নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা পড়িয়া রয় অবহেলায়, তাহা সমগ্রই আমার কী-প্যাডের, দূর্দান্ত গতি ছড়ায়। যদি কোন অন্ধ/বদ্ধ মনের দ্বার একবার খোলা যায়?\n

আসিফুজ্জামান জিকো

অাইন বিভাগ..

আসিফুজ্জামান জিকো › বিস্তারিত পোস্টঃ

নালিশ

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:১৫

মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকে মিরু জেলার সর্বোচ্চ মার্কস পাওয়া ছাত্রী। পরীক্ষা দিয়েছিল প্রাইমারী সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায়। বের হয়ে আমায় একটা এস এম এস দিয়েছিলো, ' পরীক্ষা সেই হইছে দোস্ত '। আমি লিখেছিলাম, তোর তো সেইইই পরীক্ষা ই হয়, এ আর নতুন কি ? সে মাস দুয়েক আগের কথা !


পরশু রাতে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের রেজাল্ট দিয়েছে। মিরুর শরীরটা ভীষণ খারাপ, তাই যেতে পারেনি দেখতে। আমায় বলেছিলো- যা না দোস্ত দেখে আয়?

আমি কনফিডেন্সে বললাম, আরে নোটিশ বোর্ডের প্রথম সারিতে তোর রোল নম্বর থাকবে, জানা কথা, দ্যাখার কি আছে?

ফোনের ওপাশে বাচ্চাদের মতন মিরুর খিল খিল হাসি শুনতে শুনতে ওর সরল মুখটা মনে পড়লো...


মিরু প্রায় পনেরো মিনিট ধরে নোটিশ বোর্ডের প্রত্যেকটি রোল খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে, কোথাও ওর রোল নেই! অবিশ্বাস্য লাগছে ওর। প্রত্যেকটা প্রশ্নের উত্তর সঠিক এবং সর্বাপেক্ষা সঠিক লিখে এসেছিলো।

আমার ফোন বাজলো,
কাদো কাদো স্বরে- তুই কই রে?
- বাসায়।
আমি আসছি।

( ওর কাদো কাদো গলায় জিগেস করতে পারলাম নাহ, কেন আসছিস? কোথাও যেতে হবে?)


মা মাত্র বেরিয়ে গেল। আমার সামনে স্বুস্বাদু এক গামলা বেলে মাছ ভাজি। মুচ মুচ করে কামড় বসাচ্ছি। মজায় চোখ বুজে আসে।


কলিং বেলের শব্দে মেজাজ খারাপ হলো। নীচে উকি দিলাম। দেখি মিরু রিকশা থেকে নামছে। আইলা উপজেলা অধিদপ্তর থেকে আমার বাসা খুব দুরে না, আর মিরু তো সচরাচর রিকশায় চাপেনা? বুঝলাম কেইস সিরিয়াস...


এই মুহুর্তে আমার উচ্ছল বন্ধু মিরু ঝর ঝর করে কাদছে। এই বারের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নাকি পাচ লক্ষ্য টাকার বিনিময়ে হয়েছে! এবং নিয়োগ প্রাপ্তরা আজ নাকি প্রায় ত্রিশ-পঞ্চাশ হাজার টাকার বিনিময়ে সুবিধামত স্কুল গুলোতে পোস্টিং পাচ্ছে ! এ খবর উপজেলা শিক্ষা অফিসারের রুম থেকে নিয়ে এসেছে আমার ক্লাসের মেধাবী, সদা হাস্যোজ্জল মিরু। আমার সামনে বসে বসে আঝোরে কাদছে?

বেলে মাছগুলোর দিকে আমি তাকালেই আমার বমি পাচ্ছে এই মুহুর্তে!


একবার কোচিং থেকে ফেরার পথে মিরুকে দশম শ্রেণীর কয়েকটা ছেলে বাজে কথা বলেছিলো। আমি এক ঘুষিতে একটার নাক ভেঙ্গে দিলাম। বাকি দুটো তা দেখে সে কি দৌড়! আমরা তখন নবম শ্রেণীতে।


সেই থেকে মিরুর ধারনা কোন ঝামেলা হলে আমি তা সমাধান করার ক্ষমতা রাখি! বারবার মিরু কেদে কেদে বলে যাচ্ছে, কিছু করনা দোস্ত? প্লীজ কিছু কর? সাথে হু হু কান্নার শব্দ!


ক্লাসের প্রাণবন্ত মেয়েটির কান্না আমার গলায় কাটার মত বিধছে। আমার কিছু করা উচিৎ! কিছু করতে ইচ্ছে ও করছে প্রচন্ড!


বলে দিবেন কেউ, আমি কি করবো?
এই নালিশ আমি কোথায় জানাবো?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.