নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই

আইজ্যাক আসিমভ্‌

আমি কার, কে আমার !

আইজ্যাক আসিমভ্‌ › বিস্তারিত পোস্টঃ

লিনাক্সপ্যাড H047 (শেষপর্ব ,সায়েন্স ফিকশান/ ফ্যান্টাসি )

০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:২২

ছবিঃগুগল

তারিখ ৯ অক্টোবর ২০৭২। সেইন্ট মারটিনের under ground এপার্টমেন্টের মাইনাস্‌ ৪৭ তলার হল রুমের বারান্দায় রফিক সাহেব বসে আছেন। স্বচ্ছ কাচের জানালা দিয়ে সমুদ্রের নিচের কিছুটা সুন্দর অবলোকন করা যাচ্ছে। রফিক সাহেব তার থাকেন তার স্ত্রী ও মেয়ে নীহারিকাকে নিয়ে থাকেন ৯৫ তলা বিশিষ্ট সাইন্স সেন্টারের ২২ তলায় । জিরো-ফ্লোরটা গ্রাউন্ড। উপরে ৪৭ টা তলা আর নিচে ৪৭ টা। মাটির নিচের গুলোর নম্বারের আগে একটা করে মাইনাস যুক্ত হায়। মাইনাস ৩০ এর পর বাকিগুলো মাটি পার হয়ে সমুদ্রের মোটামুটি গভীর পৃষ্ঠ পর্যন্ত চলে এসেছে। মাটির ওপরের তলাগুলো বাংলাদেশী গবেষকদের জন্য । আর নিচের গুলো নিয়ে German-Bangladesh Marine research facility। মানে পুরো দস্তুর অত্যাধুনিক গবেষণাগার। রফিক সাহেব নিজেই একজন মেরিন মাইক্রোবায়োলজিস্ট আর তার স্ত্রী সমুদ্রবিদ। তারা এই রিসার্চ সেন্টারের ফুলটাইম গবেষক। আজকে ছুটির দিন। তার স্ত্রী এখন সায়েন্স সেন্টারের ছাদে। মোল্লা পার্টির সাথে আড্ডা দিচ্ছে সম্ভবত। ছুটির দিনে ছাদে বিকালে রিসার্চ সেন্টারের গবেষকদের মধ্যে যারা ধার্মিক তারা মিলে ধর্মীয় আলাপ আলোচনা করে। রফিক সাহেব ধর্মে বিশ্বাসী হলেও কট্টরপন্থা মোটেও পছন্দ করেন না। তার মতে , সাধারণ মানুষের পক্ষে ধর্ম- দর্শনের গভীরে যাওয়া আসম্ভব ব্যাপার। যারা এই ব্যাপারটাতে সফল হন তারা আর সাধারণের কাতারে থাকেন না। তারা তখন অন্য জ্ঞান জগতের মানুষ মানে পয়গম্বর।

সূর্য অস্ত যাবার এই সময়টা রফিক সাহেবের খুবই প্রীয়। ঠিক দিগন্তের সীমায় যখন সূর্যটা এসে ঠেকে , পানিতে লালের একটা সুন্দর আভা তৈরী হয়। সমুদ্রের নীচের অগভীরে রঙটা কিছুক্ষণের জন্য ছড়িয়ে পড়ে। সেই দৃশ্যে একটা অতিপ্রাকিতিক ঘোড় লাগা ভাব মনে তৈরী হায়। তাতে আনন্দ, ভয়, দুঃখ, কষ্টের - মানে সব মানবীয় অনুভূতির এক বিচিত্র মিশ্রণ ফুটে উঠে। আর সেটা মানবীয় মনে অতিমানবীয় ভাব বিকিরণ করে।

“বাবা!” পিছে থেকে দশ বছরের নীহারিকার কণ্ঠ শুনে রফিক সাহেব চমকে উঠেন।
“ কিরে মা , কি হয়েছে ?”
“তুমি পচা।”
“কেন রে ? “
“তুমি পচা তোমার ট্যাবটাও পচা।”
রফিক সাহেব বুঝল গেইমটা আবার হ্যাং হয়েছে। মেয়ের মাও চলে আসেছে। মাথায় সাদা হিজাব।
“আচ্ছা মীরা তো ইউনিভার্সিটি তে থাকতেও মোটেও ধার্মিক ছিল না! ও কীভাবে এই রকম হুজুর বনে গেল। ” -রফিক ভাবে।
“চল বাসায় দুষ্ট মেয়ে ! তোমাকে নুডলস রান্না করে দিব। খাবে , কেমন? আর তুমিও আসো তাড়াতাড়ি “ মীরা একটু তাড়াহুড়ার সুরে বলল।

মা-মেয়ের প্রস্তান হল। তারা সপরিবারে সায়েন্স সেন্টারের পাশের কোয়ার্টারে থাকে। অনেক গুলো কোয়ার্টার, শুধুমাত্র গবেষক ও তাদের পরিবারের জন্য বরাদ্দ। সমুদ্রের নিচে বিশাল কাচের ডোম দিয়ে সায়েন্স সেন্টারের পানির নিচের ফ্লোর গুলো ঢাকা রয়েছে। ডোম গুলোতে আলো জ্বেলে উঠছে। রফিক সাহেব তার মোবাইল ট্যাবটা দেখল। “হুম” গেইমটা হ্যাং হয়েছে। স্ক্রীনে একটা মহাজাগতিক মারামারির দৃশ্য আটকে আছে। রফিক সাহেব সুপার হিরোর চেহারাটা দেখে হাসল। তার নিজের চেহারা। এই ছোট্ট বয়সেই মেয়েটা দুর্দান্ত প্রোগ্রামিং পারে। কাজেই ওর কাছে এইগুলো কোন ব্যাপার না।
রফিক সাহেব পাসওয়ার্ড দিয়ে কমান্ডপ্রোমোট থেকে কার্নেলে ঢুকলেন। পাসওয়ার্ডটা হল তার মেয়ের জন্ম সাল-তারিখ-মাসের। সাথে নীহারিকার প্রিয় কমিক ক্যারেকটারের নাম। পুরাটা দাঁড়ায় tintin1-5-2062. ২০৬২ সালের পহেলা মে তার আদরের কন্যার জন্ম।

ছবিঃগুগল

রফিক সাহেবের মোবাইল ট্যাবের মডেলটা হল H047. নাম লিনাক্সপ্যাড। এটা শুধু মাত্র এখানকার রিসার্সচারদের জন্য বিশেষভাবে তৈরী করা। শুধু মাত্র এই ৯৫ তলার মধ্যেই এটা কাজ করবে। বিল্ডিয়ের বাহিরে যাবা মাত্র শাট-ডাউন করবে বা এরর্‌ ডিসপ্লে দেখাবে। রফিক সাহেব আবার হেসে উঠলেন। নীহারিকা যেই গেইমটা খেলছে সেটার কোড চেঞ্জ করার সুযোগ নেই। গেইমের প্রধান ক্যারেক্টার রাফ্‌ ৩০৩ । তার কন্যা সেটা পরিবর্তন করে দিয়েছে রফিক , শুধু তাই নয় গেইমের এনভাইরোনমেন্ট অপশানে ওয়েস্টার্ণ কোন ভিলেজের পরিবর্তে খোদ বাংলাদেশের গ্রামের এনভাইরনমেন্ট ইন্সটল করেছে। এই প্রোগাম গুলো খুব মজার। ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে যে কেও ঘরে বসে পৃথিবীর যেকোন গ্রামের বা শহরের পরিবেশ অবলোকন করতে পারবে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে প্রোগ্রামগুলো কপি রাইট প্রোটেকটেড্‌। নীহারিকা পাইরেটেড্‌ প্রোগ্রাম ইন্সটল করেছে। আর লিনাক্সপ্যাড H -মডেল পাইরেটেড প্রোগ্রাম সাপোর্ট করে না। এরপরও এতক্ষণ গেইমটা কিভেবে চলল কে জানে ! রফিক সাহেব ডিলিট অপশানটাতে টিপ দিলেন। গেইমটা ডিলিট হতে বেশ সময় লাগল যেটা সাধারণত লাগার কথা না। রফিক সাহেব আবার restart করলেন।


রিসার্চ সেন্টারের সেন্ট্রাল নেটওয়ার্ক সেকশানের হেড দিমিত্রি ক্যান্ডাফ্‌ দেখলেন রেড লাইট জ্বলে উঠেছে। “ইউরেকা , যাক শেষমেশ প্রোগ্রামটাকে বিচ্ছিন্ন করা গেল”। মনে মনে বলল ডিমিট্রি। এই রিসার্চ সেন্টারের সেন্ট্রাল কম্পিউটার রিসার্স প্রোগ্রাম বাদে অন্য কোন প্রোগ্রামকে কোনভাবেই রান করতেই দেয় না। সেটা সাধারণ বা ক্ষতিকর যেটাই হোক না কেন। আর পাইরেটড্‌ কোন প্রোগ্রাম রান করার প্রশ্নই আসেনা। শুধু মাত্র যদি সেন্ট্রাল কম্পিউটার কোন ভাবে আর্টিফিশিয়াল ভার্চুয়াল লাইফ ফর্ম ডিটেক্ট করতে পারে তা হলেই খালি সেটাকে সম্পূর্ন সিস্টেম থেকে বিচ্ছিন্ন করে স্বাধীনভাবে রান করতে দেয়। এই নীহারিকা মেয়েটা খুবই বুদ্ধিমান। ও এই নিয়ে ৩টা আর্টিফিশিয়াল ভার্চুয়াল লাইফ ফর্ম কোড করতে পেরেছে। দিমিত্রি ওর প্রোগ্রামিং কোচ। এই রকম অল্প বয়সী বুদ্ধিমতী বাচ্চা সারা দুনিয়াতে নিশ্চয়ই হাতে গনা কয়েকটা হবে। জার্মান ডিফেন্স মিনিস্ট্রির কাছে সংবাদটা হয়তোবা খুব খুশীর হবে। জার্মানরাই প্রথম হিউম্যানইয়েড রোবট ডিজাইন করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু তারা এখনও এমন কোন স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রোগ্রাম কোড ডেভেলপ করতে পারেনি যেটা যন্ত্রগুলোকে স্বাধীনভবে রান বা চালাতে পারবে। আর নীহারিকার লেখা প্রোগ্রামগুলো সেই যন্ত্রগুলো রান করার জন্য খুব গুরূতবপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। যেকোন যুদ্ধক্ষেত্রে জার্মান বাহিনীর হিউম্যান ক্যাসুয়াল্টির পরিমাণ হবে প্রায় শূন্য যদি তারা সোলজার রোবোট গুলোতে সেই রকম কোডিং ইন্সটল করতে পারে। সেটা জার্মার সেনাবাহিনীর জন্য খুব কাজের হবে।

ছবিঃগুগল

এখন নীহারিকা যেন কোনভাবেই মার্কিন , ফ্রেঞ্চ বা রাশানদের হাতে না পরে সেই ব্যাবস্থাই করতে হবে দিমিত্রিকে তবে খুব ঠাণ্ডা ভাবে ও বুদ্ধির সাথে।







মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৬

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: I love LINUX

২| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৬

আইজ্যাক আসিমভ্‌ বলেছেন: আপনার লিনাক্স প্রীতির জন্য শুভ কামনা রইল , তবে আপনার ভালবাসার কথা লিনাস টরভাল্টস্‌-এর কাছে পৌঁছানোর সাধ্য আমার নাই।

৩| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: খুব ভালো লিখেছেন।

৪| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৫৪

আইজ্যাক আসিমভ্‌ বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ । !:#P

৫| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৫৭

আইজ্যাক আসিমভ্‌ বলেছেন: আমি তো মনে হয় আমার নিজেরেই কমেন্ট করতেছি। =p~

৬| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:১৪

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: লিনাস টরভাল্টস্‌
এর মেইল আছে তো !!
মেইল করুন
আমার ব্লগে দাওয়াত রইল :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.