নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাকিম৩

হাকিম৩ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের রিজার্ভ হ্যাংকিং হওয়ার কিছু অজানা কথা

২৩ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১:৫৫


রিজার্ভ কেলেঙ্কারির প্রকৃত ঘটনা কী ছিল তা জানতে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের সাথে দীর্ঘ এক মাস ধরে যোগাযোগ করা হয়। যোগাযোগের একপর্যায়ে বেরিয়ে আসে অনেক অজানা কাহিনী। আর এই লেখাতে তার সামান্য কিছু অংশ তুলে ধরা হল । প্রথমে যে কথাটি না বললেই নয় সেটি হলো রিজার্ভ হ্যাকিং ঘটনা ছিল সম্পূর্ণ বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্টাল বিষয়। সেটি ছিল একটি টেকনিক্যাল দুর্ঘটনা। সেজন্য গভর্নরকে জড়িয়ে আক্রমণ করার পেছনে বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য কাজ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে । কারন ব্যাংকের গোটা কর্মকাণ্ডই আস্থার ওপর প্রতিষ্ঠিত। নিজের কষ্টার্জিত অর্থ নিজের ঘরে রাখতে মানুষ যতটা নিরাপদ মনে না করেন তার চেয়ে বেশি নিরাপদ মনে করেন ব্যাংকে রাখতে। বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনের অর্থ কিছুই তার চোখের সামনে নেই অথচ বিপুল অঙ্কের হিসাব নিকাশে গরমিল তা সুরাহার আশুব্যবস্থা নেওয়া । ফলের আশায় অপেক্ষা করা সবকিছু সংশ্লিষ্ট বিভাগের নিত্যদিনের একেকটি ঘটনা মাত্র। হিসাবের ফয়সালা হয়ে গেলে আর ভাবতে হয় না। আর গরমিল দেখা দিলে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হয়। এমনটিই হয়েছিল রিজার্ভ হ্যাকিংয়ের সেই ঘটনার ক্ষেত্রেও। প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে নৈতিক দায়িত্বের বাইরে গভর্নরকে সরাসরি এই জন্য দায়ী করার মাধ্যমে শক্তিশালী একটি প্রতিষ্ঠানের ভিত্তিকেই নড়বড়ে করে দেওয়া হয়।
জানা যায় গত ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং ডিপার্টমেন্টের ব্যাংক অফিস অব দ্যা ডিলিং রুমের যুগ্ম পরিচালক মোঃ জোবায়ের বিন হুদা এবং অন্য কর্মকর্তারা যাবতীয় কাজ শেষ করে রাত ৮টা ৩ মিনিটে অফিস ত্যাগ করেন। গভীর রাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সুইফট সংযোগে সাইবার আক্রমণের ঘটনা ঘটে।

সুইফট লেনদেনের নিয়ম মোতাবেক পরবর্তী দিন অর্থাৎ ৫ই ফেব্রুয়ারি শুক্রবার আগের দিনের লেনদেনগুলোর অ্যাকনলেজমেন্ট বা কনফারমেশন সুইফট রুমের প্রিন্টারে প্রিন্ট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কর্মকর্তারা বারবার চেষ্টা করেও প্রিন্ট করতে পারেননি। তারপর তারা ম্যানুয়ালি প্রিন্ট করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলেন। ইতঃপূর্বে এই ধরনের টেকনিক্যাল সমস্যা হয়েছে বলে তারা এটাকেও আগের মতো সমস্যা বলেই মনে করেন। পরের দিন ৬ই ফেব্রুয়ারি শনিবার সকাল ৯টার দিকে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা অফিসে এসে আবার প্রিন্টের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন। সে সময় তারা লক্ষ করেন সুইফটের বিদ্যমান সফটওয়্যারটি চালু হচ্ছে না। ওইদিন দুপুরে বিকল্প পদ্ধতিতে সফটওয়্যারটি চালু করতে সক্ষম হন কর্মকর্তারা।

বিষয়টি প্রথমবারের মতো ৬ই ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্ট বিভাগের ডেস্ক অফিসাররা বিভাগীয় উপমহাব্যবস্থাপক এবং মহাব্যবস্থাপককে অবহিত করেন ও ম্যানুয়ালি বার্তাগুলো প্রিন্ট করেন। তখনই জানতে পারেন যে রিজার্ভ হ্যাক হয়েছে। হতে পারে প্রথম দিনই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ভালো করেছেন। কিন্তু সেটা ইচ্ছাকৃত বলে প্রতিষ্ঠানের কেউ মনে করেন না। সেই হিসেবে তাদের বিভাগীয় শাস্তিও দেওয়া যায়। তাই বলে ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত বলা যায় কি না সে নিয়েও বহু ভিন্নমত রয়েছে। তবে প্রশ্ন উঠে এর সাথে গভর্নরের সংযোগটি কোথায় ? প্রতিদিন শত শত কর্মকাণ্ড ঘটে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। সংশ্লিষ্ট বিভাগই সে সবের দায়িত্ব নেন। গভর্নর নীতিনির্ধারণে যুক্ত থাকেন। নিত্যদিনের কাজে তাকে যুক্ত করা যে মোটেও সমীচীন মনে করা হয় না।

৭ই ফেব্রুয়ারি সকালে প্রথমবারের মতো সংশ্লিষ্ট বিভাগের ডেপুটি গভর্নর বিষয়টি তৎকালীন গভর্নর ড. আতিউর রহমানকে অবহিত করেন। গভর্নর অবহিত হওয়ার পরপরই বাংলাদেশ ব্যাংকের উপদেষ্টাদের পরামর্শ নিয়ে ওইদিন থেকেই অর্থ পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি জড়িত পক্ষগুলোকে শনাক্ত করার এবং অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে তা দূর করার ব্যবস্থা নেন। কী হয়েছে তা বোঝার জন্য দুজন ডিজিএমের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়।

বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট বিএফআইইউ হলো সরকারি একটি প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ ব্যাংকের ভেতরে থাকলেও আইন বলেই এটি একটি গোয়েন্দা সংস্থা। এক দিকে টাকা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা অন্যদিকে যাতে কোনো অর্থ খোয়া না যায় তার প্রতিরক্ষাব্যবস্থার পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠান বিএফআইইউকে অবহিত করা এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়।

কিন্তু বিএফআইইউ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার মতোই গোপনে কাজ করে থাকেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই গোপনীয় সব তথ্য গভর্নরকেও তারা দেন না। প্রয়োজনীয় বিষয় সরকারকে তাদের সুবিধা মতো জানান। তাই তারা প্রথমেই ফিলিপাইনের সাথে কাজ শুরু করেন। তারা প্রটোকল অনুযায়ী ফিলিপাইনের অ্যান্টিমানিলন্ডারিং কাউন্সিলের সাথে কাজ শুরু করেন।এমন অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সামনে দুটো পথ ছিল একটি হলো ঘটনাটির বিস্তারিত জানার চেষ্টা করা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ স্বীকৃত উপায়ে গোপন রেখে টাকা উদ্ধারের প্রচেষ্টা চালানো দিত্বীয় পথটি হলো ঘটনাটিকে জানাজানি করে অপরাধীদের পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করা। বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতকে অস্থিতিশীল করে ফেলা। সংবেদনশীল আর্থিক খাত নিয়ে যতটা সম্ভব সতর্কতার সাথেই কাজ করতে হয়। সাবেক গভর্নর আন্তর্জাতিক এই নিয়ম মেনেই এগোচ্ছিলেন। ফিলিপাইনের গভর্নরের সাথে শুরুতেই যোগাযোগ করেন তিনি। তার পরামর্শেই গভর্নর প্রথম ধারায় কাজটিই করতে গিয়েছিলেন। যেটি করেছে ইউক্রেন। সম্প্রতি তাদের দেশ থেকে ১০ মিলিয়ন ডলার একই কায়দায় সুইফট কোড বেহাত হলে হ্যাক হয়েছে বলে জানান। কিন্তু সে দেশের সরকারের পক্ষ থেকে কোন ব্যাংক হতে হ্যাক হয়েছে তা জানাতে নিষেধ করা হয়েছে। আজো জানা যায়নি কোন ব্যাংক থেকে এ ঘটনা ঘটেছে। কারন তাতে আর্থিক খাতে বড় ধরনের আস্থার সঙ্কট সৃষ্টি হতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে এমনটি করা হয়েছে।

৮ই ফেব্রুয়ারি পুনরায় সুইফট সংযোগ চালুর পর হ্যাকারদের পাঠানো ৩৫টি পেমেন্ট অ্যাডভাইস সংশ্লিষ্ট মধ্যস্থতাকারী ব্যাংকগুলোকে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংককে বলা হয়। ৯ই ফেব্রুয়ারি ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্ক সুইফটের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো উত্তর দেয় এবং তাদের দিক থেকে কী করেছে তা জানায়। ওইদিনই সন্ধ্যাবেলায় তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে টেলিকনফারেন্সে বসে। দৃশ্যপট খানিকটা পরিষ্কার হতে শুরু করলে জানানো হয় যে তারা ৩০টি লেনদেন বন্ধ করলেও পাঁচটির পরিশোধ অ্যাডভাইস পাঠিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ই ফেব্রুয়ারিতে পাঠানো স্টপ পেমেন্ট সুইফট অ্যাডভাইস যে তারা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে পাঠিয়েছে তাও সেদিন তারা জানায়।

এফআরবির পক্ষ থেকে বাকি চারটি পেমেন্ট অ্যাডভাইস ফিলিপাইনে গিয়েছে জানার পর থেকেই সেই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়। ১১ই ফেব্রুয়ারি ফিলিপাইন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের টেলিফোন আলাপের আলোকে ওইদিনই তাকে ম্যানিলার রিজাল ব্যাংকে পাঠানো অর্থ ফ্রিজ করে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ করেন। ১২ই ফেব্রুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার প্যান এশিয়া ব্যাংকিং করপোরেশন তাদের পাওয়া পেমেন্ট অ্যাডভাইসটি বন্ধ করে বিশ মিলিয়ন ডলার ফেরতের ব্যবস্থা করেন। ১২ই ফেব্রুয়ারি ফিলিপাইনের অ্যান্টিমানিলন্ডারিং কাউন্সিলের প্রধান গভর্নরকে জানান যে তারা কাজ শুরু করে দিয়েছেন। ১৬ই ফেব্রুয়ারি গভর্নর ফিলিপাইনের গভর্নরকে পুনরায় আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধান শুরু করতে বলেন। তারপর থেকে দুই দেশের এফআইইউ একসাথে কাজ শুরু করেন।

জানা যায় ১৭ই ফেব্রুয়ারি ফিলিপাইনের এফআইইউর সদস্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বেশ কিছু তথ্য চান। আর সেগুলো অবশ্যয় স্থানীয় ফিলিপাইন রাষ্ট্রদূতের স্বাক্ষরসহ পাঠাতে বলেন। সে বার্তায় আরো জানানো হয় যে ফিলিপাইনের গভর্নর প্রত্যাশা করেছেন যে তাদের আদালতের নির্দেশ মোতাবেক আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হওয়ার আগে যেন সব তথ্য গোপন রাখা হয়। তার ফলে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলে বাংলাদেশ ব্যাংক সেই তথ্যগুলো জানাতে কিছুটা বিলম্বিত করে। আবার এটিও ধারণা করা হয় যে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রীর পেটে কথা থাকে না। অযথা একটা হইচই শুরু করে তিনি পুরো প্রক্রিয়া ভণ্ডুল করে দিতে পারেন বলেও একটা ভয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ছিল।

এরই মধ্যে ফিলিপাইনে অর্থ উদ্ধারের কাজ দ্রুত গতিতে এগোতে থাকে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পাঠানো টিম তাদের দলের সাথে নিয়মিত সমন্বয় করে কাজ করতে থাকেন। ফিলিপাইনে সংশ্লিষ্ট সব ব্যাংক হিসাব চিহ্নিত করা হয় এবং জব্দ করা হয়। সে দেশের সিনেট বিচার বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক একযোগে কাজ শুরু করেন। সব পর্যায়ে সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ গৃহীত হওয়ার ফলেই খোয়া যাওয়া অর্থ উদ্ধারের কাজটি গতি পায়। ১ই মার্চ ফিলিপাইনের আদালতে আনুষ্ঠানিক তদন্তের আদেশ হয়। ওইদিনই জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং সাইবার বিশেষজ্ঞদের সাথে গভর্নর ড. আতিউর রহমানের বৈঠক হয়। তারা সরকারের উচ্চপর্যায়ে সব তথ্য পৌঁছে দেন। ওইসময় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত মুক্তধারার বইমেলার উদ্বোধন উপলক্ষে নিউ ইয়র্কে গিয়েছিলেন। তার কয়েক দিন পর ৭ মার্চ গভর্নর অর্থমন্ত্রীকে টেলিফোনে পুরো বিষয়টি অবহিত করেন। একই সাথে আন্তর্জাতিক সাইবার বিশেষজ্ঞ তাকে ব্রিফ করেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের এসব কাজে অর্থমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন যা গণমাধ্যমে এসেছে। আইএমএফ প্রধান বিশ্বব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ফেডের ঊর্ধ্বতন মহলের সাথে সাবেক গভর্নরের ছিল বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। ফিলিপাইনের গভর্নরের সাথে তিনি এএফআইর পরিচালনা পর্ষদে সদস্য হিসেবে কাজ করতেন। সবাই সাবেক গভর্নরকে অর্থ উদ্ধারের সহযোগিতা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন। কিন্তু অজানা এক ষড়যন্ত্রের কারণে সে কাজটি তিনি সম্পন্ন করে যেতে পারেননি।

এই বহুদেশীয় সাইবার আক্রমণের বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের জন্য প্রথম। এই সময়ে বহুদেশীয় সাইবার আক্রমণের পাশাপাশি ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যাংকের কার্ড ক্লোনিংয়ের ঘটনাও ঘটে। তাই আর্থিক খাতের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক খানিকটা শঙ্কিত হয়ে পড়ে। আর যাতে এ ঘটনা না ঘটে সেজন্য প্রথমেই সুরক্ষাব্যবস্থা জোরদার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এমন জটিল সাইবার আক্রমণকে বাংলাদেশ ব্যাংক ফিলিপিনো গভর্নরের প্রত্যাশার আলোকে সতর্কতার সাথে মোকাবেলা করতে থাকে যাতে ওই দেশের অপরাধীরা পালাতে না পারে এবং দেশে আর্থিক খাতের ওপর জনগণ ও বিনিয়োগকারীদের আস্থায় যাতে চিড় না ধরে। বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তর্জাতিক সাইবার নিরাপত্তা প্রটোকল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতো এই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের ভয় ছিল বিষয়টি সত্যিকার পুনরুদ্ধার কার্যক্রম গ্রহণের আগেই জানাজানি হলে মিডিয়ায় তোলপাড় হবে জনমনে আশঙ্কার সঞ্চার হবে এবং ব্লেইমগেম শুরু হয়ে যাবে যা পরবর্তীকালে ঘটেছে। এতে করে মূল কাজও গতি হারিয়ে ফেলবে।

গভর্নরের প্রচেষ্টায় পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে যখন গতি আসে তখনই অর্থমন্ত্রীর বেফাস মন্তব্যে এবং স্বার্থান্বেষী মহলের অন্যায় চাপে সব এলোমেলো হয়ে যায়। বাংলাদেশ ব্যাংক একপর্যায়ে অর্থ উদ্ধারের পরিবর্তে মিডিয়াকর্মী এবং নানা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ফেস করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ম্যান্ডেট অনুযায়ী অর্থ মন্ত্রণালয়কে সব কিছু জানাতে বাধ্য না হলেও অর্থমন্ত্রীকে প্রথমে টেলিফোনে ও পরে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংককে অর্থমন্ত্রী নীরবে কাজ করতে দিলে হয়তো এত দিনে পাচার হওয়া অর্থের বেশির ভাগই ফেরত আনা সম্ভব হতো। কিন্তু এখন হয়েছে উল্টোটা। নানা কমিটির তৎপরতায় ফিলিপাইনের অপরাধীরা বরং গোপনে হাসছে। বাংলাদেশ নিজেকেই নিজে দোষী সাব্যস্ত করতে যে সময় ব্যয় করছে তার একটা অংশ বিদেশী অপরাধীর ওপর চাপ দিতে ব্যয় করলে হয়তো ভালো ফল পাওয়া যেত।

গভর্নর শুরুতে তথ্য গোপন রাখার ফলে ফিলিপাইনে রিজার্ভ হ্যাকিংয়ের সুবিধাভোগীরা দোষ স্বীকার করেছে এবং কিছু অর্থ এখনই বাংলাদেশকে ফেরত প্রদানের জন্য সে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দিয়েছে। শ্রীলঙ্কা থেকে ২০০ কোটি টাকা আগেই ফেরত এসেছে। ফেড রিজার্ভ এবং যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি ব্যাংকেরও গাফিলতিও এ ঘটনায় সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনি পরামর্শক ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি অর্থ ফেরত পাওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন। এসব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের অর্থ উদ্ধারে একযোগে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক আর বেসিক ব্যাংকের কারচুপি প্রথম থেকে প্রতিনিয়ত অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। অর্থ মন্ত্রণালয় আট হাজার কোটি টাকার এক পয়সাও আদায় করতে পারেনি। উল্টো অর্থমন্ত্রী বলেছেন এ আর তেমন কী টাকা?

ড. আতিউর রহমানের সাত বছরের দায়িত্বকালে রিজার্ভ ৬ বিলিয়ন ডলার থেকে ২৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। কৌশলী এবং অর্থনীতির চাহিদা অনুযায়ী মুদ্রানীতি দিয়ে মূল্যস্ফীতি সহনীয় অবস্থানে রেখেছেন। ব্যাপক হারে কৃষিঋণ দিয়ে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছেন। টাকা লেনদেনে দারুণ গতি এনেছিলেন। নিমিষেই এখন টাকা লেনদেন করা যায়। প্রধানমন্ত্রী একাধিকবার সাবেক গভর্নরের দক্ষতা ও সাহস এবং দেশপ্রেমের প্রশংসা করেছেন।

সূত্র অনলাই রিপোট।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জুলাই, ২০১৬ ভোর ৫:২৭

কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: অনেক তথ্য জানলুম
ধন্যবাদ।

২৩ শে জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১:৩৬

হাকিম৩ বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ ।

২| ২৯ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৮:৩৭

দইজ্জার তুআন বলেছেন: ভালো লাগা

২৯ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:০৪

হাকিম৩ বলেছেন: ধন্যবাদ ভালো থাকুন ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.