নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জরীফ উদ্দীন

জরীফ উদ্দীন

মন জোগাতে নয় জাগাতে

জরীফ উদ্দীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাপ বেটির উপাখ্যান

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৪৬


বাবা, এখনো ঘুমাও নি?
নারে মা।
কেন ঘুমাও নি?
আমি যদি তোকে এই একই প্রশ্ন করি? তুই এখন ঘুমাসনি কেন? তখন কি বলবি?
বাবা, আমার যে ঘুম আচ্ছে না কিন্তু তোমার উত্তরটা কি?
মারে, যদি আমি একই উত্তর দেই তখন? আমি আর কিছু বলি না। বাবার দিকে জলজল চোখে তাকাই দেখি বাবার চোখে পানি। বাবা কাঁদছে। কাঁদবে তা আমি জানি। কিছু না বলে বাবার চোখের পানি মুছে দিতে হাত বাড়াই। বাবা আমার হাতটা টেনে ধরে এক অবুজ শিশু তার মায়ের হাত যে ভাবে ধরে ঠিক সেভাবে। আমি যেমন ছিলাম ঠিক সেভাবে দাড়িয়ে থাকি। কিছু বলতে চেয়েও বলতে পারিনা। বাবা কাঁদছে তো কাঁদছেই। বাবার কান্না দেখে আমি কেদে ফেলি। বাবা তা বুঝার আগে আমি সেখান থেকে যাওয়ার জন্য পা বাড়াই। বাবা যেতে দেয়না। হাতটা শক্ত করে ধরে।
খুকি!
হ্যা, বাবা।
তুই আমার মা। মারে, তুই কি কোন দিন তোর এই অবুজ ছেলেকে দূরে ফেলে দিবি?
বাবা!
বল, মারে।
এসব কি বলছো?
হ্যারে, মা। হ্যা। বল তুই ছাড়া আমার আর কে আছে রে মা? যে আমার খোঁজ-খবর নিবে, রাতে ঘুমাই নি বলে কৈফত চাবে, সকালে নাস্তা খেতে ডাকবে, বার বার চা এনে দিবে, রাত্রে বাড়ি ফিরতে দেরি হলে নিজে না খেয়ে অপেক্ষা করবে, অসুস্থ হলে মাথায় হাত বুলিয়ে দিবে, সারা দিন রাত সেবা করবে যতক্ষন সুস্থ না হব। বাবা বিরতি হীন ভাবে বলে হাঁপাতে থাকেন। আমি বাবাকে কি বলব ভেবে পাইনা। বাবা আমার হাতটা ছেড়ে দিয়ে আমার চোখের পানি মুছে দেন। নিজেই নিজের চোখের পানি মুছে বাবা হাসার চেষ্টা করেন কিন্তু হাসি মুখের দুই ঠোটের মাঝে বিলিন হয়ে যায়।
বাবা!
বল, মারে।
মার কথা মনে পড়ে?
খুকি, এসব কি বলিস? তোর মায়ের কথা কেন মনে পরবে না? যার সঙ্গে ........। বাবাকে থামিয়ে দিয়ে বলি,
বাবা তুমি কি মাকে স্বপ্নে দেখ?
অনেক দিন আগে দেখেছি। এখন আর দেখি না। আজ তোর মাকে দেখতে বড্ড ইচ্ছে করছে। ঐ যে একদিন দেখলাম শুনবি কি দেখেছি? বাবা কি বলবে তা আমার জানা আছে। সম্রাট শাহ জাহান তাঁর জীবনের শেষ পর্বে আগ্রার কারা প্রকোষ্ঠে বন্দি অবস্থায় পরমনির্ভর ও শান্তনার উৎস তাঁর বিদুষী কন্যা জাহানারাকে দূরে যমুনা তীরে জ্যোৎস্না প্লাবিত তাজমহল, দেখিয়ে প্রিয়তমা পত্নী মমতাজের স্মৃতি বুকে ধারন করে যা বলে ছিলেন, তাই। বাবা সত্যি মাকে দেখেছে কি না তা আমি জানি না? বাবা যেভাবে বলে বিশ্বাস না করে পারিনা। কারণ বাবাকে কোন দিন মিথ্যা বলতে শুনিনি। বাবার সত্য কথা বলার জন্য চাকরী পর্যন্ত চলে গিয়েছিল। পরে অবশ্য সততার কারণে আবার চাকরী ফিরে পেয়েছিলেন। সেই বাবা কি মিথ্যা বলবে? বাবার এই স্বপ্নের কথা বাবার মুখে অনেক বার শুনেছি। বাবা তারপরেও বলতে চায়। বাড়িতে কেউ বেড়াতে আসলে বলবে। বন্ধুদের দেখা হলে বলবে। কেউ শুনতে না চাইলেও বলবে। আমি কেন যেন বাবাকে বলি
বাবা, আমার শুনতে ভাল লাগছে না।
শোন মা, মনটা ফ্রেশ হবে। ভাল লাগবে।
না বাবা, শুনেছি। অনেক শুনেছি। আর না।
না শুনবি ভাল কথা জোর করে শোনাবো না। বাবা কিছুক্ষন থেমে আবার বলা শুরু করল, গলাটা কেন যেন শুকে যাচ্ছে।
বাবা, চা খাবে?
না, তোকে আর কষ্ট দিতে চাই না। শুধু আজকের রাতটাই আমার এ বাড়িতে শেষ থাকা। কাল সকালে চলে যাবো।
কোথায় চলে যাবে?
দুচোখ যে দিকে যায়। সে দিকে.....।
আমি যেতে দিলে তো যাবে। আমি রান্না ঘরে চলে যাই। চা বানাতে বেশি সময় লাগে না। চা নিয়ে এসে দেখি বাবা বারেন্দার সিড়ি ধরে দাড়িয়ে আছে। আমি বাবাকে চেয়ার দেখিয়ে বসতে বলি। চা তো আর দাড়িয়ে খাওয়া যায়না। বাবা গিয়ে বসে চেয়ারে। আমিও বাবার সামনে আর একটা চেয়ারে বসি।
বাবা, স্বপ্নটার কথা বলবে না? বল না শুনি। চা খেতে খেতে ভাল লাগবে।
না। বলতে মন চাচ্ছে না। বাবার আচরনে এটাই প্রথম। যে কথাটি যে কেউ না শুনলেও জোর করে শুনাবে। তা আর বলবে না। কেন এমন হল? ভাবতে পারছি না। বাবা নিরব থাকায় আমি ও কোন কথা না বলে বসে আছি।
খুকি!
বাবা!
তোর মা খুব সুন্দর ছিল। আমি কিছু বলিনা। মাথাটা ডান দিকে ঝুকে আবার আগের মত বসে থাকি। জানিস? দীর্ঘ সংসার জীবনে আমার কাছে তার কোন আবদার ছিলনা। আমি যা দিয়েছি তাতেই খুশি ছিল। আর আমি তোর মায়ের এই দিকটা ল্য করে যখন যা দরকার তাই দেওয়ার চেষ্টা করতাম। তার পরও তোর মাকে অনেক কিছুই দিতে পারিনি। বাবা দীর্ঘ নিশ্বাস ছাড়ে। চোখ দিয়ে পানি ঝড়ছে বাবার। বাবা চোখের পানি মুছে আমার দিকে তাকান।
খুকি, একি তুই আবার কাঁদছিস।
না তো।
বললেই হল? চোখে যে পানি।
তোমার চোখেও তো পানি ছিল। তুমিও কি কাঁদছিলে? বাবা আর এদিকে কথা বাড়ায় না। আবার নিরব হয়ে যায়। আমি নিজ থেকে কিছু বলি না। মায়ের কথা ভাবতে চেষ্টা করি। মায়ের ছবি আবছা ভাবে ভেসে ওঠে আমার চোখের সামনে-
একটি সুন্দরী মহিলা সবুজ ও লাল মিশ্রিত গ্রামিণ চেকের শাড়ি পরে ধীর পদেেপ এগিয়ে আসছে আমাদের দিকে। চোখ দুটো মায়াবী হরিণের চোখের মতো। মুখটা কৃতিম রাগে উজ্জল। কিছু বলতে বলতে মনে হয় এদিকে আসছে। কি বলছে? হয়ত অভিযোগের সঙ্গে বলছে,“ রাত কয়টা বাজে? বাপ বেটি মিলে সারারাত গল্প করে আমার দূর্নাম রটে কাটিয়ে দিবি। খুকি, যা ঘুমো সকাল সকাল ওঠতে হবে। এক রাত্রে সব গল্প শেষ কর? তোমাদের নিয়ে একটি উপখ্যান তৈরি করা যায়।
খুকি, কি ভাবছিস? বাবার কথায় ভাবনাটা ছেদ পরল।
কিছু না।
তুই না বললেও আমি জানি। কিন্তু মা, কি করবি বল? আল্লাহর হুকুম যদিও আমরা না মানি ক্ষনস্থায়ী জীবনটাকে সুখি করতে, তার পরেও একটি হুকুম সবাই কে মানতে হবে। তা হল যখন হায়াত শেষ হবে তখন মিত্যুকে বরণ করতেই হবে। আসলে তোর মা যে এত তাড়াতাড়ি আমাদের গুড বাই না জানিয়ে চলে যাবে। তা কি জানতাম? আমার মনে হয় এই মাত্র কোথায় যেন গেল। এইতো চলে আসবে। আর ............। আচ্ছা আজ হউক কাল হউক কেউ যদি চলেই যায়। তাহলে অন্যের সঙ্গে এত মায়া মমতার জাল বিস্তার করার কি দরকার? তা আমি জানি না।
খুকি, ঘুমালে নাকি?
বাবা, না ঘুমাইনি শুনছি।
আচ্ছা তুই কি জানিস তোর মায়ের সঙ্গে কি ভাবে আমার বিয়েটা হয়ে গেল?
আমি কি সেই দিন তোমার আর মায়ের সামনে থার্ড পার্সন সেঙ্গুলার নাম্বার হিসাবে ছিলাম নাকি? যে সব জানবো।
শোন। তোর মা ছিল আমার বাবার বন্ধুর মেয়ে। একদিন আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসল। তখন আমি অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র। যখন সে বাড়িতে আসল তখন আমি বাইরে ছিলাম। বাড়িতে এসে সোজা আমার রুমে প্রবেশ করি। দেখি আমার বিছানায় একটি মেয়ে শুয়ে আছে। প্রথম দেখায় পছন্দ। গিয়ে মাকে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারলাম বাবার বন্ধুর মেয়ে। দুপুরে খাবার খেতে পরিচয়। বিকাল বেলা তাকে বাড়িতে পৌছার দাযিত্বটা আমার কাঁধে আসে। হেটে হেটে যেতে অনেক কথা হয়। এক পর্যায়ে সে যে আমার পছন্দ সেই কথা বলে ফেলি। তখন সে আমাকে বলে,
আপনি আচ্ছা মানুষতো। আপনাকে ভাবতাম এতন ভাল মানুষ। আর এখন বুঝতে পারছি আপনি কেমন? মানুষ এত নীচু হয়। বাবার বন্ধুর ছেলে বলে কিছু বললাম না। যদি অন্য কেউ হত তাহলে......
হয়েছে। হয়েছে। এখন চুপ কর। রাস্তার মানুষ কি মনে করবে? না হয় কথাটা বলেই ফেললাম তাই বলে এত কথা?
আপনি বাড়ি চলে যান। আমি একা যেতে পারব। এ কথা শুনে আমি কিছু না বলে তার সঙ্গে হাঁটছি। সামান্য একটু যাওয়ার পর আবার দাড়িয়ে বলল,
কি হল? আমি আপনাকে বাড়ি যেতে বলি নাই। তার কথা শুনে আমি আর স্থির থাকতে পারলাম না। রাগ করে বাড়ি চলে আসি। পরে কোন দিন মা তাদের বাড়ি যেতে বললে বিভিন্ন কারণ, ছল-চাতুরী করে না বলে দেই। আর মেয়েটি আমাদের বাড়িতে আসলে আমি নিজেই বাড়িতে থাকিনা। আমি চাই না তার মুখ আর এক বার দেখি।
অর্নাস ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েছি কিন্তু পরীক্ষার রেজাল্ট হয় নাই। তাই বলে অলস দিন কাটানো। একদিন রাতের খাবার খেতে খেতে মা বলল,
তোর বাবার বন্ধুর মেয়েটি মাঝে মাঝে বেড়াতে আসত যে। ঐ যে সুন্দরী মেয়েটা।
হুঁ।
তার সামনের শুক্রবার বিয়ে। আমাকে কাল যেতে হবে। তুই শুক্রবার সকাল বেলা যাস্। শুনে মনটা খারাপ হয়ে হল। ঐ মেয়েটার জন্য জীবনে আর কোন মেয়ের দিকে তাকাতে সাহস পাইনি। ভাবি যদি তার মতো ..........। হঠাৎ মা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে বলেন,
মেয়েটিকে আমার খুব পছন্দ হত। ভাবতাম তুই চাকরী পেলে বিয়ের প্রস্তাবটা দিয়ে দিব। কিন্তু এরই মাঝে তার বাবা অন্য একটি ছেলের সঙ্গে বিয়ে ঠিক করল। আসলে আল্লাহ যার জোড়া যার সঙ্গে রেখেছেন তার সঙ্গে তার বিয়ে হবেই। আমি কিছু বলি না শুধু শুনি আর মনে মনে অনেক কিছই ভাবি।
মা পরের দিন চলে গেলেও শুক্রবার আমার যাওয়া হয়নি। আমার মনটা চায় তার মুখটা জীবনে আর একবার দেখতে। তাই বাড়িতে ছিলাম। বিকাল বেলা মেয়েটা হাঁপাতে হাঁপাতে আমাদের বাড়িতে আসে। আমি তখন বিছানায় শুয়ে ছিলাম। এসে আমার হাত ধরে টেনে তুলে বলল
চল তারা তারি আমরা পালিয়ে যাই।
পালিয়ে যাই মানে?
মানে আবার কি? পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করব। কথাটি শুনে আমি কিছু ভাবতে পারছি না। বিছানা থেকে নেমে দাড়াবো তাও পারছি না। সে আবার বলা শুরু করল,
বিশ্বাস কর আমি তোমাকে পরীক্ষা করার জন্য হেয়ালি করে ঐ কথাগুলো বলেছিলাম। পরে তোমার দেখা পাওয়ার জন্য বারবার এই বাড়িতে আসা কিন্তু দেখা পাইনি তোমার। এখন চলো। দেরি করলে আবার ধরা পরতে পারি।
কিন্তু?
কোন কিন্তু নয়। আমার কাছে কিছু টাকা আছে। অলঙ্কার তো আছেই। আমি কিছু না বলে তাড়াতাড়ি প্যার্ন্ট, শার্ট পরে ঐযে পালিয়ে এসে বিয়ে করি। তার কিছু দিন পর বাড়িতে গেলে আমার এবং তোর মায়ের বাবা আমাদের বিয়ে মেনে নেয় না। আমাদের বাড়িতে উঠতে দেয়। আমরা ফিরে আসি। আর কোনদিন আমাদের আর বাড়ি ফেরা হয়নি। পরে অবশ্য আমার বাবা আর তোর মায়ের বাবা সব ঠিক করে আমাদের ডেকেছিল। আমরা যাইনি। তোর মা যেতে দেয়নি। আমাদের সংসার শত দুঃখের মাঝেও ভালই চলছিল। হঠাৎ করে একদিন কি যে হল তোর মায়ের। আমি অফিস থেকে ফিরে দেখি অসুস্থ তোর মা। তুই তোর মায়ের মাথায় হাত বুলাচ্ছিস আর কাঁদছিস। তোর মা বিছানা থেকে উঠতে পারে না। তার পর...................।
মারে, আমাকে ধর। আমি আর কথা বলতে পারছি না। ঐ দেখ্, ঐ দেখ্ তোর মা আমাকে দুহাত বাড়িয়ে ডাকছে। আমি আর দেরি করতে পারছি না। দেখতো মুকুল এসেছে কিনা? মুকুল আমার ছোট ভাই। মা মারা যাওয়ার পর তার কেন যেন উদাস ভঙ্গি। কোন দিন বাসায় ফেরে কোন দিন বন্ধুদের বাসায় রাত কাটায়। বাবা লুটিয়ে পরল। এত ডাকলাম আর শুনলো না। জীবনের মায়া ত্যাগ করে ছুটে চলল এমন এক জগতে যার শুরু আছে শেষ নেই।
হয়ত বাবা চলে যাবে বলে আমাকে তার জীবনের না বলা ঘটনাটা বলে গেল। আমি যেন কাঁদতে ভুলে গেলাম। জোরে চিৎকার দিতে পারছি না। শুধু বিড়বিড় করে পড়তে শুরু করলাম
ইন্না লিল্লাহী ওয়া ইন্না ইলাহী রাজিউন।
যে লোকটি কিছুন আগে আমাকে বলল, ‘তুই আমাকে ছেড়ে কোথাও যাস না।’ সে এখন নিজেই চলে যাচ্ছে। হয়ত এজন্য বলেছেন, ‘দুচোখ যে দিকে যায় আমি সে দিকে চলে যাব সকাল বেলা।’
তার কথাই কি সত্যি হল?
(ঘুমহীন রাত_জরীফ উদ্দীন)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:২৪

পাপেল মাহমুদ (কিশোর) বলেছেন: বানানে কিছু ভূল আছে। ঠিক করে নিন।

২| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৫০

জরীফ উদ্দীন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া ফন্টস ঠিক করলাম।

৩| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৫৮

ফ্‌জলূল করিম বলেছেন: ভাল লাগল ।

৪| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২০

জরীফ উদ্দীন বলেছেন: ধন্যবাদ ফজলুল করিম ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.