নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

...শ্রাবণের বৃষ্টিতে ভিজে যায় অপেক্ষা, ভিজে যায় অভিমান...তুমি ভালো থেকো ভালোবাসা...

হয়ত তোমারই জন্য

Mobile Software Engineer

হয়ত তোমারই জন্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অংশগ্রহণকারী বিদেশী ব্যক্তিত্ব ৷

০১ লা জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:২৫


বলতে খুব অবাক লাগে স্বাধীনতার জন্য বিদেশীরা জীবন দিল ৷আর আমাদের দেশের জনসাধারণের বেশ বড় একটি অংশ স্বাধীনতা বিরোধী, রাজাকার, আলবদরের সমর্থক।* এই দেশে বুকের রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনে দেয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে সাময়িক বিনোদন দেয়া ক্রিকেটারদের সাথে তুলনা করা হয়।যেমন বীরশ্রেষ্ঠ উপাধী ৷
* এই দেশের জনসাধারণের বড় একটি অংশ মাত্র ৯ মাসের ভেতর সংগঠিত ত্রিশ লক্ষ গণহত্যা এবং তিন লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমহানির ইতিহাস ভুলে যেতে চায়।

* এই দেশে প্রকাশ্যে লাইভ টিভি শোতে স্বাধীনতা বিরোধীদের পক্ষে সাফাই গেয়ে, নিরাপদে বাসায় পৌছে ফেবুতে স্ট্যাটাস দেয়া যায়, "দেশে বাকস্বাধীনতা নাই"।
* এই দেশে মানুষ হত্যাকারী, নাশকতাকারী জঙ্গী মরলে সিম্প্যাথী পায়, অথচ জনগনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গিয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ মারা গেলে মানুষ তাদের নামটা ও জানতে চায় না।
*এই দেশে প্রকাশ্যে মুক্তিযোদ্ধ এবং মুক্তিযুধ্ব কে কটাক্ষ৴ উপহাস করাহয় ৷
দেশের কথা অনেক হল আসুন যেনে নেয়া যাক মহান মুক্তিযুদ্ধে কিছু বিদেশী বন্ধুদের ভুমিকা:-
লে. জেনারেল (অব.) জে এফ আর জ্যাকব***
==================================
আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রাখা বিদেশী বন্ধুদের মধ্যে ভারতের লে. জেনারেল (অব.) জে এফ আর জ্যাকব হচ্ছেন বাংলাদেশের অনেক বড় একজন বন্ধু। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার অসামান্য অবদানের জন্যে আমাদের বিজয় হয়েছিল তরান্বিত। একাত্তরে তিনি ছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের চিফ অব স্টাফ, তখন তার পদমর্যাদা ছিল মেজর জেনারেল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে রেখেছিলেন অসামান্য অবদান। মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবদান ছিল অনস্বীকার্য আর এক্ষেত্রে জেনারেল জ্যাকবের বিশাল ভূমিকা ছিল। সীমান্ত এলাকায় মুক্তিবাহিনীদের জন্য ক্যাম্প স্থাপন, মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্পগুলোর পুনর্গঠন, তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া, অস্ত্র-রসদ জোগান দেয়াসহ মুক্তিবাহিনীর সাথে যৌথ অভিযানে এসে বাংলাদেশকে কাঙ্ক্ষিত জয়ে অসামান্য অবদান রাখে ভারতীয় বাহিনী। সর্বোপরি তার ভাষ্য থেকে জানা যায় ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১এ জেনারেল নিয়াজীকে লজ্জাজনক এবং নিঃশর্ত আত্মসমর্পণে বাধ্য করেছিলেন তিনি
===============================

সাইমন ড্রিং ************
============
(জন্মঃ ১১ জানুয়ারি, ১৯৪৫) একজন আন্তর্জাতিক পুরস্কার বিজয়ী বৈদেশিক সংবাদদাতা, টেলিভিশন উপস্থাপক এবং প্রতিবেদন নির্মাতা। তিনি বিশ্বখ্যাত সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের বৈদেশিক প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্বের অনেক জায়গা ভ্রমণ করে তরতাজা ও গুরুত্বপূর্ণ খবর পরিবেশনের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হন। এছাড়াও তিনি লন্ডনভিত্তিক দ্য ডেইলী টেলিগ্রাফ, বিবিসি টেলিভিশন এবং রেডিও সংবাদ ও চলতি ঘটনা তুলে ধরার লক্ষ্যে অনবরত কাজ করছেন। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর জঘন্য ও নৃশংসতার বিবরণ দৈনিকে তুলে ধরে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
ভিয়েতনাম যুদ্ধ এবং বাংলাদেশের গণহত্যার ওপর প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদন তাঁকে বিশ্বজোড়া খ্যাতি ও সুনাম এনে দেয়। সায়মন ড্রিং বাংলাদেশের গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী প্রথম বিদেশী সাংবাদিক যিনি নিজের জীবন বিপন্ন করে সরেজমিন প্রতিবেদন তৈরী করে সারা বিশ্বকে জানিয়ে দেন পাকিস্তানী বাহিনীর লোমহর্ষক নির্যাতন ও গণহত্যার কথা।
উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় ভরা ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চের কালোরাতে সাইমন ড্রিং হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে (পরবর্তীতে - হোটেল শেরাটন, বর্তমানে - হোটেল রূপসী বাংলা) লুকিয়ে ছিলেন। তৎকালীন পাকিস্তানে সামরিক আইনের তোয়াক্কা না করে ২৭ মার্চ তিনি মুক্তিযুদ্ধের সংবাদ সংগ্রহ করে ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় প্রতিবেদন আকারে প্রেরণ করেন যা ট্যাংকস ক্র্যাশ রিভোল্ট ইন পাকিস্তান শিরোনামে ৩০ মার্চ প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জনমত সৃষ্টিতে তাঁর এ প্রতিবেদনটি বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে সাড়া জাগিয়েছিল। উক্ত প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেছিলেন যে,
আল্লাহর নামে আর অখণ্ড পাকিস্তান রক্ষার অজুহাতে ঢাকা আজ ধ্বংসপ্রাপ্ত ও সন্ত্রস্ত এক নগর। পাকিস্তানি সৈন্যদের ঠান্ডা মাথায় টানা ২৪ ঘণ্টা গোলাবর্ষণের পর এ নগরের...।
.
১৯৭১ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার তাঁকে জোরপূর্বক দেশ থেকে বের করে দেয়া হয়েছিল। ইংল্যান্ডে ফিরে গিয়ে পুণরায় নভেম্বর, ১৯৭১ সালে কলকাতায় আসেন তিনি। সেখান থেকে তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের যাবতীয় খবরাখবর নিরপেক্ষভাবে ঐ দৈনিকে প্রেরণ করতেন। ১৬ই ডিসেম্বর তারিখে বিজয়ের দিনে যৌথবাহিনীর সাথে তিনিও ঢাকায় এসেছিলেন।
===========================

অ্যান্থনি মাসকারেনহাস*********
==============================
(১৯২৮ - জিসেম্বর ৬, ১৯৮৬) জন্মসূত্রে ভারতীয় গোয়ানীজ খ্রিস্টান এবং বসবাস সূত্রে পাকিস্তানী। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় কিছুকাল এদেশে সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং এ বিষয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।অ্যান্থনি মাসকারেনহাস (১৯২৮ - জিসেম্বর ৬, ১৯৮৬) জন্মসূত্রে ভারতীয় গোয়ানীজ খ্রিস্টান এবং বসবাস সূত্রে পাকিস্তানী। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় কিছুকাল এদেশে সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং এ বিষয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।করাচী থেকে প্রকাশিত দ্য মর্নিং নিউজ-এর প্রধান সংবাদদাতা এবং পরবর্তীতে সহ-সম্পাদক পদে কর্মরত ছিলেন ১৯৬১ থেকে ১৯৭১ সনের মে মাস পর্যন্ত। একাত্তর সনের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশে এসে গণহত্যার তথ্যাদি সংগ্রহ করেন। এরপর বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে লন্ডনের সানডে টাইম্‌স পত্রিকায় গণহত্যার তথ্যাদি প্রকাশ করেন। এজন্য তিনি স্বয়ং ইংল্যান্ডে গিয়েছিলেন। পত্রিকাটির ১৯৭১ সনের জুন ১৩ সংখ্যায় এ সকল তথ্যাদি প্রকাশিত হয়। এতে বিশ্ব বিবেক অনেকাংশেই জাগ্রত হয় এবং বিশ্ববাসী বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্বন্ধে জানতে পারে। তিনি উপমহাদেশের রাজনৈতিক ঘটনাবলী অন্তরঙ্গ আলোকে প্রত্যক্ষ করে সংবাদিকসুলভ ভঙ্গিতে তা বর্ণনা করেছেন। তার লেখা বই হচ্ছে “দা রেইপ অব বাংলাদেশ” এবং “বাংলাদেশের রক্তের ঋণ”।
তার দ্য রেইপ অফ বাংলাদেশ গ্রন্থটি ১৯৭১ সালের অক্টোবর মাসে প্রকাশিত হয়। বইটির সেই প্রাথমিক সংস্করণে শেষ পংক্তিতে তিনি মুক্তিযুদ্ধের ফলাফল সম্বন্ধে আশা প্রকাশ করে বলেছিলেন:

আমরা সবেমাত্র একটি নতুন অন্ধকারের রাজ্যে প্রবেশ করেছি। অন্ধকারময় সুড়ঙ্গপথের শেষ প্রান্তে যেখানে আলোর রাজ্য শুরু, সেখানে পৌঁছতে আমাদের দীর্ঘ সময় লাগবে।

===========================

উইলিয়াম এ এস ওডারল্যান্ড
=========================
উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড (ওলন্দাজ: Wiliam Ouderland) (জন্ম:৬ই ডিসেম্বর, ১৯১৭ — মৃত্যু:১৮ই মে, ২০০১) ছিলেন একজন ওলন্দাজ-অস্ট্রেলীয় সামরিক কমান্ডো অফিসার। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে বাংলাদেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ সামরিক খেতাব বীর প্রতীক প্রদান করে। তিনিই একমাত্র বিদেশী যিনি এই রাষ্ট্রীয় খেতাবে ভূষিত হয়েছেন।বাংলাদেশের প্রতি অপরিমেয় ভালবাসার জন্য বাঙ্গালী জাতির কাছে তিনি বিশেষভাবে সম্মানিত ও স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব।[৪] তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শনস্বরূপ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার গুলশানের একটি রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে।
=
মুক্তিযুদ্ধে অবদান:-
=============
ঔডারল্যান্ড ঢাকায় বাটা স্যু কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নেদারল্যান্ডস থেকে ১৯৭০ সালের শেষ দিকে প্রথম ঢাকায় আসেন। । কয়েক মাসের মধ্যেই তিনি নির্বাহী পরিচালক পদে পদোন্নতি লাভ করেন। টঙ্গীর বাটা জুতো কারখানায় কর্মরত অবস্থায় ১৯৭১ সালের ৫ মার্চ মেঘনা টেক্সটাইল মিলের সামনে শ্রমিক-জনতার মিছিলে ইপিআর-এর সদস্যদের গুলিবর্ষণের ঘটনা কাছে থেকে দেখেছেন। পূর্ব পাকিস্তানের ১৯৭১-এ মার্চের গণ আন্দোলন, ২৫ মার্চ এর অপারেশন সার্চলাইট এবং এর পরবর্তী সময়ে পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর নির্বিচার হত্যাকান্ড ও নৃশংস বর্বরতা দেখে মর্মাহত হন এবং যুদ্ধে বাংলাদেশকে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নেন।
বাটা স্যু কোম্পানীর মত বহুজাতিক একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হওয়াতে তাঁর পূর্ব পাকিস্তানে অবাধ যাতায়াতের সুযোগ ছিল। এই সুবিধার কারণে তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর নীতিনির্ধারক মহলে অণুপ্রবেশ করার এবং বাংলাদেশের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তি করার। তিনি প্রথমে ঢাকা সেনানিবাসের ২২ বেলুচ রেজিমেন্টের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্ণেল সুলতান নেওয়াজের সঙ্গে অন্তরঙ্গ শখ্য গড়ে তোলেন। সেই সুবাদে শুরু হয় তার ঢাকা সেনানিবাসে অবাধ যাতায়াত। এতে তিনি পরিচিত ও ঘনিষ্ঠ হতে থাকলেন আরো বেশি সংখ্যক সিনিয়র সেনা অফিসারদের সাথে। এর এক পর্যায়ে লেফট্যানেন্ট জেনারেল টিক্কা খান, পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার লেফট্যানেন্ট জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজী,এডভাইজার সিভিল এফেয়ার্স মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলি সহ আরো অনেক সামরিক বেসামরিক কর্মকর্তাদের সাথে তাঁর হৃদ্যতা গড়ে ওঠে। নিয়াজীর ইস্টার্ন কমান্ড হেডকোয়ার্টার তাঁকে 'সম্মানিত অতিথি' হিসাবে সম্মানিত করে। এই সুযোগে তিনি সব ধরনের 'নিরাপত্তা ছাড়পত্র' সংগ্রহ করেন। এতে করে সেনানিবাসে যখন তখন যত্রতত্র যাতায়াতে তার আর কোন অসুবিধা থাকল না। তিনি প্রায়শঃ সেনানিবাসে সামরিক অফিসারদের আলোচনা সভায় অংশগ্রহণের সুযোগ পান। এক পর্যায়ে তিনি পাকিস্তানীদের গোপন সংবাদ সংগ্রহ করা শুরু করলেন। এসকল সংগৃহীত সংবাদ তিনি গোপনে প্রেরণ করতেন ২নং সেক্টর এর ক্যাপ্টেন এ. টি. এম. হায়দার এবং জেড ফোর্সের কমান্ডার লেফট্যানেন্ট জেনারেল জিয়াউর রহমান এর কাছে।
তিনি গোপনে মুক্তিযোদ্ধাদের খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ, আর্থিক সহায়তা এবং বিভিন্ন উপায়ে সাহায্য করতেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে গেরিলা কম্যান্ডো হিসেবে স্বীয় অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে স্বয়ং ২নং সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধা গেরিলা শাখার সক্রিয় সদস্যরূপে অকুতোভয় ঔডারল্যান্ড বাটা কারখানা প্রাঙ্গণসহ টঙ্গীর কয়েকটি গোপন ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়মিত গেরিলা রণকৌশলের প্রশিক্ষণ দিতেন। কমান্ডো হিসাবে তিনি ছিলেন অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ। এক পর্যায়ে তিনি নিজেই জীবন বিপন্ন করে যুদ্ধে নেমে পড়েন। তিনি বাঙ্গালী যোদ্ধাদের নিয়ে টঙ্গী-ভৈরব রেললাইনের ব্রীজ, কালভার্ট ধ্বংস করে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত করতে থাকেন। তাঁর পরিকল্পনায় ও পরিচালনায় ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে বহু অপারেশন সংঘটিত হয়। মেজর হায়দারের দেয়া এক সনদপত্রের সূত্রে জানা যায় যে, ঔডারল্যান্ড মুক্তিযুদ্ধে গণযোদ্ধাদের প্রশিক্ষন, পরামর্শ, নগদ অর্থ, চিকিৎসা সামগ্রী, গরম কাপড় এবং অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছেন।
এর পাশাপাশি তিনি মুক্তিযুদ্ধের গোড়ার দিকে বাংলাদেশে পাকিস্তানী বাহিনীর নৃশংস নির্যাতন ও গণহত্যার আলোকচিত্র তুলে গোপনে বহিঃবিশ্বের বিভিন্ন তথ্যমাধ্যমে পাঠাতে শুরু করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে বিশ্ব জনমত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রাখেন।[১] এ বিষয়ে তিনি নিজেই লিখেছেন, ইউরোপের যৌবনের অভিজ্ঞতাগুলো আমি ফিরে পেয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশে যা কিছু ঘটছে বিশ্ববাসীকে সেসব জানানো উচিত। ইউরোপে ফেলে আসা যুদ্ধস্মৃতির ২৯ বছর পর ১৯৭১ সালে টঙ্গীতে বর্বর পাকিস্তানী সেনাদের মধ্যে আবার তিনি সাক্ষাৎ পেলেন নাৎসি বাহিনীর। টঙ্গীতে বর্বর পাকিস্তানী বাহিনী দ্বারা নৃশংস হত্যাকাণ্ড, বীভৎস মরণযজ্ঞ প্রত্যক্ষ করে তিনি ব্যথিত হন। তাই ঔডারল্যান্ড ছবি তোলা রেখে সরাসরি যুদ্ধে অংশ্রগহণের সিদ্ধান্ত নেন। যুদ্ধকালে তিনি প্রধান সেনাপতি এম এ জি ওসমানীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। সে সময় তিনি ঢাকাস্থ অস্ট্রেলিয়ান ডেপুটি হাইকমিশনের গোপন সহযোগিতা পেতেন। ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধ শেষ হবার পর তিনি ঢাকায় প্রত্যাবর্তন করেন এবং পূর্বতন কর্মস্থলে যোগদান করেন। তিনি ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করে নিজ দেশ অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে যান।
=
স্বীকৃতি:-
=========
মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ ও অসামান্য নৈপুণ্যতার কারণে পরবর্তীকালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে বীরপ্রতীক সম্মাননায় ভূষিত করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে বীর প্রতীক পুরস্কারপ্রাপ্তদের তালিকায় তাঁর নাম ২ নম্বর সেক্টরের গণবাহিনীর তালিকায় ৩১৭। ১৯৯৮ সালের ৭ মার্চ প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও সনদপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে ঔডারল্যান্ডকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু তিনি অসুস্থ থাকায় আসতে পারেননি। তিনি বীর প্রতীক পদকের সম্মানী ১০,০০০ টাকা মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টে দান করে দেন। একমাত্র বিদেশি হিসেবে তাঁকে বাংলাদেশ সরকার এই খেতাবে ভূষিত করেছে। মৃত্যুর পূর্বমূহুর্ত পর্যন্ত অত্যন্ত গর্ব ভরে ও শ্রদ্ধার্ঘ্য চিত্তে নামের সঙ্গে বীর প্রতীক খেতাবটি লিখেছিলেন তিনি।
=
শেষ জীবন:-
=========
ঔডারল্যান্ড বাংলাদেশের বাটা স্যু কোম্পানি থেকে ১৯৭৮ সালে অবসর নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ফেরত যান। পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় পার্থের এক হাসপাতালে ২০০১ সালের ১৮ মে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
=========================

এডওয়ার্ড কেনেডি
=====================
১৯৭১ এ বাংলাদেশ যখন স্বাধীনতার জন্য লড়ছে, তখন যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতায় রিপাবলিকান পার্টি। আর তাদের সমর্থন ছিল পাকিস্তানের দিকে। এর মধ্যেই বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন সিনেটর এডওয়ার্ড।
=
মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের শরণার্থীদের দুঃখ-দুর্দশা বিশ্ববাসীর দৃষ্টিতে এনেছিলেন এডওয়ার্ড কেনেডি। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের শরণার্থীদের দুর্দশা নিজের চোখে দেখে এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে মর্মস্পর্শী একটি প্রতিবেদনও জমা দিয়েছিলেন তিনি।
"বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম ও এ দেশের মানুষের প্রতি মমতা ও ভালবাসা এভাবেই প্রকাশ করে গেছেন তিনি। এটা ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে।"
========================================

সিডনি শ্যানবার্গ
==================
সিডনি শ্যানবার্গ ছিলেন দি নিউইয়র্ক টাইমস এর একজন সাংবাদিক। তিনি ১৯৩৪ সালের ১৭ই জানুয়ারী আমেরিকার ক্লিনটন মাসাচুয়েটস এ জন্মগ্রহন করেন ।১৯৫৯ সালে তিনি দি নিউইয়র্ক টাইমস এ যোগদেন। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চএর হত্যাকান্ড তিনি খুব কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করেন। সে সময় তিনি ছিলেন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে। হোটেলের জানালা দিয়ে তিনি দেখেন ইতিহাসের এক ভয়ানক হত্যাকান্ড । তিনি পুরো যুদ্ধকালীন সময়ে মুক্তিযুদ্ধের উপর অসংখ্য খন্ড খন্ড প্রতিবেদন পাঠান যার অধিকাংশ ছিল শরণার্থী বিষয়ক। তার প্রতিবেদনে পুরো বিশ্ব জানতে পারে পাক বাহিনীর নির্মম হত্যাযজ্ঞ এবং ভারতে অবস্থিত শরণার্থী দের অবস্থা ।তার অসংখ্য প্রতিবেদনের একটি নির্ববাচিত সংকলন প্রকাশ করেছে ঢাকার সাহিত্য প্রকাশ ।সংকলনটির নাম ডেটলাইন বাংলাদেশ-নাইন্টিন সেভেন্টিন ওয়ান।
========================
*রুশ নাবিক রেডকিন**********
========================
বাংলাদেশের স্বাধীনতা উত্তর চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী থেকে পাকিস্তানী হানাদারদের পুঁতে রাখা শক্তিশালী মাইন অপসারণ করতে গিয়ে নিহত হন রাশিয়ান নাবিক ইউভি রেডকিন। উলেখ্য, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ২২ মার্চ বাংলাদেশ ও সোভিয়েত সরকারের মধ্যে শক্তিশালী মাইন ও নিমজ্জিত জাহাজ অপসারণে একটি দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি হয়। সেই চুক্তির আলোকে বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র সোভিয়েতের উদ্ধারকারী দল বাংলাদেশকে সহযোগিতায় এগিয়ে আসে। আর সে সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী থেকে মাইন অপসারণ করতে গিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহত হন সোভিয়েত রাশিয়ার নৌসেনা ইউভি রেডকিন। ১৯৭৩ সালের ১৩ জুলাই মাইন অপসারণকালে তিনি নিহত হন। পরে রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ দক্ষিণ পতেঙ্গাস্থ নেভাল একাডেমী সংলগ্ন এলাকায় তাকে সমাধিস্থ করে। তখন থেকে তার ওই সমাধিস্থলকে ‘রেডকিন পয়েন্ট’ হিসেবে নামকরণ করা হয়। প্রতিবছর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নিহত এই নৌসেনার মৃত্যুর দিবসকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে তার সমাধিস্থলে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
===================================
জর্জ হ্যারিসন***********
======================
(ফেব্রুয়ারি ২৫, ১৯৪৩, যুক্তরাজ্য - নভেম্বর ২৯, ২০০১) বিংশ শতাব্দীর অত্যন্ত প্রতিভাবান একজন জনপ্রিয় গায়ক এবং গিটারিস্ট। তবে তাঁর প্রতিভা কেবলমাত্র এ দু’য়ে সীমাবদ্ধ থাকেনি। তাঁর বিচরণের ক্ষেত্র ব্যাপ্ত ছিল সঙ্গীত পরিচালনা, রেকর্ড প্রযোজনা এবং চলচ্চিত্র প্রযোজনা অব্দি। বিখ্যাত ব্যান্ড সঙ্গীত দল দ্য বিটল্‌স এর চার সদস্যের একজন হিসেবেই তিনি বিখ্যাত হয়ে ওঠেন।
পপ সঙ্গীতের জনপ্রিয় ইংল্যান্ডের এই শিল্পী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পন্ডিত রবি শংকরের অনুরোধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরের ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনে ১৯৭১ সালের ১লা আগষ্টে এক বেনিফিট সঙ্গীত অনুষ্ঠানের কনসার্ট ফর বাংলাদেশ আয়োজন করেছিলেন। এই কনসার্ট হতে সংগৃহীত ২,৫০,০০০ ডলার বাংলাদেশের উদ্বাস্তুদের জন্য দেয়া হয়েছিল।
-
১৯৭১: কনসার্ট ফর বাংলাদেশ:-
----------------------------------
১৯৭১ সালে যখন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলছিল, তখন জর্জ হ্যারিসন তার বন্ধু রবি শংকর এর পরামর্শে নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেন প্রাঙ্গনে দুটি দাতব্য সঙ্গীতানুষ্ঠান(কনসার্ট) এর আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানটি তে জর্জ হ্যারিসন, রবি শংকর ছাড়াও গান পরিবেশন করেন বব ডিলান, এরিক ক্ল্যাপটন, অপ্র বিটল্‌ রিঙ্গো স্টার সহ আরও অনেকে। কনসার্টে জর্জ হ্যারিসন তার নিজের লেখা বাংলাদেশ গান পরিবেশন করেন। কনসার্টের টিকেট, সিডি ও ডিভিডি হতে প্রাপ্ত অর্থ ইউনিসেফের ফান্ডে জমা করা হয়।
-
অসুস্থতা এবং মৃত্যু:-
-===================
১৯৯৭ সালে হ্যরিসনের গলায় ক্যান্সার ধরা পড়ে। তখন তাকে রেডিওথেরাপি দেয়া হয় যা সফল হিসেবে মনে করা হয়েছিল।[৯] ২০০১ সালে তাঁর ফুসফুস থেকে ক্যন্সার টিউমার অপসারণ করা হয়। ২০০১ সালে ২৯ নভেম্বর হ্যরিসন ৫৮ বছর বয়সে মেটাস্টাটিক নন-স্মল সেল লাং ক্যন্সারে মারা যান।
==============================
বল ডিলান
==========
আমেরিকান সঙ্গীত ঐতিহ্যে নতুন কাব্যিক অভিব্যক্তি প্রবর্তনের জন্য তিনি ২০১৬ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন । ১৯৭১ সালের কনসার্ট ফর বাংলাদেশে তিনি ৫টি গান গেয়েছিলেন
১. আ হার্ড রেইনস গনা ফল
২. ইট টেকস আ লট টু লাপ / ইট টেকস আ ট্রেন টু ক্রাই
৩. ব্লোইন দ্য উইন্ড
৪. মি. টাম্বুরিন ম্যান
৫. জাস্ট লাইক আ ওম্যান ।
তথ্যসূত্রঃ - উইকিপিডিয়া ৷

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.