নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

“আমি আপনার কথার সাথে দ্বিমত পোষণ করতেই পারি কিন্তু আপনার কথা বলার স্বাধীনতা রক্ষার প্রয়োজনে জীবনও উৎসর্গ করতে পারি”

রুপম হাছান

‘‘আত্মত্যাগ সব সময় ভালো কিন্তু মাঝে মাঝে বিরক্তিকরও বটে...’’

রুপম হাছান › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে কিছু ক্ষুদ্র মন্তব্য যেখানে উপেক্ষিত হচ্ছে সাধারণ মানুষের চাওয়া-পাওয়া :

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:১৮

বুঝ হওয়ার পর থেকে দেখে আসছি পরিবারটি গোড়া আওয়ামীল কেন্দ্রিক। এবং এটা হওয়াটাই স্বাভাবিক, কারণ সেই সময়ে এই দেশের হাল ধরার মতো যে এই একটি মাত্র দলই ছিলো। ভালো হোক আর মন্দ হোক তা ভাঁজ-বিচার করার তেমন সুযোগ ছিলোনা কারো মধ্যে, কারণ অবুঝ শিশু থেকে বৃদ্ধা পর্যন্ত সকল স্তরের লোকেরা তখন যে জিনিসটির জন্য আকুল-ব্যাকুল ছিলো তা হলো পরাধীনতা থেকে মুক্তি। আর সেই নেয়ামতটুকু সকল স্তরের লোকের নিকট শুধুমাত্র তৎকালীন আওয়ামীলীগই দিতে পেরেছিলো বলে বিশ্বাস করি। তখন স্বাধীনতা নিয়ে মেতে ছিলো পুরো দেশ তথা জাতি। হয়তো সে কারণে রাজনৈতিকভাবে কোনো ভুলক্রটি হলেও তা নিয়ে মাতামাতি করেনি কেউ, কারন তাহলে হয়তো দেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের স্বার্থ পুরোপুরি জলাঞ্জলি দিতে হবে; কিন্তু তাতেও কি কম হয়েছে! যারাই এই দেশের জন্য ছিলেন প্রথম শ্রেণীর প্রাণ পুরুষ ঠিক আবার তারাই হলেন বর্তমান দেশের রাজনৈতিকদের কাছে ভিলেন স্বরুপ! কেউ বলে তো উনিম এমন তো অন্যরা বলেন তিনি এমন।

আর বিশ্ব ইতিহাসও ঠিক তাই বলে।ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্য ঘটনাগুলো ঘটেছিলো নাৎসি জার্মানিতে। কিন্তু সেই নাৎসিরা এখন কোথায়!? হিটলার এর নির্দেশে সেসময় যেসব রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তারা দেশের সাধারণ মানুষের ওপর যে অমানুষিক নির্যাতন করেছিলেন, নুরেমবার্গের বিচারে তাদের অনেকেরই খুবই গুরুদন্ড হয়েছিল। এবং তাদের বংশধরেরা দুই প্রজম্ম ধরে ঘৃণা আর গ্লানি সহ্য করে এসেছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযু্দ্ধ শেষের ডামাডোলে কিছু সংখ্যক নাৎসি কর্মকর্তা পালিয়ে বিদেশে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানেও তারা নিষ্কৃতি পাননি। বিভিন্ন সময়ে তাদের অনেকেই বিভিন্ন দেশে ধরা পড়েছেন এবং শাস্তি ভোগ করেছেন। একটি দৃষ্টান্ত হচ্ছেন অ্যাডলফ আইখম্যান। হিটলারের ইহুদি নিধনযজ্ঞের একজন বড় হোতা ছিলেন তিনি। 1945ইং সালে নাৎসিদের পতনের পর তিনি পালিয়ে আর্জেন্টিনা চলে যান। সেখানে নাম ও পরিচয় পরিবর্তন করে তিনি সফল জীবনযাপন শুরু করেন। কিন্তু 1960 সালে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ তাকে ধরে নিয়ে আসে। তখন তার বিচার সারা বিশ্ব আগ্রহ সৃষ্টি করেছিল। 1962 সালে তিনি দোষী সাব্যস্ত হোন এবং তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। এই বিশ্ব ইতিহাসের শেষপ্রান্তে এসে 1971 সালের সেই মুক্তিযোদ্ধে যারা এই দেশের বিরোধীতা করেছিলেন এবং এই দেশের নিরীহ জনগণের জান-মাল, ইজ্জত হরণ করেছিলেন, কেড়ে নিয়েছিলেন স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার শেষ আশ্রয় (বাড়ীঘর পুড়িয়ে), 2010 সাল থেকে ঠিকই সেই দেশদ্রোহীদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড়াতে হয়েছিলো এবং 2012 সালে তাদেরকে সেসব দোষে, দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছিল দীর্ঘ 43 সাল পর।

যাই হোক দীর্ঘ ইতিহাসের বৃত্তান্ত এইজন্য টানলাম যে, আজকের বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলোর শিষ্টাচার এবং তাদের নৈতিক দায়িত্ববোধ এর দিকে তাকালে বুঝা যায়, তারাও ঠিক সেই পূর্বেকার ব্যক্তিদের মতোই কাজ করছেন এবং সেসব বিষয়ে মনে হচ্ছে তারা তেমন চিন্তিত নন। গণতন্ত্রের মোখশধারী দলগুলো কি কখনো গণতন্ত্র কি জিনিস তা উপলদ্ধি করেছেন!? অনেক কাঠখোড় পুড়িয়ে তাজা প্রাণের বিনিময়ে তৎকালীন সৈরশাসক জেনারেল এরশাদের পতনের মধ্য দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক নির্বাচন পদ্ধতি চালু করে 1991 সাল পরবর্তী ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিধির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো বাংলাদেশের গনতন্ত্র। অথচ আজকেও ঠিক সেই পূর্বেকার সময়ে ফিরে গেলো বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলোর চিন্তাভাবনা। সব রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বোধদ্বয় হওয়া উচিত যে, ইতিহাস তৈরি থাকেনা কিন্তু ইতিহাস তৈরি করতে হয়। এমন ইতিহাস মানুষের জন্য তথা দেশের জন্য তৈরি করা দরকার যা গণমানুষের তথা দেশের উপকারেই আসবে। একটি নির্মম বাস্তব হলো-ঘরের লোক, ঘরের লোকের ভুলক্রুটি দেখতে পায় না আর পেলেও তা স্বীকার করে না। এমনকি তা জিজ্ঞেস করলে চুপ ও থাকে না, সরাসরি অস্বীকার করা একটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। শুধুই কি সেখানে শেষ হয়ে যায় ব্যাপারটা!? বরং সেই দোষগুলো শক্তিশালী পক্ষ অপেক্ষাকৃত দুর্বল পক্ষের উপরে চাপিয়ে দিয়ে মনে হয় প্রাণভরে তৃপ্তি অনুভব করেন। যা শুধু রাজনৈতিক ব্যক্তি, সমর্থক কিংবা শুভাকাংখীদের মাঝে লক্ষ্যণীয়! আর এসব রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কারণেই হয়তো পুরো পৃথিবীটাই একদিন ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হবে।

আর হয়তো সেই কারণেই আমিও দলগুলোর মাঝে খারাপ দিকটা লক্ষ্য করিনি। তাই ভেবেছিলাম, দেশ ভালো থাকলে, আমিও ভালো থাকবো, ভালো খাবো এবং ভালোভাবে বাঁচতে পারবো। ওমা! সেই আশার গুড়ে বালি! একটা কথা আছে না- কয়লা ধুইলেও ময়লা যায় না। আমার মতো সাধারণ জনগণ হয়তো সেই কয়লা থেকে ময়লা ছাড়ানোর অহেতুক চেষ্টা করে প্রতিনিয়ত। জনপ্রতিনিধিরা যদি সেই ময়লা ছাড়াতে না চান তবে কার সাধ্য আছে, সেই কয়লা থেকে ময়লা ছাড়াই। মাঝে মাঝে খবরে কিংবা খবরের কাগজে দেখতে পাই- অমুক ব্যক্তি ক্রেস্ট চায় না নগদ টাকা চায়! অমুক ব্যক্তি টেন্ডার চাই না কাজ চাই! অমুক ব্যক্তি চার হাজার টাকা তেমন কিছুই না! অমুক ব্যক্তির বিচার লাগবে না স্যুট এন্ড সাইট! তা ছাড়া নিত্য প্রয়োজনীয় উপকরণগুলোর যে জরাজীর্ণ অবস্থা। ধাপে ধাপে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো! গ্যাসের দাম বাড়ানো! ওয়াসার পানির বিল বাড়ানো! তের লক্ষ চাকুরীজীবির মাসিক ভাতা একশতভাগ বাড়িয়ে দেয়া! সহ কাঁচামাল সহ প্রতিদিনের মাছ, গোস্ত এবং সবজি সহ সব কিছুর মাত্রাতিরিক্ত দাম বাড়িয়ে বাকী 15কোটি 87লক্ষ মানুষের জীবনকে করে দিয়েছে দুর্ষহ! অন্যদিকে বছর শেষ হতে না হতে বাড়িওয়ালারাও যেনো পাল্লা দিয়ে বাড়ি ভাড়া বাড়াতে থাকেন। এসবও যেনো দেখার কেউ নেই।

রাজনীতি এখন হয়ে গেছে পরিবার গোছানো নীতি। যখন যে মসনদে উপবিষ্ট তখন তিনি এবং তার সাঙ্গ-পাঙ্গোরা আখের গোছাবেন। আর বিরোধী হবেন পিষ্ট। যার ফলে, গণতন্ত্র এখন গণমানুষের কথা চিন্তা করেনা আর অন্যদিকে গণমাধ্যম, সেটাও এখন কোনো ব্যক্তি কিংবা দল কিংবা গোষ্ঠীর কাজকে সহজ করে দেয়ার মানসে রত। সেটাও খুব স্পষ্ট দেখতে পাওয়া যায়, যখন দেখি সাগর-রুনি কিংবা বালু হত্যা নিয়ে গণমাধ্যমের দ্বিমূখীনীতি। এমন রাজনীতি এদেশের জনগন এর দরকার আছে বলে মনে করি না। ব্যক্তি যার যার কিন্তু দেশ সবার। আর তাই এই দেশের ভালো মন্দ নিয়ে প্রতিটি নাগরিকের মন্তব্য করার অধিকার আছে এবং আছে তাদের মৌলিক বিষয়াদির ব্যাপারেও সুরক্ষিত থাকবার, এমনটাই আশা করি। ফেলে আসা দিনগুলি থেকে আদর্শ পুঁজি করি এবং তা দেশ তথা জাতি গঠনে ব্যবহার করি আর স্বপ্ন দেখি একটি সুন্দর পৃথিবীর।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.