নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

“আমি আপনার কথার সাথে দ্বিমত পোষণ করতেই পারি কিন্তু আপনার কথা বলার স্বাধীনতা রক্ষার প্রয়োজনে জীবনও উৎসর্গ করতে পারি”

রুপম হাছান

‘‘আত্মত্যাগ সব সময় ভালো কিন্তু মাঝে মাঝে বিরক্তিকরও বটে...’’

রুপম হাছান › বিস্তারিত পোস্টঃ

- আজি বসন্তে , ভালোবাসা’র সাথে–

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৫৭



আজ পহেলা ফাল্গুন ১৪২৭ বঙ্গাব্দ ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন। অন্যদিকে ইংরেজি 2021 সনের ১৪ই ফেব্রুয়ারী বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের দুইটি বিশেষ মুহুর্ত যেনো একই দিনে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। তাই ফাগুনের আগুন ঝরা এই স্নিগ্ধ সোনালী সকালটা বয়ে আনুক প্রত্যেকের জীবনে প্রতিদিনের জন্য অনাবিল আনন্দ এবং ভালোবাসাময়। সবাইকে বসন্তের শুভেচ্ছা সহ ভালোবাসা দিবসের রক্তিম শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

‘বসন্ত বাতাসে সই গো, বসন্ত বাতাসে। বন্ধুর বাড়ির ফুলের গন্ধ, আমার বাড়ি আসে; সই গো, বসন্ত বাতাসে ’। হঠাৎ ঠান্ডা উধাও। ঠান্ডা আর গরমের সংমিশ্রণে অদ্ভুত প্রকৃতি এই বসন্ত। ভোরে হালকা কুয়াশা আর মিষ্টি বাতাস গা ছুঁয়ে জানান দেয় ফাগুন এসেছে। এবার সাজবে প্রকৃতি। আগুন রাঙ্গা রঙ্গে। গাইবে কোকিল- মুহু মুহু কুহু কুহু তানে। দখিনা বায়ে নাচবে মৌমাছি। প্রকৃতির পাগল করা সাজসজ্জা আর নাম না জানা কতশত ফুলের মোহনীয় সুবাসে মাতোয়ারা হবে সবাই। ষড়ঋতুর এদেশে পালাবদল করে শীতের পরে আসে বসন্ত। ফাল্গুন ও চৈত্র নিয়ে ঋতুরাজ বসন্তের সময়কাল। এ সময় প্রকৃতি তার রুপের যৌবনে চারপাশ মাতিয়ে রাখে। শীতের রুক্ষতায় ঝরে পড়ে গাছের পাতা। শূণ্য ডালগুলো কানায় কানায় পত্র-পল্লব আর মুকুলে পূর্ণ হয়ে ওঠে ফাল্গুনের শুরুতে।

ঋতুরাজ বসন্ত তার স্বকীয় চেহারায় শুরু করে রাজত্ব। থোকায় থোকায় ফোঁটে কৃষ্ণচুড়া, পলাশ, শিমুল, কাঞ্চন আর রাঁধাচূড়া। শাখে শাখে আমের মুকুল, কাঁঠালের মুচি আর মৌমাছির গুঞ্জন। জরাজীর্ণতা ঝেড়ে ফেলে নতুন কিছু করার প্রেরণা জোগায় বসন্তের ফাল্গুন। বসন্তকে বরণ করার জন্য বাংলাদেশে বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন রকমের উৎসবের আয়োজন করা হয়। এই সময় শুরু হয় রাস মেলা, হলিখেলা, মনের কোথায় যেনো নীরবে বাজতে থাকে গিটারের টু টাং-‘আজ জোৎসা রাতে সবাই গেছে বনে/বসন্তের এই মাতাল সমীরণে, কিংবা আহা আজি এ বসন্তে/কত ফুল ফোঁটে। কত বাঁশি বাজে/কত পাখি গায় ….আহা আজি এই বসন্তে।

অপার সৌন্দয্যের লীলাভূমি আমাদের এ বাংলা। বসন্ত এলে তা আরো প্রস্ফুটিত হয়। প্রকৃতিতে ছড়িয়ে পড়ে ফাগুনের আগুন। লালে লাল হয়ে যায় কৃষ্ণচূড়া, পলাশ আর শিমুল। দখিনা বাতাসে ঝরে পড়ে পথের ধারে। সারি সারি পাপড়িগুলো যেন লাল গালিচা। ঠিক যেনো মনে করিয়ে দেয় সেই বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে বাংলা মায়ের দামাল ছেলেদের বুকের তাজা রক্তে রাঙ্গানো রাজপথ।

রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ফাগুনের আগুন ঝরা সেই দিনগুলোতে উত্তপ্ত ছিল ঢাকার রাজপথ। মায়ের ভাষাকে অক্ষুন্ন রাখতে মিছিল বের করে ছাত্র-জনতা। বেপরোয়া পুলিশ গুলি ছোড়ে সে মিছিলে। রাজপথে লুটিয়ে পড়ে বাংলা মায়ের দামাল ছেলে। লাল হয় রাজপথ। হয়তো সেইদিনে পথের ধারের কৃষ্ণচূড়া, পলাশ, শিমুল ঝেড়ে দিয়েছিলো তাদের সব পাপড়ি, নয়তো বাংলা মায়ের দামাল ছেলেদের রক্তে ভেজা রাজপথ থেকে লালের আভা মেখে আরো লাল হয়ে উঠেছিলো তারা। ফাগুনের এই দিনে সবাই কে আবারো জানায় বিজয় বসন্ত। বিজয় বায়ন্ন। বিজয় বাংলা।

সাথে সাথে আজকের দিনটি সবার জন্যে একে অপরের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের বিশেষ একটি দিন।ভালোবাসা হচ্ছে সৃষ্টির সেরাজীব মানুষের এক অমূল্য অনুভূতি। একের জন্য অপরের প্রীতি, প্রিয়জনের জন্য প্রেম, আপন মানুষের জন্য সহানুভূতি-এসব কিছুই ভালোবাসার আওতায় পড়ে। বয়োজ্যেষ্ঠের প্রতি শ্রদ্ধা আর কনিষ্ঠের প্রতি স্নেহ মূলত ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। সেই ভালোবাসা মনকে উদার, হৃদয়কে করে সংবেদনশীল ও মানবিক। অনুভূতিকে করে উন্নত থেকে উন্নতর। বাস্তবে এর বিপরীত চিত্রে অতি আবেগ, যৌবনের মোহ ও অনেক ক্ষেত্রেই উচ্ছৃঙ্খলতাই হচ্ছে দৃষ্টিগোচর। এর কারণ, ‘ভালোবাসা’কে অত্যন্ত সঙ্কীর্ণ ও হালকা অর্থে ব্যবহার করায় এর ভালো দিক হারিয়ে গেছে অনেকটাই।

অসময়ে নিঃশেষ হচ্ছে অসংখ্য মানুষের মেধা-প্রতিভা-সম্ভাবনা। এ অবস্থায় ব্যক্তির বিপর্যয়, পরিবারে অশান্তি, সমাজে উচ্ছৃ্ঙ্খলতা পরিণতি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ভালোবাসাকে বলা হয় মর্ত্যের জন্য স্বর্গের উপহার। সেই ভালোবসার মোড়কে ও ভোগবাদী পশ্চিমা জগতের প্রভাবে অনেক ক্ষেত্রে অনৈতিকতার সর্বনাশা খেলা চলছে। মূলত ভালোবাসা সর্ব ক্ষেত্রে প্লাটনিক লাভ না হলেও তা পাশবিক নয়, মানবিক প্রবৃত্তিই জাগায় বলে আমার বিশ্বাস।

ভালোবাসা মানব জীবনের সর্বত্র পরিব্যাপ্ত। এটা শুধু প্রেমিক-প্রেমিকা কিংবা স্বামী-স্ত্রীর বিষয় নয়। সন্তানের জন্য মা-বাবা, ভাইবোন পরষ্পরের জন্য, কিংবা পরিবরের একে অন্যের জন্য, বুন্ধু-বন্ধুর জন্য, এক কথায়- মানুষ তার প্রিয়জনের জন্য স্বতঃস্ফূর্তভাবেই ভালোবাসাবোধ করে থাকেন। তাই বলছি- ভালোবাসার অর্থকে নিজের মতো মূল্যায়ন না করে তার যথাযথ সুন্দর প্রয়োগ নিশ্চিত করা হোক, এই কামনায় সবাইকে ফাগুন দিবসে ভালোবাসার নিঃসৃত শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। ‘HAPPY VALENTINE’S DAY-2021’.

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ২:১০

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: ভালোবাসার অর্থকে নিজের মতো মূল্যায়ন না করে তার
যথাযথ সুন্দর প্রয়োগ নিশ্চিত করা হোক,

......................................................................................
হলুদ শাড়ীর হাতছানি আর হাত ধরে হাটাহাটি ছাড়া আর কিপাই
বা করার চেষ্টা করি ???

২| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ২:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: বসন্ত এসেছে কিন্তু বাজার স্বাভাবিক হয়নি ।

৩| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:১৫

ওমেরা বলেছেন: খুব ভালো লাগলো আপনার লিখা ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.