নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা পড়িয়া রয় অবহেলায়, তাহা সমগ্রই আমার কী-প্যাডের, দূর্দান্ত গতি ছড়ায়। যদি কোন অন্ধ/বদ্ধ মনের দ্বার একবার খোলা যায়?\n

আসিফুজ্জামান জিকো

অাইন বিভাগ..

আসিফুজ্জামান জিকো › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফুহহহহ...

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৫:২৭

সন্ধ্যার সময় শ্যামলী গিয়েছিলাম, এলাকার এক রসহীন বড় ভাইয়ের সাথে। পিছন থেকে ছালা কাধে একটা বাচ্চা ( সমাজের কাছে ওরা টোকাই ) গেন্জী টাইনা ধরলো !

আমি কি রে ? ও কিছু বললো নাহ!
- শুধু অপুষ্ট শিশুর মত মাথাটা আমার দিকে তুলে, একটা হাত বাড়ায় দিলো !

আমি আবারো বললাম, কিহহহহহ ?

-ও এবার ও কিছু বললো নাহ !
হাতটা তুলেই ধরে রাখলো, হাতটা তুেল রাখতে ওর কষ্ট হচ্ছে, চোখদুটো অসম্ভব হলদেটে ছিলো।

এইবার আমিই বললাম কিছু খাবি ?
- একবারেই মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো !

ধারে কাছে কয়েক্টা চা সিগারেটের দোকান আর হোটেল। - কি খাবি ?
- ও চুপ।

কলা, পাউরুটি দেখিয়ে বললাম এগুলা ?
- ও মাথা তুলে পাশের হোটেলের পিয়াজু, চপ ওগুলোর দিকে তাকালো।

ওখানে গিয়ে বললাম, যা খাবি তুলে নে !
- ও একটা মাত্র বেগুনী তুললো !

-বললাম, আরো নে ?
- ও দ্বিধা ভরা চোখ নিয়ে আরেক্টা তুলে নিলো?
খুব রাগ হচ্ছিল, ব্যাটা পুরাই আবাল শিশু!

বললাম, ওই তর পেট ভরবে কয়টায়?
-অনেক কষ্টে এক ফোটা শব্দ বেরুলো ওর মুখ থেকে,
বললো চাইর ডে... (চারটেতে ওর পেট ভরবে ) আর এক গিলাস পানি...

( এক গ্লাস পানি ! - বিধাতা/সৃষ্টিকর্তা নামক জিনিসটার উপ্রে আমার অত্যান্ত রাগ প্রচন্ড ঘৃণা এবং দূর্দান্ত ক্ষোভ জমে থাকার এটাও একটা কারণ ! পৃথিবীর একই জলবায়ু, আবহাওয়ায় বেড়ে ওঠা মানুষগুলোর মধ্যে এত
শ্রেণী করে রেখেছে ! কারো ক্ষিধে পেলে পানি টুকু ও হিসেব করে খেতে হয় - আর কারো কারো বাড়ির অনুষ্ঠান শেষে বাসি বিরিয়ানীর স্তূপ ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হয় ! - বিধাতাজী,, আমি তোমাকে ঘৃণাই করবো শেষ পর্যন্ত, প্রচন্ড ঘৃণা...)


- যাই হোক ছেলেটা চলে গিয়েছে। আমি আর ভাইটাও ওখানে দাড়িয়ে দুটো জিলাপী খেলাম। পানি খেতে যেয়ে, রাস্তার ওপারে চোখ গেল, দেখি ছেলেটা তখন ও দাড়িয়ে আছে। চোখ নামিয়ে নিলাম। ওখানে আরো কিছুক্ষণ দাড়িয়ে ছিলাম আর আড়চোখো ওর দিকে তাকাচ্ছিলাম- শেষ যখন রিক্সাতে উঠেছি, ছেলেটি দাড়িয়ে ছিলো.. তাকিয়েছিলো আমার দিকে?


আমার রিক্সা চলতে শুরু করেছে, ছেলেটা তখন ও চেয়ে আছে ! আমরা বিপরীত দিকে যাচ্ছি, তাবুও ছেলেটা আমাদের পানে চেয়ে সামনের দিকে হাটছে ওর অনন্ত ক্ষুধার যাত্রায়...

ওর বয়স চার কি পাচ, হাটতে শেখেনি ঠিক ঠাক, তবে জীবন ওকে ঠিক ওর সমান ভারী বস্তা বইতে বাধ্য করেছে! মাঝে সাঝে জীবনের সব কিছু ভাংচুর দলামুচ করে ফেলতে ইচ্ছে করে? মনে হয় সব পাল্টে বদলে সমান সমান করে দিবো?

আবার কোন অজানা কারনেই প্রকৃতি শান্ত করে দেয় ! তখন আর কিছুই করতে পারিনা?
প্রকৃতির এই দুমুখী সাপাচরণ অসহ্য !

পুনশ্চঃ এত কথা লেখার কারন অনেক দাড় করানো যায় হয়তো, তবে সেই মুহুর্তেঃ - কিছু বছর আগে আমার একটা ছোট ভাই হয়েছিলো, ওকে বাচানো যায়নি। জন্মাবস্থায় ওর মৃত্যু হয়েছিল।

- আমি ওকে দেখতে ও পারিনি !

আমার কপালটাই এমন। ওকে ঢাকায় কবর দেওয়া হয়েছিলো। আমি আর ছোট বোনটা মিলে, ভাইটা ক্যামোন হবে তার ছক আকতাম !
মনে মনে ওর একটা চেহারা ও ছিল আমার কাছে !

- আমার ভাইটা বেচে থাকলে ঠিক আজকের এই ক্ষুধার্ত টোকাই শিশুটার মতন বয়স হইতো?

নাহ নাহ, ভুল বললাম মনে হয়?
টোকাইদের মতন হবে কেন?
আমার ভাইটা বেচে থাকলে, ঠিক আপনাদের আদরের প্রিয় কোন বাচ্চাদের মতন হইতো ?

এবার ঠিকাছে?
কারন টোকাই রা আংশিক জানোয়ার,
বাকিটা গন্ধ আর পচায় ভরা?
( আমাদিগের অধিকাংশের ধারণা )

ক্ষুধায় সোমালিয়া কিংবা নাইজেরিয়াতে মানুষ মরলে ও, সুজলা সুফলা, চোষক-শ্রেণীতে ভরা এই বাংলায় মানুষ অথবা টোকাইগুলো মরেনা।

তাতে কি, ক্ষুধা অসম্ভব আর তীব্র কিছু জ্বালা,
গোটা রাত্রিটাই ঘুমা আসেনা সালা।
আমা জানিনা আপনার সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমে
(মস্তিষ্কে) ক্ষিধের এই জ্বালানুভূতী আছে কি না?
তবে এটা বলতে পারি, ওই স্বাদ জানিলে কেউরে ফেরানো যায় না।

এক.
বাবা বলেন, খাওয়াইলে নাকি কমেনা? বিশ্বাস করেছি।
আমি বলি, কখনো কোন ক্ষূধার্ত কে ফেরায় দিয়েন না ভাই? ( হাতজোড়ে মিনতি করে গেলাম )

দুই.
টোকাই, রিক্সা, ফকীর, গরীব থেকে অাপনার চোখে যাহারা কীট শ্রেণীর, তাহারা সমস্তই মানুষ, প্রাণ আছে, আপনার মতই শ্বাস প্রশ্বাসে বাচে?
ঠাস করে চলতি রাস্তায় চড় কষিবার আগে একটু মনে করিবেন? - উচিৎ..

চলেন রাতের এই শেষ ভাগে প্রিয় কবির দু'লাইন শোনাই, হে হে, ভ্রু কুচকান কেন?
পাগল মনে হচ্ছে আম্রারে?

- মনে করার দরকার নেই, পাগল' ই...

শশশশশ, চুপ, গাআআআন শুনেন,


পুষে রাখে যেমন ঝীনুক,
খোলসের আবরণে মুক্তোর সুখ।
তেমনি তোমার নিবিড় ছোয়া,
হৃদয়ের নীল বন্দরে এএএ এ..

আমার ভিতর ও বাহিরে,
অন্তর এ অন্তর এ,
আছো তুমি,
হৃদয় জুড়ে এ এ এ এ...

কি শুনতে পাইছেন?

( চউক্ষু বুজেন তো, ধরেন তো আমার সাথে আস্তে ধীরে - আমার ভিতর ও বাহিরে, অন্তর এ অন্তর এ.... )

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.