নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা পড়িয়া রয় অবহেলায়, তাহা সমগ্রই আমার কী-প্যাডের, দূর্দান্ত গতি ছড়ায়। যদি কোন অন্ধ/বদ্ধ মনের দ্বার একবার খোলা যায়?\n

আসিফুজ্জামান জিকো

অাইন বিভাগ..

আসিফুজ্জামান জিকো › বিস্তারিত পোস্টঃ

কয়েক মুহুর্ত চাইছি...

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৩:৪২




সন্ধ্যার সময় শ্যামলী গিয়েছিলা এলাকার বড় ভাইয়ের সাথে।
পিছন থেকে ছালা কাধে একটা বাচ্চা( সমাজের কাছে ওরা টোকাই ) গেন্জী টাইনা ধরলো !

আমি কি রে ?
ও কিছু বললো নাহ!
- শুধু অপুষ্ট শিশুর মত মাথাটা আমার দিকে তুলে, একটা হাত বাড়ায় দিলো !
আমি আবারো বললাম, কিহহহহহ ?

-ও এবার ও কিছু বললো নাহ,হাতটা তুলেই ধরে রেখেছে, হাতটা তুলে রাখতে ওর কষ্ট হচ্ছে,চোখদুটো অসম্ভব হলদেটে ছিলো..


এইবার আমিই বললাম কিছু খাবি ?
- একবারেই মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো!

ধারে কাছে কয়েক্টা চা সিগারেটের দোকান আর হোটেল ছিলো,
বললাম কি খাবি ?
- ও চুপ...

রোযার মাস, হোটেল গুলি তখনো ইফতারি বিকানোর পয়সা গুনে শেষ করতে পারেনি।

কলা, পাউরুটি দেখিয়ে বললাম এগুলা ?
- ও মাথা তুলে পাশের হোটেলের পিয়াজু, চপ ওগুলোর দিকে তাকালো।

ওখানে গিয়ে বললাম, যা খাবি তুলে নে?
- ও একটা মাত্র বেগুনী তুললো!
বললাম, আরো নে ?
- ও দ্বিধা ভরা চোখ নিয়ে আরেক্টা তুলে নিলো..!
রাগ হচ্ছিল, ব্যাটা পুরাই আবাল শিশু,বললাম, ওই তর পেট ভরবে কয়টায়..?
-বললো, চাইর ডে (চারটেতে ওর পেট ভরবে ),
আর এক গিলাস পানি..

( এক গ্লাস পানি ! - বিধাতা নামক জিনিসটার উপ্রে আমার অত্যান্ত রাগ, ঘৃণা, ক্ষোভের এটা ও একটা কারণ!পৃথিবীর একই জলবায়ু, আবহাওয়ায় বেড়ে ওঠা মানুষগুলোর মধ্যে এত শ্রেণী করে রেখেছে, কারো ক্ষিধে পেলে পানি টুকু ও হিসেব করে খেতে হয়, আর কারো বাড়ির অনুষ্ঠান শেষে বাসি বিরিয়ানী ডাস্টবিনে ফেলে দেয়! - বিধাতাজী আমি তোমাকে ঘৃণাই করবো শেষ পর্যন্ত )

যাই হোক ছেলেটা চলে গিয়েছে। আমি আর ভাইটাও ওখানে দাড়িয়ে দুটো জিলাপী খেলাম। পানি খেতে যেয়ে, রাস্তার ওপারে চোখ গেল, দেখি ছেলেটা তখন ও দাড়িয়ে আছে। চোখ নামিয়ে নিলাম। ওখানে আরো কিছুক্ষণ দাড়িয়ে ছিলাম আর আড়চোখে ওর দিকে তাকাচ্ছিলাম- শেষ যখন রিক্সাতে উঠেছি, ছেলেটি দাড়িয়ে ছিলো.. তাকিয়েছিলো..

আমার রিক্সা চলতে শুরু করেছে, ছেলেটা তখন ও চেয়ে আছে। আমরা বিপরীত দিকে যাচ্ছি, তবুও ছেলেটা আমাদের পানে চেয়ে সামনের দিকে হাটছে ওর অনন্ত ক্ষুধার যাত্রায়...

এত কথা লেখার কারন নেই, তবু কিছু বছর আগে আমার একটা ছোট ভাই হয়েছিল। ওকে বাচানো যায়নি।
জন্মাবস্থায় ওর মৃত্যু হয়েছিল।আমি ওকে দেখতে ও পারিনি।

আমার কপালটাই এইরকম,ওকে ঢাকাতে কবর দেওয়া হয়েছিল। আমি আর ছোট বোনটা মিলে, ভাইটা ক্যামোন হবে তার ছক আকতাম, মনে মনে ওর একটা চেহারা ও ছিল আমার কাছে..

- আমার ভাইটা বেচে থাকলে ঠিক আজকের এই ক্ষুধার্ত টোকাই শিশুটার মতন বয়স হইতো...
২০১৫'র কোন এক সন্ধ্যায়...

ধন্যবাদ আপনার কিছু মুহুর্ত দেবার জন্যে...

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৮:৪১

মহাসিন মহী বলেছেন: এই পথশিশুদের জন্য উচিত আমাদের সকলের যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসা। সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো এদের ক্ষুধা পেলে হাতের কাছে খাবার না পেলেও মাদক ঠিকই পেয়ে যায়।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৫:৫৯

আসিফুজ্জামান জিকো বলেছেন: ওর নাম মারুফ, ঠিকানা, কলাবাগান ফুটপাত, জন্মসুত্রে যারজ; টোকাই বইল্লা যারে গালী দেই আমরা! ও ডেনড্রাইটার আডা হুঙ্গে ; করলাম পাকড়াও, ক্যাম্পাসের ভিত্রে পুইরা বললাম হেতু কি মারুফ মিঞা? এগুলা কেডায শিখাইছে? কইলো বড় টোকাইয়েরা.. কিল্লাই হিখলি নেশা? দিমু থাবড়া একটা...

কইলো দেন, আডার কৌটাডা ও দেন?
কই্লাম তোর তো বিরাট সাহস, অই স্যাচ্যা।দে তো এরে? কইলে দেতে হয় দেন; তার আগে আডার কৌটাডা দেন?
প্যাড জল্তাছে ক্ষুধায়?

কইলাম তাইলে আবার এডি টানোস ক্যা খাবার না খাইয়া?
কইলো ৩২ টেকার আডা হুখলে সারা দিন ক্ষুধাত ধরেরা, টোকাইয়া পাই পুচ্পান্ন টেকা, পথে পথে ঘুর্তি ঘুর্তি ৩২ টিকা এ থাহেনা কাছে, ক্ষিধার্তে বাচতিই আডা হুঙ্গি বাহে!

ওর পেটের চামড়া হাড়ের সাথে লাগা, স্বাস চলছেনা, জন্ডিসের মত হলদেটে চোখ, এই শীতেও ফিনফিনে ছেড়া একটা গেঞ্জী পরা, তততক্ষণে মারুফের চেয়ে ছোট বড় মিশেলের পাচ সাতটা অতি উৎসুক হয়ে ফ্যাল ফ্যাল করে চাইছে আমাদের দিকে, প্রত্যেকের হাতে ডেনড্রাইট আঠা পলিথিনে মুড়িয়ে পেছনে ধরা!

এই নেশা ক্ষুধা ভুলানিয়া, এই নেশায় আভিজাত্য নেই, নাই কোন টাল-মাতাল অবস্থা...
আমি বলছি না জারয মারফ যার বাবা মা জন্মের পরে ধানমন্ডি লেকে ফে্লে রেখে জীবনের সব দায়িত্ব প্রতৃতির উপর ছেড়ে চলে গেছে তারে আপনাকেই খাওয়াইতে হবে! আমি বলতে এসেছি আমাদের জীবন পরিক্রমায় একটু অবসরে, চোখের সামনে স্রষ্টা ওরকম।কোন ক্ষুধিতরে আনি যদি ছাড়ে তবে সময় সুযোগ বুঝে আপনি ওর পেটের একবেলার সুখ হয়ে দেখতে পারেন, কথা দিচ্ছি ওর পরম মমতার দৃষ্টি তে যে রকম সুখ আপনার প্রাণ ছুয়ে যাবে, তা হাজার কোটি টাকাতেও কোথাও আপনি ধরতে পারবেন না জনাব।

এইটা ও সমস্যা নাহ, সমস্যাটা মানসিকতায় ভাই, আমরা কোন পজিটিভ কথার ভিতরে ও নেগেটীভ চালান দিযেসতবেই সুখ পাই।
ধন্যবাদ ভালো থাকবেন, যার যার অবস্থান থেকে কিছু করলেই জীবন জিতে যায়...

২| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:২৫

শায়মা বলেছেন: ওরাও আমাদের সেই ছোট্টভাই বা ছোট্ট বোন শুধু জন্মের স্থান কাল পাত্র ভেদে অনেক দূরে সরে গেছে। ভাইয়া তোমার ভাইটার জন্য অনেক অনেক দোয়া। যেখানেই থাকুক ভালো থাকুক সে। আর ঐ ক্ষুধার্ত বাবুটাও যেন পেট ভরে খেতে পায় এই দোয়াই করছি।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৬:০৩

আসিফুজ্জামান জিকো বলেছেন: ধন্যবাদ আপু, ভালো থাকবেন সবসময়। আপনার সুন্দর চিন্তাতাই অাপনার সুন্দর মনের পরিচায়ক...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.