নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফরিদুর রহমান

ফরিদুর রহমান

ফরিদুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি, গণমাধ্যম ও বাংলাদেশ টেলিভিশন

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:৩৩

নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দুদিন আগে বাংলাদেশ টেলিভিশনে দেয়া প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের নেত্রী শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচনী ভাষণ ধারণ ও সম্পাদনা করার দায়িত্ব পালন করতে হয়েছিল। দেশে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা চালু হবার পরে জাতীয় বেতার টেলিভিশনে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহার প্রচার একটি প্রচলিত প্রথায় পরিণত হলেও দুই নেত্রীর ভাষণের ব্যাপারে সকল সময়েই অতিরিক্ত সতর্কতার ব্যবস্থা করা হতো। জনগণের কাছে নিজ নিজ দলের কর্মসূচী তুলে ধরা, পরবর্তী পাঁচ বছরে কৃষি-শিক্ষা-স্বাস্থ্য-বস্ত্র-বাসস্থানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভবিষ্যত সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা, শিল্প ও বাণিজ্য নীতি, পর্যটনের বিকাশ ও পরিবেশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে সরকারের ভাবনা এবং বৈদেশিক সম্পর্কের রূপরেখা তুলে ধরাই এই ভাষণের মূল উদ্দেশ্য। তবে দেশের মানুষের সামাজিক অর্থনৈতিক অগ্রগতি তথা সার্বিক জীবনমান উন্নয়নের একটি প্রতিশ্রুতি উপস্থাপনের পাশাপাশি সম্প্রচারের নিয়ম নীতি মেনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের অতীতের ত্রুটি-দুর্বলতা এবং ভবিষ্যতের সম্ভাব্য ব্যর্থতা যতটা তুলে ধরা যায় তাতেও কেউ পিছ পা হননি। একপক্ষের রণকৌশল যাতে কোনোক্রমেই অন্যপক্ষের কাছে পূর্বেই ফাঁস না হয়ে যায় সে জন্যে টেলিভিশনে এই ভাষণের রেকর্ডিং ও এডিটিং-এ যথেষ্ট গোপনীয়তা রক্ষার চেষ্টা করা হতো।



২৭ শে ডিসেম্বর রাত আটটার বাংলা সংবাদের পরে শেখ হাসিনার এবং ঠিক তার পরপরই বেগম খালেদা জিয়ার ভাষণ প্রচারিত হয়েছিল। শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ এবং অতীত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে সকল হানাহানি ও দ্বন্দ্ব-সংহাত ভুলে একটি স্বচ্ছ রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। এ ছাড়াও তাঁর বক্তব্যে ছিল বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারসহ সকল হত্যাকা-ের বিচার নিশ্চিত করা, ১৯৭১-এর যুদ্ধপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করা এবং দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের মূলোৎপাটন করে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে একটি গৌরবজনক অবস্থানে পৌঁছে দেয়ার অঙ্গীকার। তিনি তাঁর এই কর্মসূচীর নাম দিয়েছিলেন, ‘দিন বদলের সনদ’।



অন্যদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তাঁর ভাষণে ২০০১-২০০৬ শাসনকালে কোনো ভুলত্রুটি হয়ে থাকলে তার জন্যে জনগণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে আর একবার বিএনপিকে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ দেয়ার আহবান জানান। তিনি খুব স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন, বাংলাদেশের জনগণ রাজনীতিতে কোনো ধরণের সংঘাত, নৈরাজ্য এবং হানাহানি দেখতে চায় না। সে জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে অবশ্যই হরতাল, অবরোধ এবং ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ বন্ধ করতে হবে।



২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচন পূর্ব ভাষণ ধারণ এবং সম্পাদনার সকল পর্যায়ে উপস্থিত ছিলেন দলের তৎকালীন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নূহ-উল-আলম লেনিন এবং বিটিভির অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার (পরবর্তীতে মহাপরিচালক) কাজী আবু জাফর সিদ্দিকী। জাফর ভাই প্রায় দুই দশক আমার অগ্রজ সহকর্মী হিসাবে কাজ করেছেন। সম্ভবত সেই অধিকারে এবং বিটিভির নাড়ি-নক্ষত্র সম্পর্কে তাঁর ব্যাপক জানাশোনার কারণে ভাষণটি রেকর্ডিংয়ের সময় স্টুডিও এবং নিয়ন্ত্রণ কক্ষে ছোটাছুটি করে তিনি উপস্থিত সকলকে ব্যতিব্যস্ত করে ফেলেছিলেন। অনুষ্ঠান এডিটিং-এর কাজটি ছিল তুলনামূলকভাবে সহজ। তবে লিখিত পাণ্ডুলিপির সাথে মিলিয়ে ভুলত্রুটি বাদ দিয়ে নান্দনিকভাবে উপস্থাপন করার জন্যে এই টেকনিক্যাল সম্পাদনাটুকু ছিল অপরিহার্য। এ কাজে যথেষ্ট ধৈর্য্য ও আন্তরিকতার সাথে সহযোগিতা করেছিলেন নূহ-উল-আলম লেনিন।



সম্পাদনার সময় বিরতির এক পর্যায়ে আমার অফিস কক্ষে বসে চা খেতে খেতে আমি আমার ছাত্র জীবনের পূর্ব পরিচিতির সূত্রে লেনিন ভাইকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘আপনারা নির্বাচনী ইশতেহারে অনেক ভাল কথা বলেছেন, অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কিন্তু গণমাধ্যমÑ বিশেষ করে বেতার টেলিভিশনের স্বায়ত্ত্বশাসন বা সংবাদপত্রের স্বাধীনতার বিষয়ে একটিও কথাও বলেননি কেন?’

লেনিন ভাই হাসতে হাসতে উত্তর দিয়েছিলেন, ‘বেতার টেলিভিশনের স্বায়ত্ত্বশাসন সম্পর্কে এর আগে এতো কথা বলা হয়েছে এবং এতোবার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে যে নতুন করে এ কথা বললেও আর কেউ বিশ্বাস করবে না। কাজেই বিষয়টা নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ না করে কাজটা আমরা করে দেখাতে চাই।’



বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ভাষণ রেকর্ডিং এবং এডিটিং-এর সময় সার্বক্ষণিকভাবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক, লেখক ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব শফিক রেহমান। সম্পাদনা কক্ষে বসে আমি শফিক রেহমানকেও প্রায় একই ধরণের একটি প্রশ্ন করেছিলাম। শফিক রেহমান মিডিয়া জগতে অত্যন্ত মেধাবী, বুদ্ধিদীপ্ত একজন মানুষ। তাঁর বাকচাতুর্যের সাথে পেরে ওঠা আমার মতো সাধারণের জন্য সহজ নয়। তিনি সুকৌশলে মূল প্রশ্ন এড়িয়ে বিচার বিভাগ এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় আওয়ামী লীগ কীভাবে হস্তক্ষেপ করেছে তার একটা ফিরিস্তি তুলে ধরেছিলেন। তারপরেও নাছোড় বান্দার মতো আবারও বেতার টেলিভিশনের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন ‘আমরা বেতার টেলিভিশনসহ দেশের গণমাধ্যমগুলোতে এমন একটি ‘র‌্যাডিক্যাল চেঞ্জ’-এর সূচনা করতে চাইÑ যা আপনারা কখনও কল্পনাও করেননি।’



নির্বাচনে বিএনপির শোচনীয় পরাজয়ের ফলে শফিক রেহমান কথিত গণমাধ্যমের ‘আমূল সংস্কার’-এর সূত্রে বেতার টেলিভিশনের স্বায়ত্বশাসন কিংবা সংবাদপত্রের অবাধ স্বাধীনতা দেখার দুর্লভ সুযোগ থেকে আমরা বঞ্চিত হয়েছি, কিন্তু সরকার গঠনের পর থেকে আওয়ামী লীগ ব্যক্তি মালিকানাধীন স্যাটেলাইট টেলিভিশনগুলোকে সংবাদ ও ভিন্নমত প্রচারের যে অবাধ স্বাধীনতা দিয়ে রেখেছেন তা এর আগে কেউ সত্যিই কল্পনা করেনি। এমন কি সাংবাদিকতার রীতিনীতি ও অনেক ক্ষেত্রে জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টিকে পাত্তা না দিয়ে কিছু টেলিভিশন চ্যানেল তাদের সংবাদ এবং সরাসরি সম্প্রচারের ক্ষেত্রে সহিংসতা এবং সম্প্রদায়িকতাকে উস্কে দেয় এমন সব বিষয় অবাধে প্রচার করেছে এবং এখনও করে চলেছে। গত ৫ই মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশের সময় কয়েকটি টেলিভিশনের ভূমিকা লক্ষ্য করলেই এ কথা সহজে অনুধাবন করা যায়।



অতীতে হরতাল-ধর্মঘট বা জন সমাবেশসহ বিরোধী দলের কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচী থাকলে তা প্রচার করা এর সাথে এবং জনগণকে সম্পৃক্ত করার জন্যে প্রচার চালানো কোনো সহজসাধ্য ব্যাপার ছিল না। পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ, দলের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি এবং লিফলেট ছাড়া পোস্টারিং এবং মাইকিং ছিল সবচেয়ে কার্যকর ‘অডিও-ভিজ্যুয়াল’ প্রচার ব্যবস্থা। এখন বড় কোনো দলের নেতা বা নেত্রী একটি তারিখ নির্ধারণ করে প্রেস রিলিজ পাঠিয়ে বা টেলিভিশন চ্যানেলে ভিডিও বার্তা পাঠিয়ে দিলেই যে কোনো কর্মসূচী মুহূর্তের মধ্যেই সারাদেশের মানুষের জানা হয়ে যায়। এরপর ঘোষিত কর্মসূচী সফল করার জন্যে মাঠে না থেকে শুধুমাত্র ক্যামেরার সামনে বক্তৃতা বিবৃতি দিয়েই নেতা-নেত্রীরা কথিত আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলতে চান। সাম্প্রতিককালে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর আত্মগোপনকারী নেতাদের মতো অজ্ঞাতস্থান থেকে ভিডিও বার্তা পাঠিয়েও হরতাল অরোধের মতো কর্মসূচী ঘোষণা করা হচ্ছে। গণতান্ত্রিক অধিকারের নামে ঘোষিত এ সব রাজনৈতিক কর্মসূচী প্রকারান্তরে সহিংস এবং ধ্বংসাত্মক ঘটনায় রূপান্তরিত হয়ে জনদুর্ভোগ বাড়ালেও সরকার এ সব ঘোষণা বন্ধ করার কোনো উদ্যোগ নেয়নি।



আজকাল দুই ডজনের বেশি টেলিভিশন চ্যানেলের ক্যামেরা এবং এফএম রেডিওর মাইক্রোফোন হাতে সংবাদ মাধ্যমের কর্মীরা যে কোনো ঘটনা দুর্ঘটনার কেন্দ্রস্থলকে সর্বক্ষণ এমনভাবে ঘিরে রাখে যে সেখান থেকে সত্য গোপন করা কিংবা বানোয়াট সংবাদ পরিবেশন করা প্রায় অসম্ভব। সেই কারণেই আলোচিত বিশ্বজিৎ হত্যায় সম্পৃক্ত ছাত্রলীগকর্মীদের পরিচয় লুকিয়ে রাখা বা সাভারের রাজাপ্লাজায় নিহতদের সংখ্যা নিয়ে কারচুপি করা যেমন সম্ভব হয় না তেমনি হেফাজতের সমাবেশে লাশগুম করার অভিযোগও হাস্যকর বলে মনে হয়। সাম্প্রতি বিরোধী দলের ডাকা হরতালে নেতা-কর্মী শূন্য কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দৃশ্য, অবরোধের সময় রেল স্টেশন, বিভিন্ন বাস টার্মিনাল এবং লঞ্চঘাটে সাধারণ যাত্রীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগের দৃশ্য এবং মিটিং মিছিলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার দৃশ্য দর্শকরা প্রায় নিয়মিতভাবে সরাসারি দেখতে পান। অতি সম্প্রতি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এরশাদের বিভিন্ন বক্তব্য এবং তাঁকে চ্যাংদোলা করে সিএমএইচ-এ পাঠানোর দৃশ্য যেমন দর্শকগণ উপভোগ করেছেন তেমনি বিরোধী দলের ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ চলাকালীন সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় একজন জাতীয়তাবাদী মহিলা আইনজীবীর উপর আওয়ামী লীগ কর্মীদের নৃশংস হামলার দৃশ্য দেখে নিন্দা জানিয়েছেন অসংখ্য দর্শক। বিএনপি’র ডাকা এই কর্মসূচীর সময় প্রেসক্লাবে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সাথে ইট পাটকেল ছোঁড়াছুঁড়ি, পুলিশের জলকামান থেকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবীদের উপর রঙিন ধারা বর্ষণের দৃশ্য এবং জাতীয়তাবাদী আইনজীবীদের সাথে যুব মহিলার লীগ কর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার দৃশ্য বিভিন্ন চ্যানেলে দীর্ঘ সময় ধরে সরাসরি প্রচারিত হয়েছে।





ঘোষিত ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’র সরাসরি সম্প্রচারের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসার সামনে দীর্ঘ প্রতীক্ষা। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর বাধার কারণে বেগম জিয়া যেমন তাঁর বাড়ির বাইরে যেতে পারেননি, তেমনি গণমাধ্যমের কর্মীরাও বাসভবনের ভেতরে ঢুকে তাঁর সাথে কথা বলতে পারেননি। শেষপর্যন্ত কয়েকজন মিডিয়া কর্মী ক্যামেরা এবং মাইক্রোফোনসহ দেয়াল টপকে বিরোধীদলীয় নেত্রীর বাসায় ঢুকে নিরাপত্তা কর্মীদের উপস্থিতিতেই বেগম জিয়ার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন। মজার ব্যাপার, বাসভবনে ঢোকার ব্যাপারে এতোসব বাধা নিষেধ সত্ত্বেও বেগম জিয়ার বক্তব্য ধারণ বা পরবর্তী কর্মসূচী প্রচারের ক্ষেত্রে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করেনি। ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’র দিনগুলোতে বাংলাদেশ টেলিভিশন যথারীতি এই কর্মসূচীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের প্রেস কনফারেন্স, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের বক্তব্য এবং কমলাপুর রেল স্টেশনে বোমা হামলায় একজন নিরাপত্তা কর্মী নিহত হবার ঘটনা ও রেলমন্ত্রীর উপস্থিতি ছাড়া সারাদিনে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় ঘটে যাওয়া আর কোনো ঘটনাই প্রচার করেনি। তবে বিক্ষুব্ধ বিরোধী দলীয় নেত্রী পুলিশের বাধার কারণে বাইরে যেতে না পেরে একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যে উষ্মা প্রকাশ করেছেন এবং ভবিষ্যতে গোপালগঞ্জ জেলার নাম বদলে দেওয়া হবে বলে যে হুমকি দিয়েছেন সেই অংশটুকু চমৎকারভাবে সম্পাদনা করে বিটিভি প্রচার করেছে।



বেগম খালেদা জিয়া ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে প্রদত্ত ভাষণে রাজনৈতিক কর্মসূচীর নামে হরতাল, অবরোধ এবং নৈরাজ্য বন্ধ করার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা তিনি রাখেননিÑ বরং জামায়াত শিবিরের সক্রিয় অংশগ্রহণে এসব কর্মসূচী বহুগুণ বর্ধিত এবং ধ্বংসাত্মক হয়ে ফিরে এসেছে। একইভাবে ভাষণের বাইরে বেতার টেলিভিশনের স্বায়ত্ত্বশাসনের ক্ষেত্রে নূহ-উল-আলম লেনিন তাঁর ব্যক্তিগত প্রতিশ্রুতি শেষপর্যন্ত রক্ষা করতে পারেননি। বিভিন্ন চ্যানেলে যে কোনো খবর তাৎক্ষণিক জানতে পারার ব্যাপক সুযোগ থাকায় বিটিভির বা বাংলাদেশ বেতারের স্বায়ত্ত্বশাসনের ব্যাপারে কেউ অবশ্য এখন আর মাথাও ঘামায় না। আসলে ঘোষিত স্বায়ত্ব শাসনের চেয়েও যা প্রয়োজন তা হলো সরকারি মাধ্যমে তথ্য প্রচারের ব্যাপারে সরকারের সদিচ্ছা এবং প্রতিষ্ঠানের ভেতরে দু চারজন মেরুদ-বিশিষ্ট গণমাধ্যম কর্মী। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ টেলিভিশনকে স্বায়ত্ত্বশাসন দেয়া হলেও তা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে না। একদিকে সরকারি মাধ্যমে মেধাসম্পন্ন প্রফেশনাল লোকের অভাব আর অন্যদিকে দীর্ঘকাল স্বাধীনভাবে কাজ করার অনভ্যাসের ফলে বিটিভির পক্ষে এই স্বাধীনতা কাজে লাগানো সম্ভব হবে না। খাঁচার দরজা খুলে দিলেও যে পাখি কোনোদিন উড়তেই শেখেনি সে যদি আকাশে ডানা মেলতে চেষ্টা করে তাহলে পাখিটি যে শিগগিরই মুখ থুবড়ে পড়বেÑ তাতে কোনো সন্দেহ নেই।



লেখক: মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক উপ-মহাপরিচালক, বাংলাদেশ টেলিভিশন



মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:১১

Rubel rana বলেছেন: This is our voice declaring “We, the citizens of the PEOPLE’s Republic of Bangladesh do not accept this election”.

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.