নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিতর্ক করি ও খেতে ভালোবাসি।

আনাছ আল জায়েদ

আনাছ আল জায়েদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাক্যের দ্ব্যর্থকতা

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৪০


দ্ব্যর্থকতা হল ভাষার বাগর্থিক ত্রুটি বিশেষ। যুক্তির মধ্যদিয়ে একটি বাক্যকে যদি একাধিক অর্থে ব্যবহার করা যায় অথবা বাক্যটি এরূপ ভাবে গঠিত হয় যার একাধিক অর্থ করা সম্ভব তাকে বাক্যের দ্ব্যর্থকতা বলে।
সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার জন্য এরূপ বাক্য পরিহার করা উচিত। প্রাচীন গ্রিসের দেবমন্দিরের রক্ষকরা এরকম দ্ব্যর্থক বাক্য ব্যবহার করে ভবিষ্যৎবাণী দিতেন। প্রাচীন লিডিয়ার সম্রাট ক্রিসাস পারস্য রাজ্য ধ্বংস করার পূর্বে দেবতার কাছে ভবিষ্যৎ জানতে চায়। দেবতারা বলেন যে,
‘ আপনি একটি বিরাট সাম্রাজ্য ধ্বংস করবেন’- পরে দেখা গেল, পারস্য রাজ্য নয় নিজ রাষ্ট্র।
বাক্যের দ্ব্যর্থকতা ২ ধরনের হতে পারে। যথা.
১. শব্দজাত দ্ব্যর্থকতা।
২. গঠনজাত দ্ব্যর্থকতা।

শব্দজাত দ্ব্যর্থকতা
বাক্যের কোন একটি শব্দ এমন ভাবে ব্যবহার করা হল যাতে বাক্যের প্রকৃত অর্থ অস্পষ্ট হয় তাকে শব্দজাত দ্ব্যর্থকতা বলে। যেমন.
পূজা শেষে মেয়েটি বলল, ঠাকুর আমাকে বর দাও।
এখানে,
‘বর’ শব্দটি স্বামী/ আর্শীবাদ- উভয় অর্থে যথাযথ ভাবে ব্যবহার করা যায়।

গঠনজাত দ্ব্যর্থকতা
বাক্যের গঠনগত কারণে অনেক সময় অর্থের ত্রুটি দেখা যায়। যেমন.
‘ঢাকা থেকে কেনা রহিমের কমদামী ঘড়িটি চুরি করবে না’।
এখানে,
হতে পারে, কমদামী ঘড়ি চুরি করবে না, ঢাকা ব্যতিত অন্যকোথায় থেকে কেনা ঘড়িটি চুরি করবে, ঘড়ি ব্যতিত অন্যকিছু চুরি করা যাবে।

ভাষার বাগর্থিক ত্রুটি হল দ্ব্যর্থকতা। অর্থাৎ, ভাষিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে এটি নানা অস্পষ্টতার জন্ম দেয়।

না বোধক বাক্য

আমরা অনেক সময় ‘না বোধক- বাক্যে’ দ্ব্যর্থকতা খুঁজে পাই। যেমন.

‘ আমি আজ বাড়ির কাজ করিনি’।

এখানে, হতে পারে- তিনি প্রতিদিন কাজ করেন কিন্তু আজ করেননি অথবা আজকে তাঁর কাজ করার কথা ছিল কিন্তু তিনি করতে
পারেননি।

পরিমাপক
অনেক সময় ‘পরিমাপক’- দ্ব্যর্থকতা হয়। যেমন.
সে একটু অন্যরকম তাঁর সাথে কথা বলতে পার।
সে একটু অন্যরকম তাঁর সাথে কথা বলে লাভ নেই।
তুলনা অর্থে
‘তুলনা অর্থে’- বাগর্থিক ত্রুটি হয়। যেমন.
'শচিন/ সৌরভের মতো ক্রিকেটার হও।'

এখানে,
হতে পারে তাকে শচিন/ সৌরভ হতে হবে অথবা শচিন/ সৌরভের মতো উঁচু মাপের ক্রিকেটার হতে হবে।

ভিন্ন অর্থ প্রয়োগে
একটি শব্দের বিভিন্ন অর্থ ব্যবহারে বাগর্থিক ত্রুটি হয়। যেমন.
‘আমি তাঁকে মাতাল অবস্থায় দেখেছি’।
এখানে,
হতে পারে, আমি মাতাল অবস্থায় ছিলাম/ সে মাতাল অবস্থায় ছিল।

ঋণাত্মক শব্দ ব্যবহার

অনেক সময় ঋণাত্মক শব্দ ব্যবহারে বাগর্থিক ত্রুটি হয়।যেমন.
‘ তোমার সাথে আমার কথা না বলাই ভালো ছিল’
এখানে,
তুমি ব্যতীত অন্য কারো সাথে কথা বললে ভালো হত অথবা আমি ব্যতীত অন্য কারো সাথে কথা বললে তোমার ভালো হত।

উচ্চারণগত ত্রুটি
উচ্চারণ সমস্যার কারণে বাগর্থিক ত্রুটি হয়। যেমন.
তোমার পরা শেষ।(পরিধান অর্থে)
তোমার পড়া থে)(অধ্যয়ন অর্থে)

অ- উপসর্গের জন্য
অ- উপসর্গটি ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয়রূপে বসে। যেমন.
ইতিবাচক অর্থে- অসাধারণ, অসীম, অপূর্ব।
নেতিবাচক অর্থে- আকেজ,অকাজ।

বিশেষ্য- বিশেষণ পদগত ত্রুটি
অনেক সময় বিশেষ্য- বিশেষণ পদগত ত্রুটিতে বাগর্থিক ত্রুটি হয়। যেমন.
বেলা চলে গেল।( নারীর নাম- বিশেষ্য)
বেলা চলে গেল। (সময়- বিশেষষণ)

উপরোক্ত বাগর্থিক ত্রুটিগুলো পরিহার করলে, আমরা প্রমিত ভাষায় আর অর্থপূর্ণ যোগাযোগ করতে পারবে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:৪৫

আখেনাটেন বলেছেন: বাক্য গঠনে উপকারী।

২| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:০৮

আনাছ আল জায়েদ বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: চমৎকার একটি আলচনা, তবে একদম শেষের বাক্যটিতে মনে হয় টাইপো রয়ে গেছে।

৪| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:২৫

আনাছ আল জায়েদ বলেছেন: হা হা হা… স্যার। আমি একদম চিন্তা না করে এই বাক্যটি ব্যবহার করেছি। বাহ… মিলে গেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.