নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তৃষার স্বামীর ভাষ্য
একটুর জন্য ট্রেনটা আমরা মিস করলাম না। তৃষার হস্পিটালে ডিউটি ছিল। সেখান থেকে সোজা স্টেশনে। আমি আগেই ব্যাগ ট্যাগ নিয়ে ওকে পিক আপ করার জন্য হস্পিটালে চলে গিয়েছিলাম। আমি আগে থেকেই ছুটি ম্যানেজ করে রেখেছি। আমরা যাচ্ছি সিলেট। প্রিয়কের বাসায়। পথে আমাদের সাথে যোগ দেবে নিশা আর তাঁর হাসবেণ্ড। প্রিয়ক হল তৃষা আর নিশার কলেজের বন্ধু। দুই মেয়ে আর একছেলের অদ্ভুত বন্ধুত্ব ছিল ওদের তিনজনের। কলেজের সেই সংক্ষিপ্ত সময়টাতে ওদের পরিচয় হয় প্রিয়কের সাথে। তৃষা আর নিশা ছোটবেলার বান্ধবি। একই স্কুল কলেজে পড়েছে। দুই বান্ধবি একসাথে ক্যামিস্ট্রি অলিম্পিয়াডে গিয়েছিল। দেখাগেল ভুলে ক্যালকুলেটর আনে নি। ক্যালকুলেটর চাইতে গিয়ে পাশের গোবেচারা টাইপের ছেলেটার সাথে ওদের পরিচয়। সেই থেকে ছেলেটার সাথে ওদের অদ্ভুত একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ওরা যদিও ব্যাপারটাকে বন্ধুত্ব বলে , আমি মানতে নারাজ। ছেলে আর মেয়ের মাঝে আবার বন্ধুত্ব হয় নাকি। আমি আবার ফ্রয়েডের খুব ভক্ত। এসব কথা অবশ্য তৃষাকে বলা যায় না। সংসারের শান্তির জন্যে অনেক কিছু স্বামী স্ত্রীর মাঝে অব্যক্ত থাকতে হয়। আমি রিয়েলিস্ট। স্বামী স্ত্রী একে অপরের সবচেয়ে ভাল বন্ধু এ ধরনের ডিলুশনাল বিলিফ আমার নেই।
নিশার ভাষ্য
খুব খুশি লাগছে। আমরা আজকে সবাই মিলে সিলেট যাচ্ছি। ওখানে প্রিয়ক থাকে। আমি , তৃষা আর প্রিয়ক তিনজন ছিলাম তিন মেডিকেলে । তবু ক্যামনে জানি আমাদের এই ডিসট্যান্ট ফ্রেন্ডশিপটা টিকে গেল। আমরা হয়ত তিনজন বছরে একবার এক হতাম। ঈদে। বাকি সময়ে টুকটাক কথাবার্তা হত। কখনো ভাবি নি এই টুকটাক কথাবার্তায় আমাদের বন্ডিংটা এত স্ট্রং হয়ে যাবে। আমরা মাঝে মাঝেই প্রিয়ক কেই বলতাম। একবার আমরা দুজন একসাথে সিলেট আসব। তুমি আমাদের সিলেট ঘুরিয়ে দেখাবে। প্রিয়ক বলত, ‘আসো নিশ্চয়ই দেখাবো। কিন্তু আমার কেন জানি মনে হয় আমরা তিনজন মিলে একসাথে ঘুরতে ঘুরতে হয়ত ততদিনে আমরা ছয়জন হয়ে যাব’ । আমরা হেসে উড়িয়ে দিতাম। কিন্তু শেষমেশ আমাদের এক হওয়া হচ্ছে ছয়জন হওয়ার পরেই। প্রিয়কের কথাই সত্যি হচ্ছে।
প্রিয়কের ভাষ্য
আজকে নিশা আর তৃষা আসছে। সঙ্গে ওদের হাজবেন্ড। আমাদের অবশেষে একসাথে সিলেট ঘোরা হচ্ছে। তবে অনেক দেরীতে। আমরা আর সেই ছোট্টটি নেই। কলেজে ও পড়ছি না। আমি পাশ করে সিলেটে একটা এন জি ওর হস্পিটালে কন্সাল্ট্যান্ট। নিশা আর তৃষা দুজনেই চিটাগাং এ আছে। নিশার হাজবেন্ড ফেনিতে চাকরি করে। তাই নিশা মাঝে মাঝে গিয়ে সেখানেই থাকে। আমার ওয়াইফ প্রিথুলা অবশ্য খুব একটা খুশি না। স্বামীর সাথে অন্য দুইটা মেয়ের ভাল বন্ধুত্ব দেখলে ভাল না লাগারই কথা। আফটার অল ও সারাদিন ইন্ডিয়ান চ্যানেল্গুলো নিয়েই বিজি থাকে। কি আর করবে? আমাদের তো ছেলেপুলে নেই।
তৃষার ভাষ্য
প্রিয়কের জন্য কুমিল্লার খাদির একটা পাঞ্জাবি নিয়ে যাচ্ছি। আর কিছু শুটকি। ওর বউ না জানি কি ভাববে! ভাবলেই বা আমার কি আসে যায়। আমাদের লাইফে অন্য তিনজন আসার আগেই আমরা তিনজন ভাল বন্ধু ছিলাম। এখনো আছি। প্রিয়ক ভয় পেত। বলত , আচ্ছা আমরা যখন কর্মক্ষেত্রে ঢুকে যাব তখনো কি আমাদের এই বন্ধুত্ব টিকে থাকবে? আমি বলতাম নিশ্চই, কারণ আমরা যখন কিছুই ছিলাম না তখনো আমরা ফ্রেন্ড ছিলাম। তাই কে কি হয়ে গেলাম তা আমাদের ফ্রেন্ডশিপকে ভাংতে পারবে না।আমরা কি অবলীলায় একে অন্যের সাথে সব শেয়ার করতাম। কার ক্রাশ, কার ব্রেকাপ , কার বিয়ের কথা হচ্ছে সঅঅব। দুইটা মেয়ে আর একটা ছেলে নিয়ে আমাদের অদ্ভুত ট্রায়ো।
চলবে..।.।.।।
২| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:১৭
রাজীব নুর বলেছেন: তৃষা, নিশা আর তৃষার স্বামীর ভাষ্য জানলাম।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১:২৭
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: ভাল লেগেছে। পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।