নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাঝেমধ্যে নিজেকে কেন জানি প্রতিভাবান বলে মনে হয়! কেন মনে হয়, তা খুঁজতে খুঁজতে প্রতিভা শেষ করে ফেলছি

ফাহাদ মিয়াজি

মাঝেমধ্যে নিজেকে কেন জানি প্রতিভাবান বলে মনে হয়! কেন মনে হয়, তা খুঁজতে খুঁজতে প্রতিভা শেষ করে ফেলছি

ফাহাদ মিয়াজি › বিস্তারিত পোস্টঃ

গাধার বাচ্চা

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৪২

সৈয়দ রহিম মিঞার মেজাজ ভীষণ খারাপ। তার একমাত্র ছেলে মন্টু মিঞা এইবার তৃতীয়বারের মত এস,এস,সি পরীক্ষা দিয়েছে। ফলাফল সম্ভবত একই। কারন আজ পরীক্ষার রেজল্ট হবার কথা। একারনেই হয়ত সকাল থেকেই মন্টুর কোন খোজ নেই। রহিম মিঞা মন্টুকে খুজে না পেয়ে যা বোঝার বুঝে নিয়েছেন। হতচ্ছাড়া, নালায়েক পোলা আবার ফেল করেছে। পোলাকে সামনে না পেয়ে রাগটা গিয়ে পড়ল স্ত্রীর উপর। কান ফাটানো শব্দে চেচিয়ে উঠলেন, “মন্টুর মা, ও মন্টুর মা. . . . গেলা কই। মরলা নাকি?” মন্টুর মা ই বা কম যায় কিসে? হাজার হোক, তিনি সৈয়দ বাড়ীর বউ। সমান তেজে জবাব দিলেন, “কি কইবা, কও। আমি শুনতাছি।“
– “তোমার নালায়েক পোলা কই পালাইছে?”
– “পোলা কি শুধু আমার? তুমি খোজ রাখবার পার না?
– “দেখ মন্টুর মা, তোমার লাই পায়া পায়া পোলা গোল্লায় গেছে। কই লুকায়া রাখছ কও? আইজ আমার সাধের লাঠি ওর পিঠে আমি ভাঙ্গুমই ভাঙ্গুম।“
– “কেন? আমার পোলায় কি করছে?”
– “কেন? তুমি বোঝ না? এত বেলা হইল পোলার কোন খবর নাই। আইজ পরীক্ষার রেজল্ট দিতাছে। গাধার বাচ্চা নিশ্চই ফেল করছে। না হইলে পলাইব কেন?”
– “তাইত কই! পোলা আমার পত্যেক বার ফেল করে কেন? গাধার বাচ্চা কোন সময় পাশ করবার পারে? গাধার বাচ্চাতো সারা জীবন গাধাই থাকে।“রহিম মিঞা রাগের মাথায় ভুল করে মিসটেক করা বাক্যটার হাত থেকে রেহাই পেতে লাঠি হাতে ছেলের খোজে বের হয়ে গেল।
যথাসময়ে পরীক্ষার রেজল্ট পাবলিশ হল। রহিম মিঞার ধারণা সত্য প্রমাণ করার জন্যই মনে হয় অনেক খুজেও মন্টু তার রোল পাশকরা ছাত্রদের মধ্যে দেখতে পেল না। মনের মধ্যে দশ নম্বর বিপদ সংকেত শুনল। আর দেরী নয়, ঝেড়ে দৌড় লাগাল মন্টু মিঞা। পরবর্তী দৃশ্য বড়ই মনোরম। মন্টু মিঞা দৌড়াচ্ছে। পিছনে লাঠি হাতে রহিম মিঞা। সমান তালে চেচ্চাচ্ছেন তিনি। “ধর, ধর”।
মন্টু জান প্রাণ হাতে নিয়ে দৌড়াচ্ছে। এই দৃশ্য দেখে মন্টুর বন্ধু হাবলু ভাবল মন্টু নিশ্চই বিপদে পড়েছে। নিশ্চই তারে পাগলা কুত্তা তাড়া করছে। না হইলে এই ভাবে দৌড় দিবে কেন? সে আপন মনে দৃশ্যটা কল্পনা করে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খেতে লাগল। রহিম মিঞা হাবলুকে পাশ কাটনোর সময় তাকে এভাবে হাসতে দেখে অবাক হলেন। কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “কি হইছেরে হাবা? এমুন কইরা হাসতাছস কেন?” হাবলু হাসতে হাসতে জবাব দিল, “কুত্তার তাড়া খায়া মন্টু এমুন দৌড় দিছে! দেইখা হাসতাছি।“ রহিম মিঞা হুংকার ছেড়ে বললেন, “কি? আমি কুত্তা? এত বড় সাহস!” মুহুর্তের মধ্যে রহিম মিঞার লাঠির দু ঘা হাবলূর পিঠে পড়ল। আর হাবলু? কিছু বুঝতে না পেড়ে জান বাচাতে মন্টুর সঙ্গী হল।
এদিকে মন্টু দিক বিদিক জ্ঞান শুন্য হয়ে দৌড়াতে গিয়ে ধাক্কা খেল পাশের বাড়ির হালিমের সাথে। হালিম আর মন্টু ধাক্কা খেয়ে চিৎপটাং। হালিম লাফিয়ে উঠে মন্টুকে জড়িয়ে ধরেই চিৎকার শুরু করল, “চোর! চোর!. . . .” মন্টু হালিমের হাতের চিপায় পড়ে চিও চিও করে বলে, “আমি চোর না। আমি মন্টু।“ হালিম মন্টুকে না ছেড়েই বলে, “ তাইলে এইভাবে চোরের লাহান দৌড় দিছিস কেন?” মন্টু হালিমের হাত থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য বলল, “দেখতেছিস না আব্বারে একটু দৌড় শিখাইতেছি। এইবার ছাড় নারে ভাই, আমি পালাই।“ হালিমের তবুও সন্দেহ যায় না। বলল, “একটু খাড়া। চাচা আসুক। আসল ঘটনা জাইনা লই।“ মন্ট ভাবল, ‘আমি এইবার শেষ।“ কি করা যায়? এমন সময় হালিম দেখল গগন বিদারী চিৎকার করতে করতে হাবলূ ছুটে আসছে। পিছনে লাঠি হাতে রহিম চাচা। মুহুর্তের মধ্যে মন্টুর হাত ছেড়ে সেও দৌড় দিল। পিছনে পড়ে রইল তার বিদায়ী বানী, ”চাচায় ক্ষেপছে।“ ছাড়া পেয়ে মন্টুইবা দেরী করবে কেন? সেও হাওয়া হল।রহিম মিঞা বুড়া মানূষ। বেশিক্ষণ মন্টুর পিছে তাড়া করতে পারল না। সে হাটতে হাটতে এগিয়ে চলল। এই ফাকে মন্টু দৌড়ে তাদের ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নিল। এক পর্যায়ে দৌড়াতে দৌড়াতে ক্লান্ত মন্টু একটা খরের গাদা দেখতে পেয়ে সেখানে আরাম করে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। মন্টু এস,এস,সি পরীক্ষা দিয়েছে ঠিকই। কিন্তু কোনদিন বই খুলে দেখছে কিনা সন্দেহ আছে। তাই সে খরগোশ আর কচ্ছপের গল্পটাও হয়ত জানে না। রহিম মিঞা হাটতে হাটতে খরের গাদার সামনে এসে হাজির হল। দেখল মন্টু আরাম করে ঘুমাচ্ছে। দেখে তার মেজাজ আরো খারাপ হল। মনে মনে ভাবল, “আমি সারাদিন হেটে বেড়াচ্ছি। আর নবাবজাদা আরাম করে ঘুমাচ্ছে।“ দেরী না করে হাতের লাঠি দিয়ে খোচা দিলেন তিনি। খোচা খেয়ে মন্টুর ঘুম একটু পাতলা হল। ঘুম জড়ানো কন্ঠেই সে বলল, “কোন শালারে?” এইবার রহিম মিঞা দু ঘা লাগিয়ে দিয়ে বললেন, “শালা না, আমি তোর বাপ।“ দু ঘা খেয়ে মন্টুর ঘুম বাপ বাপ করে পালাল। সেই সাথে সেও বাপ বাপ করে বলল, “আব্বাগো, এই বারের মত মাফ কইরা দাও। আমি আর জীবনেও ফেল করমু না।“ রহিম মিঞা আরোও দু ঘা লাগিয়ে বললেন, “গতবারও এই কতাই কইছিলি।“ মন্টু এই বার কাদতে কাদতে বলল, “আর কোন দিন কমু না। আবার যদি ফেল কার তবে তুমি কওনের সুযোগ দিও না।
বাকিটুকুটু ২য় অংশে পড়ুন

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:০১

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: ভাল লিখেছেন :)

২| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:০৩

প্রামানিক বলেছেন: গল্পটা মনে হয় অসমাপ্ত আছে। শেষের ফিনিশিং পেলাম না।

৩| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:১৭

ফাহাদ মিয়াজি বলেছেন: দ্বিতীয় অংশে পড়ুন

৪| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:০৬

ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: ভাল লিখেছেন। পড়ে মজা পেয়েছি।

৫| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:১৯

ফাহাদ মিয়াজি বলেছেন: :D

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.