নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা পড়িয়া রয় অবহেলায়, তাহা সমগ্রই আমার কী-প্যাডের, দূর্দান্ত গতি ছড়ায়। যদি কোন অন্ধ/বদ্ধ মনের দ্বার একবার খোলা যায়?\n

আসিফুজ্জামান জিকো

অাইন বিভাগ..

আসিফুজ্জামান জিকো › বিস্তারিত পোস্টঃ

বৃষ্টি..

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ২:০২


- আমার চেনা নদীটা।
শৈশব আর কৈশরের সাতরে পার করা সময়।



সন্ধ্যের সময় বৃষ্টিটা শো শো শব্দে নেমেছিলো।
দুঃখের কথা হচ্ছে তখন কেবলই মাত্র আমার গুড মর্নিং হয়েছে! ঘুম থেকে জাগা। অগ্যতা পেট তো খা খা! কোন মতে গোসল করেই অপ্রিয় আর পচা আক্তার হোটেলে টেবিলের তীব্র টান।
তখন ফ্যানটা ও শো শো করে ঘুরে।
তবুও পেটের খিদেয় মাথা নষ্টাবস্থায় ও ফ্যানের শব্দ ছাপিয়ে বৃষ্টির শো শো কানে আসলো।

জানার পর্দার যেপাশটা ওঠানো সেখানে চার পাচ সেকেন্ড দাড়াইয়া নিশ্চিৎ হলাম, হ্যা বৃষ্টি হচ্ছে।

তবে বৃষ্টতে যে পুলক টা মনে আসে, সেটা আসেনি পেটের জন্যে! এমন টা হয়না। বৃষ্টি হচ্ছে আমি ভিজবোনা, জানালার পাশে দাড়াবো না?
জানালা, রিকশা, ক্যাম্পাসের খোলা বারান্দায় দাড়িয়ে কিংবা চলন্ত বাসের জানালা গলিয়ে হাত বাড়িয়ে বৃষ্টিতে একবার ডান পরের বার বাম হাতটা মেলে ধরবো না?
হয়না এমন টা।

ক্ষুধা তীব্র,
ক্ষুধা ভীষণ ভারী,
ক্ষুধা বিধাতার সাথে আড়ী ,
ক্ষুধার চেয়ে সত্যি কিছু নেই,
ক্ষুধাতে অপরাধী,
ক্ষুধায় মরে বিশ্বব্যাপী।

আমি বৃষ্টি ভালোবাসি।
অজস্র জলরাশির মত অজস্র ভালোবাসা।
এই মুহুর্তে বৃষ্টি দরকার।
আমার ক্ষুধা নেই, দরকার বৃষ্টির টানা শব্দ।
খুব বৃষ্টি লাগবে, ছোটবেলার মত প্রলয়ংকারী ভয়ংকর বৃষ্টি।

বাবার আসতে রাত হয়ে যেতো।
আমি আর মা, বোনটা হাটতে ও পারেনা।
বিকেলের দৌড়ঝাপ সেরে ক্লান্ত ঘেমে তীরমীর হয়ে মাঠ থেকে বাড়ির দিকে আসছি। সন্ধ্যের বাকি বেশ তবুও হঠাৎ পুরো মাঠ, রাস্তা, নদী কিংবা ওপারের শ্মশানের আকাশ গোটা কালো হয়ে আসে। থেকে থেকে বাতাস দমকা। বাগির কাছে আসতেই কালীবাড়ীর প্রাচীন লোহার গেটে বাড়ি লাগতেই প্রকট শব্দে উড়ে যেতো পরানটা।
রাস্তার যত ধুলো আমার মাথা মুখে চুল হয়ে জার্সী আর ইংলিশ প্যান্টের ভিতরে?
বেয়াড়া বাতাস, ধুলি আসে সামনে পিছনে ডান বামে.. হঠাৎ অাালোর ঝলকানি - কড়াৎ শব্দে আবারে পানি শুণ্য পরান আমার!

মা তখন এটা সেটা তুলতে হয়তো ব্যাস্ত!
বিজলীর শব্দে ওসব ভুলে গেইটে এসে দাড়াতো।
এপাশ ওপাশে বাড়ি ছোটা কেউকে আবছা না দেখেই বলতো, জিকো নাকি রে?

আমি যখন আবছা, সে প্রশ্ন চলতো।
মার পরানে পানি আসতো আমারে দেখলেই।
বড় বড় ফোটা তখন পড়ছে, বাতাসে কদমগাছ কিংবা মটমটে কৃষ্ণ চূড়া পড়ি পড়ি করছে।
গেইট দিয়ে ঢুকতেই পিঠে এক চড়, ওটা প্রাপ্য জানি বলেই হয়তো ব্যাথা লাগতো নাহ।
হা হা হা...

ঢুকেই ছুটতাম পায়রার ঘরে,
উড়ন্তেরা ফিরেছিলো ঘরে?
লাগা টিউবওয়েলে চাপ দিয়ে তড়ি ঘড়ি করে হাতমুখ ধুয়ে তাকাইতাম ছাপিয়ে ওটা গুটি গুটি পুরো গাছ ভরা অামের দিকে?
কষ্ট লাগতো, সকালে যে কত আম্র শিশু আমার ঝরে পড়ে থাকবে?

গটা গট গেইট ঘর দুয়ার লাগায়ে দিতো মা।
বাতাস হইলেই উধাও বিদ্যুৎ সাহেব টা।
শো শো বৃষ্টি, মড়াৎ করে কোন গাছ ভেঙ্গে পড়ে, থেকে থেকে প্রচন্ড শব্দে বিজলী জ্বলে পড়ে।

আমার ভয় লাগতো না।
আলো আবছা ঘর গুলো।
মা বোনটারে নিয়ে ব্যাস্ত।
আমি ইচ্ছামত বাকি ঘর গুলোয় দুরন্ত।

আমার ঘরে মাথার সাথেই বড়ড় দুটো জানালা।
উপরের টা খুলতেই ছাট এসে লাগতো শরীরে,
লোমকুপে শিহরন।
দুই হাত দিয়ে দুটো কান বারবার চেপে ধরতাম আর ছাড়তাম।
শো শো শব্দ ঢুকে আবার বন্ধ হতো।

সে এক নেশা।
বাবা মা সকালে বেরিয়ে বিকেল সন্ধ্যেয় ফিরতো। হাজারটা বৃষ্টির দুপুরে বৃষ্টির শো শো শব্দ শুনে শুনেই আমার সময় কাটতো।
আমি ভালোবাসি বৃষ্টি।

রাত হচ্ছে, এগারো , বারো...
শো শো শব্দ কমেনা, পানি ঝরা অবিরাম।
ইলশে ভাজি কিংবা মুরগীর বাচ্চার ঝোলের বিশুদ্ধ গন্ধে পেটে মোচড় দিচ্ছে। মাঝে মাঝেই গিয়ে তুলে তুলে কিছু খেয়ে আসি তবুও পূর্ণ খাবো বাবার সাথে বলে বসে থাকা।

সময় আরো, বাবা আসছেনা।
বৃষ্টিতে কোথাও কোন রাস্তার পাশের ছাউনীর দোকানে দাড়িয়ে আছেন। নয়তো বের ই হতে পারেন নি। মার মুখে বারবার বাবা?
দুশ্চিন্তা না হলেও কেমন যেন কষ্ট হচ্ছে তখন, আব্বু কেন আসেনা?
এতরাত, বৃষ্টির শো শো..
তখন আর চাইছিনা আমি...

ঢুলু চোখ হলো, প্রায় গেসি চলে ঘুমে।
হঠাৎ লোকটার মোটর যানের বট বট শব্দ কানে।
ঝাড়ি মেরে উঠে দেখি মা, দরজা খুলে সামনে দাড়ানো।

আকাশটা তখন পুরোটা সোনালী, কোথাও কালো নেই একফোটা? পায়রার ঘর ঠিক ই আছে আমার, ঝরা আম গুলো পানিতে ভাসে আর ডুবে।

বাবা গেইট দিয়ে ঢুকে, যানটারে রেখে, খুব ক্লান্ত না হইলে কোলে তুলে নিতো কিংবা দুই হাতে আমার গোটা মুখটারে মুছে দিতো।

বাবার হাতে সিগারেট, মোটরের পেট্রোল আর ধুলো বালি মিশে কেমন যেন একটা গন্ধ লেগে থাকতো?

ওটা খুব ভালো লাগতো।
আমি বৃষ্টি চাই?
ঘ্রাণ চাই?
আমি ওই সময়টা চাই ?

মনটাই খারাপ করে দিলাম।
বৃষ্টি হলে ওটার শব্দ শুনবেন,
মন টোন খারাপ টারাপ কিচ্ছু থাকেনা।
নেশা থাকে রিম ঝিম সে শব্দে।
সেই সময়ে চাইলেই ফেলে আসা ক্ষণ ঘুরে আসা যায়।

#বৃষ্টি

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:৩৭

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: এলমেলো লেখায় মারাত্মক নতুনের দেখা পেলাম

৩১ শে মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০১

আসিফুজ্জামান জিকো বলেছেন: আপনি তো সেই লিখেন, রাখাল ভাই।
ধন্যবাদ দাদা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.