নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মাঝেমধ্যে নিজেকে কেন জানি প্রতিভাবান বলে মনে হয়! কেন মনে হয়, তা খুঁজতে খুঁজতে প্রতিভা শেষ করে ফেলছি
হঠাৎ করে একটা মানুষ মারা গেল। ময়নাতদন্ত শেষে ডাক্তাররা জানালেন, লোকটির মৃত্যু হয়েছে অপঘাতে, মশার কামড়ে! নিরাপত্তারক্ষীরা মশাকে ধরতে ঝাঁপিয়ে পড়লেন সিসি ক্যামেরার ফুটেজের ওপর। মশার একদিন কি তাদের একদিন! কিন্তু হায়! বিধি বাম! দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল রাতের বেলা, ফলে সিসি ক্যামেরায় কিছুই দেখা যায় না। অনেক চেষ্টা করার পর শেষমেশ সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ল কিছু মশার ঝাপসা অবয়ব।
অন্যদিকে এডিস মশাদের সংগঠন দাবি করল, ‘এটা আমাদের কীর্তি!’ শুরু হলো তোলপাড়! তবে কি দেশ এডিস মশায় ছেয়ে যাচ্ছে? এডিস মশাদের আবার বিশেষ বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যাচ্ছে; তারা এখন এলাকার মানুষদের হুল ফোটায় না। তাদের দরকার ভিন পাড়ার মানুষের রক্ত! সারা জীবন নিজেদের পাড়ার মানুষের রক্ত খেয়ে খেয়ে মনে হয় এখন আর তেমন মজা পায় না! তাই এই রুচির পরিবর্তন।
মশাদের এমন অস্বাভাবিক উপদ্রবে কর্তৃপক্ষের টনক নড়ল। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা দাবি করলেন, ‘না, এটা এডিস মশার কাজ নয়। এই এলাকায় কোনো এডিস মশা নেই।’ বলেই খালাস হলেন না তাঁরা, এলাকাটিকে তাঁরা ঘোষণা করলেন এডিস মশামুক্ত হিসেবে।
তবে কিছুদিন পর আবার মশার কামড়ে ভিন পাড়ার আরেকজনের মৃত্যু হলো! এবারও এডিস মশাদের সংগঠন দাবি করল, ‘এটাও আমাদের কীর্তি!’ এবারও ওপর মহল থেকে ঘোষণা এল, ‘এটা এডিস মশা হতেই পারে না! নিশ্চয়ই কোনো মামুলি মশার কুকর্ম।’ অপরাধী মশাদের ধরতে গঠন করা হলো পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি।
দিন যায় রাত যায়, তদন্ত কমিটি মশাদের ধরার জন্য কত উপায়েই না চেষ্টা করে যায়! এমন কোনো পদ্ধতি নেই, যা তারা প্রয়োগ করে না। কিন্তু কোনো মশাই ধরা দেয় না। চারদিকে শোরগোল ওঠে। লোকে বলে, ‘বুঝলাম, এসব এডিস মশার কাজ নয়। কিন্তু যেসব মশার কামড়ে দুটি প্রাণ গেল, তাদের তো ধরে দেখাও!’ তারপরও এসপার-ওসপার হয় না। অপরাধী মশারা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে।
শেষ পর্যন্ত কিছু মশা তদন্ত কমিটির এক সদস্যের নাকে ঢুকে যায়। সেই মশাকে বের করে আনা হয় অনেক কায়দা-কসরত করে। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মশাদের কোনো এক ‘বড় ভাই’ তাদের পাঠিয়েছে কামড়াতে। কর্তৃপক্ষের উচ্চ মহল স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে, মিষ্টি বিতরণ হয়। তারা দাবি করে, ‘অপরাধী আসলে সাধারণ মশা!’
কিন্তু লোকে বলে, ‘তাহলে মশাদের ওই বড় ভাইটা কে? সে আবার এডিস মশা নয় তো?’ এদিকে পত্রিকায় খবর বেরোয়, গত পনেরো বছরের মধ্যে এবারেই ডেঙ্গুর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। তাই মানুষের সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়, তবে কি ডেঙ্গুই...!
©somewhere in net ltd.