নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

ফাহমিদা বারী

আমার ব্লগ মানে গল্প। গল্প পড়ার আমন্ত্রণ জানাই :)

ফাহমিদা বারী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আত্মজৈবনিক স্মৃতিকথন- ল্যাভেণ্ডারের সুবাস

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২১ রাত ১১:২৬




#পর্ব_১১
পার্কের মধ্যে পাকিস্তানী একটা রেস্টুরেন্টও দেখা গেল, নাম ‘আকবর’। হালাল হারাম যারা মেনে চলার চেষ্টা করেন, তাদের দেশের বাইরে রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে প্রথম কাজই থাকে হালাল রেস্টুরেন্ট খুঁজে বের করা। আমরা আমেরিকায় থাকাকালীন সময়ে এটা নিয়ে অনেক ভুগেছি। বর্তমানে সেখানে অবস্থা কতটুকু পরিবর্তিত হয়েছে তা বলতে পারছি না। তবে সেই সময়ে রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাওয়ার মতো কোন হালাল রেস্টুরেন্ট খুঁজে পাইনি বললেই চলে।
আর ইউকেতে এসেই একেবারে বাসার কাছেই একটা হালাল রেস্টুরেন্ট পেয়ে গিয়ে মহাখুশি হয়ে উঠলাম। কারণ, আমরা দেশে একটু রিফ্রেশড হতে চাইলেই হয় রেস্টুরেন্টে যেতাম নইলে ভালো কোন মুভি থাকলে মুভি থিয়েটারে যেতাম। সাধারণত স্টার সিনেপ্লেক্সেই যাওয়া হতো বেশি। কখনো কখনো ইউটিউবেও ভালো কোন মুভি পেলে দেখতাম।

বাড়ির কাছেই যখন একটা হালাল রেস্টুরেন্ট পেয়ে গেলাম, কাজেই সংগতভাবেই আশা করলাম হয়ত এখানে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে। বাস্তবেও সেটাই ঘটেছিল। ইউকেতে হালাল রেস্টুরেন্ট প্রচুর। পাকিস্তানী, তুর্কি, লেবানীজ, ইরাকী...সবাই এসেই ইউকেতে রেস্টুরেন্ট ব্যাবসা খুলে বসেছে। কারণ ইউকেতে মুসলমানের সংখ্যাও উল্লেখ করার মতো, যারা আক্ষরিক অর্থেই প্র্যাকটিসিং মুসলিম। রাস্তাঘাটে বেরুলে একাধিক হিজাব পরিহিতা এমনকি বোরকা পরিহিতা মহিলাও চোখে পড়ে। কাজেই হালাল রেস্টুরেন্ট যে এখানে প্রচুর থাকবে সেটাই স্বাভাবিক।

হাইড পার্ক থেকে বের হয়ে গেলাম একটা পাকিস্তানী সুপার শপে। মাংস কেনার জন্য কাছেপিঠে হালাল শপ খুঁজে নেওয়াটা জরুরি । হাইড পার্কের পাশেই ‘আবু বকর’ সুপার শপ। তার পরের গলিতেই আরেকটা সুপার শপ রয়েছে ‘কন্টিনেন্টাল’ নামে। দুটোতেই হালাল মাংস বিক্রি হয়। আনিস ঘুরে ঘুরে সব চিনিয়ে দিলো আমাকে। চিনিয়ে তো দিলো, কিন্তু এইসব রেস্টুরেন্ট আমি একা একা কোনোদিন খুঁজে পাবো সেই দুরাশাও মনে ঠাঁই দিলাম না।

সেদিন আমরা দুপুর থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘুরে ঘুরে আশেপাশের জায়গাগুলো চিনে বেড়ালাম। বাসস্টপেজ গুলোও চিনে রাখলাম, যেখান থেকে প্রয়োজন পড়লে কোথাও যেতে পারি। লীডসে ‘ফার্স্ট লীডস’ নামে একটা বাস সার্ভিস চালু আছে। পুরো লীডসে তাদের বাস চলাচল করে। বেশিরভাগই দোতলা বাস। কিছু একতলা বাসও আছে।
খুব সুন্দর ব্যবস্থা। ড্রাইভারকে টিকিট দেখিয়ে অথবা স্টপেজের নাম বলে নগদে টিকিট কিনে বাসে উঠতে হয়। বাসের সামনে কিছু জায়গা হুইল চেয়ারের জন্য বরাদ্দ থাকে। বাচ্চাকে স্ট্রলারে বসিয়ে যেসব মায়েরা ওঠেন অথবা আত্মীয় পরিজনকে হুইল চেয়ারে বসিয়ে যেসব যাত্রী ওঠেন, তারা হুইল চেয়ার অথবা স্ট্রলারকে জায়গামত সেট করে নিশ্চিন্ত মনে সীটে গিয়ে বসে পড়েন। বাসে প্রচণ্ড ভীড় থাকলেও হুইল চেয়ার অথবা স্ট্রলার নিয়ে কোনো যাত্রী উঠলে নির্ধারিত জায়গাটি তাকে ছেড়ে দিতেই হবে।

বাসের প্রথম দুটি সারি বয়ষ্ক যাত্রীদের জন্য নির্ধারণ করে রাখা। এসব বাসে প্রায় সবসময়ই জবুথবু বৃদ্ধদের যাতায়াত করতে দেখা যায়। একা একা কীভাবে তারা সাহস করে চলাচল করেন, এটাই আমার কাছে বিস্ময়ের ব্যাপার ছিল। বেশিরভাগ সময়েই তাদের একা একা যাতায়াত করতে দেখতাম। কখনোবা সঙ্গীসহ। কেউ কেউ আবার হাতে একটা কুকুরও রাখতো। নিজেরাই যারা এলোমেলো পায়ে চলাচল করতেন তারা কুকুরও সামলিয়ে রাখেন, এই দৃশ্য দেখে বিস্মিত না হয়ে উপায় নেই।
পরবর্তী সময়ে বাসে চলাচল করার সময়ে দেখেছি, বয়ষ্কদের জন্য রিজার্ভড সীটগুলোতে অল্প বয়ষ্ক কোনো তরুণ অথবা তরুণী বসে পড়লেও বয়ষ্ক কেউ ওঠা মাত্রই তারা চটজলদি সেই জায়গাটি ছেড়ে দেয়। মুখে মিশে থাকে বিনয়ের হাসি।
আমি আশ্চর্য হয়ে ব্রিটিশদের বিনয় দেখেছি এই দুটো বছরে। সিরিয়াস মুখে নিজের চরকায় তেল দিয়ে চলা এই জাতি অত্যন্ত ভদ্র ও সাহায্যপরায়ণ। তাদের কাছে যেকোনো বিষয়ে সাহায্য চাইলে তারা অত্যন্ত আন্তরিকতা ও দায়িত্ব নিয়ে সবসময় সাহায্য করতে প্রস্তুত থাকে। বিভিন্ন সময়ে তার প্রমাণ আমি বেশ ভালোভাবেই পেয়েছি।

আমি শতবার যে জায়গায় যাওয়া হয়, সেই জায়গাও যখন তখন গুলিয়ে ফেলি। আর লীডসে নতুন নতুন পথ চিনতে গিয়ে অনেকবারই পথ হারিয়ে দিশেহারা হয়েছি। তখন আশেপাশে যাকে দেখেছি তাকেই জিজ্ঞেস করেছি, এখন কোনদিকে যাবো। এরা এত যে আন্তরিকতার সাথে সাহায্য করেছে পথ চিনিয়ে দিতে, তা ভাষায় প্রকাশ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। সেখানে মানুষ অপরিচিত কোন জায়গায় যাওয়ার জন্য সাধারণত গুগল ম্যাপ অথবা অন্য কোনো ম্যাপের সাহায্য নিয়ে থাকে। অনেক সময় এরকম পরিস্থিতিতে তারা আমাকে ম্যাপ দেখিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে এখন আমি কোনদিকে যাবো।
শুধু এই একটি ব্যাপারেই নয়, ছোটখাট যেকোনো ব্যাপারে আমি মুগ্ধ হয়ে এদের সাহায্যপরায়ণ মনকে আবিষ্কার করেছি। ব্যতিক্রম যে একেবারেই নেই তা নয়। তবে এক্ষেত্রে আমি খুব বেশি ব্যতিক্রমী কাউকে দেখিইনি বলতে গেলে। এদের মেজাজ সবসময়েই কেমন যেন স্নিগ্ধ আর ঠান্ডা থাকে।

মনে মনে নানাভাবে এর ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়েছি। হয়ত পরিবেশের পাশাপাশি আবহাওয়াও একটা কারণ যা মানুষকে ধৈর্যশীল থাকতে সাহায্য করে।
শুধু শুধু আমাদের দেশের মানুষের সাথে তুলনা করতে যাওয়াটা বোকামি। প্রচণ্ড ভ্যাপসা গরমে ঘেমে প্যাচপ্যাচে অবস্থায় যানজটে স্থবির হয়ে বসে থাকা কারো কাছে যদি কেউ এসে সাহায্য চায়, তখন অপরপক্ষকে ধৈর্যশীল আর পরোপকারী আশা না করাই উচিত হবে। মনে মনে ভদ্র সভ্য বৃটিশদের আমাদের দেশের সেই ‘দুরুহ’ স্থানে বসিয়ে বেশ কৌতুক অনুভব করেছি। হয়ত এটা একরকমের অযুহাতই হবে, তবু আবহাওয়া যে আচরণে বেশ ভালোরকম প্রভাব ফেলে এ’কথা অস্বীকার করার সত্যিই কোনো উপায় নেই।

তবে এখানকার বাসে যাতায়াত বেশ ব্যয়বহুল, একথাও না বললেই নয়। ইউকে’র জীবনযাত্রা বেশ ব্যয়বহুলই বলা চলে। এদের বেতন খুব বেশি নয়। ইন্টারনেট থেকে জানতে পেরেছি, একজন এনভায়ার্নমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারের (যেহেতু নিজে এই সাবজেক্টে পড়তে গিয়েছিলাম, তাই এই বিষয়েই জানার আগ্রহটা বেশি কাজ করছিল) প্রাথমিক বাৎসরিক বেতন প্রায় ৩০০০০+ পাউণ্ড, যা মাসে মাত্র আড়াইহাজার পাউণ্ডের কিছু বেশি। পরিমাণটা মোটেও তেমন বেশি নয়। অথচ বাসাভাড়া, ইউটিলিটিজ, যাতায়াত, খাওয়া দাওয়া এসব বাবদ বেশ ভালো পরিমাণ টাকাই মাসে খরচ করতে হয়।
হেডিংলি’র বাসাটা ছাড়ার সময়ে আরও একটা বিষয় আমাদের সামনে এসেছে, যা থেকে মনে হয়েছে ব্যবসায়ী হিসেবেও ব্রিটিশরা বেশ অগ্রগামী। নিজেদের ভাগের অংশ এরা কড়ায় গণ্ডায় বুঝে নিতে জানে।

এর পরের কিছুদিন আমরা বাসে চেপে লীডস পরিদর্শনে বের হলাম। সেদিন আমরা তিনজনই তিনটি ডে টিকিট কিনে নিলাম। ডে টিকিট অথবা উইকলি টিকিট একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিয়ে কিনতে হয় যেটাতে পুরো দিন অথবা পুরো সপ্তাহ ঐ একটা টিকিট দিয়েই যতবার ইচ্ছে বাসে ট্র্যাভেল করা যায়। যারা প্রতিদিন বাসে ট্র্যাভেল করে তারা সাধারণত এই উইকলি টিকিট কিনে নেয়। প্রতিবার টিকিট কেনার চেয়ে এতে খরচ কিছুটা কম পড়ে।
বাসে চড়ে প্রথমেই আমরা গেলাম লীডস ইউনিভার্সিটিতে। যে উদ্দেশ্যে আমার ইউকে আগমন, প্রথমে সেই জায়গাটার সাথেই পরিচিত হয়ে নেওয়া যাক। তাছাড়া দেশের বাইরের ইউনিভার্সিটিগুলো কেমন হয়, সেটা দেখার একটা ভীষণ ইচ্ছা ভেতরে কাজ করছিল। আজ থেকে কমপক্ষে দশ বছর আগে এলে হয়ত ইচ্ছের তীব্রতাটা অনেকগুণ বেশি থাকত। কিন্তু এখনো কিছু কম যে কাজ করছে তা বলতে পারছি না। আমার অবশ্য প্রথম থেকেই একটা আশঙ্কা মনে রয়ে গেছে যে, এতদিন পরে এ’রকম সিরিয়াস পড়াশুনা কীভাবে সামলিয়ে নিব।

ইউনিভার্সিটিতে পা দিয়ে প্রথমেই সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিল্ডিং এর দিকে পা বাড়াতে ইচ্ছে করল। পাশাপাশি সিভিল, মেকানিকাল আর ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর বিল্ডিং। যেকোনো একদিক দিয়ে ঢুকলে তিনটি বিল্ডিং এর ভেতরেই লম্বা করিডোর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ঢুকে পড়া যায়। ইন্টারকানেক্টড বিল্ডিংস।
সেদিন ছিল ছুটির দিন। তাই অটোমেটিক ডোরগুলো বন্ধ ছিল। আনিস যেহেতু ইতিমধ্যে ইউনিভার্সিটি অফ লীডসের একজন রিসার্চ ফেলো, কাজেই তার কাছে ডোরগুলোর চাবি ছিল। আমরা দরজা খুলে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ভেতরে ঢুকে পড়লাম। আনিস বললো, ‘চল আগে তোমার নিজের ডিপার্টমেন্ট থেকে ঘুরে আসা যাক।’

ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর লম্বা করিডোর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে গেলাম সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিল্ডিং এ। আমার সাবজেক্ট ‘এনভায়ার্নমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং’ এখানকার স্কুল অফ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর অন্তর্ভূক্ত। আমাদের বেশিরভাগ ক্লাস এই বিল্ডিং এই হওয়ার কথা। তবে ক্লাস শুরু হওয়ার পরে দেখেছি, পুরো ইউনিভার্সিটি জুড়েই ক্লাস হয়ে থাকে। অনেকটা আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতোই।
ছাত্র-ছাত্রীর সাইজ অনুসারে রুম বাছাই করা হয়ে থাকে। আমাদের বেশ কিছু ক্লাস অন্য আরেকটা ডিপার্টমেন্টের সাথে একসাথে করতে হয়েছিল। অর্থাৎ কিছু কিছু মড্যুউল ‘এনভায়ার্নমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং’ (EEPM) এর ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি ‘ওয়াটার এন্ড সানিটেশন’ (WASH) এর ছাত্রছাত্রীদেরও করতে হয়েছিল। তখন সবাইকে এক রুমে ঢোকানোর জন্য বড় রুমের প্রয়োজন পড়ত।

কেমন একটা মমত্ববোধ নিয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিল্ডিং এ ঢুকে ঘুরে বেড়াতে লাগলাম। আগামী দুই বছরের জন্য এই ইউনিভার্সিটি তথা এই ভবনটির সাথে আমার গভীর সম্পর্ক তৈরি হতে যাচ্ছে, এই ভাবনাটি আমাকে অন্যরকম একটা অনুভূতিতে আচ্ছন্ন করল।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর মূল দরজার ডানপাশে রিসেপশন ডেস্ক। বন্ধের দিন, তাই পুরো ইউনিভার্সিটি একেবারে ফাঁকা। রিসেপশন ডেস্কও বন্ধ পেলাম। বাঁকানো সিড়ি, তার ওপরের ছড়ানো ছিটানো টেবিল-চেয়ার (যা ক্লাস চলাকালীন সময়ে ছাত্র ছাত্রীরা দখল করে রাখতো নিরিবিলিতে বসে পড়ার জন্য)...সব একেবারে খাঁ খাঁ করছে।

এই রিসেপশন ডেস্কটির সাথে পরবর্তীতে বেশ নিবিঢ় সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। ক্লাসের প্রথমদিনই ঐখানে গিয়েই প্রথম টোকাটা মারতে হয়েছিল। খুঁটিনাটি যেকোনো বিষয়ে সেখানে গিয়েই সাহায্য চাইতাম। শুরুতে মনে হয়েছিল, ডেস্কে বসে থাকা শক্তপোক্ত মহিলাটি বেশ গম্ভীর প্রকৃতির। সেই ভদ্রমহিলার শক্ত মুখ দেখে মনে হয়েছিল, হয়ত বেচারী হাসতেই জানে না।
এই ধারণাটি অবশ্য পরবর্তীতে ভেঙ্গে গিয়েছিল। বেচারী হাসতেও জানে আবার টুকটাক রসিকতাও করতে জানে। একদিন আমাকে বেগুনী রঙের এক ড্রেস পরে আসতে দেখে বলেছিল, ‘সো ইউ লাভ পার্পল ঠু! আই লাভ পার্পল টিউলিপস!’
আরেকদিন আমাকে আমার ফার্স্ট ল্যাঙ্গুয়েজে তার নিজের নাম লিখতে বলেছিল। আমি সেই নামটা লিখে দিতেই সে কুড়ি সেকেন্ডের মতো ঠাঁই তাকিয়ে ছিল সেই লেখার দিকে। তারপরে চোখ বড় বড় করে বলেছিল,
‘মাই গড! ইয়োর ল্যাঙ্গুয়েজ সীমস ভেরি টাফ!’
মনে মনে সেদিন বলেছিলাম, ‘তুমি তো আমার বাংলা জ্ঞান নিয়ে নিতে পারবে না! তবে আমি যদি তোমার এ্যাকসেন্টটা মেরে দিতে পারতাম!’
ব্রিটিশ এ্যাকসেণ্ট নিয়ে আমার যে মহা যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, সেই প্রসঙ্গে একটু পরেই আসছি।

সিভিল বিল্ডিং এর মোহনীয় স্থাপত্য অবাক হয়েই দেখতে লাগলাম। বাঁকানো স্টাইলিশ সিঁড়ি উঠে গেছে দোতলা পর্যন্ত। একপাশে দেওয়ালের সাথে সেঁটে রাখা একটা বিশাল বড় এলসিডি স্ক্রিন। সেখানে সবসময়ই কনস্ট্রাকশন অথবা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর শাখাগুলো নিয়ে (স্ট্রাকচার, এনভায়ার্ণমেন্ট, ওয়াটার রিসোর্স, জিওটেকনোলজি, ট্রান্সপোর্টেশন ইত্যাদি) কিছু না কিছু ভিডিও দেখানো হচ্ছে। মাঝে মাঝে দেখতাম মিউজিক ভিডিও চলছে। সেসব মিউজিকের সাথে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর কোনো সম্পর্ক আছে কী না, তা অবশ্য আমার জানা হয়নি।
ঘুরতে ঘুরতে আনিস বললো, ‘এখানে তোমার কিছু ছবি তুলে দিই।’
আমার একটু লজ্জা লজ্জা লাগছিল বটে। এতদিন পরে আবার লেখাপড়ায় ফিরে আসা...একটু কেমন কেমন জানি ব্যাপারটা। তবু লজ্জা টজ্জা পেলেও ঠিকই ছবির পোজ দিয়ে ফেললাম। বাঁকানো সিঁড়ির এক কোনায়, সিঁড়ি ধরে...বিভিন্নভাবে কিছু ছবি তুললাম। (ক্রমশঃ)

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২১ রাত ১১:৪৮

নস্টালজিক বলেছেন: লিডস হয়ে কিছুদিন আগে ব্র্যাডফোর্ড গিয়েছিলাম। আপনার পোস্ট দেখে সে কথা মনে পড়লো।

শুভেচ্ছা।

২| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ২:৪৯

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
ব্রীটিষরা স্টুডেন্ট ভিসা সহযেই দিয়ে দেয়, ওদের অর্থনীতি সামাল দিতেই দেয়।
কিন্তু লেখাপড়া শেষ করার পর চাকুরির বাজার মন্দা।

৩| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১১:০২

জুল ভার্ন বলেছেন: গুড পোস্ট।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.