নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভোর পাচটা পচিশ, বের হতেই ঠান্ডা বাতাস ছুয়ে দিচ্ছে। ঘরেরটা গুমোট ভ্যাপসা, মোটর উৎপন্ন গরম বাতাস, অনেক বড় একটা জানালা আছে ঘরে, তাতে এই গুমোট ভাবটা যায়না।
বের হন, বাতাসটা এখন তরঙ্গের মত আসছে..
মফস্বলের খুব গরমের লোডশেডিং ময় রাত।
মশারী দিলে মনে হতো এবারই দমটা বন্ধ হবে।
সারারাত ঘেমেছি, মশা স্থির হতে ও দিতোনা।
চোখের পাতা মোটে একই হয়না।
ঠিক সাড়ে পাচটার দিকে কারেন্ট আসতো। ফ্যানটার শো শো শব্দ বাড়তো।
গরমে অতিষ্ট হয়ে শো শো শব্দে মনে মনে ইদ আনন্দ পেয়ে কোলবালিশটারে আরো টেনে আরাম করে যখন শাহী কিংবা মোঘল সম্রাটদের মতো ঘুমু্বো ভাবিয়া, অসাড় হইতে শুরু করিয়াছি....
ঠিক তখন ই বাবা মাথার চুলে হাত দিয়ে,
শরীর ঝাকিয়ে, নাড়াচাড়া দিয়া বলতো, ওঠ ওঠ ওঠ... সকাল বেলার ওঠ এ এত জলদি,মেজাজ আমার ভেতরে ফেটে ফুটে চুরমার...
যতক্ষন না জাগি, ততক্ষণ অব্দি নড়াচড়া অব্যাহত রাখিয়া, শাহী/মোঘল আমল থেকে টাইনা স্কুল আমলে এনে ফেলতো।
তখন আমি উঠে বসেই কাদতাম!
শব্দহীন কান্না, যা দুঃখ হতে আসে!
মনে হইতো পৃথিবীতে ওনার চেয়ে আর খারাপ কোন মানুষ হতে পারেই না।
ভাবতে ভাবতেই উনি ব্রাশ নিয়ে হাজির,
হাত ধরে টেনে বাইরে আনতো।
বাইরে এলেই - আজিকার মত বহু পুরোনে সেই বাতাস মিলতো।
এই বাতাস গায়ে লাগতেই ঘুম থাকতো নাহ।
বাবা বলতো খালি পায়ে দৌড়া,
শিশিরের ঘাসের উপর..
এই শিশির পায়ে লাগাইলে চোখের জ্যোতি বাড়ে, ব্রেইনের জড়তা কেটে যায়, আরো অনেক কিছু ঝাপসা শোনা যেতো!
রোজ রোজ একই কথা!
আমি তখন দৌড় শুরু করেছি...
পয়ের নীচে ঠান্ডা শিশিরে তাজা ঘাস চাপা,
দৌড় চলতো, প্রতিদিন, রোজ রোজ...
তার্পর বকুল তলার নবগঙ্গার পানিতে ডুব দিয়ে উঠলে কোন ক্লান্তি তো রইতোই না, উল্টো শরীর কাজ চাইতো? যার যেটা?
আমার তখন স্কুলে প্রচুর কাজ, পড়াশুনা কোন বিষয় না! তবে কাজটা প্রচুর...
হা হা #কৈশোর
আযান দিলো।
কান খাড়া করে আছি আমি।
৩২/২ তাজমহল রোডের আরো কিছু ব্যাচেলর চ্যালাদের কান খাড়া।
হুজুরের গট গট পায়ে হেটে গিয়ে তালা খুললেই, আমরা স্বাধীন হই। পরিধীন হই প্রতিদিন রাত বারোটায়।
হ্যা, হুজুর বের হয়েছে,
তিন, দুই এক, তলায় পৌছুলো,
চাবি আর তালার খটাং শুনতে দেরী,
তবে ফটা ফট আমাদের উপর নীচের কয়েকটা ফ্লাটের প্রধান ফটক খুলতে দেরী হয়না!
আমি একটু স্লো আজকে।
আযান শেষ হয়নি এখনো।
মানিব্যাগ থেকে টাকা বের করলাম।
লাইট বন্ধ করতেই অর্ধেক খোলা পর্দা দিয়ে,
অন্ধকারে বড় এক দলা বরফের সাদা বিচ্ছুরিত আলো ঢুকতে লাগলো।
পর্দা গলে ঢোকা এই আলো তুলার চেয়ে নরম।
প্রচন্ড তেষ্টায় এক গ্লাস ঠান্ডা পানির চেয়ে তরল।
আযান শেষ হলো।
ফ্যানের শো শো শব্দ নেই।
সকালের পাখি ডাকলো,
একবার, দুইবার, ডাকে..
এবার দুটো একসাথে..
কয়েক সেকেন্ড পরে,
এদের ডাকের সাথে ওপাশের বিণ্ডিংয়ের ফাকে কোখাও বাস করে থাকা দুটো আরম্ভ করলো..
দুরে, আরো দুরে, কিচির মিচির বাড়ছে।
আমাকে আরো ধীর করে দিলো কিচির মিচির।
ঠিক এই মুহুর্তে আমি আধ খোলা জানালার সামনে বসে আছি।
সময়টা ছয়টা বেজে সাত...
বাইরের বাতাসটা তরঙ্গের মতই বইছে।
জীবন থেকে সময়গুলো যেমনি চলে যাচ্ছে!
টের ও পাইনা?
আমি দৌড়াতে পারিনা, জোরে কথা, প্রাণ খুলে হাসা কিংবা হেড়ে গলায় মাঠের ঠিক মধ্যিখানে ইচ্ছামত গান গাওয়া হয়না?
সময় থামছে না?
০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:৪৫
আসিফুজ্জামান জিকো বলেছেন: ধন্যবাদ সোহান ভা..
২| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:২৫
বিজন রয় বলেছেন: সুন্দর।
++
৩| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:০৫
ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: হুম। মনে হল কিছুটা অসমাপ্ত লেখা।
০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:৪৬
আসিফুজ্জামান জিকো বলেছেন: এখন মনে হচ্ছে আপু..
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:০৭
রাজসোহান বলেছেন: ভালো ছিলো লেখাটা, +