নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিতর্ক করি ও খেতে ভালোবাসি।

আনাছ আল জায়েদ

আনাছ আল জায়েদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতীয় দর্শন

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:১৯

প্রাচীনকাল থেকে শুরু করে আধুনিক বিজ্ঞান প্রভাবিত যুগ পর্যন্ত ভারতবর্ষের রিশি-মুনি ও যোগী- সন্ন্যাসী জীবন ও জগতের মৌলিক প্রশ্নাবলী নিয়ে যে চিন্তা ভাবনা করেছেন তাঁদের সমন্বিত রূপকে বলা হয় ভারতীয় দর্শন।

সভ্যতার সেই ঊষালগ্ন থেকেই ভারতীয় মনীষীরা এ জগতের স্বরূপ কি? জগতের মাঝে মানুষের অধিষ্ঠান কি রূপ, ভালো-মন্দের মাপকাঠি কীসে, বেঁচে থাকার সার্থকতা কোথায়, মানুষের আদিবাস কোথায় তাঁর স্বরূপ কি, সে-জগতের সাথে এ জগতের সম্পর্ক কি, স্রষ্টা বলে যাকে আমরা স্বীকার করি তাঁর স্বরূপ কি?জীবনের লক্ষ্য কি? মানুষের চারদিকে এত দুঃখ- দুর্দশা কেন?কীভাবে মানুষ এই চক্রায়িত দুষ্ট বলয় থেকে মুক্তি পেতে পারে? ধর্ম- অর্থ- কাম- মৌক্ষ এই চারটি জীবনাদর্শের মাঝে কোনটি মানুষের জন্য সর্বোত্তম কাম্য- এ জাতীয় মৌলিক প্রশ্নের যথার্থ অনুসন্ধান করে ভারতীয় দর্শন।

বেদকে কেন্দ্র করে ভারতীয় দর্শনের উৎপত্তি ঘটেছে বলে মনে করে আধুনিক পণ্ডিতরা। আধুনিক বিদ্বানদের মতে, বেদ হচ্ছে ভারতের প্রাচীন সাহিত্য, সংস্কৃতি, চিন্তাধারা ও দর্শনের একমাত্র ধারক ও বাহক।

আধুনিক বিদ্বানদের মতে, ভারতীয় দর্শনের বিবর্তনের ইতিহাস এক অনন্য বিশিষ্টয়ের অধিকারী। ভারতীয় দার্শনিকরা দর্শনকে কেবল তত্ত্বালোচনার মাঝে সীমাবদ্ধ রাখেন নি বরং তাঁদের কাছে দর্শন হল জীবনকে যথার্থভাবে পরিচালিত করা।

একজন ভারতীয় দার্শনিক প্রথমে প্রতিপক্ষের বক্তব্য শ্রদ্ধার সাথে শ্রবণ করেন, তারপর প্রতি পক্ষের বক্তব্য খণ্ডন করেন এবং সবশেষে নিজের বক্তব্য হাজির করেন।
ভারতীয় দর্শন বিকাশের শ্রেণিবিভাগের সময়।
১. খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০০-১৬০০ = বৈদিক যুগ
২. খ্রিষ্টপূর্ব ৬০০-২০০ = মহাকব্যের যুগ
৩. খ্রিষ্টপূর্ব ২০০ থেকে শুরু = সূত্র- সাহিত্যের যুগ
৪. খ্রিষ্টপূর্ব ২০০ থেকে শুরু = পাণ্ডিত্যের যুগ।

ভারতীয় দর্শনের সাধারণ বৈশিষ্ট্য
কোন বিশেষ দেশের দার্শনিক চিন্তার বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে আমরা সে দেশের ভৌগলিক অবস্থান, পারিপার্শ্বিক অবস্থা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে পারি। ভারতীয় দর্শনের বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে আমরা ভারতবর্ষের সাম্যক অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারি।
ভারতবর্ষ প্রধানত একটি কৃষি প্রধান দেশ। ভারতবর্ষ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। এই সৌন্দর্যই সভ্যতার ঊষালগ্ন থেকে অদ্যাবধি স্বদেশি ও বিদেশি পর্যটক ও পরিব্রাজকদের কাব্যিক ও দার্শনিক দৃষ্টি আকৃষ্ট করতে সমর্থ হয়েছে।

এক- সম্প্রদায় নির্ভরতা

যে সকল সম্প্রদায়ের উদ্ভব ভারত বর্ষে ঘটেছে তারাই পরবর্তীতে বিকশিত হয়েছে। কোন দার্শনিক ব্যক্তি- সত্বার দাবি করেননি। প্রত্যেকই কোন না কোন সম্প্রদায়ের সমর্থক। তাই নতুন কথাগুলোও তাঁরা পুরাতনের মত সমর্থন করে গেছেন। তাই ভারতীয় দর্শন একান্তভাবে সম্প্রদায় নির্ভর।

দুই- অতীতনির্ভর

ভারতীয় দর্শন অতীতকে বাদ দিয়ে সামনের দিকে এগুতে পারেনি। একারণেই ভারতীয় দর্শনের আধুনিক ব্যাখ্যায়ও প্রাচীন, এমনকি সভ্যতার আদিপর্বের বহু ধ্যান ,ধারনা ও সংস্কারের মিশ্রণ লক্ষ করা যায়। অতীত নির্ভর বলেই ভারতীয় দার্শনিকের তথাকথিত অভিনব তত্ত্বে উপনীত হওয়ার পরিবর্তে প্রাচীন তত্ত্বের কাঠামোর মধ্যেই নিজেদের মতবাদকে সীমাবদ্ধ রেখেছেন।

তিন- সূত্র নির্ভরতা

ভারতীয় দর্শনের অপর একটি বৈশিষ্ট্যের মাঝে সূত্র সাহিত্যের উপর অধিক নির্ভরশীল হওয়া। ভারতীয় দর্শনের প্রচলিত ইতিহাসে এই পর্যন্ত যে সকল সম্প্রদায়ের উল্লেখ পাওয়া যায়, তাঁদের সবার মূলগ্রন্থেই এক একটি সূত্র সংকলনের অস্তিত্ব দেখা যায়।

চার- রচনা শৈলীর বিশিষ্টতা

রচনা শৈলীর স্বকীয়তা ভারতীয় দর্শনের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এখানকার দার্শনিকদের রচনারীতি তিনটি ক্রমে বিন্যস্ত। যথা. পূর্বপক্ষ, নিরাকরণ ও সিদ্ধান্ত। এখানে প্রথমে প্রতিপক্ষের মতকে শ্রদ্ধার সাথে শ্রবণ করা হয়, যুক্তি দিয়ে প্রতিপক্ষের মতের নিরাকরণ করা হয় এবং সবশেষে নিজের সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা হয়।

পাঁচ- ধর্মের সাথে দর্শনের সংযোগ

ভারতীয় সংস্কৃতিতে ধর্ম ও দর্শনের এক অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক লক্ষ্য করা যায়। কিছু কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় অধিকাংশ সম্প্রদায়ই ধর্ম আর দর্শন এক চোখে দেখেছে। ভারতীয় দার্শনিকরা ধর্ম আর দর্শনকে জীবনের সাথে সংযোগ করেছেন।

ছয়- কর্মবাদ
ভারতীয় দর্শনে দুঃখবাদের মূলভিত্তি কর্মবাদ। মানুষের ভাগ্য তাঁর কর্ম দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। মানুষের শুভ- অশুভ, পূর্ণ- অপূর্ণ তাঁর ভাগ্য দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।



মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:৩৩

জাহিদ হাসান বলেছেন: ভালো লাগলো। আরও কিছু লিখুন এ ব্যাপারে।

২| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৫৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


ভারতীয় দর্শনে ধর্ম ও "স্ট্রোলোজী" ছিলো বড় অংশ; ফলে, তাদের পুরাতন দর্শন মোটামুটি ভুলের উপর ভিত্তি করেই শুরু হয়েছিল; এ কারণে ইতিহাসে কোন উল্লেখযোগ্য ভারতীয় দার্শনিক নেই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.