নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলোর আয়না এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।এখান থেকে কোনো লেখা লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা, অনুলিপি করা গ্রহনযোগ্য নয়।লেখা অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা করতে চাইলে লেখকের সম্মতি নিতে হবে। লেখকের ইমেল - [email protected]

ফকির ইলিয়াস

এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।এখান থেকে কোনো লেখা লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা, অনুলিপি করা গ্রহনযোগ্যনয়। তা সৃজনশীল কাজের পরিপন্থী। লেখা অন্য কোথাওপ্রকাশ, ছাপা করতে চাইলে লেখকের সম্মতি নিতে হবে। লেখকের ইমেল - [email protected]

ফকির ইলিয়াস › বিস্তারিত পোস্টঃ

বুদ্ধিবৃত্তির পচন ও সমকালের বাংলাদেশ

২৩ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:৫৩




বুদ্ধিবৃত্তির পচন ও সমকালের বাংলাদেশ
ফকির ইলিয়াস
======================================
কবি শহীদ কাদরীকে আমি জিজ্ঞাসা করি, আমাদের সময়ের প্রধান কবি কে? তিনি বলেন- শামসুর রাহমান। আমি বলি- আরেকটু ভেবে বলুন। তিনি বলেন, শামসুর রাহমান। শহীদ কাদরী কথা বলতেই থাকেন। তিনি বলেন, জীবনানন্দ দাশের পর শামসুর রাহমানই অন্যতম ও বড় কবি। তিনি বাংলা কবিতার জন্য যা করে গেছেন, অন্য কেউ ততটা পারেননি।
আমি বলি, রাহমান তো মুক্তিযুদ্ধে যাননি। আল মাহমুদ গিয়েছিলেন। শহীদ কাদরী বলেন, মাহমুদ গিয়েও যা করতে পারেননি, রাহমান না গিয়েও তার চেয়ে অনেক বেশি করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে গেলেই সবাই শেষ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা থাকতে পারে না, ইলিয়াস। কে কোন মতলবে গিয়েছিল, কার মোটিভ কী ছিল, তা যুদ্ধের পরেই বেরিয়ে আসে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের যুদ্ধের ইতিহাস- সেই সাক্ষ্যই দেয়। বলতে থাকেন শহীদ কাদরী।
শহীদ কাদরী বুদ্ধিবৃত্তিকে সম্মান করতেন। তিনি কবিতাকে নাকচ করে দিতেন না। তিনি কবির পচনকে নাকচ করে দিতেন। সময়কে চিহ্নিত করে দেখিয়ে দিতেন কার স্খলন কোথায়, কীভাবে হয়েছে। কবি শহীদ কাদরী নিউ ইয়র্কে ‘একটি কবিতা সন্ধ্যা’ নামে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করতেন। একটি কবিতা সন্ধ্যায় কবি ফরহাদ মজহারের কবিতা পড়ানো হয়েছিল।
গত ১৭ ডিসেম্বর ২০১১ শনিবার সন্ধ্যায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি নিবেদন করা হয় বাংলাদেশ ও মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মদানকারী শহীদদের উদ্দেশে। সেখানে ফরহাদ মজহারের কবিতা পড়েছিলেন আমাদের বন্ধু, নিউ ইয়র্কের আবৃত্তিকার আনন্দ ইকবাল। অনুষ্ঠানগুলো সাজানোর আগে শহীদ কাদরী আমার সাথে ফোনে কথা বলতেন। এ নিয়েও ফোন দিয়েছিলেন। আমি বলি, আপনি ফরহাদ মজহারকে কতটা কবি মনে করেন? তিনি হেসেছিলেন। বলেছিলেন- “তার কিছু কবিতা তো হয়ে উঠেছে। হ্যাঁ, তার স্খলন হয়েছে। সে এখন হেফাজতিদের দোসর। একই দোষে আল মাহমুদও তো দুষ্ট। কিন্তু আল মাহমুদকে তো কবি হিসেবে খারিজ করে দেওয়া যাবে না। ফরহাদ মজহার অলওয়েজ ওয়াজ এ সাশপিসিয়াস ফেস। তা আমরা, আমাদের বন্ধুরা জানতো। ফরহাদ আমাকে ‘ওস্তাদ’ ডাকতো। এখনো ডাকে। তার ব্যক্তি চরিত্র খুবই দুষ্ট প্রকৃতির। কিন্তু তার কিছু কবিতা আছে। আমি সে দিকেই আলো ফেলেছি। তার ব্যক্তি মূল্যায়ন যে জেনারেশন করবে না- তা কিন্তু নয়।”
শহীদ কাদরীর কথাগুলো আমার খুবই মনে পড়েছে। ফরহাদ মজহারকে আমি চিনি প্রায় তিরিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে। মজহারুল হক ফরহাদ একজন ফার্মাসিস্ট হিসেবে গ্রিনকার্ড নিয়েই আমেরিকায় এসেছিলেন। তার প্রাক্তন স্ত্রী নিউ ইয়র্কেই থাকেন। তার মেয়ে নিউ ইয়র্কে আইনজীবীর পেশা নিয়েছেন। ফরহাদ মজহারের খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন ড. সলিমুল্লাহ খান। ছিলেন বললাম এজন্য- এখন আর নেই। কারণ সলিমুল্লাহ খান ভেতরে ঢুকে অনেক কিছুই পরখ করার সুযোগ পেয়েছেন। দেখেছেন। এখন এই সলিমুল্লাহ খান খুব স্পষ্ট করেই বলেন- ‘ফরহাদ মজহার সংশোধনেরও অযোগ্য ব্যক্তি’।
ফরহাদ মজহার বারবার রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি মিডিয়াকে আক্রমণ করেছেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সন্ত্রাসী বলেছেন। তার কথাগুলো এখনও ইন্টারনেটে ভেসে বেড়াচ্ছে। দৈনিক আমাদের সময়, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০০৫ লিখেছিল- ফরহাদ মজহার বলেছেন, “১৭ আগস্টের জেএমবি’র বোমাহামলাকারীরা যদি সন্ত্রাসী হয়, তাহলে ’৭১-এর মুক্তিযোদ্ধারাও সন্ত্রাসী!” ফরহাদ মজহার আরো বলেছিলেন “জেএমবির ২০০৫ সালের ১৭ আগস্টের বোমাবাজি-সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড যদি অবৈধ হয় তবে ৫২, ৬৬, ৬৯ ও ৭১-এর সকল আন্দোলন-সংগ্রামও সন্ত্রাসীকর্মকাণ্ড!”
‘বোমা হামলাকারীরা সন্ত্রাসী হলে মুক্তিযোদ্ধারাও সন্ত্রাসী’ শিরোনামে দৈনিক আমাদের সময় যে রিপোর্ট ছেপেছিল- তা পাঠকের আবারো পড়া আবশ্যক মনে করি। মিল্টন আনোয়ারের পুরো রিপোর্টটি ছিল- “১৭ আগস্ট যারা দেশব্যাপী বোমা হামলা করেছে তারা যদি সন্ত্রাসী হয় তাহলে ’৭১-এর মুক্তিযোদ্ধা কি সন্ত্রাসী? ১৭ আগস্টের হামলাকারীদের যদি সন্ত্রাসী বলি তবে আমাদের ’৫২, ’৬৬, ’৬৯ বা ’৭১-এর আন্দোলনও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ফরহাদ মজহার। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বোমাবাজি, সন্ত্রাস : জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এক আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পলিসি ফোরাম আয়োজিত আলোচনাসভায় জনাব মজহার আরো বলেন, ১৭ আগস্টে যারা হামলা করেছে তারা তাদের মতো করে সমাজটাকে বদলাতে চায়। আমরাও বিদ্যমান সমাজটাকে বদলাতে চাই। কিন্তু আমরা কি আমাদের দৈনন্দিন কাজের মধ্যে এমন কোনো কাজ করছি যার মাধ্যমে এই সমাজটাকে বদলানো যায়? আমরা যদি কিছু না-ই করে থাকি তবে যারা সমাজটাকে বদলাতে চায় তাদের সন্ত্রাসী বলবো কেন? যারা ইসলামের নাম নেয়, কট্টরপন্থী রাজনীতির মাধ্যমে সমাজ বদলাতে চায়, আমরা তাদের সন্ত্রাসী বলছি। অথচ আমরা বুশ, ব্লেয়ারকে বলি না যে, তারা খারাপ কাজ করছে।
তিনি বলেন, আগস্টের বোমা হামলাকে প্রথাগত সন্ত্রাস বলা যায় না। বিচারে যদি অভিযোগ প্রমাণিত না হয় তাহলে আপনি তার কোমরে দড়ি বেঁধে ধরে নিয়ে যেতে পারেন না। অথচ সমস্ত দৈনিক পত্রিকা এতটাই নিষ্ঠুর যে, এ ধরনের লোকদের সত্যিকারের আসামি হিসেবে উপস্থাপন করেছে। একজন লোক বোমায় আহত হয়েছে অথচ পত্রিকা লিখেছে সে বোমা মারতে গিয়ে আহত হয়েছে। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশের পত্রিকা এ ধরনের কাজ করলে পত্রিকার সম্পাদককে ডেকে এনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে শাস্তি দেওয়া হতো। অথচ আমাদের মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। কোরআন শরীফে বলা আছে, আমি তাদের কানে সিসা ঢেলে দিয়েছি, বুকে মোহর মেরে দিয়েছি। কওমি মাদ্রাসার ছাত্র মানেই সবার কাছে মৌলবাদী সন্ত্রাসী। আমি তো তাদের মধ্যে সন্ত্রাসী দেখিনি। আমি সন্ত্রাস দেখেছি আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পাস করা ছাত্রের মধ্যে, জর্জ বুশের মধ্যে, পাশ্চাত্য ধারার সভ্যতার মধ্যে। বাংলাদেশে সন্ত্রাসের বিস্তার খুলনা-সাতক্ষীরার চিংড়ি ঘেরের থেকে। অনেকে বলে ইসলাম জঙ্গিবাদ সমর্থন করে না। আমি এটার সঙ্গে একমত নই। ইসলাম জঙ্গিবাদ সমর্থন করে। আমরা শত্রুর সঙ্গে হাত মিলিয়েছি এবং মিত্রকে খুন করেছি। আমরা জঙ্গিবাদকে দেশের একমাত্র সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে দেশটাকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছি। আমরা যখন একে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে মোকাবেলা করছি তখন অন্যান্য রাষ্ট্র একে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করছে। আমরা যতক্ষণ না এই চেতনার সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসতে পারবো ততদিন আমাদের মুক্তি নেই।
আলোচনাসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পিআইবি চেয়ারম্যান সাদেক খান, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, ইনস্টিটিউট অব হযরত মুহম্মদ (স.)-এর প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ এম ইব্রাহীম, হিযবুত তাহরীর বাংলাদেশের সমন্বয়ক মহিউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।’
আমাকে একটি বিষয় খুব ভাবায়। ঐ সময়ে একজন মুক্তিযোদ্ধা, কিংবা তাদের সন্তান-স্ত্রী কেন এই ফরহাদ মজহারের বিরুদ্ধে একটি মামলাও করলেন না? কেন তাকে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যায়নি? কী বাধা ছিল সে সময়?
বাংলাদেশে কিছু চিহ্নিত চরিত্র সবসময়ই মূলত মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূলে আঘাত করেই যাচ্ছে। মাহমুদুর রহমান, শফিক রেহমান, ফরহাদ মজহার, তুহিন মালিক, আসিফ নজরুল এরা কার পারপাস সার্ভ করছেন- তা দেশবাসীর অজানা নয়। এই পালে এখন নতুন যুক্ত হয়েছেন মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। জাসদ থেকে এসেছিলেন আওয়ামী লীগে। এখন তিনিই বলছেন, আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া তার ভুল ছিল?
আওয়ামী লীগ নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে মান্না বলেছেন, ‘নৌকায় তো আমিও ছিলাম। ড. কামাল নৌকা থেকে নেমেছেন, সেই নৌকায় আমিও চড়েছি। বেকুব না হলে কেউ আওয়ামী লীগ করে! আওয়ামী লীগকে বোঝার জন্য ড. কামালের কত সময় লেগেছে জানি না, কিন্তু আমার বুঝতে অত সময় লাগেনি।’
এখানে একটা কথা আমি বলতে চাই। জাসদ জন্ম নেওয়ার পর যারা জাসদে যোগ দিয়েছিল, এদের একটি বিশেষ অংশ ছিল রাজাকারপন্থী। পাকিস্তানপন্থী। এরা জাসদের নামে মূলত বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশের বিরোধিতা করতে চেয়েছিল। অনেক জামায়াতি আলবদরও সেদিন জাসদে ঢুকে পড়েছিল। এরাই এখন তাদের আসল চেহারা দেখাচ্ছে। এরাই এখন ১৯৭১-এর চেতনার শিকড়ে কুঠার চালাতে মোটেই দ্বিধা করছে না।
প্রিয় পাঠক, ড. আফতাব আহমাদ মানের এক শিক্ষকের কথা আপনাদের মনে থাকার কথা। ড. আফতাব আহমাদ এক সেমিনারে বাংলাদেশের বর্তমান জাতীয় সঙ্গীত ‘আমার সোনার বাংলা’ পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়ে, বিতর্কের জন্ম দেন। তার কথা ছিল একজন হিন্দু কবি, মুসলমানপ্রধান দেশের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা হতে পারেন না। এই আফতাব আহমাদ আততায়ীর হাতে নিহত হন।
বাংলাদেশে এমন ঘাপটি মেরে থাকা বুদ্ধিবিকারগ্রস্ত অনেক আছে। এরা একটি নতুন সার্কেলও তৈরি করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। নতুন প্রজন্মের কিছু ‘মর্দে মুমিন’কে দিয়ে তারা ‘মানবতাবাদের নামে’, ‘ব্যক্তি স্বাধীনতার নামে’ মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে কথা বলাচ্ছে। খুঁজলে দেখা যাবে, এদের পূর্বপুরুষ মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে। মনে রাখা দরকার আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করা আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শিকড় কেটে ফেলা এক নয়। বাংলাদেশে ৩০ লাখ শহীদ সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক তো এরাই করছে।
বেগম খালেদা জিয়ার কথাটি আপনাদের মনে আছে? বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদের যে সংখ্যা বলা হয় তা নিয়ে বিতর্ক আছে। বাংলাদেশের নয় মাসের রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধে ত্রিশ লাখ মানুষ নিহত হয়েছিল বলে সরকারিভাবে উল্লেখ করা হয়।
দু’দফা ক্ষমতায় থাকার সময়েও খালেদা জিয়া শহীদের সংখ্যা নিয়ে কোনো কথা বলেননি। কিন্তু স্বাধীনতার ৪৫ বছরের মাথায় এসে ঢাকায় আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধাদের এক অনুষ্ঠানে ২০১৫ সালে খালেদা জিয়া এই মন্তব্য করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের এই সমাবেশে দেওয়া ভাষণের একটা বড় অংশজুড়েই ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নানা কথাবার্তা। এরই এক পর্যায়ে তিনি উল্লেখ করেন ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত মানুষদের আনুষ্ঠানিক যে সংখ্যা সেটি নিয়ে বিতর্কের কথা। তিনি বলেছিলেন, মক্তিযুদ্ধের সময় কত মানুষ নিহত হয়েছিল তা নিয়ে বিতর্ক আছে।
এ নিয়ে পরে আদালতকে কথা বলতে হয়েছিল। নেত্রকোনার রাজাকার মো. ওবায়দুল হক ওরফে আবু তাহের ও আতাউর রহমান ননীর যুদ্ধাপরাধ মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এই বক্তব্য আসে। রায়ের একটি অংশে বলা হয়, “প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস হলো- পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীর দখল থেকে মাতৃভ‚মিকে মুক্ত করতে বাঙালি জাতি ও মুক্তিযোদ্ধারা নয়টি মাস যুদ্ধ করেছেন। ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছেন, লাখ লাখ নারী সম্ভ্রম হারিয়েছেন তাদের প্রিয় বাংলাদেশকে মুক্ত করতে। প্রায় এক কোটি মানুষকে শরণার্থী হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন, আরো বহু মানুষ তাদের বাস্তুভিটে হারিয়েছেন। এই মীমাংসিত ইতিহাস এখন জাতির পবিত্র আবেগ ও মুক্তিযুদ্ধের গৌরবের সঙ্গে একাকার হয়ে গেছে, যে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এ জাতি পেয়েছে ‘বাংলাদেশ’।”
রায়ের পর প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘ইতোমধ্যে ত্রিশ লাখ শহীদের বিষয়ে যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, রায়ে সেই যুক্তি খণ্ডন করে দৃঢ়তার সঙ্গে আদালত বলেছেন, ত্রিশ লাখ শহীদ নিয়ে কোনো ধরনের বিতর্কের অবকাশ নাই। এই ত্রিশ লাখ মানুষের আত্মদানেই স্বাধীন বাংলাদেশ।’
কিন্তু এই মহল থেমে নেই। তারা অপপ্রচারের মতুন নতুন মাত্রা যোগ করছে। তারা নানাভাবে বাংলাদেশের মূল অস্তিত্বে আঘাত করতে চাইছে। এই পচন ঠেকাতে হবে। এজন্য আজকের বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। এরা চিহ্নিত মোনাফেক। এরা এই দেশেই আছে। কিন্তু দেশের মূল ভিত্তিকে বিদ্রূপ করেই যাচ্ছে। শহীদ কাদরীর ভাষায় আবারো বলি, সাশপিসিয়াস ফেসগুলো জাতির জন্য খুবই ভয়ংকর। মানবতার জন্য তো বটেই।
-----------------------------------------------
দৈনিক খোলাকাগজ ॥ ঢাকা ॥ ২১ জুলাই ২০১৭ শুক্রবার

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৮

তপোবণ বলেছেন: 'মাহমুদুর রহমান, শফিক রেহমান, ফরহাদ মজহার, তুহিন মালিক, আসিফ নজরুল, ড, কামাল, মাহমুদুর রহমান মান্না' এরা বুদ্ধিবিকারগ্রস্ত? এত লেখার তো প্রয়োজন ছিলনা, আপনার এই বিশাল লেখার সারমর্ম হলো 'যারাই আওয়ামীলীগের বিরোধীতা করবে তারাই বুদ্ধিবিকারগ্রস্ত। এবার বুঝা গেল সঙ্কটটা আসলে কোথায়। হীরক রাজার দেশের মোসাহেবরা সবাইকে পাগল আর বিকারগ্রস্তই ভাবতো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.