নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন সুন্দর করে সাজাও । আমি নারী তাই কথাও বলি নারীদের নিয়ে।

কামরুননাহার কলি

আমার নাম কামরুননাহার কলি, আমি একজন ভার্সিটির ছাত্রী। আমার সখ লেখালেখি আর বই পড়া। আমি দেশকে ভালোবাসি, ভালোবাসি দেশের মানুষদের।

কামরুননাহার কলি › বিস্তারিত পোস্টঃ

“একফোটা অশ্রু”

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:২৬

১ম পর্ব


বয়সটা কত আর হবে এই তো মাত্র ১১/১২ তো পা রেখেছে রিয়ামনি। রিয়া স্কুলে পড়ে, মাদ্রাসায় মকতব পড়ে ওর সাথে অনকে বন্ধু বান্ধবীও আছ। কেউ ওর চেয়ে একটু বড় আবার ছোট অথবা ওর সমবয়সী। তবে রিয়ার সাথে কোনো বন্ধু না থাকলওে একজন ছিল, সে হলো রিয়ার চাচাতো বোন। রিয়ার সাথে রিয়ার বন্ধু বা বান্ধবী কেউ মিশতে চাইতো না। কারণ একটাই, রিয়া খুবই সুন্দরী ভদ্র মেয়ে ছিল। অন্যদরে মতো মেয়েটা দুষ্টামিতে পটু ছিলনা। কারো সাথে ইচ্ছে করে লাগতে যেতো না। অন্যরো যেমন গায়ে পরে ঝগড়া করতো বা মারামারি করতে চাই, তেমনটি ছিল না রিয়া। সবাই রিয়াকে পেঁচা বলে ক্ষেপাতো।
ওর দুষ্টু বন্ধুদের সবার বাড়ি আশেপাশেই ছিল, সবাই সবাইকে চিনে, বলতে গেলে একই পাড়ার ছেলেমেয়ে ওরা। রাতদিন একসাথে খেলা, এক সাথে উঠা-বসা হয় ওদের। কিন্তু এই দুষ্টু বন্ধুগুলোরা সবাই কেমন যেন মেয়েটাকে হিংসে করতো। কেনো করতো এমন ব্যবহার সেটা রিয়া কখনও বুজতে পারেনি। রিয়াটা না বড্ড সুন্দরী একটা মেয়ে ছিল। ওর সৌর্দয্য সবাইকে তাক লাগিয়ে দিতো। কিন্তু এই তাক লাগানো টা গায়রে সাদা চামড়াটাই ছিল। ওর ভিতরে যে সুন্দর একটা মন ছিল সেটা স্কুল আর মাদ্রাসার মকতবরে বন্ধু-বান্ধবীদের চোখে কখনও পড়েনি। কোন কোন দুষ্টু বন্ধুরা, খরগোশরে বাচ্চা বলে ক্ষেপাতো। সব দুষ্টুগুলো মেয়টোকে যে, যে ভাবে পারতো সে, সেই ভাবইে খোচাতো, মারতো, চিমটি কাটতো। স্কুল কিংবা মাদ্রাসা ছুটি হলেই রিয়াকে সবাই ধরার জন্য উৎ পেতে থাকতো। কখন মেয়েটাকে একটা চিমটি কাটবে, কখন একটা থাপ্পর দিবে, কখন একটা কান মলা দিবে। ওরা রিয়াকে এমন ভাবে মারতো ওর র্ফসা গাল আর হাতের চামড়া সবটা লাল হয়ে যেতো। কিন্তু, কি অদ্ভুত ছিল রিয়া, কখনও কাউকেই কিছু বলতে পারতো না সবার দিকে হ্যা করে তাকিয়ে থাকতো। সবাই যখন এক জোট হয়ে মেয়েটাকে মারতো, চিমটি কাটতো রিয়া তখন একা! কেউ পাশে থাকতো না ওর। নিজেকে খুব অসহয় মনে করতো, কিন্তু দুষ্টুরা সেটা অনুভব করেনি কখনই। যখন এ রকম চিমটাতো, গাল ধরে টানতো তখন ব্যথায় না! কষ্টে মেয়েটা কেদে দিতো। আর ভাবতো সবাই আমাকে দেখতে পারে না, আমার সাথে সবাই খারাপ ব্যবহার করে, সবাই আমাকে মারে। কেমন আর্শ্চয্য একটা মেয়ে ছিল রিয়া; সব কিছু নীরবে সয়ে নিতো! এরকমও কি হয় পৃথীবিতে ভালো মানুষ? অন্য সব বাচ্চাদের মতো দুষ্টু ছিলনা রিয়া? কেনো জানি গোমড়া মেয়েটা বুকে এতোগুলো কষ্ট লুকয়িে রাখতো? কেনো কেউ সেটা বুজতে পারতো না, এমনকি রিয়ার মা বাবাও না। মাঝে মাঝে যখন বন্ধুরা অনকে মারতো তখন খুব জোরে চিৎকার করে মাকে ডাকতো। সাথে থাকা চাচাতো বোনটাও চিৎকার করতো। আর তখন দুষ্টুরা সবাই ভয়ে দৌড়িয়ে পালাতো। রিয়া তখন চিৎকার থামিয়ে আবার বাড়ির পথে হাটতে থাকতো। রিয়া তখন ভাবতো ওরা চলে গেছে এখন আর মারবে না। কিন্তু এই মেয়েটা একটুও প্রতিবাদ করতো না! কারো নামে কোনো নালিশ করতো না। চুপচাপ মুখ বুজে সবটা সয়ে নিতো। কেমন মেয়েরে বাবা, মানুষতো একটু প্রতিবাদও করে; অথবা বন্ধুদের নামে বিচার দেয় মায়ের কাছে, স্যাররে কাছে, হুজুররে কাছে। রিয়া সবাইকে চিনতো, সবার বাড়িও চিনে, সবার বাবা মাকে চিনে। ইচ্ছে করলে ওর মাকে নিয়ে সবার বাড়ি বাড়ি যেয়ে বিচার দিতে পারতো। কিন্তু রিয়া সেটা করেনি, এখানইে তো রিয়াটা হেরে গেছে। অন্য কোন ছেলেমেয়ে হলে সাথে সাথে নালিশ, বিচার, এটা ওটা আরও কত কি হয়ে যেতো।
আচ্ছা, তাহলে কি বলবো রিয়া কারো উপর কোন অভিযোগ, অভিমান কিছু্ই ছিল না। প্রতিটি দিন কিভাবে রিয়া এই অত্যাচার সহ্য করতো, কে জানে। কখনও কখনও এমন হতো, অন্য কোনো বাচ্চারা অন্যায় করলে; স্কুল বা মাদ্রাসার হুজুর, স্যারেরা রিয়াকেই মারতো। সবাই রিয়াকে দেখিয়ে দিতো, কারণ ওরা জানতো রিয়া মার খাবে তবুও বলবে না ও অন্যায় করেনি বলবে না ও নির্দোষ। এতোটা সহজ-সরল মেয়ে ছিল রিয়া। আর স্যার, হুজুরেরা সবার কথা শুনে মেয়েটাকেই ইচ্ছে মতো বেত দিয়ে পিটাতো! বন্ধুরা তা দেখে খুব মজা করতো, আর হাসতো। রিয়া তখনও খুব কষ্ট পেতো, আর বাড়িতে যেয়ে মাকে বলতো মা আমি আর স্কুলে, মাদ্রাসায় যাবো না। মা রিয়ার কাছে জানতে চাইতো বারবার প্রশ্ন করতো কেনো যাবি না? তখন রিয়া কিচ্ছু মুখ থেকে বেড় করতো না। যখন রিয়া চুপ করে বসে থাকতো তখন মাও এসো মেরে ধমকিয়ে বলতো যাবি না কেনো বল। এই স্কুলে না যাওয়া নিয়ে কত যে মার খেয়েছে মায়ের হাতে মেয়েটা। কিন্তু কখনও বন্ধুদের নামে নালিশ করেনি। মাকে বন্ধুদের কথা কিছু না বলেই, মায়ের হাতে মার খাওয়ার ভয়ে আবার স্কুলে চলে যেতো। স্কুলে না গেলে মা মারে আর স্কুলে গেলে স্যারেরা মারে, বন্ধুরা মারে। কি করবে রিয়া কোথায় যাবে এই ছোট্ট মেয়েটি কেউ কিছু বললে একা একা ফুফিয়ে ফুফিয়ে কাদে।
একদিনের একটি ঘটনা, রিয়া সেই দিন চাচাদের ঘরে গিয়েছিল, পাকা করা সানের ঘরে। রিয়ার পায়ে হয়তো একটু ময়লা বা মাটি ছিল। কিন্তু তা দেখে চাচা রিয়াকে দূরদূর করে তারিয়ে দিয়েছে ঘর থেকে। বাবা বিদেশ থাকে, ফোন করে বাবাকে কথাটি বলে দিয়েছে রিয়া, ওকে ঘর থেকে চাচা তারিয়ে দিয়েছে। এই একটা অভিযোগ রিয়া সেই দিন দিয়েছিল। হয়তো এই অভিযোগটাই রিয়ার জীবনের সবথেকে বেশি কষ্টদায়ক ছিল। রিয়ার বাবা জিজ্ঞেসা করেছিল কেনো মামনি? ও বলেছিল আমি তাদের পাকা ঘরে পায়ে মাটি নিয়ে উঠেছি বলে। বাবা হাসি দিয়ে রিয়াকে শান্তনা দিয়ে বলল, থাক মামনি, তুমি তাতে কষ্ট পেওনা আমি যখন আসবো তখন তোমাকে একটা পাকা ঘর বানিয়ে দিবো, কেমন; সত্যি দিবে বাবা? হ্যা মামনি দিবো তো তোমাকে ঘর বানিয়ে।
হঠাৎ একদিন রিয়া দেখলো, দাত দিয়ে রক্ত ঝড়ছে, অনকে রক্ত। মায়ের কাছে কাছে দৌড়িয়ে যেয়ে বলল মা, মা দেখো দেখো, আমার দাত দিয়ে কত রক্ত পরছে। মা দেখে ভেবেছে হয়তো কাঠির খোচা লেগে রক্ত ঝড়ছে। সেই জন্য মা বলল এগুলো কিছু না, কমে যাবে, যাও তুমি খেলা করো যেয়ে। ছোট্ট মেয়ে রিয়া, মায়ের কথায় শান্ত হয়ে আবার খেলতে চলে গেলো, ভাই বোনদের সাথে। রিয়ার সাথে যারা খেলে ওরা রিয়ার আপন ভাই আর চাচাতো বোনেরা। আর কারো সাথেই খেলেনা রিয়া, যাদের সাথে খেলতে যাবে তারাই রিয়াকে মারবে, সেই ভয়ে রিয়া কারো সাথে খেলতে যায় না। রিয়া শুধুমাত্র ওর আপন ভাই আর চাচাতো বোনের সাথে খেলে আর কারো সাথে না।
রিয়ার দাত দিয়ে রক্ত ঝড়াটা মাঝে মাঝেই হচ্ছে। রিয়ার মা কিছু দিন দেখে, একটা সময় করে জেলার সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। ডাক্তারের কাছে, কিন্তু এরা কতটা নামদামকারী ডাক্তার তা রোগীদের দেখালেই বুুঝা যায়। রিয়ার দাত দেখে ডাক্তার কি বুজলে কে জানে;
কি কি যেনো দেখে টেখে কিছুক্ষন পর বলল, এগুলো ভিটামিনের অভাবে মাড়ি থেকে রক্ত ঝড়ছে। আমরা কিছু ভিটামিন দিয়ে দিচ্ছি এগুলো খাওয়ান, তাহলেই ভালো হয়ে যাবে। হতবুদ্ধি মা তাই করলো ডাক্তারের কথায়। এর পর কোন চিন্তু না করে, অন্য ভালো কোন ডাক্তারের কাছে না নিয়েই মেয়েকে নিয়ে বাড়ি চলে আসলো। এদিকে ভিটামিন খাওয়াচ্ছে প্রতিদিন একটি করে কিংবা দুটো করে। অবুজ ছোট্ট মেয়েটাও না বুজে হাসছে, খেলছে, আবার মারও খাচ্ছে সবার হাতে। বাড়িতে এসে সবাইকে পাকা-পাকা কথা শুনতেও পটু। হঠাৎ করে মনে হয় রিয়াটা বড় হয়ে গেছে সবার কাছে। এমটাই ভাবে বাড়ির সবাই। তবে কেউ কি জানে রিয়ার মৃত্যুর পথ খুব কাছ থেকে দেখা যাচ্ছে, হয়তো সেটা কেউ জানে না।

নিয়ম মাফিক স্কুল মাদ্রাসার বন্ধুরা রিয়ার পিছন চেপেই আছে। যতক্ষণ রিয়া স্কুল কিংবা মাদ্রাসয় থাকে ততক্ষণ যেনো রিয়া বন্দি পাখির মতো খাচার মধ্যে বন্দি হয়ে থাকে। আবার যখন মায়ের কাছে আসে, ছোট ভাই-বোনদের সাথে খেলা করে তখন যেনো মনে হয় পাখি খোলা আকাশে ডানা মেলে উড়ছে। মনে হয় যেনো অনেক বছর পড় বন্দি খাচা থেকে ছাড়া পেয়েছে। তাই বাড়তিে সবার সাথে মনে সুখে উড়ে বেড়ায়। এ ঘর থেকে ও ঘরে, এ উঠান থেকে ও উঠানে, এ রাস্তা থেকে ও রাস্তায়, এ পাড়া থেকে ও পাড়ায় দৌড়াচ্ছে, খেলছে, হাসছে রিয়া। আবার রাত হলে মায়ের বুকের মধ্যে চুপটি করে লুকিয়ে ঘুমিয়ে পরে। রিয়ার মাও যেনো সারাদিনের ক্লান্তির পর এক টুকরো সুখ খুজে পায় রিয়ার মধ্যে।
রিয়ারা তিন ভাই বোন রিয়া একাই বোন আর দু’ভাই ছোট। বাবা কয়েক বছর হলো বিদেশে গেছে। রিয়া তখন অনকে ছোট ছিল, আপনজন দূরের থাকার কষ্টটা রিয়া তখন বুজে উঠতে পারেনি। কিন্তু আজ রিয়া অনকে বড় হয়েছে, বাবার সাথে সবসময় ফোনে কথা হয়। বাবার কাছে ভাইদের জন্য নিজের জন্য এটা ওটা সারক্ষণই চায়। এখানেই রিয়া খুব আনন্দ পায়, নিজেকে খুব সুখি ভাবে। তবে রিয়া ওর বাবার আদরের ধন, তার কাছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ আপন হলো এখন রিয়া। বাবার সবকিছু এক পাশে, আর রিয়া এক পাশে।
একদিন বাবাকে খুশি হয়ে বলল, বাবা তুমি আমাকে একটি মেকাপ, আর ভাইয়ের জন্য একটি ঘড়ি পাঠাবে? রিয়ার বাবা মেয়ের কথা কিছুতেই ফেলতে পারেনি। রিয়ার জন্য ঠিকই একটি মেকাপ পাঠিয়েছে কিছুদিনে মধ্যে। কিন্তু ভাইয়ের জন্য ঘড়ি পাঠাতে পারেনি কোন একটা কারণে। কিন্তু রিয়ার মনটা ভাইয়ে জন্য খুবই খারাপ হয়ে গেলে, মাকে বলল- বাবা ভাইয়ের জন্য ঘড়ি পাঠায়নি, আমার জন্য মেকাপ পাঠিয়েছে। আমি এই মেকাপ দিবো না, আমি যদি মেকাপ দেই তাহলে ভাই মন খারাপ করবে। রিয়া মাকে সর্ত দিয়ে দিলো যত দিন বাবা ভাইয়ের জন্য ঘড়ি না পাঠায় ততদিন এই মেকাপ দিবে না। মাকে বলে দিলো- মা তুমি ভাইকে কিছু বলো না, এই মেকাপের কথা। আমি ছায়া আপুদের ঘরে মেকাপ লুকিয়ে রাখি। দৌড়িয়ে বড় চাচার ঘরে যেয়ে চাচাতো বোনদের বলল আপু, আপু শোন আমার এই মেকাপটি তোমাদের ঘরে রেখে দেও। বাবা আমার জন্য একা মেকাপ পাঠিয়েছে কিন্তু ভাইয়ের জন্য ঘড়ি পাঠায়নি। তুমিই বলো আপু ভাই মন খারাপ করবে না; বাবা যতদিনে ভাইয়ের জন্য ঘড়ি না পাঠায় ততদিন তোমাদের ঘরে থাকবে এটা। সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিল রিয়া দিকে। ভাবছে রিয়াটা মনে হয় আস্তে আস্তে বড় হয়ে যাচ্ছে, এখন ওর অনেক কিছু বোজার ক্ষমতা হয়েছে। আবার ভাবলো, রিয়াটা বড্ড বেশি গোমড়ামুখো। কেউ কিছু বললে তার প্রতিউত্তর দিতেই পারে না। ওর এই গোমড়ামুখিটা ওকে কুরে কুরে খাচ্ছে সবসময়।
রিয়ার আজ কাল খুব বেশি রক্ত ঝড়ছে। আর রিয়ার মা তো বাচ্চাদের মতোই, হাবভাব কিছুই বুঝে না, দায়ত্বিটা খুব কম বোঝে। অবুজ মতো ডাক্তারের কথায় সেই কবে থেকে ভিটামিন খাওয়াচ্ছে মেয়েটাকে। বাবার এতো টাকা আর মা এতো অলস ছেলেমেয়ের দিকে তেমন একটা খেয়াল রাখেনা।
এদিকে মানুষের কাছ থেকে সুদে আসলে টাকা এনে লক্ষ লক্ষ টাকা ঋণ করে আছে। দু’তিনজন ছেলে মেয়ে নিয়ে স্বামীর পাঠানো টাকাতেই সংসার চলে যায়। তা না করে মহিলা টাকা দিয়ে যে কি করে তা কেউ বলতে পারে না। এমনকি নিজের স্বামীও জানেনা স্ত্রীর এই কর্মকাণ্ডগুলো। বাড়ির দেব-বাসুর ননদেরা সবাই কত বকে কিন্তু কে শুনে কার কথা। মাঝে মাঝে এই সব কর্মকাণ্ডের কারণে বাড়ির অনেকেই মারতে পর্যন্ত আসে। সেগুলো দেখে রিয়া খুব কষ্ট পায় মায়ের জন্য। কিন্তু ছোট্ট মেয়েটা জানেনা যে কি কারণে এই সব হচ্ছে। রিয়া সব সময় ভাবতো হয়তো ওকে আর মাকে সবাই মারে, বকে, ওদের কেউ আদর করে না, ভালোবাসে না। মায়ের বেলায় হতে পারে এটা, কিন্তু রিয়ার বেলায় কেনো হয়? রিয়া তো কোন দোষ করে না, তাহলে সব বন্ধুরা রিয়াকে কেনো মারে। মাঝে মাঝে রিয়া বাবা কাছে মাকে মারা কথাগুলো বলতে চায় কিন্তু মা সব সময়ই বাধা দেয়, কেনো সেটা রিয়ার মাথায় আসে না। তাই বাবার কাছে না বলা কথাগুলো চেপে রেখে একা একাই কষ্টটাকে আগলে রাখে।
আজ রিয়ার স্কুলে যেতে ইচ্ছে করছে না, কারণ স্কুলে গেলইে সবার মার খেতে হবে। চিমটি, থাপ্পর, গাল টানা, চুল টান, পেঁচা ডাক শুনা এগুলো সইতে হবে। মনটা কিছুইতেই সায় দিচ্ছে না স্কুলের পথে। বড়রাও রিয়ার সাথে একই রকম ব্যবহার করে, সারাজীবন শুনেছি বড়রা নাকি ছোটদের আদর করে স্নেহ করে। কিন্তু এখানে রিয়ার বেলায় উল্টটা হয়। ছোট বড় সবাই রিয়াকে মারে।
রিয়া এখন চতুর্থ শ্রেনীতে পড়ে। আজকে ক্লাসে রিয়া পড়া পারেনি বলে স্যার খুব পেটালো বেত দিয়ে। সাদা চামড়া জামার উপর দিয়ে লাল হয়ে গেছে হয়তো, সেটা রিয়া অনুভব করতে পেরেছে। রিয়া স্যারের হাতে মার খেয়ে খুব কান্না করেছিল।
একদিন রিয়াকে ওর মা গোসলের জন্য নিয়ে গিয়েছে কলে, অবশ্য সবসময় রিয়া একা একাই গোসল করে আসে, সেই ৮/৯ বছর বয়স থেকে। মাঝে-সাজে মা সময় পেলে গোসল করিয়ে দেয়। আজ অনেকদিন পর মা রিয়াকে গোসলের জন্য নিয়ে গেল, গায়ের জামাটি যখন খুললো পিঠে দেখলো দু’তিন জায়গায় রক্ত জমাট হয়ে কালো কালির মতো হয়ে আছে। রিয়াকে জিজ্ঞেস করলো, রিয়া জানে এখানে সেই দিনের স্যারের পিটানো দাগ। তবুও রিয়া কিছু বলেনি, অনেক পিড়াপিড়িতে রিয়া মুখ খুললো। মা তো স্যারের উপর খুব রেগে গেল। রিয়ার মা অনেকটা ভয়ও পেয়ে যায়।

চলবে......।

মন্তব্য ২৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:০৩

রোকনুজ্জামান খান বলেছেন: চলবে.........................।
এটা কি গল্প
নাকি বাস্ততার কিছু অংশ।

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:০৫

কামরুননাহার কলি বলেছেন: পুরোটাই বাস্তবতার অংশ ভাইয়া।
ধন্যবাদ আপনাকে পড়ার জন্য। শেষের দিকটা আরো সুন্দর হবে, কষ্টে হয়তো চোখের পানি ধরে রাখতে পারবেন না।

২| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:০৯

রোকনুজ্জামান খান বলেছেন: শুভ কামনা রইলো তাহলে.........

৩| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:১৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


বাচ্চাদের মাঝে এসব সমস্যা হয়; স্কুলে একজন "কাউনসেলর" রাখলে, সে এসবের সমাধান করতে পারে

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:২১

কামরুননাহার কলি বলেছেন: এটার খুব অভাব।

৪| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:১৫

সাহসী সন্তান বলেছেন: এতবড় লেখা লিখলে পোস্টের মাঝে তিন/চার লাইন পরপর একটা করে গ্যাপ রাখলে পাঠকের পড়তে সুবিধা হয়। তা না হলে একটানা পোস্ট দেখলে অনেক পাঠকই বিরক্ত বোধ করতে পারেন! আমি নিজেও অবশ্য পোস্ট এখনো পুরোটা পড়ি নাই...

তবে যেটুকু পড়ছি খারাপ লাগে নাই। কিছু মনে করবেন না, আসলে পর্ব আকারের কোন পোস্ট পড়তে আমার ততটা ভাল লাগে না। কেমন জানি আলসেমী লাগে! বড় পোস্ট পড়তে আপত্তি নাই। তবে এক পর্ব পড়ে আর এক পর্বের জন্য চাতক পাখির মত লেখকের দিকে তাকাইয়া থাকা আমার নীতি বিরুদ্ধ! অত ধৈয্যও নাই!

সুতরাং পুরো লেখাটা আগে শেষ হোক, তারপর না হয় বড় করে একটা কম্পিলিমেন্ট জানিয়ে যাব! আপাতত এটাকে আগামী পর্বের জন্য তাগাদা কমেন্টও ভাবতে পারেন! আশাকরি মাত্রাতিরিক্ত অপেক্ষা করাইয়া পাঠকের ধৈয্যের পরীক্ষা নেবেন না...

আপনার লেখা ভাল! ভবিষ্যতে আরো ভাল লিখবেন সেটাই কামনা করি! ভাল থাকবেন!

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:২২

কামরুননাহার কলি বলেছেন: ঠিক আছে একদিন পুরো টা পড়ে নিয়েন। তবে আমি সার্থক।

৫| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:২১

রাজীব নুর বলেছেন: শিশুদের অসুখ বিসুখ আমি সহ্য করতে পারি না।

লেখা চলুক।

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:২২

কামরুননাহার কলি বলেছেন: হুম,

৬| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৯

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: গল্প ভালো হচ্ছে,তবে বাস্তবতা আছে শুনে ভয় করছে।একই সঙ্গে বড় পোষ্ট হওয়ায়,কয়েকটি জায়গায় একটু বানানে সমস্যা আছে।আপনাকে আরো একটু পড়তে হবে।যাইহোক রিয়ার কপালে যে কী আছে? মনটা কেমন হয়ে গেল।

শুভ কামনা রইল।

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:২২

কামরুননাহার কলি বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া।

৭| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৯

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: যতটুকু পড়েছি ভাল লেগেছে।
লেখাটা বড় না হলে পুরোটা পড়ে ফেলতে পারতাম।
চলবে... যখন তখন ছোট করা সমস্যা কি!

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:২৩

কামরুননাহার কলি বলেছেন: লাস্ট পর্বগুলো পড়বেন পুরোটা আশা করি, কারণ ওখানের হবে আসল কথা।

৮| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৯

আশিকুর রহমান হিমেল ৪২৪ বলেছেন: ভালো

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:২৪

কামরুননাহার কলি বলেছেন: ধন্যবাদ।

৯| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৯

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: রিয়ার কষ্টটা আমার মনকে ছুঁয়ে গেল। সাবলিল ভাষায় চমৎকার লিখেছেন। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:২৪

কামরুননাহার কলি বলেছেন: ওকে, অনেক অনেক ধন্যবাদ।

১০| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৩

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:


চমৎকার লেখা। আমি যদি আপনার মতো লেখতে পারতাম?
হিংসা হচ্ছে না, উৎসাহ পাচ্ছি। শুভ কামনা রইলো।

............নতুন বলে এখনো আমার ব্লগে যান নাই। মাইন্ড খেলাম কিন্ত।

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:২৬

কামরুননাহার কলি বলেছেন: আসলে আমিও মাইন্ড খেয়েছিলাম। কারণ আপনার ব্লগে যেইদিন গিয়েছিলাম সেই দিন আমার মন খারাপ করা একটি পোস্ট ছিলো , অন্য কেউ হলে বলতাম, কিন্তু আপনাকে বলতে আমার একটু কেমন জানি লাগলো তাই আর বলা হলো না। তবে ঐ রকম পোস্ট ছাড়া সব পোস্টে আমাকে পাবেন।
আর আপনি মাইন্ড খেয়েন না।

১১| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪১

তারেক ফাহিম বলেছেন: ক্যান্সারের কথা আগেই প্রকাশ করে দিলেন।
যেহেতু শেষ করবেন না সেহেতু পরের পর্বে দিলে হয়ত আরও সুন্দর হতো।

ভালোলাগলো পরের পর্বের অপেক্ষায়।

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:২৭

কামরুননাহার কলি বলেছেন: হয়তো।

১২| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:০৬

ওমেরা বলেছেন: রোগ , ব্যাধি হাবি জাবি নিয়েই আমার পড়াশুনা তবু ক্যানসার নামটা শুনলেই বুকের ভিতরটা ধ্বক করে উঠে আমার আম্মু মারা গিয়েছে লিভার ক্যানসারে ।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:১৬

কামরুননাহার কলি বলেছেন: হুম আমারও খুব ভয় লাগে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.