নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খালিদ মোশারফ ,আইআর , ১৪ তম ব্যাচ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

খালিদ১২২

আমার সব কাজ সারা কোন একটা যেন বাকি রয়ে গেছে ......

খালিদ১২২ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আরণ্যকের পুরানো সাইকেল।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:০৭



আরণ্যকের পুরানো সাইকেল। বিকালে আরণ্যক সাইকেলটি মুছছে। ভাবছে অনেক পুরানো সাইকেল বটে। কিন্তু খুব চালু। তেল দিয়ে ভালো করে ঘসা মাজা করলে একটু ভালো পরিষ্কার হয়।বৃদ্ধ বাবা বাইরের বারান্দায় চা পান করছে। আরণ্যক প্রতিদিন বাবাকে চা বানিয়ে দেয়। প্রতিদিন সে নিজের জন্যে ও বাবার জন্যে চা তৈরি করে। বৃদ্ধ বাবাকে এক কাপ চা বানিয়ে দেওয়াটা তার জন্যে খুব তৃপ্তির কাজ।
বাবার চা পান করছে আর আরণ্যকের দিকে চেয়ে আছে।
আরণ্যক ভাবছে বাবা তাকে যদি একটি নতুন সাইকেল কিনে দিত তাহলে কতইনা ভালো হত। কয়েকবার চেয়েছিল বটে বাবা তেমন কোন সাড়া দেয়নি। তাতে আরণ্যকের তেমন কোন দুঃখ তার নেই। আরণ্যকের দুঃখ ভাবার সময় আছে। কিন্তু দুঃখ করার সময় নেই। সব সময় পড়ার চিন্তা। পড়াশুনার চিন্তায় তার অনেক সময় খাওয়ার কথা মনে থাকে না।
কাল সকালে এই সাইকেলে চড়ে আরণ্যক দশ কিলোমিটার অতিক্রম করে স্কুল যাবে। সময় লাগবে এক ঘন্টা। আরণ্যক সাইকেল ঠেলবে। সাইকেল চলাকালিন যকগুলো গুরুজনের সাথে দেখা হবে আরণ্যক তাদের সবাইকে সালাম দিবে। একটু একটু শীতের সময়। সাইকেল ঠেলতে ঠেলতে আরণ্যকের গা দিয়ে ঘাম বের হবে। সেই ঘাম দিয়ে খুব কটু গন্ধ বের হবে। প্রতিটি ঘামের ফোটা মাটিতে পড়বে। আর আরণ্যকের ভালো লাগবে।মনে হবে অনেক ঘাম বরে হচ্ছে সুতরাং সে অনেক বড় হয়েছে।
দৈনিক এক ঘন্টা সাইকেল ঠেলে যাওয়া আর এক ঘন্টা সাইকেল ঠেলে আসা আরণ্যক। বাংলার হাজারো ঘরে গ্রামের ছেলেরা এরকম সাইকেল ঠেলে স্কুল কলেজে যায় । সুতরাং এটা নতুন কিছু নয়। শত শত আরণ্যকের হাজারো ফোটা ঘাম বের হয়। এক সময় শত শত আরণ্যক পা হেটেও মাইলের পর মাইল পাড়ি দিয়ে স্কুলে যেত। এই সাইকেল চালিয়ে বহু দূরের পথ পাড়ি দেওয়ার সাধ শহুরের ছেলেরা কতটুকু পেয়েছে তা জানিনা। আরণ্যক ছাড়া আরও হাজার ছেলেরা কি ভাবতে ভাবতে সাইকেল চালিয়ে যায় তা জানিনা। রাস্তার শত শত গাছ আরণ্যকদের ছায়া দেয়। ছোট ছোট পোকা কখনো কখনো চোখে পড়ে। প্রজাপতি গায়ে উড়ে এসে। আরণ্যকের গায়ে প্রজাপতি বসলে আরণ্যক খুশি হয়। এই মাত্র কিশোর বয়স। আপন মা মারা গেছে । মা যখন পৃথিবী থেকে চলে গেল তারতো খুব কাঁদার কথা ছিল । কিন্তু আরণ্যকের কান্না চোখে আসেনি । মা মরে গেছে বটে । খারাপ লেগেছে। কিন্তু মরার পরে এখন সে তেরো বছর বয়সেই দোকান থেকে চুরি করে সিগারেট খেতে পারে। পাড়ার চাষার ছেলেদের সাথে রাতে পথে পথে ঘুরে বেড়াতে পারে। মা নেই বলেইতো এটা সম্ভব হচ্ছে।
সাইকেল চড়ে আসা যাওয়া । প্রতিটি প্যাডেলে । চাকার প্রতিটি ঘুরপাক। স্বর্গ নরকের চিন্তা। ইশ্বর কেন্দ্রিক চিন্তা। চাকায় কাদা লেগে গেছে , গরুর গবর লেগে গেছে। প্রতিবার চাকা ঘুরছে। আর বারবার গরুর গবরটি ঘুরে ঘুরে চাকার সাথে দেখা যাচ্ছে। আরণ্যক আকাশটা দেখছে। রাস্তার দুই দিকে মাঠ। মাঠ শেষ হলেই শহর। শহরের এক পাশে আরণ্যকের স্কুল । স্কুল শেষ করে আরণ্যক আবার সাইকেলে করে বাড়ী ফিরবে-ঠিক সন্ধা নাগাত।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:২৫

সাহিদা সুলতানা শাহী বলেছেন: গল্পটি ভাল লাগল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.