নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাদাসিদে কথা কাজের ফাঁকে কিছু করা,ব্যস্ততার মাঝে যাকিছু ভাবি তাই লিখি।

HannanMag

শিক্ষাজীবন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। সমাজতত্ত্ব বিভাগে। অনেকপরে আবার একই বিশ্ববিদ্যালয় হতে এম,বি,এ,করি। ১৯৯৬ সালের শেষের দিকে কর্মজীবনের শুরু। উন্নয়ন সংস্হায় প্রথম কাজ করি। এই সময় দেশের বিভিন্ন স্হানে ঘুরাঘুরির সুযোগ হয়। দেশের মানুষ ও প্রকৃতির রঙ, আর বিচিত্র পেশার মানুষে সাথে দেখা হয়। অতঃপর পোশাক শিল্পে কাজ করি। ২০০০-২০০৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে কর্মরত ছিলাম। ২০০৪ সালে আবার ফেরৎ আসি আমার প্রাণের কর্মক্ষেত্র পোশাক শিল্পে। সেই থেকে আজ অবদি কাজ করছি এখানে। বিচিত্র অভিজ্ঞতা, নানান দেশে ভ্রমণ করি। কাজের ফাঁকে পড়ি। মন চাইলে লিখি। ভাষার দক্ষতা তেমন নেই। চেষ্টা করছি ভাষা আয়ত্ত্ব করতে। কিছু বিচিত্র বিষয়ে লেখার ইচ্ছে আছে। লেখার কাজে হাত দিয়েছি। দেশে দেশে পোশাকের বিবর্তন নিয়ে লিখছি। এই নিয়ে পড়াশোনা করতে ভালই লাগে। যাপিত জীবনের কথা, ক্লেদ, প্রেম অভিজ্ঞতা লেখব ভাবছি।

HannanMag › বিস্তারিত পোস্টঃ

গর্দভের গল্প ১ এবং ২

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৮

গর্দভের গল্প ১
------------
চৈনিক ভ্রমণকারী দেশ –বিদেশে ভ্রমণ করেই তার দিন যাচ্ছে। একদিন ভ্রমণ করতে করতে পৌছে যায় আরব দেশে। সেখানে তপ্ত আরবের মরুভূমিতে পথ চলা দায়। অনেক কষ্ট, বালিরাশি বেজায় গরম। মাথার উপর উনুনের মত জ্বলছে সূর্যরশ্মি। পথচলা দায়। বালিরাশি উপর পা যায় না। অনেক চিন্তাকরে সে একটি গাধা ভাড়া করে। গাধার মালিক এই বলে ভাড়া দিল সে নিজেও যাবে গাধার সাথে। চুক্তি মোতাবেক ভাড়া পরিশোধ করা হল। গাধার উপর সওয়ার হয়ে চৈনিক একটূ আরাম পেল। পথ চলছে। সামনে এগুচ্ছে। দিনের প্রহর বাড়তে থাকে। ভরদুপুরে গাধার মালিক ও ভ্রমণকারি আলোচনা করে ঠিক করল তারা একটু ঝিরিয়ে নেমে। গাধার উপর থেকে চৈনিক নেমে এল। কোথায় ঝিরাবে। আশপাশে কোন গাছপালা নেই। ঝোপঝাড় নেই। দেখল গাধার একটু ছায়া তৈরি হয়েছে। এই ছায়ায় দাঁড়িয়ে আরাম করতে পারবে। অল্প জায়গা। কে দাঁড়াবে গাধার ছায়ায়। মালিক দাঁড়াল। কিন্তু ভ্রমণকারি চৈনিকের কথা হল, সে গাধা ভাড়া নিয়েছে সে দাঁড়াবে। মালিকের কথা পরিষ্কার, আমি গাধা ভাড়া দিয়েছি, গাধার ছায়া ভাড়া দেই নাই। এই নিয়ে বিরোধ। গন্ডগোল। হৈচৈ চলছে। তুমুল তর্ক বিতর্ক। হাতাহাতি,মারামারি হওয়ার উপক্রম প্রায়।
ঝগড়া বিবাদের এক পর্যায়ে একজন গাধাকে কিল ঘুষি দিতে আরম্ভ করে। মারের কারনে গাধা দেয় ভোঁ দৌড়। সেই সাথে তার ছায়াও নিয়ে যায়। কিন্তু দুইজনের ঝগড়া রেখে যায়।
আমাদের জীবনে আমরা অনেকেই ছায়ার সাথে যুদ্ধ করি। আসল জিনিস হারিয়ে যায় যুদ্ধের দামামায়। আমাদের দেশে রাজনীতিতে চলছে ছায়ার সাথে যুদ্ধ । আসল কাজের খবর নেই। দুই দলেরই ভাবখানা এমন দেশটা তাদের নিজ নিজ দলের। জনগণ সব তাদের পক্ষে আছে।কেউ ক্ষমতার মালিক আর কেউ তার ছায়া নিয়ে টানাটানি করছে। আসলে সবাই নিজের স্বার্থের কথা ভাবছে। বেচারা জনগণ!!!

গর্দভের গল্প ২
----------------
বন্য প্রাণীরা অনেক সময় ভাল কাজ করে। তাদের ভাল কাজের নমুনা মানুষ কে অনুপ্রানিত করে। তাদের কাজ পর্যবেক্ষণ করে মানুষ তাদের মঙ্গলের জন্য সিদ্ধান্ত নিতে পারে। অনেক প্রাণী আছে যারা সমাজবদ্ধ জীবন করে। এতে মানুষের অনেক কিছু জানার আছে। যেমন কাক দলবদ্ধভাবে বসবাস করতে ভালবাসে। একটা আহত হলে অনেক কাক সেখানে জড়ো হয়। কা কা করে নিজেদের ঐক্য জানান দেয়। একটা মানুষ রাস্তায় অর্ধমৃত হয়ে পড়ে থাকলেও কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে না। পাশ কাটিয়ে চলে যায়। আবার অনেক প্রাণীর কাজ মানুষ অনুসরণ করে জীবনের আদর্শ হিসাবে। আজকে এখানে এমনি একটি গল্পের প্লট তোলে ধরা হবে। একদিন বনের রাজা সমবেত হয়ে জানান দিল, আমাদের খাদ্য সংকট হচ্ছে তবে এই সংকট মোকাবেলা করার জন্য আমরা ঐক্য গড়ে তোলতে পারি। সিংহের সাথে ভয়ে কেউ যুক্তি তোলে ধরতে চাচ্ছে না। শেষে নিজের জীবনটা হারাতে হবে এই ভয়ে। আবার কেউ বিরোধীতাও করতে চাচ্ছে না। সবাই নীরব। অবশেষে চালাক শিয়াল এগিয়ে এল। নিজে চুক্তি ঐক্যের জন্য রাজি আছে। শিয়ালের দেখাদেখি বেচারা গাধা নিজেকে স্হির রাখতে পারেনি। নিজের সাথে নিজেকে প্রবোদ দিল আমি কেন পারব না? আমিও রাজি। চেঁচিয়ে জানান দিল আমিও রাজি।
কথামত তিন পশুর এক চুক্তি হল। সিংহ, শিয়াল আর গাধা। চুক্তি মোতাবেক;
এক) খাবারের জন্য তারা একে অপরকে সাহায্য করবে। দুই) শিকার ধরার জন্য একে অপরকে সাহায্য করবে। তিন) সারাদিন যে যা পাবে তা একসাথে করে ভাগ করে নিবে।
অত্যন্ত সরল চুক্তি। সবাই এই চুক্তি মেনে নেবার জন্য অঙ্গিকারবদ্ধ। কোন ঝামেলা হলে আলোচন করে মীমাংসা করবে। যাক চুক্তি বাস্তবায়নের অঙ্গিকার করে যে যারা আবাসস্হলে চলে এল। দুইদিন পর...
সিংহ একটা শিকার পায়। সে প্রায় পুরোটা নিজের ভাগে রেখে দেয়। জংগলের বাইরে এসে শিয়াল কে পায়, একটু পর গাধা আসে। সিংহ বলে ধর আমি যা পেয়েছি তোমাদের মধ্য দিলাম। দায়িত্ব নিয়ে তোমাদের যা অর্জন, শিকার, সঞ্চয় আছে একসাথে কর। যেই কথা সেই কাজ। সবাই যার যার সঞ্চয় এনে একসাথে জড়ো করে। সিংহ গাধাকে ডেকে বলে ভাগ করে দাও। গাধার সরল মন। নিজে চুক্তি করেছে, অঙ্গিকার করেছে, সবাই কে সমান ভাগ দিবে। অত্যন্ত গণতান্ত্রিক। সে সব খাবার একসাথে ভালভাবে মিশিয়ে নেয়। সমান তিনটি ভাগ করে। নিজে প্রস্তাব দেয় আপনারা প্রছন্দ করুন, কে কোনটা নিবেন। সিংহ এই সমান ভাগ দেখে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে। রাগে চিৎকার চেঁচামেচি করে।পারলে গাধা গোগ্রাসে গিলে খেয়ে ফেলবে এমনি অবস্হা। বেগতিক পরিস্হিতি সামাল দিতে শিয়াল অনেক চেষ্টা করে। অনেকক্ষণ পর সিংহ শান্ত হয় কিন্তু চোখের তারায় তখনও আগুন জ্বলছে। গাধার কি অপরাধ! সে কিছু বুঝে উঠার আগেই এই পরিস্হিতি। সে নিজেকে বাঁচাতে তার আত্মপক্ষ সমর্থন করার মত কিছু বলতে পারছে না। যাক শেষে শিয়াল দায়িত্ব নেয়। খাবার নিজেদের জন্য ভাগাভাগি করতে।
শিয়াল প্রথমেই সব খাবার একসাথে করে। তারপর নিজদের জন্য সামান্য একটু খাবার রেখে দিয়ে বাকি সব খাবার সিংহের জন্য দিয়ে অত্যন্ত পুলকিত কন্ঠে সিংহকে ডাক দেয়। গলার আওয়াজ অত্যন্ত মায়াবি। আদরের ডাক শোনে সিংহ তাকায়। তার চোখে মুখে হাসির রেশ লেগে আছে। কিরে এত সুন্দর করে কিভাবে সাজালে। আগে এত এলমেলো ছিল। এখনতো দেখি অনেক সুন্দর করে সাজানো। দেখতেই সিংহের খাবার মনে হচ্ছে। এইভাগে ভাগ করার কৌশল কোথায় শিখেছিস? তুইত অনেক প্রজ্ঞাবান। জ্ঞানী প্রাণী বনে তোর মত চালাক চতুর বুদ্ধিবান প্রাণী থাকতে গাধারা কিভাবে এখানে আসে। এদের জন্য আলাদা জায়গা করে দেয়। বনে গাধাদের জন্য কোন জায়গা নেই। ইত্যাদি প্রশংসা শোনে শিয়াল মনে মনে ভাবে দরকার হলে এক সপ্তাহ না খেয়ে থাকবে, তবু নিজের জান বাঁচাতে সব খাবার সিংহ কে দিয়ে দিবে।
হঠাৎ আবার প্রশ্ন কিরে তুই কি করে এই সুন্দর ভাগ করলি,জিজ্ঞাসা করলাম উত্তর দিলে না?
মামা গাধার পরিস্হিতি দেখে নিজেই অনুমান করে নিয়েছি আমাকে কি করতে হবে? আমি পরিস্হিতি দেখে, পরিবেশ থেকে জ্ঞান অর্জন করি। উত্তরে সিংহ শুধু হুম! করে মাথা নাড়িয়ে স্বীকার করে নিল, পরিবেশ থেকেই শিখতে হয়।
এখন ভাবুন আমাদের দেশের রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ি আর জনগনের ঐক্যের কথা। আমাদের দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি,ব্যবসা, বানিজ্য সবকিছুর মাঝে এই রকম ঐক্য চালু আছে। দেশে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম কতটুকু কার্যকরি হবে, তা নিয়ে সংশয় আছে। আমাদের দেশে চালু আছে বনের সিংহের সাথে অন্য প্রাণীদের বেঁচে থাকার চুক্তি। এখানে সিংহ সবকিছুর উপরে। আইন, সংসদ, সমাজ, রাষ্ট্র সবকিছুই পদানত করা যায়। সাধারণ মানুষ যারা সমান অংশীদারিত্ব, আইন কানুন, রাষ্ট্রের চুক্তি মেনে চলে তাদের জীবনটাই গাধার মত হয়ে যায়। বেঁচে থাকা দায়!!! এইটাই সত্যি।আমাদের দেশে গণতন্ত্র মানে নেতার ইচ্ছা। আমাদের দেশে গণতন্ত্র মানে দেশের সব ক্ষমতা আমার। আমিই সব!! আমার দেশ, আমার মানুষ, আমার ব্যাংক, আমার ব্যবসা, আমার নদী,খাল বিল, আমার সোনার বাংলা। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে চিনিয়ে আনা স্বাধীনতা সবই এখন আমিত্বের কবলে। গাধারা শুধু গণতন্ত্র ! আর গণতন্ত্র বলে চেঁচায়।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৭

শামচুল হক বলেছেন: চমৎকার গল্প।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.