নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সুখী মানুষ, স্রষ্টার অপার ক্ষমা ও করুণাধন্য, তাই স্রষ্টার প্রতি শ্রদ্ধাবনত।

খায়রুল আহসান

অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।

খায়রুল আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

অজানা পথের অচেনা সাথী

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৭:০০

চাকুরী জীবনে বহুবার বিদেশ ভ্রমণ করেছি, কখনো কর্তব্য পালন উপলক্ষে, কখনো বা কর্তব্য পালন শেষে বহির্বাংলাদেশ ছুটি নিয়ে আশে পাশের দুই একটি দেশ ঘুরে দেখেছি। পাশের দেশ ভারত থেকে শুরু করে পশ্চিমে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ, আর পূর্বে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশ আগেই দেখা ছিলো। অবসর গ্রহণের পর সস্ত্রীক ও সবান্ধব এক সপ্তাহ ধরে নেপাল ঘুরে এসেছি। তার পরের বছর ভাবলাম, বহুদিন ধরেই তো আমেরিকা প্রবাসী আত্মীয় স্বজন ও কিছু অন্তরঙ্গ বন্ধুবান্ধব তাদের আতিথেয়তা গ্রহণের আমন্ত্রণ জানিয়ে আসছে। হাতে সময় যেহেতু অঢেল, এবারে তাদের ডাকে একবার সাড়া দেয়া উচিত।

ক্যাডেট কলেজের এক ছোট ভাই ট্রাভেল এজেন্সীর ব্যবসা করে। তার সাথে একসাথে কিছু সমাজকল্যানমূলক কাজও করেছি। তাকে একদিন এই পরিকল্পনার কথা জানাবার সাথে সাথে সে আমাকে উৎসাহিত করলো আর সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিলো। অনলাইন আবেদন করে অতি সহজে খুব দ্রুতই আমেরিকার মাল্টিপল ভিসা পেয়ে গেলাম। যেরকম ভাবনা, সেরকম কাজ। সেই ছোটভাইকে বলার এক সপ্তাহের মধ্যে দুবাই এ থাকার তিনদিনের ভিসাসহ এমিরেটস এয়ার লাইন্সের ঢাকা-দুবাই-ডালাস এর টিকেট হাতে পেয়ে গেলাম। তারপরে আমেরিকান এয়ার লাইন্সের কানেকটিং ফ্লাইটে আমার গন্তব্য কলাম্বাস ওহায়ো বিমান বন্দর। ওহায়োর এথেন্স শহরে আমার আপন ভাগ্নে মিঠু সপরিবারে থাকে। সে ওহায়ো বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে। তার দাবী, আমেরিকায় যেখানেই যাইনা কেন, আগে যেন তার বাসায় উঠি এবং বেশ কিছুদিন থাকি। আগে থেকেই ও বলে দিয়েছে, আমরা সেভাবেই যেন আমাদের সফরসূচী প্রণয়ন করি।

১২ এপ্রিল ২০১৩ তারিখে সকাল দশটায় দুবাই এর উদ্দেশ্যে সস্ত্রীক ঢাকা ছাড়লাম। সেই মরুর দেশে বসেই পান্তা ইলিশ খেয়ে (বন্ধুর কারণে বাধ্য হয়েছিলাম, যদিও আমি আজকের যুগের এই প্রহসনমূলক, আরোপিত, শহুরে কালচারে বিশেষ উৎসাহী নই) সবান্ধব পহেলা বৈশাখ পালন করে ১৫ তারিখ মধ্যরাতে এমিরেটস এয়ার লাইন্সের দুবাই-ডালাস ফ্লাইটে চড়লাম। ডালাসেই ইমিগ্রেশন আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হবে। হাতে থাকবে মোট সাড়ে তিন ঘন্টা সময়। তারপরে আমেরিকান এয়ার লাইন্সের কানেকটিং ফ্লাইট ধরতে হবে। ইমিগ্রেশন আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে গিয়ে হেনস্তা হবার নানারকম কাহিনী অনেকের কাছে শুনেছিলাম, তাই মনে মনে একটু ভয়ও ছিল। এই মৃদু আশঙ্কা নিয়েই প্লেন ছাড়ার পর আলো নিভিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা শুরু করলাম। দ্রুত ঘুমিয়েও পড়লাম। কিন্তু প্লেন যাচ্ছে পশ্চিমে, রাতের বিস্তৃতি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকলো, রাত আর যেন শেষ হয়না!

যাহোক, পরেরদিন যথাসময়ে ডালাস ফোর্ট ওয়ার্থ আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে অবতরণ করলাম। সাথে ল্যাপটপ থাকাতে ঘাটে ঘাটে আমার অবস্থানের কথা বিশ্বকে জানাতে অসুবিধে হয়নি। ভাবখানা এই যেন গোটা পৃথিবী আমার অবস্থান জানার জন্য বিশেষ আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছে। আসল উদ্দেশ্য তো ঢাকায় রেখে আসা ছেলেদেরকে আর বৌমাদেরকে আমাদের খবর জানানো, আর ও প্রান্তে যে আমাদেরকে রিসিভ করতে বিমান বন্দরে আসবে, সেই মিঠুকে জানানো।

সৌভাগ্যক্রমে, ডালাস ইমিগ্রেশন এর পুলিশদেরকে যথেষ্ট বন্ধুভাবাপন্ন ও সহায়ক মনে হলো এবং প্রায় বিনা বাধায় দীর্ঘ লাইন অতিক্রম করে ইমিগ্রেশন আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করলাম। আমাদের হাতে যেহেতু কানেকটিং ফ্লাইট ধরার সময় যথেষ্ট ছিল, সেহেতু কোন তাড়াহুড়ো করিনি। সবকিছুই ধীরে সুস্থে করেছি। আমাদেরও ইমিগ্রেশন কাজ শেষ হলো আর কানেকটিং ফ্লাইট এরও চেক-ইন শুরু হলো। তাই দ্রুত চেক-ইন করে মনে হলো হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। এখন শুধু অপেক্ষা প্লেনে ওঠা (বোর্ডিং), শেষ গন্তব্যে অবতরণ এবং ভাগ্নের সাথে তার বাসায় গমন। কিন্তু কে জানতো, বিদেশ বিভূঁই এ এবারে আমার নতুন অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের পালা শুরু হবে।

আমাদের যখন বিমানে ঢোকা শুরু হবে, ঠিক তখনই শুরু হলো এক আচমকা বিপর্যয় কাহিনী। প্রথমে বলা হলো, কি একটা computer glitch এর কারণে প্লেন ছাড়তে কিছুটা বিলম্ব হবে। কখন ছাড়বে, তা শীঘ্রই জানানো হবে। মনিটরে আধ ঘন্টা করে করে সময় পেছানো হচ্ছে। ডালাস ফোর্ট ওয়ার্থ আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে কয়েক মিনিট পরে পরেই একেকটা বিমান নামে। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিভিন্ন স্থান থেকে এসে অবতরণ করা বিমান গুলোর যাত্রীদের দিয়ে লাউঞ্জটা ভরে গেলো এবং গিজিগিজ করতে লাগলো। নানা জায়গা থেকে সব যাত্রীরা এসে নামছে, কিন্তু কেউই কানেকটিং ফ্লাইট ধরে বের হতে পারছেনা। ভীড়ের চোটে দম বন্ধ হবার উপক্রম। অনেকেই মেঝের উপর শুয়ে বসে থাকলো, ঠিক যেমন আমাদের কমলাপুর স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে মাঝরাতে অন্তর্মুখী/বহির্মুখী ট্রেনের যাত্রীরা শুয়ে বসে থাকে। কিছুক্ষণ পর মনিটরে আর কোন নতুন সময় দেখানো হচ্ছিলনা। সব মিলিয়ে এক চরম অনিশ্চয়তা। কিছুক্ষণ পর পর এক বিশাল বপুর কৃষ্ণ মহিলা কি যেন ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছে, যার পরিস্কার অর্থ আমি উদ্ধার করতে পারছিলাম না। আমরাও একসময় মেঝেতে বসে পড়লাম। পাশে বসা এক মহিলাকে দেখলাম নিবিষ্টমনে তার স্মার্টফোনে কি যেন টেক্সট করছে। তার বয়স হয়তো আমার বড় ছেলের বয়সের চেয়ে কিছুটা বেশীই হবে, অর্থাৎ ত্রিশের কিছু বেশি । তার বেশভূষা, দৈহিক গড়ন আর চলন বলন দেখে তাকে মহিলা না বলে তরুণী বলাই সমীচীন। তাকে আস্তে করে তার গন্তব্যের কথা জিজ্ঞেস করে জানলাম, তার আর আমাদের গন্তব্য একই। তাকে খুলেই বললাম যে আমি ঐ কৃষ্ণ মহিলার ঘোষণার মাথামুন্ডু কিছুই বুঝিনি। সে মুচকি হেসে বললো, প্লেন ছাড়তে অনেক দেরী হবে, সন্ধ্যা গড়াবে। কথাটা শোনার পর আমার মুখে হয়তো কোন আশঙ্কার ছায়া সে দেখতে পেয়েছিলো, আবার মুচকি হেসে আশ্বস্ত করলো, কোন দুশ্চিন্তা না করতে।

দেখতে দেখতে বেলা দু’টো পার হলো। তরুণীটি জিজ্ঞেস করলো আমরা লাঞ্চ করেছি কিনা। বল্লাম, না করি নাই। সে আমাদের কাছ থেকে বোর্ডিং পাস দুটো চেয়ে নিলো। উঠে গিয়ে সেই ঘোষিকাকে কি যেন বললো। পরে তাকে নিয়ে আরেকটা অফিসে ঢুকলো। সেখান থেকে ফিরে এসে আমাদেরকে কয়েকটা কুপন দিয়ে বললো, কুপনের তালিকায় উল্লেখ করা যে কোন রেস্টুরেন্ট থেকে আমরা লাঞ্চ করে নিতে পারবো। প্লেন ছাড়তে সন্ধ্যা পেরিয়ে গেলে আমরা বাকী কুপন দিয়ে ডিনারও করতে পারবো। সে জানালো, সে ইতোমধ্যে লাঞ্চ করে ফেলেছে। তাকে অশেষ ধন্যবাদ জানিয়ে আমরা লাঞ্চ করতে এগোলাম।

বেলা চারটার দিকে মনিটরে জানানো হলো, আমেরিকান এয়ার লাইন্সের সকল ফ্লাইট ঐ দিনের জন্য বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। মহা চিন্তায় পড়ে গেলাম। এয়ার লাইন্সের একজন উর্দিধারী ব্যক্তিকে অনুরোধ করলাম আমাদের রাত কাটানোর জন্য হোটেলের ব্যবস্থা করে দিতে। সে হ্যাঁ না কিছুই না বলে অপেক্ষা করতে বললো। কিছুক্ষণ পরে এসে লোকটি জানালো যে আমাদের ফ্লাইট নির্ধারিত হয়েছে পরেরদিন সকাল দশটায়। কিন্তু হোটেলের ব্যাপারে সে তখনো কোন সিদ্ধান্ত পায়নি। আশে পাশে তাকিয়ে দেখি সেই সাহায্যকারী মেয়েটি আর নেই। কিছুটা অসহায় বোধ করতে থাকলাম। একটা কফিশপে গিয়ে দু’কাপ কফি কিনলাম। হঠাৎ দেখি সেই মেয়েটা এসে পুনরায় হাজির। সে বললো, আইনতঃ তোমরা হোটেল, পরের দিনের ব্রেকফাস্ট আর হোটেলে যাওয়া আসার জন্য ফ্রী ট্রান্সপোর্ট পাবে। তবে তারা সবাইকে সে সুবিধেটুকু দিতে গড়িমসি করছে। আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি তোমাদের জন্য এ ব্যবস্থাটুকু করে দিয়ে তবে বিদেয় নিতে। তার প্রতি কৃতজ্ঞতায় আমাদের মনটা ভরে গেল। ঠিকই একটু পরে এসে সে আমাদের হাতে পরের দিনের ব্রেকফাস্ট কুপন এবং বেস্ট ওয়েস্টার্ণ হোটেলে থাকার জন্য একটা স্লিপ ধরিয়ে দিয়ে বললো, একটু পরে হোটেলের গাড়ী এসে আমাদের নিয়ে যাবে। আমি তাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানালাম। সে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে তা acknowledge করলো।

টার্মিনালের বাইরে এসে দেখি আমাদের গাড়ীর জন্য দীর্ঘ লাইন। পাশে আরেকটা জায়গায় তুলনামূলকভাবে একটা ছোট লাইনে সেই মেয়েটিও তার হোটেলের গাড়ীর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে। আমি একটু এগিয়ে গিয়ে তাকে পুনরায় সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ ও শুভকামনা জানিয়ে বিদায় নিয়ে আসলাম। ওর লাইনে পরপর কয়েকটি গাড়ী এসে সবাইকে তুলে নিয়ে গেলো, কিন্তু গাড়ীতে জায়গা থাকা সত্তেও সে উঠলোনা। আমাদেরকে অবাক করে দিয়ে সে একাই ঠায় দাঁড়িয়ে থাকলো। বুঝলাম, সে হয়তো বা আমাদের যাবার অপেক্ষা করছে। কিছুক্ষণ পরেই আমাদের হোটেলের গাড়ীও এসে গেলো। সে এগিয়ে এসে আমাদেরকে কোস্টারে লাগেজ তুলতে সাহায্য করলো। তারপর হাসিমুখে বিদায় নেবার আগে সে বলে গেলো যে আমাদের সাথে টুকটাক আলাপচারিতাগুলো তার বেশ ভাল লেগেছে, আমাদেরকেও ভাল লেগেছে। আমরাও তাকে আমাদের বিস্ময় ও মুগ্ধতার কথা জানাতে কার্পণ্য করলাম না। দ্রুততার সাথে একটা ছবিও তুলে রাখলাম। যতদিন আমেরিকায় থাকি, আমরা যেন আমাদের অবস্থান এবং ভ্রমণগুলো পুরোপুরি উপভোগ করতে পারি, সে বারে বারে সে শুভকামনা জানাতে থাকলো। কয়েক ঘন্টা আমাদের সাথে সহ অবস্থানের মাধ্যমে ভ্যালেরী আমাদের মনে চিরস্থায়ী একটা আসন গড়ে নিয়ে গেলো। আজ যেমন তার কথা স্মরণ করছি, আমি জানি আরও বহুদিন ধরে আমরা তা করবো।

ভালো থেকো ভ্যালেরী, নিরাপদে থেকো আজীবন!

ঢাকা
২১ জানুয়ারী ২০১৫

মন্তব্য ৩৫ টি রেটিং +১২/-০

মন্তব্য (৩৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৭:১৬

চাঁদগাজী বলেছেন:

ভালো স্মৃতি, ভালো অনুভুতি; বাংলার মানুষেরা বিদেশীদের প্রতি ভালো ব্যবহারের চেস্টা করেন; যদিও সাংস্কৃতিক গ্যাপের জন্য অনেক সময় তা সঠিক হয় না।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৭:২১

খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
আপনি ঠিকই বলেছেন চাঁদগাজী, বাঙালীরা স্বভাবগতভাবে বিদেশীদের সাথে সুআচরণ করে থাকে, তবে "সাংস্কৃতিক গ্যাপের জন্য অনেক সময় তা সঠিক হয় না"।

২| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৭:৫৩

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: লেখাটা পরে মনে হল, আমিই এতক্ষণ ওখানে ছিলাম।

সকাল সকাল এত সুন্দর লেখা পড়ে ভাল লাগলো।

আসলে ভাল ব্যবহার করলে ভাল ব্যবহারই পাওয়া যায়! আপনার ক্ষেত্রে সেটাই ঘটেছে।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:২৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: মুগ্ধ হ'লাম আপনার মন্তব্যে, রক্তিম দিগন্ত। লেখার প্রশংসায় অনুপ্রাণিত হ'লাম।
Courtesy costs nothing, but pays much!
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা...

৩| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:১৩

শামছুল ইসলাম বলেছেন: খুব গোছানো সুন্দর পোস্ট, ভাল লেগেছে।

ভাল মানুষ দেশ-কাল-পাত্র অতিক্রম করে সব জায়গায় বিস্তৃত, আপনার লেখায় আবার তার প্রমাণ পেলাম। ভ্যালেরী আমার মনেও জায়গা করে নিয়েছে।

//তারপর হাসিমুখে বিদায় নেবার আগে সে বলে গেলো যে আমাদের সাথে টুকটাক আলাপচারিতাগুলো তার বেশ ভালো লেগেছে, আমাদেরকেও ভালো লেগেছে। আমরাও তাকে আমাদের বিস্ময় ও মুগ্ধতার কথা জানাতে কার্পণ্য করলাম না। দ্রুত তার সাথে একটা ছবিও তুলে রাখলাম। যতদিন আমেরিকায় থাকি, আমরা যেন আমাদের অবস্থান এবং ভ্রমণগুলো পুরোপুরি উপভোগ করতে পারি, সে বারে বারে সে কামনার কথাই জানাতে থাকলো। কয়েক ঘন্টা আমাদের সাথে সহ অবস্থানের মাধ্যমে ভ্যালেরী আমাদের মনে চিরস্থায়ী একটা আসন গড়ে নিয়ে গেলো। আজ যেমন তার কথা স্মরণ করছি, আমি জানি আরও বহুদিন ধরে তা করবো।//

ভাল থাকুন। সবসময়।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:৩১

খায়রুল আহসান বলেছেন: আমার লেখাটা আপনার ভালো লেগেছে জেনে প্রীত হ'লাম, শামছুল ইসলাম।
"ভাল মানুষ দেশ-কাল-পাত্র অতিক্রম করে সব জায়গায় বিস্তৃত" - একদম ঠিক কথা! সবার উপরে মনুষ্যত্ব, মানবিকতা- এ উপলব্ধি জগতের সব দেশের সব সম্প্রদায়ের লোকের ভেতরেই আছে, নইলে জগত থেমে যেত, মানুষের বিনাশ ঘটতো।
আমার লেখা থেকে আপনার উদ্ধৃতিটুকু আর সবশেষে রেখে যাওয়া শুভকামনাটুকুর জন্য রইলো আন্তরিক ধন্যবাদ।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:৫২

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেকদিন ধরে আমি আপনাকে ব্লগে দেখতে পাচ্ছিনা, শামছুল ইসলাম। ভাল আছেন তো?

৪| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:৪৭

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর শেয়ার সুপ্রিয় ব্লগার । ভাল লাগলো ।+

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:৫৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার সপ্রশংস মন্তব্যে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম, সেলিম আনোয়ার।
প্লাস এর উদারতার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা জানবেন।

৫| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:১৫

আহমেদ জী এস বলেছেন: খায়রুল আহসান ,



ঃভালো লাগলো । এরকম সৌজন্যবোধ ( এরকম অনেক ঘটনা থেকে ) এর কারনেই হয়তো পৃথিবীটাকে এখনও খুব একটা পাষান বলা যায়না ।

শুভেচ্ছান্তে ।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:২৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: আহমেদ জী এস, মন্তব্যে প্রীত হ'লাম।
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা!

৬| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:১৫

বৃতি বলেছেন: স্বচ্ছন্দ বর্ণনা- পড়তে বেশ ভালো লাগলো :)

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:৩৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: জেনে খুশী হ'লাম, বৃতি। অনেক ধন্যবাদ।

৭| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:৪৪

মেহবুবা বলেছেন: বিভোর হয়ে পড়ে শেষ করলাম।
আমরা একই পৃথিবীর মানুষ সেটাই প্রমানিত হল।
একটা বিষয় মনে হল -- আপনার আচরন সেই মেয়েটির ভাল লেগেছিল,আমি দেখেছি অনেক সহজে অন্যকে আপন করতে সবাই পারে না, যে পারে সে আসলে উপকৃত হয়।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:৩৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ, মেহবুবা। মন্তব্যে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম।
"আমি দেখেছি অনেক সহজে অন্যকে আপন করতে সবাই পারে না, যে পারে সে আসলে উপকৃত হয়" - আপনি ঠিকই দেখেছেন।
ভালো মন্দ মিলিয়েই মানুষ, মনুষ্য সমাজ। সব দেশেই, সব সমাজেই। আমাদের দেশেও বিদেশীরা এসে বিমানবন্দর থেকেই যেমন প্রতিকূল বা নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করতে শুরু করে, আবার তেমনি যারা আমাদের সমাজের সাথে মেশার সুযোগ পায়, তারা আমাদের সরলতা ও আতিথেয়তা সম্পর্কেও উচ্চ ধারণা নিয়ে স্বদেশে ফেরত যায়। আমাদের পারিবারিক টান, সহনশীলতা, উৎসবপ্রিয়তা, কৃষ্টি সংস্কৃতির প্রতি বিশ্বস্ততা ও একাগ্রতা, ইত্যাদি সম্পর্কে তারা উচ্চ মনোভাব পোষণ করে।


৮| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:১০

মানবী বলেছেন: নিজের ভ্রমন অভিজ্ঞতা চমথকার ভাষায় বর্ণনা পড়ে ভালো লাগলো।

আল্লাহর রহমতে অধিকাংশ আমেরিকানরাই এমন। নিজে থেকেই অন্যের উপকারে এগিয়ে আসে খুব আপনজনের মতো। আমার কাছে সবচেয়ে ভালো মনে হয়েছে ওহাইওর মানুষদের। পথে ঘাটে তাঁদের মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসার প্রবণতা বেশি মনে হয়েছে। এই দেশের আরেকটি চমৎকার ব্যাপার হলো সততা। অধিকাংশ মানুষ সৎ আর তাই অ্ররকে বিশ্বাস করার প্রবণতাও বেশি।

ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:১৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা 'লাইক' করেছেন, দেখে অনুপ্রাণিত হ'লাম। আমার কাছেও তাই মনে হয়েছে। ওখানে যাদের সাথেই আমার inter action হয়েছিলো, ভালো ছাড়া খারাপ কিছু দেখিনি, এমনকি আগে থেকে ভয় লাগানো ইমিগ্রেশন অফিসিয়ালদের সম্পর্কেও এ কথা বলতে পারি।

৯| ১০ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:১৩

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ভাইয়া লেখাটির লিংক দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। পড়ে অনেক ভাল লাগল।

১০ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১০:০৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: পুরনো এই লেখাটি পয়াও জন্য আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে জেনে প্রীত হ'লাম।

১০| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৫০

জুন বলেছেন: পুরোনো লেখাটি না দেখার জন্য আমার কাছে নতুনই মনে হলো খায়রুল আহসান । ঘর থেকে বাইরে পা ফেল্লে কত রকম বিচিত্র ঘটনার যে সাক্ষী হতে হয় তা লিখে শেষ করা যাবে না। ভ্যালেরীর জন্য রইলো শুভকামনা । দেশ বিদেশে এমন অনেকের আন্তরিকতায় আমাদের শুন্য ঝুলিটি মমতায় পুর্ন হয়ে ওঠে বৈকি। অনেক ভালোলাগা রইলো ।
+

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:০৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: দেশ বিদেশে এমন অনেকের আন্তরিকতায় আমাদের শুন্য ঝুলিটি মমতায় পুর্ন হয়ে ওঠে বৈকি - জ্বী, আপনি ঠিকই বলেছেন। আমার ঝুলিতে এরকমের বহু মূল্যবান সঞ্চয় আছে। আমি নিশ্চিত, আপনার ঝুলিতে আছে তারও চেয়ে অনেক বেশী!
পুরনো পোস্টে মন্তব্য রেখে যাবার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ, সেই সাথে শুভকামনা---

১১| ২৩ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:১০

তারেক সিফাত বলেছেন: যখন কি করবো ভেবে পাইনা তখন হঠাত করে কেউ এসে যেন সবকিছু ঠিক করে দেয়; ভ্যালেরীও ঠিক তেমন একজন।

ভালো লাগলো ভ্রমণ অভিজ্ঞতা।

২৩ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৩১

খায়রুল আহসান বলেছেন: আমার অনেক পুরনো একটা লেখায় হঠাৎ করে আজ আপনার এ মন্তব্যটা পেয়ে ভাল লাগলো। হ্যাঁ, ভ্যালেরী আমাদের কাছে সে রকমেরই কেউ একজন হয়ে এসেছিল।
আমার কোন লেখায় আপনি এই বুঝি প্রথম এলেন, - সুস্বাগতম! মন্তব্যে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ’লাম।
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা---

১২| ২৩ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৯

তারেক সিফাত বলেছেন: জি আমি নতুন তো সামুতে। ভ্রমণ নিয়ে সবার লিখাগুলো পড়তে পড়তে আপনার ব্লগবাড়িতে চলে আসলাম। আপনারা অনেক সিনিয়র। আপনাদের লেখা পড়ে অনুপ্রাণিত হচ্ছি।

ভালো থাকবেন সবসময়।


২৩ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০১

খায়রুল আহসান বলেছেন: আবারো ধন্যবাদ, পুনঃ মন্তব্যের জন্য। ভুটান ও থাইল্যান্ড ভ্রমণ নিয়ে আমারও কয়েকটা লেখা আছে। পড়ে দেখলে খুশী হবো।

১৩| ২৩ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩০

তারেক সিফাত বলেছেন: অবশ্যই পড়ব।

ভালো থাকবেন। শুভ কামনা সবসময়।

২৪ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ১১:৫১

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা, সততঃ।

১৪| ২৩ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৮

জাহিদ অনিক বলেছেন:

ভাবখানা এই যেন গোটা পৃথিবী আমার অবস্থান জানার জন্য বিশেষ আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছে।
কেউ কেউ অপেক্ষায় ছিল তো বটেই। আজ যেমন আমিও বেশ আগ্রহ নিয়ে পড়লাম আপনার ভ্রমণ কথা।
আমারও ঘ্রাণে অর্ধেক ভোজন হলো।

২৪ শে জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা মন দিয়ে পড়ে তা থেকে একটা লাইন এখানে উদ্ধৃত করার জন্য ধন্যবাদ, জাহিদ অনিক
হ্যাঁ ছিল, সবচেয়ে বেশী ছিল ঢাকায় রেখে যাওয়া আমাদের ছেলেরা। ওরা খুব উদগ্রীব ছিল, এতটা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে মা বাবার কোন কষ্ট বা অসুবিধে হচ্ছে কি না, তা জানতে।
মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম।
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা....

১৫| ০৫ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:৪৩

মনিরা সুলতানা বলেছেন: মন ভালো করা অভিজ্ঞতা !
বেঁচে থাক মানবিক মমত্ববোধ ।

০৫ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৪২

খায়রুল আহসান বলেছেন: বেঁচে থাক মানবিক মমত্ববোধ - এটা আমারও প্রার্থনা। এ উদ্দেশ্যেই পোস্টটি লেখা হয়েছিল।
মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ। পুরনো লেখায় এ দুটো পেয়ে অনেক অনুপ্রাণিত।
শুভকামনা...

১৬| ০৬ ই এপ্রিল, ২০২০ ভোর ৪:১৫

সোহানী বলেছেন: আমি আমাকে সবসময়ই ভাগ্যবানই মনে করি। প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে অনেক অনেক বেশী সাহায্য পেয়েছি সম্পূর্ন অপরিচিত কারো কাছ থেকে। ঠিক একইভাবে খুব আপন কারো কাছ থেকে একরাশ দু:খ পেয়েছি। কিন্তু আমি মনে রাখিনি বা রাখার চেস্টা করিনি। কি দরকার, জীবনতো একটাই। জীবনের ভালো স্মৃতিগুলোই থাকুক মানসপটে, খারাপগুলো ঢাকা পরে যাক নিয়তির স্রোতে!!

০৬ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৭:৫৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: পুরনো পোস্টে আসার জন্য ধন্যবাদ।
জীবনতো একটাই। জীবনের ভালো স্মৃতিগুলোই থাকুক মানসপটে, খারাপগুলো ঢাকা পরে যাক নিয়তির স্রোতে!! - সঠিক উপলব্ধি! এমন ভাবেই সবার ভাবা উচিত।
মন্তব্য এবং প্লাসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ। পুরনো লেখায় দুটোই পেয়ে অনেক অনুপ্রাণিত হ'লাম।
শুভকামনা...

১৭| ০৬ ই এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৩:৫৭

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: চমৎকার অচেনা হৃদয়ের পরিচয় পেলাম স্যার।
আপনার অবসর তাহলে তেরো সালে? আর ঐ সময় আপনার বড়ছেলে দেশেই থাকতেন, কারণ বর্তমান সময়ে উনি মেলবোর্নে আছেন কিনা।
উল্লেখ্য আপনার দেওয়া লিংক থেকে পোস্টটি পড়ার সুযোগ পেলাম। ধন্যবাদ স্যার আপনাকে।
শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা নিয়েন।

০৬ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:১৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: না, আমি তারও আগে অবসরে গিয়েছি। ঐ সময় আমার সব ছেলেরা দেশেই থাকতো। ছোটটার তখনো গ্রাজুয়েশন হয় নাই। যে এখন মেলবোর্নে আছে, সে তখন ঢাকায় একটি মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানীতে চাকুরী করতো। এ পোস্টের লিঙ্কটা দিয়েছি শুধু এটুকু বোঝানোর জন্য যে "মানুষ মানুষের জন্য"। গুয়াংঝুতে যখন চীনা তরুণীটি আমাকে সাহায্য সহযোগিতা করছিল, তখন আমার সাত বছর আগের সেই আমেরিকান মহিলা ভ্যালেরীর কথা মনে পড়ছিল, যিনি আমাকে ডালাস এয়ারপোর্টে সাহায্য সহযোগিতা করেছিলেন। দুটো ঘটনার মধ্যে বেশ কিছু মিল রয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.