নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনের কথাগুলো বলে ফেলার জন্যে এসেছি

লিসানুল হাঁসান

নিতান্তই সাধারণ মানুষ

লিসানুল হাঁসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

****ভয়ের ভালবাসা****

২২ শে মে, ২০১৬ রাত ১২:০৯


প্রিয়ক ভেবে পাচ্ছিলনা সে কি করবে????

সে কি দ্যুতিকে বলেই দেবে??? গল্পটার শুরু হয়েছিল ক্লাসমেটদের দুষ্টমির মধ্য দিয়ে। ক্লাসের সবচেয়ে চটপটে ,মায়াবী মেয়েটিকে নিয়ে তারসাথে দুষ্টমি। হরিণীর মত যার চোখজোড়া। সে ও দুষ্টমির ছলে বন্ধুদের সাথে তাল মিলিয়েছিল," হ্যাঁ, মেয়েটা সুন্দর"। যদিও আহামরি সুন্দরী সে ছিল না। শ্যামলা ,একহারা গড়ন। কিন্তু প্রেমতো আর কার্যকরণ মেনে হয় না, তাই ও প্রেমে পড়ল।

পড়লতো পড়ল একেবারে হাত-পা ভেঙ্গে পড়ল। আর তখনই সিনেমাটিক সব ব্যাপার স্যাপার ঘটতে লাগলো। প্রিয়ক ক্লাসে ম্যাডামের চেহারায় , রাস্তায় মহিলাদের চেহারায় দ্যুতি কে দেখতে পেতে লাগলো। কিন্তু দ্যুতিকে কথাটা বলে ব্যাপারটার একটা শেষে আসার কথা ভাবতেই ওর গলা শুকিয়ে আসতে লাগলো, হাতের তালু ঘামতে লাগলো।

" যদি দ্যুতি আমার কথা শুনে হেসে উড়িয়ে দেয় কিংবা যদি রেগে যায়?? বাব্বা যা রাগী মনে হয়, গলার রগ ফুলিয়ে ছেলেদের সাথে ঝগড়া করতেও ছাড়ে না। চড়টড় ও মেরে বসতে পারে । কি দরকার বলার ? এর চেয়ে থাকানা ও আমার একটু সুখস্মৃতি হয়ে সারাটা জীবন..............." এসব ভাবতে প্রিয়ক ঘুমিয়ে পড়ে ২০১৫ সালের কোন একরাতে । *একটু পরে শুরু হয় র‍্যাপিড় আই মুভমেন্ট।*

***২০৪০ সাল***

ডাক্তার প্রিয়ক হাসান । সারাদিনের হাসপাতালের ডিউটি শেষে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরছে প্রিয়ক।গতকাল নাইট ডিউটি ও ছিল। বেশ ক্লান্ত । বন্ধু ডাঃ বিপ্লবের জরুরি একটা কাজ পড়ে যাওয়ায় ওর বদলে নাইটশিফট ও করতে হল। এমনটা ওকে মাঝে মাঝেই করতে হয়। কারো বাচ্চার বার্থডে , কারো শাশুড়ি অসুস্থ, কারো শালীর বিয়ে ইত্যাদি ইত্যাদি। ওর এমনটা ঝামেলা নেই। তাই হাসিমুখে ও সবার ঝামেলায় আছে। বাবা মা চিটাগং আছে। ছোটো ভাইটা ভাল চাকরি করছে, গেল বছর বিয়ে করেছে। একটা কিউট বাচ্চাও আছে। প্রিয়কের বদলির চাকরি দুই বছর এখানে তো দুই বছর এইখানে। প্রথম কয়েক বছর দেশের বাইরে ও ছিল। পরে দেশে ফিরে এসেছে। 'ভালইতো । দেশটা দেখা হয়ে যাচ্ছে।" ,নিজের বাইকটা চালাতে চালাতে এসব ভাবছিল। পথে একটা সুপারস্টোর থেকে কিছু জিনিস পত্র নিয়ে বাসায় ফিরে এল।রান্না ঘরে গিয়ে অভেনে খাবার গরম করতে দিয়ে ওয়াটারহিটারে কফির পানি চড়াল। ফ্রেশ হয়ে আসতে আসতে পানি গরম। খাবার দাবার শেষে একটা বই হাতে নিয়ে বিছানায় যাচ্ছিল। প্রিয়কের ঘরের চার দেয়াল জুড়ে বইয়ের তাক । তার দেশবিদেশের বন্ধুরা ওর জন্য নতুন নতুন বই পাঠায়। "জীবন মন্দ না । ঝামেলাহীন ,ঠিক যেমনটা চেয়েছিলাম। তবু কিছু একটা............ নেই নেই মনে হয়।" ,এসব ভাবতে ভাবতে প্রিয়ক ঘুমের অতলে হারিয়ে যায়।* একটু পরে শুরু হয় র‍্যাপিড় আই মুভমেন্ট।*

***২০৬০***

ডাক্তার প্রিয়ক হাসান। নিজের গাড়ি ড্রাইভ করে গ্রামের বাড়ি থেকে ফিরছে। সপ্তাহে একবার গ্রামের বাড়ি যাওয়া হয়। বাড়িটা একটা দাতব্য চিকিৎসালয়। আজ একটু আগেই আসতে হচ্ছে। ওর বন্ধু বিখ্যাত কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার প্রিন্সের বড় ছেলের বিয়ে। আরও অনেক বন্ধু আসবে। আজ ওইখানে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারের মেলা বসবে আসলে। ভাবতেই মন খুশিতে ভরে উঠলো। অনেকদিন পরে সবার সাথে দেখা হবে। সবার সাথে দেখা হল । সেই পুরনো দিনের স্মৃতিচারণা। আহা , কি সব সোনালি দিন ছিল সেগুলো! পলাশীতে চা খাওয়া, "হন্টক সংঘের "হাঁটাহাঁটি" ।

এখন সবাই কি বদলে গেছে। নাঈম, মোহাম্মদ, নাফি, তুর্য, মাহমুদ, তানভীর, সুজন, ফাহিম, হ্রিদয়।সবার কি গোছানো জীবন!পরিপূর্ণ। প্রিয়ক এককোনায় বসে চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে এসব ভাবছিল। এক ফাঁকে প্রিন্স এসে বলল," তুই এখানে!! সবাই তোকে খুঁজে খুঁজে হয়রান। কি ভাবছিস!!! " ।প্রিন্স একটু দম নিয়ে বলল," ও । অথচ কাহিনীটা অন্য রকম হতে পারত। তুই চাইলেই। আজ তোর সব কিছু আছে । বাড়ি,গাড়ি , সম্মান , প্রতিপত্তি। কিন্তু খালি খালি লাগে না?" ।" প্রিন্স ছেলেটা আসলেই বুদ্ধিমান। আমাকে ভালই বুঝে, তাই কলেজ লাইফ থেকে কেন জানি বন্ধুত্বটা অন্যরকম। ওর বউ অনেক লাকি। ওর বউ............ " এসব ভাবতে ভাবতে প্রিয়ক আনমনা হয়ে গেল। হটাত একটা অসহায়তা এসে গ্রাস করল ওকে । বাকিটা সময় একা একা থাকে হবে , মৃত্যুর সময় কোন আপনজনের মুখ দেখে মরতে পারবে না ,এমন এক এক গভীর ভয় এসে ওকে ঘিরে ফেলল। "ইশ ,একটা টাইমমেশিন দিয়ে যদি সব পালটে দেয়া যেত !!!! " ওর মনে হতে লাগলো একটা অন্ধকার গহ্বরের দিকে ও তীব্রবেগে ছুটে যাচ্ছে। একা । একেবারে একা।

হটাত একটা দুঃস্বপ্ন দেখে প্রিয়কের ঘুম ভেঙ্গে গেল। পাশের বিছানার ছেলেটা গুনগুনিয়ে পড়ছে। কালকে বিশাল তিনটা আইটেম আছে। ও ক্যালেন্ডারে দেখল । মার্চ ,২০১৫। কালকে ২৬ তারিখ।না কালকেই ও দ্যুতিকে বলবে । একবার চেষ্টা করে দেখা যাক । বাকি জীবনের একা থাকার ভয়ের কাছে দ্যুতির রাগী চেহারার ভয় হার মানল শেষ পর্যন্ত।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে মে, ২০১৬ রাত ৩:২৩

সুমন কর বলেছেন: পরপর ২টি পোস্ট একই ব্লগারের দেখতে ভালো লাগে না !!!

২২ শে মে, ২০১৬ সকাল ৯:৪৫

লিসানুল হাঁসান বলেছেন: আমি দুঃখিত।অনেকদিনের জমা লিখা দিয়ে দিয়েছিলাম

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.