নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মূর্খের রাজ্যে রাজা নয়,জ্ঞানীর রাজ্যে ভৃত্য হয়ে বাঁচতে চাই।জ্ঞান সমুদ্রে অামি এক জ্ঞানের কাঙ্গাল।এই সমুদ্রে বাঁচলে প্রশান্তি অার মৃত্যুতে মানব জীবন ধন্য।

অাব্দুল্লাহ অাল কাফি

সত্য সন্ধানী ও এক জ্ঞান পাগল

অাব্দুল্লাহ অাল কাফি › বিস্তারিত পোস্টঃ

লজ্জা নয় চাই সচেতনতা

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৮:২৩


কয়েক বছর অাগের কথা চিন্তা করলেই অনুমান করা যায় অামরা কোথায় ছিলাম অার অাজ কোথায় এসে দাঁড়িয়েছি। নেট তো দুরের কথা কম্পিউটার বস্তুটাই ছিল অামাদের কাছে বিশ্ময়।একবার বাবার হাত ধরে গিয়েছিলাম শহরে।বাবার বন্ধুর সাইবার ক্যাফেতে দেখেছিলাম মাইকেল জ্যাকশনের ভিডিও সং।স্কুলে এসে সে বিশ্ময়কর বস্তুর দীর্ঘদিন ডালি ডালি লেকচার দিয়েছিলাম বন্ধুদের মাঝে।কিন্তু এই জাদুর বাক্স অাজ ঘড়ে ঘড়ে।সব প্রযুক্তির কল্যান,প্রযুক্তির অাশীর্বাদ তা অাজ বলাই বাহুল্য।
এই অদ্ভুদ যন্ত্রের অাধুনিক সংস্করন নেটওয়ার্ক সমর্থিত স্মার্টফোন যা বুক পকেট থেকে প্যান্ট পকেট এমনকি এর অবস্থান এখন ভ্যানিটি ব্যাগেও।
অনেক বাবা মায়েদের এ যন্ত্র সমন্ধে সীমাবদ্ধ জ্ঞান থাকলেও দুলাল-দুলালি সন্তানদের এ প্রযুক্তি পন্যের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতাকে তারা জয় করেছে।কারন অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের প্রযুক্তির জ্ঞান থেকে দূরে রাখতে অাজ নারাজ।
বয়স যেমনি হোক ক্লাস যত ছোটই হোক অভিভাবকেরা পুরন করেছে সন্তানের অাবদার।স্মার্টফোনটি সন্তানের কতটুকু প্রয়োজন, অাদৌ সন্তানের এটি দরকার রয়েছে কিনা বা কি কাজে সে এটি ব্যবহার করবে তা অনেক অভিভাবকের অজানা।সন্তানের অাবদার বলে কথা। চেয়েছে দিয়ে দিয়েছে।
একটা অভিজ্ঞতার কথা বলি।একদিন এক স্বনাম ধন্য জিলা স্কুলে বিজ্ঞান মেলায় যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। সিক্স সেভেন এইটের ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে সুদৃশ্য অ্যান্ড্রোয়েড, ট্যাব,অাইফোন,অাইপ্যাড দেখে তো টাসকি খেয়ে গেলাম।সে সময়ে অামি সাধারন ফিচার ফোন ব্যবহার করছিলাম।এতো অল্প বয়সে বিবেকবান, বিদ্বান, জ্ঞানী গুনি অভিভাবকেরা সন্তানদের হাতে এ যন্ত্রটি তুলে দিয়েছিল বলে অবাক হয়েছিলাম। প্রযুক্তির প্রভূত উন্নতি সাধন হয়েছে সন্তানদেরও দিন দুনিয়ার সাথে তাল মিলিয়ে অাপডেট হওয়া দরকার।খুব ভালো কথা।কিন্তু এটি নিয়ে সন্তানেরা অার কি করছে, কেন করছে, এর অপব্যবহার হচ্ছে কিনা সে দিকে নজর দেয়া যেমন জরুরী ঠিক তেমনি এ বিষয়ে অভিভাবকদের হতে হবে বিবেকচেতন।এ দিকে সজাগ থাকা তাদের দ্বায়িত্ব।শুধু দায়িত্ব বলবো না বরং গুরুদায়িত্ব।
এ যন্ত্রগুলি যেমন বাতলে দেয় সঠিক পথটি,দিতে পারে সঠিক নির্দেশনা ঠিক তেমনি অাজান্তেই ভ্রষ্ট সিঁড়ি বেয়ে নিয়ে যেতে পারে অন্ধকার জগতে।অার তাই সঠিক সিঁড়িতে প্রতিটি পদক্ষেপে সঠিক নির্দেশনা দিতে হবে অভিভাবকদের। অার এ অভিভাবক হতে পারে তার বাবা-মা ভাই-বোন বা অন্য কোন সুভাকাংক্ষী।
অনেক সন্তানদের দেখা যায় বাবা মায়ের সামনেই দিন কি রাত বিকেল কি সকাল সময় অসময়ের তোয়াক্কা না করে নিয়ন্ত্রনহীনভাবে ফোন চলিয়ে যাচ্ছে।অভিভাবক হিসেবে বাবা মায়েরা নিয়ন্ত্রনহীনতার লাগাম না টেনে বরং বেশ উপভোগ করে বিষয়টা।অাদরের সন্তান যে অাস্তে অাস্তে বেসামাল হয়ে ফোনে অাসক্ত হয়ে পরছে তাদের সেদিকে ভ্রূক্ষেপ থাকে না।
অনেকেই বলতে পারেন সে তার ফোনে কখন কি করছে কি না করছে তা কি কখনো দেখা বা তদারকি করা সম্ভব। তা অবশ্যই সম্ভব।সেটা একশত ভাগ সম্ভব না হলেও অাশি-নব্বই ভাগ তো সম্ভব।
প্রত্যেক বাবা মায়ের কাছেই সন্তান ধোয়া তুলসি পাতা।তাদের কাছে সন্তান হাবাগোবা অার বোকা।অনেক বাবা মা মনে করে তাদের সন্তান এখনো ভাঁজা মাছটি উল্টে খেতে জানে না।অার এরা মোবাইলে কি-ই বা করতে পারে।
সব কথার দাড়ি টেনে একটি সমীক্ষার ফলাফল অপনাদের জেনে রাখা দরকার।
দৈনিক সমকালে প্রকাশিত মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সমীক্ষার ফল বলছে পর্নগ্রাফিতে অাসক্ত ৭৭ ভাগ স্কুলগামী শিশু।
কি ভড়কে গেলেন? অপনার বিশ্বাসের বাঁধ যে বালুর ছিল এখন অাপনি তা নিশ্চিত।এখন অাপনিই অাঁচ করুন অামাদের পরবর্তি প্রজন্ম কতটুকু ঝুঁকির মধ্যে। অামাদের সন্তান এ ধরনেরর অাসক্তিতে ভূগছে কিনা একটিবার হলেও প্রশ্ন করুন নিজের বিবেককে।সত্যিই যদি থেকে থাকে তবে এ সমস্যা থেকে উত্তরনের পথ অামাদের জেনে রাখা অতি জরুরি। কি হতে পারে এই সমস্যার সমাধান,অামাদের করনীয়,কি ধরনের সচেতনতা অামাদের দরকার তার কিছু নমুনা নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ
★ অাপনার সন্তান গভীর রাত পর্যন্ত কারো সাথে কথা, চ্যাটিং, বা নেট দুনিয়ায় বিচরন করে দেরিতে শুতে যাচ্ছে কিনা তা নজর রাখুন।প্রয়োজনে ঘুম থেকে উঠলে সেদিকে খেয়াল রাখুন।এজন্য রুটিনের দরকার নেই সচেতন দৃষ্টিই যথেষ্ট।সকাল সকাল উঠতে দেরি হলে কারন উদঘাটন করুন প্রয়োজনে প্রশ্ন করুন তাকে।তার শারিরীক ও মানসিক ক্ষতির দিকটি তাকে অবগত করুন।
★তার ল্যাপটপ,কম্পিউটার,ট্যাব বা মোবাইলের দিকে বিশেষ নজর রাখুন।সময় পেলে বিভিন্ন অযুহাতে তার ফোন বা ল্যাপটব দিয়ে গান শুনুন,ভিডিও দেখুন,গেম খেলুন এতে যে কোন নীতিবাচক কাজে এটিকে ব্যবহারে সে সংকোচবোধ করবে।
★প্রয়োজনে নেট ইউজিং ব্রাউজার থেকে ব্রাউজিং হিস্টোরি চেক করে নিন।তবে এ ক্ষেত্রে অাপনার পজেটিভ দৃষ্টিভঙ্গী জরুরী কারন অনিচ্ছাকৃতভাবে নেট দুনিয়ায় নেগেটিভ লিংকে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
★অনেকেই ফোন বা পিসির নিরাপত্তার জন্য পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে। কিন্তু ফ্যামেলির কারো পাসওয়ার্ডটি জানা থাকলে তো দোষের কিছু নেই।সুতরাং পাসওয়ার্ডটি অবশ্যই জেনে নিন। ফোন মেমরির মধ্যে পাসওয়ার্ড দেয়া থেকে সংবরন করুন তাকে।
★বর্তমান সময়ের ভিডিও সং, গান, মুভি,সিরিয়াল অনেকটাই রুচিহীন, দৃষ্টিকটু,অশ্লীল প্রকৃতির। এ ধরনের অুষ্ঠানের নীতিবাচক দিক তুলে ধরে সুন্দভাবে সুবচনে তাকে তার জন্য উপযোগী রুচিশীল জ্ঞান বা বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান দেখতে উৎসাহিত করুন।
★জেষ্ঠ্য ভাই বোনের দায়িত্ব এক্ষেত্রে কম নয়।বাবা মায়ের তুলনায় বড় ভাই বোনদের এসব প্রযুক্তি পন্যের খুটিনাটি বিষয়ে বেশি জানা থাকায় তারা তাদের সচেতন করতে এ বিষয়ে নিঃসংকোচে কথা বলতে পারে।
★রুচিশীল বিনোদন ব্যবস্থা করে তাদের নজরুল,রবীন্দ্র,অানিসুল হক,জাফর ইকবাল, হুমায়ুন অাহমেদ,হেমন্ত,মান্নাদে, সাবিনা ইয়াসমিন,রুনা লায়লা, অাব্দুল হাদী'র মত গুনী শিল্পীদের গান গল্প,উপন্যাস কবিতা পড়তে উৎসাহিত করুন।
★সন্তান কার সাথে ঘুরছে,কোন বন্ধু বান্ধবের সাথে মেলামেশা করছে সেদিকে খেয়াল রাখাও কিন্তু অতি জরুরী।কারন যে কোন মানুষ তার বন্ধুদের দ্বারাই বেশি প্রভাবিত হয়।
★বিদ্যালয়ের শ্রণী শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য বিষয়ের শিক্ষকদের এ বিষয়ে বিশেষ নজরদারীর ব্যবস্থা করতে হবে।
পরিশেষে এ সব প্রযুক্তি প্রেমিদের চোর না ধরে দোষীর কাঁঠগড়ায় না তুলে বরং তাদের সুধরানোর সময় দিন। নীতিবাচক দিক তুলে ধরে তাকে বন্ধুর মত করে বলুন এগুলো অশ্লীল, এগুলো রুচিহীন যা মনের সৌন্দর্য ও পবিত্রতাকে নষ্ট করে।তাই এরুপ বিনোদন থেকে তার যতটা সম্ভব দূরে থাকা জরুরী।

তাই অাসুন অামরা অামাদের সচেতনতার রাডারের রেন্জ অারো বিস্তৃত করি সুতীক্ষ্ণ নজরদারিতে রাখার ব্যবস্থা করি অামাদের সন্তানদের অামাদের ছোট ভাই বোনদের। সুস্থ্য, সুন্দর, নির্মল জীবনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করি তাদের জন্য।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৮:৩০

চাঁদগাজী বলেছেন:


ফোন প্রেম প্রীতি বর্ধনে সাহায্য করছে; মনে হয়, হরমোনও বাড়ছে

২| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৮:৪৯

অাব্দুল্লাহ অাল কাফি বলেছেন: অনেকটা তাই।অামি মনে কি ফোনগুলোই প্রেম-পিরিতি অশ্লীলতা বর্ধনে উসকানির নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে।

৩| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:০৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: ভাল পোস্ট। কিন্তু সমস্যাটা হল যে আজকাল সন্তানেরা বাবা মায়ের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.