নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই

আইজ্যাক আসিমভ্‌

আমি কার, কে আমার !

আইজ্যাক আসিমভ্‌ › বিস্তারিত পোস্টঃ

পরম শূণ্যতার দিবারাত্রি(সায়েন্স ফিকশন)- পর্ব এক

০৩ রা জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:৪৭



“The oldest and strongest emotion of mankind is fear, and the oldest and strongest kind of fear is fear of the unknown”-H.P Lovecraft

আমি বসে আছি নদীর পাড়ে। নদীর স্বচ্ছ পানিতে প্রতিফলিত আকাশের প্রতিবিম্বে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে মিটিমিটি নক্ষত্ররাজি। নদীর পানিতে নেই কোন ঢেউ, নেই কোন আযাচিত স্পন্দন। যেন বিশাল একটা মায়া দর্পণ দয়ালু চিত্তে নিজেকে উন্মুক্ত করে রেখেছে অসীমের রহস্য দর্শকের কাছে উন্মোচিত করার জন্য। আমি চেয়ে আছি সেই দর্পনের দিকে। কিন্তু আজকে আমার মনটা বড়ই উদাশীন। আমি সেখানে দেখতে পাচ্ছি অসীমকাল আগে দেখা সেই মায়াবতী বাচ্চা মেয়েটার অবিনশ্বর রূপখানি। নক্ষত্রশোভিত মুক্ত আকাশের সৌন্দর্য নদীর ঘুমন্ত জলে একাকার হয়ে নানা রূপে নানা রঙে মিলেমিশে ক্ষণেক্ষণে জন্ম দিচ্ছে সেই শিশুটির নিষ্পাপ মুখছ্ববি। আমার কোলাহলময় বাহ্য মনটা উদাশীন হলেও , আমি সুনিশ্চিত মনস্তত্বের সেই বিরক্তিকর কোলাহলময়তা আড়ালে, আমার অবচেতন মন স্তব্ধ চিত্তে গভীর আগ্রহ নিয়ে দেখছে সেই বাচ্চাটার জলজ প্রতিমা। এই নদীর কাছে এলে, আর তাতে সন্ধ্যার আঁধারের বিম্ববতী বিন্দুবত তারকারা নেমে এলে, আমার হাজার বছর আগের ঘুণে ধরা চিরকুমার জীবনের বিস্বাদময়তায় কেমন যেন ক্ষণস্থায়ী একটা চির ধরে যায়। কেমন যেন আস্বস্তি ঘুরাঘুরি করে -ভোরের পাখিদের মত, যাদের কলতান খুব তাড়াতাড়ি বিলীন হয়ে যায়, সূর্যের আলোর প্রখরতা বাড়ার সাথে সাথে। এই ক্ষণস্থায়ী অস্বস্তিটি কি আনন্দ না বেদনা সেটা আমি বুঝতে ব্যার্থ হই বারংবার। কারণ স্বাভাবিক জগতের পূর্ণতা ছেড়ে পরম শূণ্যতায় আমি প্রবেশ করেছি সেই অসীম কাল আগেই। সেই “স্বাভাবিক জগত”- যেখানে রয়েছে শহুরে যান্ত্রিকতা, মানবের ঝগড়া-কলহ, মারামরি-রক্তপাত, লোভ-ক্রোধ-ঘৃণা.... এক কথায় সমস্ত সংকীর্ণতা। আমিও ডুবে ছিলাম সেই সংকীর্ণ জড়তায়। ঘুরপাক খেতাম রিপুর অস্বাভাবিক স্পন্দনে সৃষ্ট সর্বোচ্চ সুখ-শান্তি অর্জনের মরীচিকার সন্ধানে সেই তথাকথিত “স্বাভাবিক জীবন” নামক অস্বাভাবিক গোলক ধাঁধায়। কিন্তু সেই বাচ্চা মেয়েটাকে দেখার পর থেকে সেই অসীম কাল আগের জীবনে নেমে আসে ছন্দপতন। আসলে সেটা কেবল মাত্র একটি ছন্দপতন ছিল না বরঞ্চ তা ছিল অসংখ্য পতনের একটিমাত্র। সেই সব ঘটনা আমি হঠাত হঠাত করে মনে করতে পারি। ঘুমন্ত রাত্রির স্বপ্নের মতই সেগুলা মাঝে মাঝে মনের মাঝে ডুবন্ত নদী-চরের মত ঝাঁক বেঁধে জেগে উঠে; পরক্ষণেই বিলীন হয়ে যায়। ছুয়েও অস্পর্শী থেকে যায়; ধরেও রয়ে যায় অধরা। কিন্তু কেমন যেন একটা শীতল স্নিগ্ধ অনুভূতি রেখে যায়, সমুদ্রতটে রেখে যাওয়া পর্যটকের পদচিহ্নের মত,ঢেউ-এর তোড়ে যেটা দ্রুত লয় প্রাপ্ত হয়ে যায়। পদচিহ্ন বিলীন হয়ে যায় মহকালের স্রোতে। কিন্তু যেহেতু আমি বহু পূর্বেই পরম শূন্যতায় প্রবেশ করেছি সে হিসেবে আমার ক্ষেত্রে মহাজাগতিক হিসাব-নিকাশ কিছুটা আলাদা। মহাকালের গভীরে হারিয়ে যাওয়া পদচিহ্নবত স্মৃতিগুলি দেখতে না পেলেও, আমি শুনতে পাই সে গুলার মৃদু গুঞ্জন ধ্বনি। সমর্থ হই কিছু শব্দের পাঠোধ্যারে। কিন্তু রাতের তারারা কেন যেন সবসবই মায়া দর্পণে সেই বাচ্চাটার মুখচ্ছবিটি বারবার মনে করিয়ে দেয় আমাকে। তাই তার মুখস্পন্দন আমার কাছে খুবই সুপরিচিত। এই বাচ্চা শিশুটি যেমন পরম শূন্যতায় প্রবেশের অনেকগুলি প্রধান কারণের মধ্যে অন্যতম, ঠিক তেমনি সেই শিশু প্রতিমার মারফতেই অসীম কাল পরেও স্বাভাবিক জীবনের ধূসর স্মৃতি আমার মনের মনিকোঠায় মাঝে মাঝেই উঁকিঝুঁকি দেয়। কি বিচিত্র দ্বৈততা।

ধীরে ধীরে নদীর পানি ঢেউ-এর আলোড়নে আন্দলিত হতে শুরু করে। মায়া দর্পণ থেকে মুছে যেতে থাকে সেই মায়াবতী শিশু প্রতিমার স্থির মুখচ্ছবি। একসময় সেই ধীর আন্দোলন পরিণত হয় অভিশপ্ত কম্পনে। প্রচন্ড কম্পনে জল-তল থেকে ছিটকে ছিটকে উঠতে থাকে পানির কণা। চাঁদের আলোয় সেই অভিশপ্ত জল-কম্পনের সাথে তাল মিলিয়ে কোন এক অজানালোকের হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করে দেয়। হ্যাঁ, আমি জানি সে আসছে। সেই অজানা জীবটা উঠে আসছে, জলের গভীর তল থেকে। আসলে সেটা কি ধরণের জীব, সেটা আমার অজানা। একটু সূক্ষ্মভাবে বলতে গেলে, সেই জীবের প্রকৃতি আমার জ্ঞানের অগম্য। আমি খালি এই পরম শূণ্যতার জগতে তার বিভীষিকাময় পর্দাপণকেই উপলব্ধি করতে পারি।
..........(চলবে)

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ২:৫২

আইজ্যাক আসিমভ্‌ বলেছেন: এই যে ফটকাবাজ আইজ্যাক সাহেব! নিজেই নিজের গল্পে বারবার ঢু মেরে পঠন সংখ্যা বা বারংবার বাড়াচ্ছেন, সেটা অসাধুতার পরিচায়ক। কাজেই ফটকাবাজি বন্ধ করুন। :-0 |-)

১০ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ২:৫৪

আইজ্যাক আসিমভ্‌ বলেছেন: জ্বী, বুঝতে পেরেছি। ভুল ধরিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.