নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাকিম৩

হাকিম৩ › বিস্তারিত পোস্টঃ

এই ঈদুল আযাহে গরু সহ সকল গোশত খাওয়া ভালো মন্দ দুই দিক সতর্ক হউন

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:১৪


সাধারনত গোশত আমিষপ্রধান একটি খাবার,আমিষ ছাড়াও গোশততে আছে চর্বি এবং নানা রকমের ভিটামিন ও খনিজ লবণ। আমাদের মুসলিমদের বছরে দুটি ধর্মীয় প্রধান উৎসবের একটি ঈদুল ফিতর আর অন্যটি হচ্ছে ঈদুল আযাহা বা কোরবানির ঈদ। ঈদুল আযাহা অর্থাৎ কুরবানী ঈদের অন্যতম একটি ইবাদত হচ্ছে পশু কোরবানি করা। আর কোরবানির ঈদে গোশত খাওয়ার প্রবণতা অন্যান্য সময় থেকে অনেক বেশি বেড়ে যায়।সাধারণত কোরবানির পশু হিসেবে উট, গরু, মহিষ এবং খাসি নির্বাচন করা হয়।
গোশত কতটা স্বাস্থ্যকর এই নিয়ে নানা রকমের মতামত বা বিতর্ক রয়েছে। উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে রয়েছে নানা সমস্যা সেই সঙ্গে ওইসব দেশে হার্টের রোগীর সংখ্যাও অনেক বেশি। তাই তারা গরু, মহিষ বা খাসির গোশত অনেকটাই এড়িয়ে চলেন।
যদিও কখনো কখনো তারা খায় তাহলে লিন মিট বা চর্বিবিহীন অংশটাকে প্রাধান্য দেন বেশি। কিন্তু আমাদের মতো
দেশগুলোতে গোশত খাওয়া হয় উৎসবে অথবা কালেভদ্র। তাছাড়া ওবেসিটির মতো সমস্যা আমাদের দেশে এখনো প্রবল আকার ধারণ করেনি তাই মাঝেমধ্যে গোশত খাওয়া আমাদের জন্য ভালো বৈ মন্দ নয়।

এই পোস্টে গোশতের ভালো মন্দ দুই দিক তুলে ধরা হলঃ

১। গোশতের ভালো দিকঃ
আমিষের অন্যতম উৎস গোশত আর বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতি ১০০ গ্রাম গরু, মহিষ বা খাসির গোশত থেকে প্রায় ২০ থেকে ২৫ গ্রাম আমিষ পাওয়া যায়। গোশতের আমিষের গুণগত মান অন্যান্য উদ্ভিজ আমিষের তুলনায় অনেক উন্নত। বিশেষজ্ঞদের পরীক্ষা মতে গোশতের আমিষে আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সব অ্যামিনো এসিড আছে। শিশুদের আমিষের অভাবজনিত পুষ্টিহীনতা রোধে খিচুড়িতে গোশত যুক্ত করা যেতে পারে। তাছাড়াও যাদের ওজন কম তারাও ইচ্ছে করলে সপ্তাহে কয়েক দিন গোশত খেতে পারেন।

গোশতে আয়রনের প্রধান উৎসঃ
আয়রন আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত দরকারি একটি খনিজ লবণ। আমাদের দেশের অধিকাংশ নারীরা এই আয়রনের অভাবজনিত রক্তস্বল্পতায় ভোগেন। অথচ গরু,মহিষ,খাসির গোশত আয়রনের একটি উৎকৃষ্ট উৎস। আর গোশতের সে আয়রনকে হিম আয়রন বলে যা উদ্ভিজ নন হিম আয়রনের তুলনায় গুণগতভাবে অনেক উন্নত। প্রতি ১০০ গ্রাম গোশত প্রতিদিনের আয়রনের চাহিদার ২৫ শতাংশ মেটাতে সক্ষম। অন্যান্য ভিটামিন এবং খনিজ লবনের উৎস গোশত ভিটামিন বি-৬, নায়াসিন,ভিটামিন বি-১২, ফসফরাস এবং জিংকের অত্যন্ত ভালো উৎস। প্রতি ১০০ গ্রাম গোশতে এসব ভিটামিন এবং খনিজ লবণের প্রতিদিনকার চাহিদার ২৫ শতাংশ
মেটাতে সক্ষম। তাছাড়াও রিবোফ্লাভিন, প্যান্টোথেনিক এসিড ও সেলেনিয়ামের চাহিদা মেটায় ১০ শতাংশেরও বেশি। খাসির গোশতে এসব ভিটামিন এবং খনিজ লবণের পরিমাণ অন্যান্য গোশতের চেয়ে বেশি আছে।গোশতের ক্যালরি প্রতি ১০০ গ্রাম গোশত থেকে রকমভেদে ৪৯৮ থেকে ৫১৪ কিলোক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। তাই শক্তির জন্য গোশত খাওয়া যায় সপ্তাহে এক বা দুই দিন।

গোশতের বিভিন্ন অঙ্গের পুষ্টিগুনঃ
গরু, মহিষ অথবা খাসির বিভিন্ন অঙ্গের আছে নানা রকমের পুষ্টিগুণ।লিভার, হার্ট, কিডনি এবং মগজ নানা রকমের ভিটামিন ও খনিজ লবণে বেশ সমৃদ্ধ। সব রকমের গবাদি পশুর মাংসে ভিটামিন বি-১২ আছে প্রচুর পরিমাণে। প্রতি ১০০ গ্রাম অর্গান মিট প্রতিদিনকার ভিটামিন বি-১২-এর চাহিদার ১০০ শতাংশ পূরণ করতে সক্ষম।লিভার আমিষ, আয়রন, ফলিক এসিড, জিংক, রিবোফ্লাভিন, নায়াসিন এবং ভিটামিন-এ-এর উত্তম উৎস।কিডনি আমিষ, আয়রন থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন এবং ফলিক এসিডের ভালো উৎস।হার্ট থেকে পাওয়া যায় আয়রন এবং জিংক তবে তা লিভার ও কিডনির তুলনায় কম।সব অর্গান মিটে প্রচুর পরিমাণে কোলেস্টেরল আছে বিশেষত মগজে কোলেস্টেরলের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি।

গোশতের মন্দ দিকগুলোঃ
চর্বির আধিক্যঃ
যদিও কিছু পরিমান চর্বি সুস্বাস্থ্যের জন্য দরকার তবে গোশতের চর্বির মাত্রা বেশি হলে তা শরীরের জন্য খুব একটা স্বাস্থ্যকর নয়।
তাই গোশত কাটা এবং খাওয়ার ক্ষেত্রে দৃশ্যমান চর্বি ফেলে দেয়া এবং না খাওয়াই ভালো। কেননা অতিরিক্ত চর্বি হার্টের অসুখসহ নানা রকম শারীরিক অসুবিধার কারন হতে পারে। খাসির গোশতে চর্বির পরিমাণ অন্যান্য গোশতের তুলনায় বেশি তাই যাদের হার্টের সমস্যা বা ওজন বেশি তাদের খাসির গোশত পরিহার করা উচিত।

কোলেস্টেরলের উপস্থিতিঃ
গোশতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কোলেস্টেরল থাকে যার অতিরিক্ত গ্রহণ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। বিশেষত গবাদি পশুর মাংসে কোলেস্টেরল থাকে বেশি। মগজ এবং খাসির মাংসে কোলেস্টেরলের পরিমাণ অত্যধিক। তাই পারতপক্ষে সেগুলো না খাওয়াই ভালো।
সতর্কতা পেট ফাঁপা এবং কিডনিতে পাথর হলে গোশত একেবারে বাদ দিতে হবে। বাত হলে মগজ, গুর্দা, কলিজা এবং সংরক্ষণ করা গোশত নিষেধ। তবে তাজা গোশত পরিমিত খেলে ক্ষতি নেই। কিডনির অসুখ এবং হার্টের অসুখে গোশত যত কম খাওয়া যায় তত মঙ্গল বা ভালো। লিভার, গলব্লাডার এবং প্যানক্রিয়াসের অসুখে প্রাণিজ চর্বি বাদ দেয়া উচিত। আর যাদের ওজন বেশি তাদের গোশত খাওয়া থেকে বিরত থাকা জরুরী। প্রতিদিন ৯০ থেকে ১০০ গ্রামের বেশি প্রাণিজ আমিষ না খাওয়াই ভালো। মাংসের নতুন বিপদ কোরবানির ঈদ সামনে রেখে গবাদিপশু বিশেষ করে গরু মোটাতাজা করার প্রচলন বহু দিন থেকেই চলে আসছে আমাদের দেশ সহ বিশ্বের অনেক দেশগুলোতেই। কিন্তু কয়েক বছর ধরে প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটাতাজা করার পরিবর্তে স্টেরয়েড এবং হরমোন প্রয়োগ করা হচ্ছে। তার সঙ্গে প্রয়োগ করা হচ্ছে বিভিন্ন অ্যান্টিহিস্টামিন এবং ভিটামিনের উচ্চ মাত্রা। তাতে গরু দ্রুত মোটাতাজা হচ্ছে ঠিকই কিন্তু মানুষের জন্য তৈরি করেছে নতুন বিপদ।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতে বিভিন্ন জটিলতা

রোগে যখন অন্যান্য ওষুধ প্রয়োগে ফল পাওয়া যায় না শুধু সে ক্ষেত্রেই স্টেরয়েড দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। কোনো অবস্থাতেই সুস্থ মানুষের শরীরে তা প্রয়োগ করার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু গরুর মতো গবাদিপশুর শরীরে ডেক্সামেথাসন, হাইড্রোকর্টিসনের মতো স্টেরয়েড প্রয়োগ করলে তা মাংসের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে এবং স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের অসুখ, ব্রেনস্ট্রোক, অ্যাথেরোস্ক্লোরোসিস, ও লিভার এবং কিডনির অসুখ তৈরি করতে পারে। মাংস খাওয়ার মাধ্যমে অল্প বয়সী শিশুরাও এই ধরনের অসুখের ঝুঁকিতে পড়েবে। কারন স্টেরয়েড রান্নার তাপে নষ্ট হয় না। তাছাড়া গরুর শরীরে প্রয়োগ করা বিভিন্ন হরমোন মানবদেহে বিভিন্ন অসামঞ্জস্যতা তৈরি করতে পারে। এমনিতেই গরু, খাসির মাংসে যথেষ্ট ক্ষতিকর দিক রয়েছে তাই নতুনক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে মোটাতাজা গরুর মাংস এড়িয়ে চলাই সবচেয়ে ভালো উপায়।

তথ্যসূত্রঃ বিভিন্ন ওয়েব সাইট ইন্টারনেট ।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৫৮

মামুন ইসলাম বলেছেন: চমৎকার সতর্কমূলক পোস্ট ।

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:০০

হাকিম৩ বলেছেন: ধন্যবাদ মামুন ভাই শুভ রাত্রী ।

২| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৫:২৪

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ হাকিম ভাই সুন্দর তথ্যগুলো শেয়ার করার জন্য ।

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:০৫

হাকিম৩ বলেছেন: ধন্যবাদ ব্লগ সার্চম্যান ভাই ।

৩| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:৪০

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: খুবই সুন্দর এবং সময় উপযোগী একটা পোস্ট। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ।

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:০৭

হাকিম৩ বলেছেন: আপনাকে মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ ঠ্যঠা মফিজ ভাই ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.