নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন হুদাহুদি মানুষ(এ ব্লাডি সিভিলিয়ান)

কাশাচ

একজন হুদাহুদি মানুষ(এ ব্লাডি সিভিলিয়ান)

কাশাচ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিজলী

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৭

'খাইছো?'-বলেই হন্তদন্ত হয়ে বুকপকেট হাতড়াই আমি।আমার ঠিক এই মূহুর্তে একটা সিগারেট জ্বালানো দরকার।অনেকক্ষণ ধরে থেমে থেমে বিরিয়ানিটা শেষ করার পর মনে হলো,এতক্ষণ আমি একা একাই খাইছি।সৌজন্যতার খাতিরে তাই বলে বসি-'খাইছো?'
বিজলী হাসে।এ হাসি চালাকি অথবা বোকামি ধরে ফেলার হাসি সে আমি বুঝে উঠি।তবুও আমি উত্তরের আশা একেবারে ছেড়ে দেই না।

বিজলী আমার দিকে তাকিয়ে থেকে সিগারেট খাওয়া দ্যাখে।বহুদিন আগে যখন ওর সাথে আমার প্রথম পরিচয় হতে শুরু করে তখনকার এক সন্ধ্যা সন্ধ্যায় ও আমাকে বলেছিল-'আপনার ঠোঁট পাতলা বলে ধোঁয়া সরু হয়ে ঠোঁট ছাড়ে?'
আমি তৎক্ষণাৎ হেসে ফেলি হো হো করে।বিজলী আমার হাসিমুখের দিকে চেয়ে থাকে,কি কি যেন ভাবে আমার লাগে।

-মহী তুমি কি আরেকটু পরে যাবে নাকি?
আমি উত্তর না দিয়ে বোঝার চেষ্টা করি আসলে কোনটায় ওর সুবিধা হয়।অনুমতি চাওয়ার ভঙ্গিতে বলি-'খানিক্ষণ থাকি,কি বল?'
বিজলী স্বস্তিদায়ক কণ্ঠে বলে-'আমিও সেটাই চাচ্ছিলাম।বসো,বসে টিভি দেখতে পারো।'
:তুমি কি করবে?
-গা ধুবো।ময়লা ময়লা লাগছে।
:শ্যাম্পু করবা না?
ইঙ্গিত বুঝে বিজলী এবার সশব্দে হেসে ওঠে।বলে-'তুমি আমার ঘ্রাণ পাও,নাহ্?'

আমি লজ্জা তাড়ানোর জন্যে টিভির রিমোট হাতে নিয়ে সিগারেটে কষে টান মারি।ব্যস্ততায় গলায় ধোঁয়া আটকে যায়।কাশতে কাশতে আমার চোখে পানি জমে,চোখ ডলতে ডলতে লাল করে ফেলি।বিজলী আমার গালে হাত রেখে বলে-'তুমি খুব চালাকি করো আমার সাথে।'
তারপর তোয়ালেটা কাঁধে ঝুলিয়ে গোসল করতে যেতে থাকে।আমি খেয়াল করি ধূসর রঙের শাড়ি পরা বিজলী ব্লাউজ গায়ে দেয়নি।ওর বুকের পাশ থেকে হলুদ মাংসপিন্ডের একপাশ উঁকি মারে।চোখ নামিয়ে আমি চেয়ে থাকি বিজলীর কোমড়ের দিকে।ও দরজা আটকে দেয় গোসলখানার।

দশ মিনিটের মতো আমি বসে থাকি সোফায় গা এলিয়ে।টিভিতে কি একটা অনুষ্ঠান চলতে থাকে,আমি ঠিক মনোযোগ দিতে পারিনা টিভিতে।বিজলী ভেজা চুল থেকে তোয়ালে খুলে আমার দিকে বুক উঁচিয়ে দাঁড়ায়।তারপর চুল ঝাড়তে ঝাড়তে আমাকে জিজ্ঞেস করে-'তোমার বিয়ের বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে মহী।তুমি ফিরবে কবে?
আমি জান্নাত-এর কথা পেড়ে বসি।জান্নাত আমাকে কিভাবে চায়,কি ভেবে আমাকে ভাবে,এসব।সেই যে বছর জান্নাতকে আমি জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে রাত সকাল করেছিলাম,সেই গল্পও করি।
বিজলী বলে-'তুমি এক চরিত্রকে অনেকভাবে উপস্থাপন করেছো।আমি বুঝে ফেলি সব।'
আমি বিজ্ঞের ভাব নিয়ে এবার বলি,তানিম ভাই যুক্তি দিয়ে খোঁটা দিতে মানা করছে।

বিজলী কৌতুকের চালে বলে-আর কি বলে তোমার তানিম ভাই?
আমি কৌতুককে সিরিয়াস পর্যায়ে টেনে নিয়ে আবার শুরু করি।বলছে,ভুল ধরার চেষ্টা না করতে।মানুষকে তার গল্প বলতে দিতে হয়।বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাকে থামিয়ে দিতে হয়না।

বিজলী চটে যায়।আমার দিকে ছোট ফুলদানিটা ছুঁড়ে মারে।হাত দিয়ে মুখ ঢাকতে চাওয়ার চেষ্টায় আমার কনুইয়ে এসে ফুলদানিটা সুন্দর করে ভেঙে যায়।আমি "আউ" করে উঠি।বিজলী দৌড়ে এসে দ্যাখে হাত থেকে গলগলিয়ে রক্ত বেরুচ্ছে।ও কেঁদে ওঠে,যেন ব্যথাটা ওরই।আমি ফেটে যাওয়া কনুই চেপে হাসতে থাকি।ওর কান্নার জোর বেড়ে যায়।আমি আরও জোরে হেসে উঠি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.