নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ মাকসুদুর রহমান

মোঃ মাকসুদুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমির খান ধর্মীয় উগ্রবাদের শিকার

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৬

আমির খান ভারতীয় উপমহাদেশ তথা জনসংখ্যার নিরিখে পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা। তিনি এমন একজন চলচ্চিত্র অভিনেতা যিনি শুধু দর্শকদের বিনোদন দিয়ে অর্থ উপার্জনের মধ্যেই নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি। চলচ্চিত্রের মাধ্যমেও যে সমাজ, রাষ্ট্র বা ধর্মীয় বহুমুখী সীমাবদ্ধ তুলে ধরা যায় তা আমির খান বিভিন্ন সময়ে তাঁর অভিনীত চলচ্চিত্র ''থ্রি ইডিয়টস, পিকে, তারে জামিন পার, লাগান’’ ইত্যাদি ছবির মাধ্যমে দেখিয়েছেন।সাম্প্রতিক সময়ে ‘পিকে’ ছবির মাধ্যমে আমাদের প্রতিটি ধর্মের মধ্যে গোড়ামিকে আশ্রয় করে একশ্রেণীর ধর্মব্যবসায়ী যে প্রতারণা করে যাচ্ছে তার ভিত্তিমূলে তীব্রভাবে আঘাত হেনেছেন।আমির খানের অভিনয়শৈলী ও ব্যতিক্রমী ধাঁচের চলচ্চিত্রে অভিনয় করার জন্য তাঁকে ‘মিঃ পারফেকসনিস্ট’ হিসেবে ডাকা হয়।আগামি ১০০ বছর পরে কোনো সিনেমা দর্শক যদি বর্তমান সময়ের কোনো ছবি উপভোগ করেন নিঃসন্দেহে আমির খান অভিনীত বেশ কিছু চলচ্চিত্র সেই সময়কার সমালোচকদের আকৃষ্ট করবে।চলচ্চিত্রে আসাধারণ অবদানের জন্য তিনি ইতিমধ্যে ভারতের জাতীয় পুরস্কার পদ্মশ্রী ও পদ্ম ভূষণ এ সম্মানিত হয়েছেন। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন চারবার ও ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পেয়েছেন সাতবার।ভারতীয় চলচ্চিত্রের সকল শাখায় অর্থ্যাৎ অভিনয়, পরিচালনায় ও প্রযোজনায় নিঃসন্দেহে তিনি একজন সফল মানুষ।
আমির খান সম্পর্কে এতক্ষণ যা বললাম তা সবাই জানেন। অনেকেই এর চেয়ে অনেক অনেক বেশিই জানেন। আলোচনার বিষয়বস্তু মূলত আমির খানের চলচ্চিত্র জীবনের সফলতা বা বিফলতা নয় ।এখানে রিজার্ভেশনের জায়গা হচ্ছে, আমির খানের মত সমাজের প্রতি , রাষ্ট্রের প্রতি , মানুষের প্রতি সংবেদনশীল একজন ব্যক্তিত্ব যখন নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন এবং সর্বোপরি ধর্মীয় উগ্রবাদের কারণে সরকারের রোষাণলে পড়েন, তা নিঃসন্দেহে গভীর দুশ্চিন্তার বিষয় বৈকি ।
অথচ ধর্মনি্রেপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের সংবিধানের মূলনীতির সাথে যা চরমভাবে সাংঘর্ষিক। এটা সবাই জানে পৃথিবীর সর্বাধিক ভোটাধিকার প্রদানকারী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হচ্ছে ভারত ।শুধু ভোট বললেও বিষয়টি পরিস্কার হবে না। ভারত হচ্ছে বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণ, মত , পথ অধ্যুষিত বৃহত্তর গণতান্ত্রিক দেশ।ধর্মীয় স্পর্শকাতরাতার জন্য উপমাহাদেশের এই অঞ্চলটি বিংশ শতাব্দীর প্রথম থেকেই বিস্ফোরন্মুখ । নেতৃত্বের হঠকারিতার জন্য বিভিন্ন সময় এখানে ধর্মীয় দাঙ্গা সংঘটিত হয়েছে।কিন্তু মহাত্মা গান্ধী, সীমান্ত গান্ধী ও শেরে বাংলার মত রাজনৈতিক নেতৃত্বের কারণে বড় ধরনের বিপর্যের হাত থেকে বার বার মুক্তি পেয়েছি।কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে এই মুহূর্তে উপমাহাদেশে তাদের মত বিরল গুণাবলী সমৃদ্ধ নেতৃত্বের তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে। সাথে যুক্ত হয়েছে পৃথিবীর বৃহত্তম জন অধ্যুষিত দেশ ভারতের নেতৃত্বে আছেন যিনি, সেই প্রধানমন্ত্রী মোদী ভিন্ন ধর্মালম্বীদের কুকুরসম জ্ঞান করেন।যা দেখতে পাই ২০০২ সালে গুজরাটে মুসলিম নিধনে তার ভূমিকার মধ্যে দিয়ে।
বোদ্ধামহলের অনেকেই ভেবেছিলেন, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা হয়তবা মোদীকে একজন পরিবর্তিত ব্যক্তিত্ব হিসেবে দেখতে পাবে। অর্থ্যাৎ সকল ধর্মগোষ্ঠীর নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবেন। কিন্তু না, মোদী নিজেকে আরএসএস এর প্রদর্শিত নীতিমালার বাইরে যেতে সম্পূর্ণ ব্যার্থ হয়েছেন । যা গতকাল আমির খানকে ভারতের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রচারদূত অর্থ্যাৎ ‘ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া’-এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার মধ্যে দিয়ে আরো পরিস্কার হয়েছে। ভারতের পর্যটন মন্ত্রণালয় সারা দেশে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য ওই পদে আমির খানকে নিয়োগ দিয়েছিল।
পর্যটন মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তকে ভারতের সুধী সমাজ মেনে নিতে পারছেন না। তারা মনে করছেন, দেশটির সাম্প্রতিক ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা নিয়ে মুখ খোলার কারণেই আমির খানকে পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ‘ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া’-এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের এই পদটি হারাতে হয়েছে।গত নভেম্বরে যখন ভারতে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়, সে সময় আমির খান বলেছিলেন, ‘অবস্থা এমন যে দেশ ছাড়তে চাইছেন তাঁর স্ত্রী কিরণ।’ এমন মন্তব্যের পর ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপিসহ বিভিন্ন উগ্রবাদী মহল থেকে পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ‘ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া’-এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের পদ থেকে আমির খানকে অপসারণের দাবি উঠেছিল।
আমির খানের সাথে মোদী সরকারের এ আচরণ এ অঞ্চলে ধর্মীয় উগ্রবাদী গোষ্ঠিকে তাদের কর্মকান্ডকে এগিয়ে নিতে আরো উৎসাহিত করবে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০২

মুদ্‌দাকির বলেছেন: ঐ দেশের বাঙলি হিন্দু রাই খাইতে পায়না বলে বাংলাদেশে পালায় , আর এই লোকতো পুরা ধরা খায়াগেছে, তবুয় আমাদের দেশের ভারত পূজকদের শিক্ষা হয় না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.