নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

“আমি আপনার কথার সাথে দ্বিমত পোষণ করতেই পারি কিন্তু আপনার কথা বলার স্বাধীনতা রক্ষার প্রয়োজনে জীবনও উৎসর্গ করতে পারি”

রুপম হাছান

‘‘আত্মত্যাগ সব সময় ভালো কিন্তু মাঝে মাঝে বিরক্তিকরও বটে...’’

রুপম হাছান › বিস্তারিত পোস্টঃ

- আবার একটি ভাষা আন্দোলনের প্রয়োজন মনে হচ্ছে! -

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৫৯

মাসুদ মজুমদার কাকা বলতে শুনেছি, কয়েক দিন আগের ঘটনা। সন্ধ্যায় টিভি সেটের সামনে বসা। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের বিষয় নিয়ে একটি ধারাভাষ্য শুনছিলাম। সেই মুহুর্তে একটি শব্দ কানে বাজল এবং বাঁধল! ধারাভাষ্যে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে নানা ধরনের ইতিবাচক বক্তব্য তুলে ধরা হচ্ছিল। হঠাৎ শেষ করা হলো ‘বঙ্গবন্ধু তোমাকে প্রণাম’ বলে! আমি জানি না বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকলে এ ধরনের শব্দ চয়নে তিনি ব্যথিত হতেন কি না! প্রণাম একটি বিশেষ ধর্মের লোকজন শ্রদ্ধাবনত হয়ে গুরুজনদের জন্য ব্যবহার করেন। তারা সালাম বলেন না। বাঙ্গালি মুসলমানও প্রণাম জানায় না। একটি শব্দ নিয়ে ধর্মান্ধতা বা রক্ষণশীলতা প্রকাশ করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। বাংলা একাডেমি ব্যবহারিক অভিধানেও সালামের প্রতিশব্দ হিসেবে প্রণাম শব্দ গ্রহন করা হয়নি। তাই আমাদের মন ও মননের প্রতীক বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শুরু হয়েছে ভাষা শহীদদের সম্মানে বইমেলা। উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী। এক দিকে আমাদের ভাষার লড়াই, স্বতন্ত্র্য রক্ষার আন্দোলন-অন্য দিকে কলকাতাইয়া শব্দের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার, তাও আবার বঙ্গবন্ধুর জন্য বরাদ্দ করা কোনো সুখকর আলামত স্পষ্ট করে না।

কোকোর মৃত্যুর পরও কোনো কোনো চ্যানেলে ও পত্রিকায় মরদেহ, শেষকৃত্যসহ এমন সব শব্দ চয়ন করেছে, যা আবহমান বাংলার নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ শুনতে ও বলতে অভ্যস্ত নয়। লাশ বলতে আমরা অভ্যস্ত। মৃত্যুকে আমরা ইন্তেকালও বলি। জানাজাকে আমরা শেষকৃত্য বা অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াও বলি না। মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পর পরই আমরা পড়ি- আল্লাহর কাছ থেকে আসে আবার আল্লাহর কাছে ফিরে যায়। তাও আরবিতে বলতেই আমরা অভ্যস্ত। তাই পড়ি- ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন। আজকাল আমরা অনেক শব্দ আমদানি করছি বিন দেশিদের ব্যবহৃত ভান্ডার থেকে। কলকাতা থেকে আমদানি করা কিংবা অনুসরণ করে আমাদের শব্দভান্ডার বাড়াচ্ছি বৈ কমাচ্ছি না। তবে শব্দের অপপ্রয়োগ বাড়ার ক্ষেত্রে আমাদের সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য নষ্ট হচ্ছে না বা সাংস্কৃতিক আগ্রাসন আমাদের গ্রাস করছে কি না, সবাইকে তা ভেবে দেখতে অনুরোধ করছি। আমরা কখনো কূপমন্ডুক হতে যাবো না কিন্তু অতি আধুনিক হতে গিয়ে অস্তিত্ব বিপন্ন হতেও দিতে পারিনা। আমরা জল-পানির যুদ্ধ করতে চাই না। পুরো ভারতে বলে পানি পিহতা হ্যায়। পশ্চিমবঙ্গে জল পান করে। আমরা জলও পান করি আবার পানিও পান করি। বরং পান করার পরিবর্তে ‘খাই’ অশুদ্ধ শব্দ বলতেই আমরা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। এতে আমাদের কোনো গোঁড়ামি নেই। করবস্থানকে শ্মশান, জানাজাকে অন্য কিছু, দাফন-কাফনকে অপভ্রংশ শব্দের ভাষায় বলতে আমরা একেবারেই অনভ্যস্ত। কুলখানি, চল্লিশা গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়, সব দোয়া সব সময় করা যায়। দিন মেপে দোয়ার নিয়ম যুক্তিগ্রাহ্য নয়। তাও এসব দোয়ার অনুষ্ঠানকে প্রার্থনা সভা বলা আমাদের সাথে যায় না। তাই দয়া করে কিংবা মতলববাজি করে আমাদের ওপর অনাকাঙ্খিত কিছু আরোপ করা সমীচীন হচ্ছে না। তাতে সাংস্কৃতিক সঙ্ঘাত অনেক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার জম্ম দেবে, যা আমাদের আবার একটি ভাষা আন্দোলনের দিকে ঠেলে দেবে বলে মনে করি। যার রাজনৈতিক রুপটাও হবে অনাকাঙ্খিত।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:২৯

জাহিদুল ইসলাম ২৭ বলেছেন: নিজেকে সেকুলার,আধুনিক বা একটু অন্যরকম প্রমান করার জন্য মিডিয়ার লোকজন এসব আহাম্মকি কাজ করছে।

২| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৪৮

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: আপনার বিশ্লষণ একটু ভাল লাগল না| ভাষা চলমান| এতে ভিন্ন দেশের ভাষাও যুক্ত হতে পারে আর এতো এক সংস্কৃতির ব্যাপার| বঙ্গবন্ধুকে প্রণাম করতে কোন বাঁধা আছে বলে আমি মনে করিনা| ভাষায় বৈচিত্র আনতে তা ব্যবহৃত হতেই পারে| আসলে কোন দেয়াল থাকলেই বাংলা বরং গ্রিকের মত বিলীন হবে| ভাষাকে তার পথে চলতে দেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ| আর কলকাত্তাই ভাষা বলতে কি বোঝাচ্ছেন ? সেখানে আলাদা ভাষা তৈরী কবে হল? আর জম্ম তো পুব বাংলায় ব্যবহার করা হয় না, আপনি তাহলে কেন করলেন?

৩| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৩৭

রুপম হাছান বলেছেন: মন্তব্যে অংশগ্রহনকারী সবাইকে ধন্যবাদ। একটু খেয়াল করলে বুঝতে পারতেন বলে মনে করি। আমি ভাষা ব্যবহারে যৌক্তিকতা খোঁজ করতে বলি নি বরং বলেছি নিজেদের স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে যেনো তা পালন করা হয়। জাহিদুল ভাই বলছেন- এইসব মিডিয়ার কাজ, হতে পারে। আরণ্যক ভাই বলছেন-কলকাত্তাই ভাষা বলতে কি বোঝাচ্ছেন ? ভাই আপনি কি জানেন, কলকাতাইয়ারা টাকা বলে কিন্তু ব্যবহার করে রুপি!? যাকে সহজ কথায় বলে দ্বিচারিতা। এখনো অনেক লোক আছেন, যারা ভাষা শুনেই বলে দিতে পারেন আমি কিংবা আপনি কোন দেশের বা কোন অঞ্চলের। তারপরেও ভাষার বৈচিত্র আনতে আমার কিংবা আমাদের কোন আপত্তি থাকার কথা নয়। বলছি শুধু নিজের সংস্কৃতির দিকে নজর রেখে তা যেনো ব্যবহার করা হয়। অবশ্যই তার যুক্তি আছে।

*কলকাতা থেকে আমদানি করা কিংবা অনুসরণ করে আমাদের শব্দভান্ডার বাড়াচ্ছি বৈ কমাচ্ছি না। তবে শব্দের অপপ্রয়োগ বাড়ার ক্ষেত্রে আমাদের সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য নষ্ট হচ্ছে না বা সাংস্কৃতিক আগ্রাসন আমাদের গ্রাস করছে কি না, সবাইকে তা ভেবে দেখতে অনুরোধ করছি। আমরা কখনো কূপমন্ডুক হতে যাবো না কিন্তু অতি আধুনিক হতে গিয়ে অস্তিত্ব বিপন্ন হতেও দিতে পারিনা। আমরা জল-পানির যুদ্ধ করতে চাই না। পুরো ভারতে বলে পানি পিহতা হ্যায়। পশ্চিমবঙ্গে জল পান করে। আমরা জলও পান করি আবার পানিও পান করি। বরং পান করার পরিবর্তে ‘খাই’ অশুদ্ধ শব্দ বলতেই আমরা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। এতে আমাদের কোনো গোঁড়ামি নেই।*

আশা করি সবাই বুঝতে পেরেছেন। আর না বুঝলে বলবো আমার বুঝ হয়তো আপনার মতো নয়। কথায়তো বলে- নানা মুনির নানা মত। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.