে গলে যাওয়ার মতো মেয়েও কিন্তু সে না। খুব স্ট্রং- ভয়াবহ রকমের স্ট্র! হ্যাঁ, সে কখনোই আমাকে জোর করে চায়নি। আমি নিজেই জোর করে তাকে আমার পাশে এনেছি। সত্য গল্পের মোড়কে সে মিথ্যেটা মেনে নিয়েছে। তাই বলে পরিনতিটা এরকম, ভাবিনি!
আহ! আমি প্রকৃতিগতভাবেই একটু বেশি 'ওভার পসেসিভ' একটা ছেলে। 'আমার জিনিষ মানে আমার'- এ নীতিতে জীবনে এতদুর এগিয়েছি। স্বপ্ন দেখতে পছন্দ করি, কিন্তু দু;স্বপ্ন দেখিনা। আর প্রচ্চুর আত্মবিশ্বাসী! তো সেই আত্মবিশ্বাসে তাকে আমি ভয়াবহ রকমের পেইন দিতাম! ভয়াবহ মানে ভয়াবহ! বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তার ব্যাক্তিগত স্বাধীনতায়ও আঘাত দিয়েছি। একটাই কারণ, তাকে আমার করতে চেয়েছি!

একটা কথা বলাই বাহুল্য যে, আমি তাকে ভুলেও সন্দেহ করিনি। সেটা সেও জানেনা। ও যে আমায় রেখে আর কারো সাথে প্রেম করবে কিংবা সময় কাটাবে তা আমি কল্পনায়ও বিশ্বাস করতাম না এবং করিনা। তবে হ্যাঁ, তাকে আমি এ সন্দেহাতীতভাবে সাবধান রাখার চেষ্টা করতাম, সবসময়! একটু বেশি পরিমানেই! ব্যাস! শুরু হয়ে যেত! হাহাহাহা!
আমি কোনভাবেই ধুঁয়া তুলসি পাতা ছিলাম না। ভয়ঙ্কর রকমের চিল্লাচিল্লি করতাম তার সাথে। অনেকটা আফিম খাওয়া মাতালের মতো। ক্ষনিকেই উন্মত্ত হয়ে যেতাম ছোট্ট- অতি ছোট্ট বিষয় নিয়ে। আবার খুব সহজে সবকিছু মেনে নিয়ে সর‍্যি বলেও ফেলতাম! অনেকটা গরু মেরে জুতো দানের মতো!

আমি তার জীবনের একটি 'বিভীষিকা' হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। অন্তত তার বয়সের একটা মেয়ের জন্য আমার আচরণ অতিরিক্ত পর্যায়ের খারাপ ছিলো। আমি অনেকটা এক শ্রেণীর হায়েনার মতো হয়ে যেতাম মাঝে মাঝে। তাকে যেকোন বিষয়ে দোষ দিয়ে দিতাম। ইস্যু ক্রিয়েট করে তুমুল ঝগড়ায় আনাড়ি শব্দ বলতেও কার্পণ্য করতাম না! সে আমার কাছে চাইতো খুব কম। কিন্তু অন্তত সেই কম চাওয়ার মাঝে 'আনাড়ি শব্দ বিনিময়' ছিলোনা তা নিশ্চিত! আহ! একটা সময় ছিলো আমি তাকে নিয়ে মশগুল থাকতে চাইতাম দিনের সিংহভাগ সময়। সেটা তার জন্য যে বিরক্তির কারণ হয়ে যাচ্ছিলো তা আঁচ করতে পেরেছিলাম ঐ সময়েই, তবু আমি নাছোড়বান্দা! তাকে ইনিয়ে বিনিয়ে আমার সাথে রাখার সকল রকমের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়াই ছিলো তখনকার লক্ষ্য!

তার পরিবারের সাথে আমার সম্পর্কটা কেনো জানি আমার প্রত্যাশার বাইরে ছিলো। মাঝে মাঝে চিন্তা করি ওর পরিবারের সাথে সম্পর্কটা হয়তো আমাদের সম্পর্কের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে শেষ সময়ে এসে। তবে আমি ওর পরিবারের সাথে মিশে অনেক কিছু জেনেছি, শিখেছি, যতদূর পারি মিশেছি এবং তাকে আরওে বেশি পরিমাণে ভালোবেসেছি। ওর মাকে আমি আমার মায়ের স্থানটা যখন দেয়া শুরু করেছি ঠিক তখন আচমকা সবকিছু পরিবর্তন হতে লাগলো। পরিবর্তন হতে লাগলো ওর চিন্তা ভাবনা, ওয়র পরিবারের চিন্তা ভাবনা, আন্টির চিন্তা ভাবনা, আংকেলের এবং তাঁর! পরিবর্তনের তালিকা খুবই ক্ষুদ্র কিন্তু আমার জীবনে এরর প্রভাব কতটা বৃহৎ তা অন্তত আর কেউ বুঝতে পারবেনা, এমনকি সেও না...। আমি আন্টির কথা কখনও ভুলবোনা। তাঁর হাতের বিরিয়ানি অন্তত আমার জিভের স্বাদ হয়ে সারাজীবন তাকে মনে রাখবে। উনার জন্য মন থেকে দোয়া...

তাঁর হাত অসংখ্যবার ছুঁয়েছি আমি। প্রতিবারই একটি ইন্টেনশনে তাকে স্পর্শ করেছি আর তা হচ্ছে ভালোবাসার। আমি প্রতি ছুঁয়াতেই একটা জিনিষ আঁচ করতে পারতাম আর সেটা হচ্ছে সে আমার হচ্ছে। না, সে হয়নি, হতে চায়না!
তাকে নিয়ে আমি বেশ কয়েকটা উপন্যাস লিখে ফেলতে পারি। অল্প সময়ে কত সহস্র স্মৃতি আমাদের মাঝে বেঁচে রয়ে গেছে তা কল্পনাতীত। স্মৃতিগুলো বাঁচিয়ে রাখতে আমি আপ্রাণ ছিলাম সবসময়, আছিও। কালের বিবর্তনে আমি একদিন নিশ্চিত হারিয়ে যাবো। কিন্তু সে হারাবেনা, হারবেনা বাঁচিয়ে রাখা স্মৃতিগুলো!

সে আমাকে কেনো ছেড়েছে সে জানে। তার চেয়েও বেশি আমি জানি। সে জানে নিজের জন্য, নিজের পরিবারের জন্য সে আমাকে ছেড়েছে। সে আমাকে ছেড়েছে আমার আচরণগত সমস্যার জন্য। সে আমাকে ছেড়েছে আমার অতিরিক্ত বাড়াবাড়ির জন্য। কিন্তু সে জানেনা সে আমাকে ছেড়েছে আমার 'অতিরিক্ত ভালোবাসার জন্য' ! আফসোস!

আমি তাকে নিয়ে গল্প , প্রবন্ধ, উপন্যাস কিংবা চলচ্চিত্র চিত্রনাট্য লেখার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছিনা। তবে হ্যাঁ, আমি তাঁর সুখের সোপান বেঁয়ে ওঠা দেখতে চাই, মন থেকে চাই। যে সুখের জন্য সে আমাকে বাদের তালিকায় ছেঁটে ফেলেছে সে সুখ আমি দেখবোই! তাঁর জন্য বরাবরের মতো শুভকামনা আমার। তাঁর মধ্যে যে সিরিয়াসনেসের অভাব তা অন্তত কমুক। আমার মতো দুষ্ট প্রকৃতির লোকেরও হয়তো দু'একটা গুণ ছিলো। এই যেমন সহজে গলে যেতাম তাঁর কথায় কিংবা সর্বোচ্চ দিয়ে তাকে খুশি রাখার চেষ্টা করে যাওয়া। এগুলো যে বুঝেনি তাঁর সিরিয়াসনেসের ঘাটতি আছে তা অন্তত বলে রাখা যায়।

শুরুতে বলছিলাম আমার জীবনটা ভুলে ভরা। সত্যিই তাই। এর প্রমাণ না হয় না'ই দিলাম। বিপরীতে আমি তাঁর জীবনকে 'শুদ্ধে ভরা' বললে কম হবে। একজন মানুষ কতটুকু শুদ্ধে ভরা হলে আমার মত কাপুরুষ শ্রেণির মানুষকে ছুঁড়ে ফেলে নতুন স্বপ্ন বুনে, আমার মত অসহ্য একটা ছেলে সহ্য না করার দু;সাহসিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে? আমি হয়তো অভিমানে অভিমানে কাটিয়ে দিবো জীবন। নতুন স্বপ্ন হয়তো আমার জীবনেও আসবে। তবু অভিমানে নত শিরে অশ্রু বিসর্জনে নিজে সমাজের কাছে তুলে ধরবো নিজেকে। কেউ জানবেনা তাঁর কথা। গল্প তবু সঁপে যাবো আমি আমার নিজের কাছে। আর সেই গল্পের শিরোনাম দিবো 'পিকিউলিয়ার স্বার্থপর' ...!

আমি মরে যেতে যেতে ঠিকই বেঁচে উঠছি আবার- ঘুমোতে ঘুমোতে যেমন জেগে উঠি। স্মৃতি-বিস্মৃতির ভর বহন করতে করতে কখন যে ভীষণ কান্ত হয়ে উঠি...। আগামীর অভিমুখ যাত্রায় অজস্র লোভ ও আকর্ষণ কাছে ডাকে যেন রমণীয় সম্মোহন...। মাতালের মত টলতে টলতে একবার আমি পাহাড়ের উপর ভেঙে পড়ি আর একবার সমুদ্রের কাছে এসে প্রতারণার শিকার হই!

সেই যে একদিন মধ্যরাতের কথাকাটিতে কেটে গেল হৃদয়- মারাত্মক আহত হল প্রাণ, সেই থেকে ভেসে বেড়াচ্ছি শূন্য হয়ে মহাশূন্যে, অনন্তকাল।


আমি জানি ফিরবেনা আর সে!
তবু সে ভালো থাকুক, আর আমাকে অন্তত একবারের জন্য ভালো ভাবুক।


মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে মে, ২০১৮ ভোর ৬:৫৬

কানিজ রিনা বলেছেন: কাপুরুষের জীবন ভুলে ভরা বেশ ফুটেছে
গল্প ভাল হয়েছে। ধন্যবাদ।

২| ২১ শে মে, ২০১৮ সকাল ৯:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: জলপিপির সংসার
রোদে পুড়ে একাকার
দায়িত্বে নেই অবকাশ

৩| ২১ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৩

কাইকর বলেছেন: শেষের চরণ দুইটি মনে রাখার মতো। খুব ভাল লাগলো পড়ে। আমি নতুন ব্লগার। সময় পেলে ঘুরে আসবেন আমার ব্লগ থেজে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.