নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল

এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

রবীন্দ্রনাথ -জন্মদিনে শ্রদ্ধা

০৮ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৪:৪১


আজ পঁচিশে বৈশাখ, বাংলা সাহিত্যের অনন্যপ্রতিভা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন। আজ থেকে ১৫৭ বছর আগে ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫শে বৈশাখ (৭ মে, ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দ) কলকাতায় জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে তাঁর জন্ম হয়। তাঁর লেখনীতে বাংলা সাহিত্যের সব কটি ধারাই বিকশিত হয়েছে।

মাইকেল মধুসূদন দত্তের হাতে বাংলা কবিতায় আধুনিকতার সূচনা হলেও রবীন্দ্রনাথের হাতেই তা পূর্ণতা পায়। একইভাবে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের হাতে জন্ম নেওয়া বাংলা গদ্যকে তিনি অনন্য সৌষ্ঠব দান করেন।

রবীন্দ্রনাথ একাধারে কবি, কথাশিল্পী, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার, সংগীত রচয়িতা, সুরস্রষ্টা, গায়ক ও চিত্রশিল্পী। সৃষ্টিশীলতার পাশাপশি তিনি দারিদ্র্যবিমোচনসহ সাংগঠনিক কাজ চালিয়ে গেছেন। বিশ্বভারতী তাঁর বিপুল কর্মকাণ্ডের একটি প্রধান কীর্তি।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইংরেজী অনুদিত গীতান্জলি (Songs Offerings) জন্য ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। বাংলা গীতান্জলি আর ইংরেজী গীতান্জলিতে বেশ পার্থক্য আছে। বাংলা গীতান্জলিতে আছে ১৪৭টি গান। ইংরেজী করার সময় সেখান থেকে নেয়া হয়েছে ৫২টি গান। বাকী ৫১টি গান (মোট ১০৩টি) নেয়া হয়েছে গীতিমাল্য, নৈবেদ্য, খেয়া, স্মরণ, কল্পনা, চৈতালী, উৎসর্গ থেকে।

সবগুলো গান রবীন্দ্রনাথ অনুবাদ করেছেন গদ্যে। পাশ্চাত্য বিশ্ব সে গদ্য অনুবাদকে কাব্যরূপেই গ্রহণ করেছে। নোবেল কমিটির সাইটশনে কবিতায় অবদানের জন্য নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। নোবেল কমিটি তাঁকে পুরস্কার প্রদানের কারণ হিসাবে উল্লেখ করেছে, "because of his profoundly sensitive, fresh and beautiful verse, by which, with consummate skill, he has made his poetic thought, expressed in his own English words, a part of the literature of the West".

দুই গীতান্জলির পার্থক্য বোঝার জন্য একটা নমুনা পেশ করলাম-

গান নং-২২, গীতান্জলি

তুমি কেমন করে গান কর হে গুণী
আমি অবাক হয়ে শুনি কেবল শুনি
সুরের আলো ভূবন ফেলে ছেয়ে
সুরের হাওয়া চলে গগন বেয়ে
পাষাণ টুটে ব্যাকুল বেগে ধেয়ে
বহিয়া যায় সুরের সুরধুনী ।।
মনে করি অমনি সুরে গাই
কন্ঠে আমার সুর খুঁজে না পাই।
কইতে কী চাই, কইতে কথা বাধে
হার মেনে যে পরাণ আমার কাঁদে
আমায় তুমি ফেলেছ কোন ফাঁদে
চৌদিকে মোর সুরের জাল বুনি।।

III- Song Offerings

I know not how thou singest,my master !
I ever listen in silent amazement.

The light of thy music illumines the world. The life breath of thy music runs from sky to sky. The holy stream of thy music breaks through all stony obstacles and rushes on.

My heart longs to join in thy song, but vainly struggles for a voice. I would speak, but speech breaks not into song,and I cry out baffled. Ah, thou hast made my heart captive in the endless meshes of thy music, my master !

১৯১৩ সালে রবীন্দ্রনাথ নোবেল পুরস্কার পেয়ে বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলেছিলেন। কারণ ১৯০১ থেকে ১৯১২ পর্যন্ত নোবেল সাহিত্য পুরস্কার যাঁরা জিতেছিলেন তাঁরা সবাই ছিলেন ইউরোপ মহাদেশের সাহিত্যিক। ইউরোপের বাইরে মানববসতিপূর্ণ ৫টি মহাদেশের (এশিয়া,উত্তর আমেরিকা,দক্ষিণ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও আফ্রিকা) সাহিত্যিকদের মধ্যে প্রথম বিজয়ী রবীন্দ্রনাথ।

মহাকবি কালিদাসের পর যাঁর কাব্য গানে বর্ষা সবচেয়ে শিল্প সফল বলে সুধীসমাজ একবাক্যে স্বীকার করেন তিনি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কারো কারো মতে বর্ষার বর্ণনায় রবীন্দ্রনাথ কালিদাসকেও অতিক্রম করেছেন। বাংলার বর্ষাকে তিনি সবসময় খুব কাছে থেকে দেখেছেন এবং অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করেছেন, ভালো বেসেছেন। শাহজাদপুর (সিরাজগন্জ) ও পতিসর ( নওগাঁ) জমিদারী দেখাশোনার জন্য আসা যাওয়ার জন্য নৌপথই ছিলো প্রধান অবলম্বন। কলকাতা থেকে ট্রেনে এসে বাকী পথ তাঁর বিখ্যাত বোটগুলোতে তিনি নৌপথে চলতেন। বাংলার বর্ষার সব রূপই তাঁর দেখা। তাঁর কবিতা,গান,গল্প,উপন্যাস, গদ্য রচনা বিশেষত: অসংখ্য চিঠিতে বর্ষা মূর্ত হয়ে আছে-

শাওন গগনে ঘোর ঘন ঘটা..

আজি ঝর ঝর মুখর বাদর দিনে..

মন মোর মেঘের সঙ্গী..

সঘন গহন রাত্রি ঝরিছে শ্রাবণ ধারা..

আমি শ্রাবণ আকাশে ঐ..


এসব অসাধারণ গানে বর্ষা বিশেষত: তাঁর চলে যাবার মাস শ্রাবণ অনন্য সৌন্দর্য্যে ফুটে আছে।

বর্ষাকে যে তিনি সত্যিই ভালোবেসেছিলেন তার প্রমান তিনি এ ধূলার মর্ত্যলোক ছেড়ে মহাগন্তব্যে যাবার জন্য বর্ষাকেই বেছে নিলেন ! ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের ২২শে শ্রাবণ মোতাবেক ১৯৪১ খ্রীস্টাব্দের ৬ আগস্ট জোড়াসাঁকোর নিজ পৈতৃক বাড়িতে মৃত্যৃ বরণ করেন।

তাঁকে পরম শ্রদ্ধায় আজ আবার শ্মরণ করি !

তাঁকে নিয়ে লেখা একটি কবিতা এই ব্লগে পোষ্ট করেছিলাম। প্রসঙ্গক্রমে শ্রদ্ধার নিদর্শনস্বরূপ সেটি এখানে আবার সুধীজনের সামনে নিবেদন করলাম-

রবীন্দ্রনাথ
০২ রা নভেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৩:৪৬

অসংখ্য মানুষ আসে
হাতে ফুল, কন্ঠে স্তব গান
মনে ভক্তি গদগদ
অর্ঘ্য দেয় তাঁর পদতলে
ভক্তি ভরে গুরুদেব ডাকে

কিছু কিছু লোক আসে
হাতে ধরা অদৃশ্য শাবল
মনে ঘৃণা থক্ থকে
অসম্মানের ডালি
রাখে তাঁর শুভ্র মস্তকে

এমন মানুষ কই
যাঁর কাছে তিনি শুধু
রবীন্দ্রনাথ
সকল মহত্ব আর
ভুলত্রুটি নিয়ে
সীমা আর অসীমের মাঝে
রেখে তাঁকে দেখে
কোন কিছু আরোপ করে না
পূজায় নিন্দায় তাঁকে
করে না বিব্রত
সমগ্র মানস যাঁর
দারুন সংহত

এমন দুর্দৈব যাঁর
ব্যক্ত বিধিলিপি
কী আর করেন তিনি
শুধু তাঁর অপেক্ষার পালা
সোনার ধানেতে ভরা
সোনার তরী
ভেসে ভেসে ভেসে চলে
পদ্মায়,যমুনায়, মেঘনায়
সুরমায়,রূপসায়
ধানসিঁড়ি, মধুমতি
তিতাসে, তিতাসে.....!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:২২

রাজীব নুর বলেছেন:

১০ ই মে, ২০১৮ সকাল ১০:১৪

এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: হা হা হা !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.