নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফরিদুর রহমান

ফরিদুর রহমান

ফরিদুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন ব্লগার ও তার সহোদর

০৩ রা মে, ২০১৩ সকাল ৮:৪৮

শনিবারে বিকেলের দিকে সাধারণত ক্লাস থাকে না। কিন্তু ঘন ঘন হরতালে বছর শেষেও সিলেবাসের অর্ধেকটাই যখন পড়ানো সম্ভব হয়নি, তখন শিক্ষকদের কেউ কেউ নিজেরা উদ্যোগী হয়ে হরতাল অবরোধ ইত্যাদি রাজনৈতিক কর্মসূচির দিনেও অতিরিক্ত ক্লাস নিতে শুরু করেছেন। ওয়েট প্রসেসিং ক্লাসের ব্যাপারে ছাত্র ছাত্রীদের যথেষ্ট আগ্রহ থাকলেও আজ উপস্থিতির সংখ্যা অন্যদিনের তুলনায় কম। মতিঝিলের শাপলা চত্বরে ইসলামের হেফাজতকারী কোনো একটি দলের সমাবেশ এবং অন্যদিকে কয়েকটি সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের হরতালের কারণে অনেকেই শেষপর্যন্ত ক্লাসে আসেনি।



মফস্বল থেকে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে আসা কয়েকজন সহপাঠিসহ আহসানউল্লাহ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছাকাছি একটি এ্যাপার্টমেন্টে থাকে শাহরিয়ার। কাজেই রাজপথে যুদ্ধাবস্থা থাকলেও ক্লাসে উপস্থিত থাকায় তার কোনো সমস্যা হয় না। বরাবারের মতো ক্লাসে তার মোবাইল ফোন সাইলেন্ট করা ছিল। গুরুত্বপূর্ণ লেকচারের সময় হঠাৎ করে ফোন বেজে উঠলে সকলে যে ভাবে ফিরে তাকায় তার চেয়ে ক্লাসে ফোন বন্ধ করে রাখাই ভালো। পরপর দুটি ক্লাস শেষ করার পরে বিটাকের মোড়ে বসে চা খেতে খেতে পকেট থেকে ফোন বের করে দেখতেই চোখ কপালে উঠে গেল তার। সাতটা মিসড কল এবং দুটি এসএমএস। সাতটা মিসড কলের পাঁচটাই ছোট বোন আফরোজার। বাকি দুটির একটা ছোট ভাই বখতিয়ার এবং অন্যটা ক্লাসমেট ত্রিদিবের। এসএমএস দুটোই এসেছে আফরোজার মোবাইল ফোন থেকে। বাড়িতে কারও কোনো সমস্যা হলো নাকি! খানিকটা দুশ্চিন্তা মাথায় নিয়ে দ্রুত প্রথম ম্যাসেজটা বের করে পড়ে ফেলে শাহরিয়ার। ইংরেজি হরফে লেখা বাংলা ভাষ্যের চিঠিটা বোনের মোবাইল থেকে পাঠানো হলেও কথাগুলো মায়ের। মা লিখেছেন, ‘বখতিয়ার গতকাল তাহার মাদ্রাসার হুজুরদের সাথে ঢাকায় গিয়াছে। মোবাইল বন্ধ থাকায় এখন পর্যন্ত তাহার কোনো খোঁজ পাই নাই। তুমি অতি অবশ্য খোঁজ লইয়া শিঘ্র জানাও। এখানে আমরা বড় চিন্তিত আছি। তোমার মা।’



মায়ের তো চিন্তিত হবারই কথা। যদিও শাহরিয়ার নিজে কয়েকদিন ধরেই বিষয়টা নিয়ে ভেবেছে এবং বন্ধুদের সাথে আলাপ আলোচনাতেও ঘুরে ফিরে তার নিজস্ব মতামত তুলে ধরেছে কিন্তু মায়ের এসএমএস পাবার পরে ব্যাপারটা নতুন খাতে প্রবাহিত হয়। এবারে মায়ের উদ্বেগের সাথে মিলিয়ে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত পর্যায়ে ভাবতে শুরু করে সে। একদল ধর্মান্ধ মানুষকে রাজনৈতিক কূট কৌশলের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে ঢাকার উদ্দেশ্যে যে কথিত লংমার্চ এবং লংমার্চের শেষে সমাবেশ. তাতে তার আপন ছোটভাই যোগ দিতে এসেছে এ কথা ভাবতেই মাথা গরম হয়ে যায় শাহরিয়ারের। দুশ্চিন্তা ছাপিয়ে নিজের জন্মদাতা পিতার উদ্দেশ্যে একটা যাচ্ছেতাই গালি ছুঁড়ে দিতে ইচ্ছা করে তার। মা এবং ভাই বোনদের তীব্র আপত্তি স্বত্ত্বেও সাত বছর বয়সে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে এনে বখতিয়ারকে দূরবর্তী এক গ্রামের মাদ্রাসায় ভর্তি করে দিয়েছিলেন তিনি। গত দশ বছরে বখতিয়ারের বয়স বেড়ে সতের বছরে দাঁড়িয়েছে, কিন্তু তার মানসিক বুদ্ধি সেই সাত বছরেই থমকে আছে। শাহরিয়ারের ধারণা ছেলেটার এই সর্বনাশের জন্যে একমাত্র তার বাবাই দায়ী।



চাকরি জীবনের শেষ দিকে এসে ‘জীবনে কিছুই হলো না’ ধরণের একটা হতাশায় ভীষণভাবে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন শাহরিয়ারের বাবা আবুল বাশার। সকলেই মনে করেছিল রিটায়ারমেন্টের পরে আরও অনেক অবসর প্রাপ্ত হতাশাগ্রস্ত কর্মকর্তার মতো তিনিও শেষপর্যন্ত মসজিদ কেন্দ্রীক জীবন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন। বাস্তবে আগের মতোই শুক্রবারের জুম্মার নামাজ এবং শুধু রমজান মাসে রোজা রাখার পাশাপাশি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ছাড়া তাঁর ধর্মাচরণে তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। দিনের বেলা বিভিন্ন চ্যানেলে ঘুরে ফিরে ক্রিকেট খেলা দেখা এবং সন্ধ্যার পর থেকে চায়ের আড্ডায় রাজা উজির মেরে গভীর রাতে বাড়ি ফেরা তার রুটিনে পরিণত হয়েছিল। সম্ভবত একদিকে হতাশা থেকে উত্তরণের পথ হিসাবে অন্তহীন আড্ডা এবং অন্যদিকে পরলৌকিক পাথেয় সংগ্রহের ব্যর্থতা থেকে জন্ম নেয়া ভীতি তার স্বাভাবিক চেতনা প্রবাহকে এলোমেলো করে দিয়েছিল। সেই কারণে তিনি বাড়ির সবচেয়ে ছোট ছেলেটিকে মাদ্রাসায় পাঠিয়ে মনে মনে এক ধরনের অলৌকিক প্রশান্তি অনুভব করেছিলেন। পরবর্তীতে আফরোজাকে আরও বেশি পড়তে না দেয়ার ক্ষেত্রেও ‘মেয়েদের এতো পড়াশোনা করে কী হবে!’ মানসিকতাই কাজ করেছে সবচেয়ে বেশি। সারাজীবন নারী স্বাধীনতা এবং নারী শিক্ষার পক্ষে কথা বলা এই মুক্তচিন্তার মানুষটি কী করে বদলে গেলেন তা ভাবলে অবাক হয়ে যায় শাহরিয়ার।



মোবাইল ফোনে আসা দ্বিতীয় এসএমএসটি লিখেছে আফরোজা নিজে। ইংরেজিতে লেখা সংক্ষিপ্ত বার্তাটির বাংলা করলে দাঁড়ায়, ‘বখতিয়ারের ব্যাপারে মা খুব উদ্বিগ্ন। তুমি যতো শিগগির সম্ভব তার খোঁজ নিয়ে মার সাথে কথা বলো।’



শাহরিয়ার ভেবে রেখেছিল ক্লাস শেষে একবার শাহবাগের দিকে যাবে। কিন্তু এখন পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে তাতে ছোট ভাইকে খুঁজে বের করাই তার প্রধান এবং প্রথম কাজ। বখতিয়ারের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকলে একই বয়সের একই লেবাসধারী কয়েক লাখ তালেব ইলিমের ভেতর থেকে একজনকে উদ্ধার করা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। এতোক্ষণে অবশ্য সমাবেশ শেষ হয়ে যাবার কথা। সেক্ষেত্রে তারা যদি বাড়ির পথে রওনা হয়ে থাকে তাহলেও তাকে ধরা যাবে না। মোবাইল ফোনে মিসড কলের তালিকা দেখে সে বুঝতে পারে আধাঘণ্টা আগে রিং করেছিল বখতিয়ার। অতএব প্রথমে মোবাইলে চেষ্টা করাটাই তার কাছে যুক্তিযুক্ত মনে হয় এবং রিং হবার সাথে সাথেই সে অপর প্রান্ত থেকে বখতিয়ারের গলা শুনতে পায়।

‘আসসালামুআলাইকুম ভাইজান। আমি তো রাস্তা হারায়া ফালাইছি।’

‘তুই এখন কোথায়?’

‘সেইটা কইতারি না। ঢাকা শহরে এর আগে আমি তো একা আসি নাই। সাথের লোকজন কে কোন দিকে দৌড়াইয়া চইলা গেল... তুমি আমারে এইখান থিকা লইয়া যাও।’ বখতিয়ার প্রায় কেঁদে ফেলে।

‘কিন্তু তুই কোথায় না জানলে কেমন করে নিয়ে আসবো! রাস্তায় আশেপাশের মানুষকে জিজ্ঞাস কর, আর না হলে সাইনবোর্ড পড়ে বল তুই এখন কোথায়?’

‘এইখানে তো কোনো সাইনবোর্ড দেখি না।’

‘আরে গাধা যেখানে আছিস সেখান থেকে সামনে পেছনে একটু হাঁটলেই একটা না একটা সাইন বোর্ড দেখতে পাবি সেইটা পড়ে আমাকে জানা এখন কোথায় আছিস। নাকি আরবি পড়ে পড়ে বাংলা ইংরেজি সব ভুলে গেছিস?’



কুড়ি পঁচিশ মিনিট পরে মগবাজার মোড়ের কাছে একটি রেস্তোরার সামনে থেকে ছোট ভাইকে উদ্ধার করে শাহরিয়ার প্রথমেই জানতে চায়, ‘মতিঝিল থেকে তুই মগবাজারে এসেছিস কেন? বাড়ি ফিরে যেতে হলেও তো তোর এই পথে আসার কথা নয়।’

‘আমরা মিটিং শ্যাষে জিহাদি কাফেলা লইয়া শাহবাগের দিকে রওনা হইছিলাম।’

ছোট ভাইয়ের কথা শুনে রীতিমতো চমকে যায় শাহরিয়ার। অনেক কষ্টে সে তার বিস্ময় গোপন করে জানতে চায় ‘তারপর?’

‘শাহবাগ পর্যন্ত যাইতারি নাই, তার আগেই একদল বেদ্বীন কাফের পোলা মাইয়া লাঠি আর ইট-পাত্থর লইয়া আমরারে দৌড়ানি দিছে। পার্কের দেওয়াল পার হইয়া যখন পলাইছি তখন সাথের সব তালেব ইলিম আর মেজ হুজুর জানি কোন দিকে গেছে কইতারি না।’

‘এই মেজ হুজুরটা কে?’

‘আমরার ওস্তাদ। হযরত মাওলানা আবদুল আউয়াল হাকিমপুরি।’ একরাজ্যের ক্রোধ চেপেও হেসে ফেলে শাহরিয়ার।

‘এতোদিন তো খালি হাকিমপুরি জর্দার নাম শুনেছিলাম, এবার জানলাম ওস্তাদের নামও হাকিমপুরি হতে পারে। চল বাকিটা ঘরে যেয়ে শুনবো।’



মগবাজার মোড় থেকে রিকশায় তেজগাঁ পর্যন্ত পৌঁছবার আগেই ছোটভাইকে উদ্ধারের খবর বাড়িতে ফোন করে জানিয়ে দেয় শাহরিয়ার। আর ঘরে ফিরে ক্লান্ত ক্ষুধার্ত বখতিয়ারের গোসল এবং খাওয়া শেষ হলে তাকে নিয়ে প্রশ্নত্তোর পর্ব শুরু করে সে।



‘তোরা যে জিহাদি কাফেলা নিয়ে শাহবাগের দিকে রওনা করেছিলি তার কারণ কী? কি উদ্দেশ্যে তোরা সব দৌড় দিছিলি?’

বড় ভাইয়ের সরাসারি জিজ্ঞাসায় মোটেও বিব্রত হয় না বখতিয়ার। সে বেশ সপ্রতিভ হয়েই উত্তর দেয়, ‘শাহবাগে একটা মঞ্চ বানাইছে সেইখানে সব নাস্তিক ব্লগাররা থাকে। এই বেদ্বীন কাফের খতম করা আমরার ইমানি দায়িত্ব।’

‘তা এই ইমানি দায়িত্ব পালনের জন্য তোর মতো নাদান তালেব ইলিম, মাদ্রাসার ছাত্র বেছে নিয়েছে কেন তোর হুজুরেরা?’

‘আমি তো একলা আসি নাই আমার মতো হাজার হাজার মাদ্রাসার ছাত্র এই কাফেলায় সামিল হইছে। আর আমার তো না আইসা উপায় নাই। বড় হুজুর একদিন আমারে ডাক দিয়া কইছেন, তোমার নাম বখতিয়ার- একদিন বখতিয়ার খিলজি সতেরোজন সৈন্য লইয়া বাংলার বুকে ইসলামের ঝাণ্ডা উড়াইয়া দিছিল, এই ব্লগার বেদ্বীন হঠানোর সংগ্রামে তুমি নেতৃত্ব দিবা! তোমার নামের মর্যাদা রাখার জন্যে প্রয়োজনে শহীদ হইয়া যাবা।’ বলতে বলতে উত্তেজিত হয়ে পড়ে বখতিয়ার।

‘তা দু একজন ব্লগার না মেরে অথবা শহীদ না হয়ে শাহবাগ থেকে তোরা লেজ তুলে দৌড় দিলি কেন?’

এবারে বড় ভাইয়ের প্রশ্নের উত্তরে কোনো কথা খুঁজে পায় না সে। অনেকক্ষণ চুপচাপ থাকার পরে শাহরিয়ার নিজেই আবার প্রশ্ন করে, ‘আচ্ছা, তোরা তো ব্লগার মারতে প্রথমে লংমার্চ করে ঢাকার মতিঝিলে আর লংমার্চ শেষে শাহবাগের দিকে কাফেলা নিয়ে যাত্রা করেছিলি, ব্লগ মানে কি তুই জানিস?’

‘জানি। ব্লগ হইল কম্পিউটারের মতো একটা যন্ত্র, এইটা ইহুদিরা বানাইছে। এই যন্ত্র দিয়া নাস্তিকরা আল্লাহ আর তার রাসুল সম্পর্কে খারাপ কথা লেখে গিবত প্রচার করে।’

‘হঁঁ... ব্লগ বুঝলাম। এবারে আমাকে বল ব্লগার মানে কী? ব্লগার কারা? তাদের সম্পর্কে তোর বা তোর হুজুরদের কোনো ধারণা আছে?’ শাহরিয়ারের কণ্ঠে একটু কৌতুক।

‘ব্লগার মানে হইল নাস্তিক, কাফের। তারা ব্লগযন্ত্র ব্যবহার কইরা সব নাফরমানি কাম করে। আল্লার প্রতি তাদের ইমান নাই, রাসুল সালাল্লাহু আলাইহে সালামের প্রতি বিশ্বাস নাই, তারা শাহবাগে একজোট হইয়া আল্লাহ রাসুলের বিরুদ্ধে মিটিং মিছিল করে। তারারে খতম করার জন্যে জিহাদে সামিল হওয়া প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরজ।’ ব্লগার সম্পর্কে ধারণার পাশাপাশি তাদের শাস্তির বিধানও বাতলে দেয় এই তরুণ জিহাদী।



‘এদের শিক্ষাটা ভাল মতোই হয়েছে...’ মনে মনে বলে শাহরিয়ার। তারপর অনেক ভেবে চিন্তে ছোট ভাইয়ের কাছে জানতে চায়, ‘অন্তত একজন ব্লগার খতম করতে পারলে ইমানি দায়িত্ব পালন করে তোর জীবনটা ধন্য হতো তাই না?’

‘জ্বী ভাইজান।’ বখতিয়ারের সরল উত্তর।



শাহরিয়ার তার চেয়ার ছেড়ে উঠে কিচেনের দিকে যায়, এক মিনিটের মধ্যেই ফল কাটার বড় ছুরিটা হাতে নিয়ে ফিরে আসে। বখতিয়ারের হাতে সে তুলে দেয় ছুরিটা।

‘নে তোর ইমানি দায়িত্ব পালনের জন্য, তোর তৌহিদি জীবন ধন্য করার জন্য অন্তত একজন ব্লগারকে খতম কর।’

‘তুমি এইসব কি কও ভাইজান, আমি তো কিছুই বুঝতাছি না।’

‘তোর জানা দরকার, আমি- তোর বড় ভাই শাহরিয়ার শামিম একজন ব্লগার।’

‘কি সাংঘাতিক কথা! কিন্তু তুমি তো নাস্তিক না। বাড়িতে থাকলে দেখি প্রতি শুক্রবারে জুম্মার নামাজে যাও। তুমি ব্লগার হইলে...’ বখতিয়ারের কথায় বিস্ময়ের শেষ থাকে না।

‘ওই যে টেবিলে আমার ল্যাপটপ আর ইন্টারনেট কানেকশনের মডেম। এটা দিয়ে আমি প্রায় প্রতিদিনই আমার ব্লগে আর ফেসবুকে লেখালিখি করি।’

‘কিন্তু তুমি তো রোজার সময় সবগুলো রোজা রাখছিলা। এই বছরও তো ঈদের সময় আমরা এক সাথে নামাজ পড়তে গেছিলাম।’

‘কিন্তু আমি যে একজন ব্লগার তা তো মিথ্যা নয়। আর দেরি করিস না। আমার বন্ধুরা আসার আগেই আমাকে খুন করতে পারলে কমপক্ষে একজন ব্লগার মারার কৃতিত্ব নিয়ে তুই তোর মাদ্রাসায় ফিরতে পারবি।’

‘ভাইজান, তুমি ব্লগার হইতে গেলা ক্যান?’

‘আমি কেন ব্লগার হলাম সেটা আমার ব্যাপার। কিন্তু হাতের কাছে একজন ব্লগার পেয়েও তাকে ছেড়ে দেয়া তোর ইমানি দায়িত্বের বরখেলাপ। তুই তোর ফরজ পালন কর।’

‘এই কাম আমার দ্বারা হইব না ভাইজান...আমারে মাফ কইরা দাও।’ পুরোপুরি আত্মসমর্পন করে বখতিয়ার।

‘মাফ? কিসের মাফ? তোর বখতিয়ার নামের সার্থকতা প্রমাণের জন্যে হলেও তোকে তোর ফরজ আদায় করতে হবে!’



শাহরিয়ার তার ছোট ভাইয়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সরোষে গর্জে উঠলে বখতিয়ারের হাত থেকে ইস্পাতের ছুরিটা ঝন ঝন শব্দ তুলে মেঝেতে খসে পড়ে।





মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.