নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমরা বাঙালী না বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী - সে প্রশ্নে অনেকের দ্বিমত থাকলেও বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মধ্যে বসবাসরত সকল নাগরিকের জানমালের নিরাপত্তা রাষ্ট্রের কাছ থেকে পাবার অধিকার রয়েছে। আশাকরি, এ প্রশ্নে কেউ দ্বিমত করার অবকাশ নেই বলেই বিশ্বাস করি। তবে নানা সীমাবদ্ধতার কারণে হয়ত অনেক সময় সরকারি কর্মকর্তাদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন। সেটা বাংলাদেশের মতো দেশে অধিকাংশ নাগরিকই বাস্তবিকতা অথবা নিয়তি বলেই মেনে নেয়। তবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যদি সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে গিয়ে যদি নিজেরাই একটি পক্ষের হয়ে বেআইনী কাজ করে কিংবা উচ্ছেদ অভিযান সফল করতে গিয়ে দরিদ্র মানুষের বসত বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় তখন অসহায় মানুষজন কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? এ প্রশ্ন গত দু'দিন ধরে বারবার ঘুরেফিরে আমার মনের মধ্যে আসছে। কিন্তু কোন জবাব পাচ্ছি না।
কথা বলছি, গাইবান্ধার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাঁওতালপল্লির উচ্ছেদ অভিযানের বিষয়ে। সম্প্রতি দেশের বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিকের চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী খবর হলো, গত ৬ নভেম্বর গাইবান্ধার মাদারপুর ও জয়পুর গ্রামে কথিত রক্তক্ষয়ী উচ্ছেদ অভিযানে সহায়তা করতে গিয়ে স্বয়ং পুলিশ সদস্যরাই না-কি সাঁওতালদের বসত বাড়িতে ভাংচুর, এমনকি অগ্নিসংযোগে অংশ নেন। এমন অভিযোগের প্রমাণ হিসেবে এ বিষয়ক ভিডিও চিত্র দেখিয়েছেন সাঁওতাল নেতারা। তাই বিষয়টি মোটেই হালকা করে দেখার অবকাশ নেই। মিথ্যা অভিযোগ বলে উড়িয়ে দেওয়ারও সুযোগ নেই। কর্তৃপক্ষকে তাই অবশ্যই এই অভিযোগের ব্যাপারে সুষ্ঠু তদন্ত করে রক্ষক হয়ে ভক্ষকের মতো আচরণকারী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহবান জানাচ্ছি। একইসাথে বন্ধ হয়ে যাওয়া চিনিকলের বিপুল জায়গা নিয়ে স্থানীয় সুবিদাভোগী কতিপয় লোকের চালবাজি বন্ধ করতে ঐ সকল ভূমি অধিগ্রহণের আগের মালিকদের মধ্যে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি। নতুবা ৬ নভেম্বরের মতো আরও গুরুতর সংঘাত-প্রাণহানির আশংকা সেখানে থেকেই যাবে। কারণ নিরীহ মানুষের পীঠ যখন দেওয়ালে ঠেকে যায়, মৃতু্ ভয় তখন তুচ্ছ হয়ে যায়। বেঁচে থাকার সংগ্রামই তাদের কাছে মুখ্য হয়ে উঠে।
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী অসহায় সাঁওতালদের প্রতি মানবিক আচরণ এবং সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের জন্য সরকারের প্রতি আবেদন জানাচ্ছি।-লেখক : সাংবাদিক
©somewhere in net ltd.