নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তেঁতু কথা লেখক!

কাজী মুমিনুল

প্রকৌশলী

কাজী মুমিনুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইয়াবা

২৮ শে জুন, ২০১৫ রাত ৩:৪৯

কক্সবাজার শহরের রহস্যঘেরা আলোচিত একটি ভবনের নাম ‘হাজী আমির আলী ম্যানশন’এখন সর্বত্র আলোচনার কেন্দ্র বিন্দু। এই ভবনে ভাড়া থাকেন এমপি এবং পুলিশ, বিজিবি, সেনা কর্মকর্তা এবং প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীসহ ভিআইপি মর্যাদার লোকজন। এই ভবনটির সুনাম ছিলো দীর্ঘদিন। কিন্তু ইয়াবা মজুদের গুদাম হিসেবে ব্যবহার হওযায় এখন অনেকেই আতংকিত।সূত্রে জানা যায়, কেনা বেচা কিংবা পুলিশের হাতে আটকের পর গায়েব করা ইয়াবা মজুদ করা হতো বাহারছড়ার সার্কিট হাউস রোডস্থ হাজী ছিদ্দিক আহমদের মালিকানাধীন ভবনটির তৃতীয় তলার সি-১ নং ফ্ল্যাটে। নিরাপদে লেনদেন আর ইয়াবা মজুদ করতে গুদাম হিসেবে দামি এই ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপ-পরির্দশক (এসআই) বিল্লাল হোসেন। তবে গণমাধ্যমে এএসআই বেলাল হিসেবে প্রকাশ পেয়েছে। মুলত তিনি সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) বিল্লাল হোসেন।নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই ভবনের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, এসআই বেলালের সাথে ওই ফ্ল্যাটে সার্বক্ষনিক যাতায়াত ছিল টেকনাফের দুলাল নামের এক যুবকের। এমনকি দিন-রাতের অধিকাংশ সময় ওই ফ্ল্যাটে আড্ডা ছিল কক্সবাজার সদর মডেল থানা, টেকনাফ থানা, চকরিয়া থানা, মহেশখালী থানা ও গোয়েন্দা পুলিশের ৭/৮ জন সদস্যের। সাদা পোশাকে এবং পুলিশের পোশাকে তারা সেখানে নিয়মিত যাতায়াত করতেন এবং আড্ডা দিতেন। অনেক সময় আশপাশ ফ্ল্যাটের বাসিন্দারাও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে যেতেন।সূত্র আরো জানায়, গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের মধ্যে থাকা কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা ‘সিভিল টিম’ নিয়ে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ইয়াবা ধরার পর অধিকাংশ সময় ইয়াবা ও আটককৃতদের ওই ফ্ল্যাটে নিয়ে যাওয়া হতো। সেখানে দফা-রফা করে তাদের অনেককেই ছেড়ে দেওয়া হতো। আবার জব্দ করা ইয়াবা থেকে সিংহ ভাগ ইয়াবা চুরি করে তা ওই ফ্ল্যাটে মজুদ করে আসছিল। পুলিশের ইয়াবা সিন্ডিকেটের সদস্যরা গায়েব করা ইয়াবা, ছিনতাই করা ইয়াবা এবং কম দামে কিনে নেয়া ইয়াবা মজুদ করতেন ওই এসআই বেলালের ফ্ল্যাটে। কোন কোন সময় সেবনের কাজও চলতো এখানে। ইয়াবার মজুদদার ছিলেন ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া গোয়েন্দা পুলিশের এসআই বিল্লাল। এছাড়া আরো অনেক সন্দেহজনক কর্মকান্ড চললেও পুলিশ কর্মকর্তার বাসা হওয়ায় কেউ প্রশ্ম তোলার সাহস পেতো না। কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ওসি দেওয়ান আবুল হোসেন, এসআই ইমন কান্তি, এসআই কামাল আব্বাস, সদর মডেল থানায় কর্মরত এসআই কল্লোল চৌধুরী, এসআই শাহাদৎ, জামালসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার নিয়মিত যাতায়ত করতেন। আমির আলী ম্যানশনে অবস্থানরত বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে আরও জানা গেছে, এসআই বিল্লাল বেতন-ভাতা সহ সর্বসাকুল্যে প্রায় ১৫ হাজার টাকা মাসিক বেতন পেলেও তিনি যে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছেন তার ভাড়া ১৭ হাজার টাকায়। কয়েকটি মোটর সাইকেল, নোয়া মাইক্রোবাস, কার সহ বেশ কয়েকটি গাড়ি নিয়ে আয়েশি জীবন-যাপন করতেন তিনি। চলাচল ছিল রাজকীয় হালে। এমনকি তার সিন্ডিকেটের সদস্য ছাড়া পুলিশের অন্য কোন সদস্যকে পরোয়া করতেন না তিনি।নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই ভবনে অবস্থানকারী এক ব্যক্তি জানান, ফ্ল্যাটটিতে ডিবি পুলিশের এসআই বিল্লাল হোসেন একা থাকতেন। সেখানে নিয়মিত আসা-যাওয়া ছিল টেকনাফের দুলাল নামের এক যুবকের। এছাড়া সাদা পোশাক ও পুলিশি পোশাকে একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা ফ্ল্যাটটিতে যাতায়াত করতেন। তাদের অনেকে সেখানে আড্ডাও দিতেন। কিন্তু গত শনিবার মধ্যরাতে চট্টগ্রামে র‌্যাবের হাতে স্পেশাল ব্রাঞ্চের এএসআই মাহফুজ ইয়াবাসহ আটক হওয়ার পর ওই ফ্ল্যাট থেকে পালিয়ে যান এসআই বিল্লাল। ওই ঘটনার পর থেকে ফ্ল্যাটটি তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। অন্য গাড়িগুলো না থাকলেও তার ব্যবহ্নত একটি মোটর সাইকেল রয়েছে ওই ভবনের নিচে পার্কিংএ।সূত্রটি আরো জানায়, গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা ফ্ল্যাটটি যাতে কাউকে দেখিয়ে দেওয়া না হয় সেই নির্দেশনা দিয়েছেন বাড়ীর মালিককে। তবে এ বিষয়ে বাড়ির মালিক কোন কথা বলতে রাজি হননি। ফেনী লালপুলে র‌্যাবের অভিযানে ৭ লাখ ইয়াবাসহ আটক হওয়া এএসআই মাহফুজ স্বীকার করেছেন, তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ইয়াবা এসআই বিল্লাল আমীর আলী ম্যানশনের ওই ফ্ল্যাট থেকে সরবরাহ করে।এ ঘটনায় কক্সবাজার ডিবি পুলিশের ওসি দেওয়ান আবুল হোসেনকে ক্লোজ ও আরো ১০ এসআইকে বদলি করা হয়েছে। ২৩ জুন পুলিশ সুপার অফিসে পৌঁছেন বদলি আদেশ। দ্রুত সময়ের মধ্যে ডিবি ওসি সহ ১১ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে কক্সবাজার ছেড়ে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.