নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

“আমি আপনার কথার সাথে দ্বিমত পোষণ করতেই পারি কিন্তু আপনার কথা বলার স্বাধীনতা রক্ষার প্রয়োজনে জীবনও উৎসর্গ করতে পারি”

রুপম হাছান

‘‘আত্মত্যাগ সব সময় ভালো কিন্তু মাঝে মাঝে বিরক্তিকরও বটে...’’

রুপম হাছান › বিস্তারিত পোস্টঃ

- শিক্ষাব্যবস্থার বিপর্যয় আর কাকে বলে!? -

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:১৫

গত পরশু রোজ সোমবার 26.01.2015ইং তারিখ ছিল একটি স্কুলের এসএসসি পাবলিক পরীক্ষা 2015 শিক্ষার্থীদের বিদায়ের দিন। যথারীতি স্কুলের সকল আয়োজন শুরু হলো। আমিও উপস্থিত পাশে বসে অনুষ্ঠান উপভোগ করছিলাম। অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্কুলের একজন শিক্ষিকা বলতে লাগলেন যে, তোমাদেরকে গত দশ বছর ধরে আমরা যে, ভালো-মন্দ, নিয়ম-শৃঙ্খলা এবং নৈতিক আদর্শ সম্পর্কে জ্ঞান দান করেছি আজকে তোমাদের কাছ থেকে তার কিছু নিদর্শন আশা করি। নিশ্চয় আজকে তোমাদের কাছ থেকে আমরা তা দেখতে পাবো। অর্থাৎ এই কথাটি শিক্ষিকার বলার কারণ হলো- ছাত্র-ছাত্রীদের হড্ডোগোল এর কারণে অনুষ্ঠানটি যথাযথ ভাবে পরিচালনায় বিঘ্ন ঘটছিলো। তিনি আরো বললেন, এখানে তেলওয়াত হবে, হামদ-নাত হবে, বক্তব্য হবে এবং গান হবে কিন্তু এতে করে তোমরা কেউ হাত তালি দেবে না কিংবা উচ্চস্বরে কথাও বলবেনা। কিন্তু কে শোনে কার কথা। যে যার মতো কথা বলেই চললো। শোনার যেনো কেউ নেই। এক সময় সেই শিক্ষিকা বলতে বাধ্য হলেন যে, তোমাদের কে চুপ করার ব্যাপারে এতোবার বলার পরেও যখন চুপ করছো না তখন তোমাদেরকে এই ব্যাপারে বারবার মাইকে বলতে আমারও যেনো দৃষ্টিকটু মনে হচ্ছে। জ্ঞানী পাঠকবৃন্দ কি বুঝলেন!? আমার জ্ঞানে যতটুকু বুঝতে পারলাম তা হলো, হয়তো ঐ শিক্ষিকা ভুল বলেছেন, তাদের শেখানো নিয়ম-কানুন সম্পর্কে নতুবা ঐসকল ছাত্রছাত্রীরা সেইসব নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা করেন না। যাই হোক-

পরবর্তীতে শিক্ষিকা পবিত্র কোরআন তেলওয়াত করার জন্য একজন ছাত্রকে অনুরোধ জানালেন। ঐ ছাত্র যথারীতি তার তেলওয়াত শেষ করার পর সংক্ষিপ্ত ভাষণ দেন ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষক। তারপর যথারীতি আরেকটি ছাত্র তার দশ বছরের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন তার ক্লাসের অন্যান্য বন্ধুবান্ধবসহ স্কুলের সকলের সাথে। তারপরে স্কুলের আরেকজন সম্মানিত শিক্ষক তার উপদেশ মূলক বক্তব্যে বললেন, (গুছিয়ে লেখার প্রয়োজনে আমি আমার মতো করে লিখেছি কিন্তু পুরো সারমর্মটা ঠিক এমনই ছিলো) প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, গত দশ বছর ধরে তোমাদেরকে আমরা যা শিখিয়েছি আগামীদিনে তার একটি প্রতিফলন তোমরা উপভোগ করতে যাচ্ছো। তোমাদের মাঝে সকলে সমানভাবে পড়াশোনা করোনি, এটা যেমন আমরা জানি ঠিক তোমরা জানো। ভবিষ্যতের প্রথম স্টেশনে তোমরা পা দিতে যাচ্ছো। এখান থেকে তুমি ঠিক করবে আগামী দিনগুলিতে তুমি কি করতে চাও বা হতে চাও? তবে আমরা আশা করবো, এই দশটি বছর যেমন প্রত্যেকে প্রত্যেকের বন্ধু ছিলো ঠিক পরীক্ষার হলে গিয়েও তার প্রমান তোমরা দিবে। তুমি যেই প্রশ্নটির উত্তর লিখেছো, তোমার বন্ধু সেই প্রশ্নটির উত্তর দিতে পারলো কিনা তা খেয়াল করবে। সহযোগিতা করার চেষ্টা করবে! তবে আমি কিন্তু বলছিনা তোমরা নকল করো!? তোমরা একে অপরকে যেখানে ভুলে যাবে সেখানে পারলে সহযোগিতা করবে। ভুলে যাবে না সে তোমার ক্লাসের বন্ধু। সম্মানিত শিক্ষকক আরো কিছু বলে ... ... ... এই বলে আমার বক্তব্য এখানেই শেষ করলাম। আল্লাহ হাফেজ। জ্ঞানী পাঠকবৃন্দ কি বুঝলেন!? আমার জ্ঞানে যতটুকু বুঝতে পারলাম তা হলো, প্রবাদে বলে- চোরকে বলে চুরি করো, আর গিরস্তেরে (পরিবারকে) বলে সজাগ থাকো! যাই হোক –

এরপর অন্য শিক্ষক আসলেন এবং বললেন, স্যার তো সবিই বললেন। তো আমি স্যারের সাথে একটু যোগ করতে চাই! তা হলো তোমরা যখন হাতে পেপার পাবে তা সঠিক ও নির্ভূলভাবে পূরণ করবে। দেখো যদি পেপারে রুল নম্বর, রেজিস্ট্রিশন নম্বর এবং লুজ পেপার নম্বর নির্ভূলভাবে পূরণ করতে ভুল করবে না। আর যদি তা ভুল করো তবে তুমি পরীক্ষায় পুরো একশত নম্বর উত্তরদিলেও ফেল করবে। কারণ তোমার খাতা যথাযথভাবে মূল্যায়িত হবে না। আরেকটি জিনিস তোমরা খেয়াল রাখবে!? মনে করো তোমাকে বলা হলো এখান থেকে ছয়টি প্রশ্নের উত্তর দাও। কিন্তু তুমি পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর পারো এবং ঐ পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর লেখার পর তুমি বসে আছো। তুমি তখন বসে না থেকে ঐ পাঁচটি প্রশ্নে রিপিটিশন করো এবং ঐ ছয় নম্বর প্রশ্নের উত্তরের যায়গায় প্রশ্নটি লিখে উত্তরে যা মনে পড়ে লিখতে থাকো যদি তাও না পারো তবে লিখো আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি। অর্থাৎ খাতা খালি রাখার চেষ্টা করবে না। যতদূর পারো খালি যায়গা লিখে ভরাট করার চেষ্টা করবে! জ্ঞানী পাঠকবৃন্দ কি বুঝলেন!? আমার জ্ঞানে যতটুকু বুঝতে পারলাম তা হলো, আমরা (শিক্ষকরা) তোমাদের উত্তর (কি লিখেছো তা) দেখিনা; আমরা দেখি তোমরা কিছু লিখতে পারছো কি না!? নিশ্চয় এখন খুব সহজেই বুঝতে পারলেন!? পড়াশুনা নিয়ে বর্তমান শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের কি অবস্থা চলতেছে। মনে হলো শিক্ষক আমাকে প্রশ্ন করলেন যে, তোমার নাম কি? আর উত্তরে আমি বললাম স্যার আমার নাম আমি জানি না! ব্যাস উত্তর সঠিক হয়ে গেল। অর্থাৎ প্রশ্নের সাথে সাথে কিছু বলতে পারলেই উত্তর সঠিক! দশ নম্বর পেয়ে গেলাম! এই যদি হয় বর্তমান সময়ের পড়াশুনার নিয়ম-কানুন, তাহলে ঐসকল ছাত্রছাত্রীদেরকে যতই শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে বসতে বলবেন কিংবা থামতে বলবেন, কোনো কাজ হবে কি!?

একটা সময় সারা বাংলাদেশ থেকে মাত্র বিশজন বোর্ডস্ট্যান্ড করতো। দেখতে আসতো গ্রামের সবাই। ফাস্ট ডিভিশন পাওয়া যেখানে দূরহ সেখানে ষ্টার পাওয়া তো স্বপ্নের ব্যাপার ছিলো। আর এখন ভুরি ভুরি জিপিএ ৪ পাচ্ছে আর সেটাও গত হয়ে যাওয়া ফাস্র্ট ডিভিশন কে পয়েন্ট টেবিলে পিছে ফেলে। সেসময় জীবনের প্রথম পাবলিক পরীক্ষা ছিলো এসএসসি। আর এখন তার আগেই ছাত্রছাত্রীরা বাড়তি দুইটি পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহন করার পরেও যেনো নিয়ম-কানুন সম্পর্কেও অজ্ঞ থেকেই যাচ্ছে। যদিও এখন লক্ষ লক্ষ গোল্ডেন জিপিএ ৫ সহ জিপিএ ৫ ভুরি ভুরি কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে যখন ভর্তি হওয়ার ব্যাপারে মেধা যাচাই করা হয় ঠিক তখন সেই ভুরি ভুরি থেকে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায় মাত্র হাতে গোনা কয়েকজন!

এমন পড়াশুনার দরকার আছে বলে মনে করি না। ফেরাউনের সময়েও ঠিক একই কায়দায় তার উপদেষ্টারা বলেছিলো, হুজুর তাবৎ এলাকার সকল শিশুদের পড়াশুনা বন্ধ করে দেয়া হোক। তাহলে পরবর্তী প্রজম্মরা আপনার গোলামী করতে বাধ্য থাকবে। পড়াশুনা এমন একটি ধাতু যা তাকে গোলামী থেকে বাঁচতে শেখায়। আশা করি এই গ্রেড সিস্টেম থেকে পুণরায় ডিভিশন সিস্টেমে কনভার্টসহ পিএসসি এবং জেএসটি পরীক্ষা বাতিল করে জাতিকে অন্ধকার জীবন থেকে ফিরিয়ে আনবেন।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৪৫

হুতুম বলেছেন: এটা তো ভাই সিজিপিএ এর জন্য নয়। সবকিছুতে রাজনীতি ঢুকানোর বঃহিরপ্রকাশ।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:১৬

রুপম হাছান বলেছেন: ধন্যবাদ জনাব, চরম বলেছেন। লাইকস।

২| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:২৬

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
২০০০ সালে পাবলিক পরীক্ষায় গ্রেডিং পদ্ধতি চালু হওয়ার পর ধারাবাহিক ভাবেই পাশের হার বাড়ছে। উন্নত দেশের আলোকে প্রশ্নপত্র, শৃজনশীল পদ্ধতি আরোপ, সংক্ষিপ্ত উত্তর, এমসিকিউ, মেশিন রিডেবল রেজাল্ট... ইত্যাদির কারনে ধারাবাহিক ভাবেই উত্তির্নের হার ও GPA5 বেড়ছে।
এখন কিছু ট্যাকনিকেল ত্রুটি দূর করে GPA5 কমানোর ব্যাবস্থা হচ্ছে।

গ্রেড সিস্টেম থেকে পুণরায় ডিভিশন সিস্টেমে নেয়ার দাবী একপ্রকার ঘাধামী।
সকল উন্নত বিশ্বে গ্রেডিং সিস্টেম।
এটি পড়ুন
যে কারনে ইংরেজি বিভাগে ফেল!

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৫৮

রুপম হাছান বলেছেন: জি জনাব হাসান ভাই, আপনার লেখাটি পড়লাম। তবে সেখানে ো আপনি একই কথা বলেছেন যা যুক্তি হতে পারেনা। কোনো কাজ করার আগে সেই কাজটির ব্যাপারে যেমন কিছু ধারণা থাকা যুক্তিযুক্ত ঠিক ঐ ছাত্রছাত্রীদেরকে ো জানতে হবে সে যে বিষয়ে প্রতিযোগিতা করছে তার ধরণ বা পদ্ধতি কি হতে পারে। আর সে তো জেনে বুঝেই অংশগ্রহণ করেছে। তাহলে গ্রাম আর শহর বলে যুক্তি উপস্থাপন করা সংগত কারণে যুক্তিযুক্ত নয়। আপনি যেভাবে তা উপস্থাপন করার চেষ্টা করবেন ফলাফল ঐ একই। এখানে সিট সংখ্যা অপেক্ষমানসহ যদি ১২০সিট হয় আর তার বিপরিতে অংশগ্রহণকারী যদি ৩০হাজারো হয়, তাতে কি। দেখার বিষয় হলো এদের মধ্যে কতজন কৃতকার্য হলো এবং প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্ধারিত নম্বরকে কতজন ছাত্রছাত্রী োভারকাম করতে পেরেছে।

যাই হোক, সহজে বুঝলে বেশি লেখার প্রয়োজন পড়েনা। পূর্ববর্তী ফাস্ট ডিভিশন ধরা হতো ৩ পয়েন্ট আর এই ৩ পয়েন্ট অর্জন করা বর্তমান সময়ের তুলনায় মনে হয় একটু বেশি কষ্টসাধ্য ছিল। আর এখন আমার ঘরেই আছে তার প্রমাণ। দিনের ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১ ঘন্টা করে ো না পড়েই এইচএসিতে জিপিএ ৪.৫৫ পেয়েছে। বর্তমানে হোটেল ম্যানেজমেন্ট এ অনার্স ফাইনাল ইয়ার এ পড়তেছে। আমার ঘরের এই ছাত্রকে তো আমি দেখি। যার পুরো ২৪ ঘন্টার হিসাবটা কেটে যায় এইভাবে।

দুপুর ১টা কখনো ২টা আবার কখনো তারপরে ঘুম থেকে উঠবে। অর্থাৎ তার ক্লাস আছে ঠিক যখন তার আধাঘন্টা আগে বাসা থেকে বের হবে। মিরপুর থেকে ধানমন্ডি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসবে ৫টায়। ভাত খেয়ে শুরু হলো গিটার আর মাঝে মাঝে কম্পিউটার এর বিভিন্ন মিউজিক ছেড়ে গিটার প্রশিক্ষণ, তারপর ঘুম। ঘুম থেকে উঠে জিমে ঐখান থেকে এসে তারপর মাঠে ক্রিকেট চর্চা তারপর ঘরে আসবে রাতের ১১টা নির্ধারিত। তারপর ভাত খেয়ে ফজরের আজান পর্যন্ত কম্পিউটারের গান শোনা আর গিটার বাজানো। এইভাবে তার পুরো বছর এবং পরীক্ষার আগের রাত ১০টা থেকে ৪টা পর্যন্ত পড়ে।

এখন আপনি বলেন এর ভিতরে সে কিভা্বে জিপিএ ৪.৫৫ পায়!? এখন আমি আপনাকে বলি যতই ট্যাকনিক্যাল ক্রুটি দূর করুক ডিভিশন আর জিপিএ কখনো এক হতে পারে না। এবং পূর্ববর্তী ফলাফল আর বর্তমান ফলাফল কখনো সম মানের হতে পারে না। সেসময় পড়ে পাস করতে হতো আর এখন সোনার বাংলা লিখে পাস করা যায়! বাংলা না বুঝতে পারলে আমি দুঃখিত যে আপনাকে বুঝাতে পারলাম না। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.