নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অসমাপ্ত অধ্যায়

জন্ম নিয়েছিলাম আমার মায়ের মত একজন মানুষের গর্ভে,সেই সূত্রে হয়তোবা আমিও মানুষ। কিন্তু আমার অবুঝতা কাটবার পর থেকেই চেষ্টা করে যাচ্ছি নিজ থেকে মানুষ হবার। সাধারণ আমি আর এই সাধারনের মাঝেই খুঁজে বের করার চেস্টা করি অসাধারন কিছু। সোজা সাপ্টা কথা বলতে পছন্দ করি। আমি প্রচন্ড বাস্তববাদী একজন পাবলিক। আবেগের ধার খুব কমই ধারি।

অসমাপ্ত অধ্যায় › বিস্তারিত পোস্টঃ

শোকের দিন ! নাকি লজ্জা ঢাকার দিন !!

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৩২

আজকের দিনে ইংরেজী, হিন্দী সহ বাংলা ব্যতীত সকল ভাষা হারাম। টিভির পর্দায়, ফেবুর পর্দায় আর কিছুক্ষন পরেই জাতি লজ্জায় লাল হয়ে উঠবে কিছু সংখ্যক মানুষের ফেব্রুয়ারিতে কি হয়েছিলো সেই ইতিহাস না জানার লজ্জায়। ইতিহাস না জানা সংখ্যাটা খুব বেশি না যদিও, ৩-৪% হবে। সেই ৩-৪% লোকসংখ্যা নিয়েই এফবিতে ছি ছি রব উঠবে।

আমার আগ্রহ এই ৩-৪% মানুষদের নিয়ে না। আমার আগ্রহ বাকি যেই শতাংশের মানুষ বাকি থাকবে তাদের নিয়ে। ধরলাম সংখ্যাটা ৯৫% এর কাছাকাছি। ছি ছি রব তুলতে তুলতে মাইরি গর্বে তাদের বুকটা ফেটে যাবে।

সেই ৯৫% মানুষের সামনে যদি বলা হয় যে বলেন তো, বাংলা মাসের কতো তারিখে, বাংলা কোন সালে রফিক, জব্বাররা শহীদ হয়েছিলেন?? লিখে দিতে পারি, ৯০% মানুষ তখন হা করে তাকিয়ে থাকবে। ইতিহাস তো খুব জানি আমরা, কিন্তু এই ছোট্ট একটা তারিখই আমাদের অধিকাংশ জানেন না। অথচ এই আমরাই আরেকজনের ইতিহাস না জানা নিয়ে ছি ছি লজ্জায় মেতে উঠি, বাংলা ভাষার প্রতি দয়া মায়া মমতায় নিজেদের বিলিয়ে দেই, বাংলা ব্যতীত অন্য সকল ভাষা হারাম করে দেই।

আর আমরাও যে খুব বেশী ইতিহাস জানি তা কিন্তু না। টিভির পর্দায় যিনি ইংরেজি মাধ্যমে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন করেন যে ভাষা আন্দোলনে শহীদদের নাম বলতে, তখন হয়তো অনেকেই তা পারবে না। ঠিক একই প্রশ্ন যদি আমি প্রশ্নকর্তাকে জিজ্ঞাসা করি আমার মনে হয় না উনি সালাম, রফিক,জব্বার, শফিউর, বরকতের বাইরে আর কোনো নাম বলতে পারবে।

হ্যা, আরেকটা শব্দ বলতে পারবে "নাম না জানা অনেকে"। এই "নাম না জানা অনেকে" ঘটনাটা সত্য, অনেকেরই নাম জানা যায় নি, তবে আরেকজনের নাম জানা গিয়েছিলো, কিন্তু সেই নাম আর আমাদের জানা হয়নি। ভাষাশহীদদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ শহীদের নাম অহিউল্লাহ। পিতার নাম হাবিবুর রহমান, পেশায় রাজমিস্ত্রি। অহিউল্লাহ যদিও ২১শে ফেব্রুয়ারিতে বা ৮ই ফাল্গুনে মারা যাননি। ২২ ফেব্রুয়ারি নওয়াবপুর রোডের মিছিলে গুলিবিদ্ধ হয়ে পরবর্তীতে মারা যান। কিন্তু তার বিক্ষোভের উদ্দেশ্য একই ছিলো। "রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই"

তার লাশের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এই অহিউল্লাহর লাশের মতো তার নামও বাংলায় আর খুজে পাওয়া যায়নি। অথচ আমরা এক একজন ইতিহাসবেত্তা সেজে বসে আছি !

আর জাতি হিসেবে যে আমরা বদ্ধ পাগল আর উন্মাদ তার অনন্য নজির ২১ ফ্রেব্রয়ারী তে দেখা যায়। টিভি খুললে মনে হয় পুরো জাতি শোকে পাথর, অথচ রাস্তায় দেখি অন্য জিনিস। ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে জাতি ২১শে ফেব্রুয়ারি "উদযাপন" করছে। শহীদ মিনারে ফুল দেয়ার পরক্ষনেই টিএসসি আর বইমেলায় জম্পেশ একটা আড্ডা কিন্তু ঠিকই হয়ে যাবে। এটা আপনি মানেন আর না মানেন, এটা সত্য, এটা বাস্তব।

জাতি হিসেবে আমরা অনেক কিউট। শহীদ পরিবারের মুখে ভাত নাই, থাকার জায়গা নাই আর আমরা ফুল নিয়ে দৌড়াই, কে কতো ইতিহাস জানে তার প্রতিযোগীতায় লাগি। আর আজকের দিনটাকে "আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস" এর পাশাপাশি "শহীদ মিনার পরিচ্ছন্ন" দিবস বললেও খারাপ বলা হবে না। বছরের ৩৬৪টা দিন জুতা দিয়া পাড়াই, এই একদিন আসলেই ফুল দিয়ে সাজিয়ে দেই। কাল আবার এই ফুল গুলোই পায়ের নিচে পিষ্ট হবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.