নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

“আমি আপনার কথার সাথে দ্বিমত পোষণ করতেই পারি কিন্তু আপনার কথা বলার স্বাধীনতা রক্ষার প্রয়োজনে জীবনও উৎসর্গ করতে পারি”

রুপম হাছান

‘‘আত্মত্যাগ সব সময় ভালো কিন্তু মাঝে মাঝে বিরক্তিকরও বটে...’’

রুপম হাছান › বিস্তারিত পোস্টঃ

-আজ বিশ্ব ভালোবাসা দিবস : (স্মৃতির পাতা থেকে)-

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:১৮



ভালোবাসা হচ্ছে সৃষ্টির সেরাজীব মানুষের এক অমূল্য অনুভূতি। একের জন্য অপরের প্রীতি, প্রিয়জনের জন্য প্রেম, আপন মানুষের জন্য সহানুভূতি-এসব কিছুই ভালোবাসার আওতায় পড়ে। বয়োজ্যেষ্ঠের প্রতি শ্রদ্ধা আর কনিষ্ঠের প্রতি স্নেহ মূলত ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। সেই ভালোবাসা মনকে উদার, হৃদয়কে করে সংবেদনশীল ও মানবিক। অনুভূতিকে করে উন্নত থেকে উন্নতর। বাস্তবে এর বিপরীত চিত্রে অতি আবেগ, যৌবনের মোহ ও অনেক ক্ষেত্রেই উচ্ছৃঙ্খলতাই হচ্ছে দৃষ্টিগোচর। এর কারণ, ‘ভালোবাসা’কে অত্যন্ত সঙ্কীর্ণ ও হালকা অর্থে ব্যবহার করায় এর ভালো দিক হারিয়ে গেছে অনেকটাই।

ভালোবাসার অভাবে জীবন হয়ে ওঠে রুক্ষ্ণ মরুভূমির ধূ-ধূ বালুকা প্রান্তরের মতো। অথচো ভালোবাসাকে আমরা সঙ্কীর্ণ করে নিজেদের সঙ্কীর্ণতারই পরিচয় দিচ্ছি। ভালোবাসার মতো একটা সুমহৎ গুন মানবিকতার প্রকাশ ও বিকাশ ঘটায়। অথচো আধুনিকতা ও প্রগতির নামে সে ভালোবাসা হালকা প্রেমের অর্থহীন হুজুগে পর্যবসিত হযেছে। আমরা ভুলে যাচ্ছি, ভালোবাসা নিছক আবেগ ও উত্তেজনা কিংবা যৌনতা এবং অশ্লীলতার বিষয় নয়। সত্যিকার বা বৃহত্তর অর্থে ‘ভালোবাসা’ কথাটার প্রয়োগ যথাযথভাবে না হওয়ায় ব্যক্তি, পরিবার তথা সমাজ জীবনে যেমনি নানা জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে, বাড়ছে অশান্তি। ঠিক তেমনি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অশোভন কার্যকলাপও।

রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, ‘তুমি যে দিবস রজনী শুধু ভালোবাসা ভালোবাসা করো,/ সখী, ভালোবাসা কারে কয়,/ সে কি কেবলি যাতনাময়?’ সত্যিই ভালোবাসার নামে অনেকেই তারুণ্যের তাড়নায় আবেগে নিমজ্জিত হয়েছে এবং অদূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছে। এ কারণে তাদের জন্য, কথিত ভালোবাসা বয়ে এনেছে যাতনা। এর পরিণামে প্রতিনিয়ত চলছে প্রেম সংশ্লিষ্ট হনন কিংবা আত্মহনন। অল্প বয়সের অধিক উচ্ছাসে প্রেমের জোয়ার ভাসিয়ে নিচ্ছে সম্ভাবনাময় বহু জীবন। ভালোবাসার অগভীর উপলদ্ধি অনেককেই টেনে নিচ্ছে পতন ও পরাজয়ের গভীরে। তখন সার্বক্ষণিক সঙ্গী হয়ে ওঠে হতাশা ও বিষন্নতা। প্রেমের নামে মেকি ভালোবাসার ফাঁদে জড়িয়ে অকালে হারিয়ে যাচ্ছে অনেক জীবন। অসময়ে নিঃশেষ হচ্ছে অসংখ্য মানুষের মেধা-প্রতিভা-সম্ভাবনা। এ অবস্থায় ব্যক্তির বিপর্যয়, পরিবারে অশান্তি, সমাজে উচ্ছৃ্ঙ্খলতা পরিণতি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ভালোবাসাকে বলা হয় মর্ত্যের জন্য স্বর্গের উপহার। সেই ভালোবসার মোড়কে ও ভোগবাদী পশ্চিমা জগতের প্রভাবে অনেক ক্ষেত্রে অনৈতিকতার সর্বনাশা খেলা চলছে। মূলত ভালোবাসা সব ক্ষেত্রে প্লাটনিক লাভ না হলেও তা পাশবিক নয়, মানবিক প্রবৃত্তিই জাগায়।

যদিও ‘ভালোবাসা দিবস’ আমাদের ঐতিহ্যগত কোন দিন নয়; বরং পাশ্চাত্যের একটি উৎসব। তারপরেও প্রচরিত বিশ্বব্যবস্থায় আমরা পশ্চিমা জগৎকে অনুসরণ করতে বাধ্য হচ্ছি। কিন্তু পশ্চিমারা এখন ‘ভালোবাসা দিবস’ আমাদেরকে পালন করতে বাধ্য না করলেও আমরা তা করছি মুলত ফ্যাশন ও অনুকরণপ্রিয়তার কারণে। ইংরেজীতে এই দিনটিকে ‘ভ্যালেন্টাইনডে’ বলা হয়। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ছিলেন একজন খ্রিস্ট ধর্মের আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব। দিবসটির প্রচলন সম্পর্কে একাধিক কাহিনীর কথা জানা যায়। একটি কাহিনীর সারার্থ, ঐশী বা আধ্যাত্মিক প্রেমই ভালোবাসা দিবসের উৎস। এখন এ দিবসের মমার্থ এর বিপরীত চিত্রই বেশি ফুটে ওঠে প্রকটভাবে। বলাবাহুল্য, আধ্যাত্মক প্রেম হলো ভালোবাসার সর্বোচ্চ স্তর। মহান স্রষ্টা তাঁর অপার ভালোবাসায় আমাদের সৃজন করেছেন। তাঁর নির্দেশিত পন্থায় তাঁকে ভালোবেসেই এর প্রতিদান দিতে হয়। আধুনিক যুগে এর বিপরীত মেরুতে নেহাত জৈবিক উদ্যমতার মধ্যে অনেকে ভালোবাসার অমর্যদা করছেন। অপর দিকে ‘কনজ্যুমারিউজম’-এর যুগে ভালোবাসা দিবসের স্লোগান তুলে একশ্রেণীর ব্যবসায়ী রকমারি পণ্যে মুনাফা লুটায় অবতীর্ণ হয়েছেন।

ভালোবাসা মানবজীবনের সর্বত্র পরিব্যাপ্ত। এটা শুধু প্রেমিক-প্রেমিকা কিংবা স্বামী-স্ত্রীর বিষয় নয়। সন্তানের জন্য মা-বাবা, ভাইবোন পরষ্পরের জন্য, কিংবা পরিবরের একে অন্যের জন্য, বুন্ধু-বন্ধুর জন্য, এক কথায়- মানুষ তার প্রিয়জনের জন্য স্বতঃস্ফূর্তভাবেই ভালোবাসাবোধ করে থাকেন। তাই বলছি- ভালোবাসার অর্থকে নিজের মতো মূল্যায়ন না করে তার যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা হোক, এই কামনায়। সবাইকে ভালোবাসা দিবসের শুভেচ্ছা। ‘HAPPY VALENTINESDAY-2017’.

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৩:৩৬

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: আজ ভ্যালেনটাইস'স ডে :) :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.